ঢাকার রাস্তা ফাঁকা
০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
এ এক অচেনা ঢাকা। রাজধানীতে গতকাল শনিবার সকাল থেকেই রাস্তায় নেই গণপরিবহন। সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি নেই বললেই চলে। গণপরিবহনও কম। দোকানপাট বন্ধ। ফুটপাথে কিছু বিক্রেতাকে দেখা গেলেও নেই ক্রেতা। জরুরি প্রয়োজনে বিকেলে যারা বেরিয়েছেন, তাদের মধ্যেও ঘরে ফেরার তাড়া।
একতরফা নির্বাচন বর্জন ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সারাদেশে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে সকাল থেকেই রাজধানীর সড়কগুলোতে গণপরিবহন কম চলতে দেখা গেছে। ঢাকার সড়কগুলো এখন ফাঁকা গণপরিবহন কম চলার কারণে। কর্মসূচি অনুযায়ী, গতকাল শনিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ হরতাল চলবে।
হরতালের শুরুতেই শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহনের উপস্থিতি অন্য দিনের তুলনায় খুবই কম। সড়কে গাড়ি কম থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অনেককেই গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। তবে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে সাধারণ মানুষ গণপরিবহনকে বেছে নিলেও আতঙ্কিত হওয়ার কথাও জানান তারা। নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে নাশকতার আশঙ্কাও করেন অনেক যাত্রী। নিজেরাই গাড়ির জানালার গ্লাস বন্ধ করে রাখছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর প্রায় সব রাস্তাই ফাঁকা। কুড়িল থেকে রামপুরা কাঁচাবাজার পর্যন্ত সড়কে চিরচেনা যানজট নেই। গুলশান-১ চত্বর ও বিজয় সরণিতে নেই ট্রাফিকের লাল সিগন্যাল। নিষেধাজ্ঞার কারণে সড়কে মোটরসাইকেল কম। সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা থাকলেও যাত্রীর অভাব। রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগর, বিজয়নগর, পল্টন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাড়ির সংখ্যা খুব কম। যানজট বলে কিছুই নেই। যাত্রীর সংখ্যাও অনেক কম। রুটভিত্তিক বাসের দেখা মিলছে কিছু সময় পর পর। যাত্রী কম থাকায় তাতে উঠতেও নেই তাড়াহুড়ো। কিছু সড়কে যেন বিকেলেই নেমেছে রাতের সুনসান নীরবতা।
নিউমার্কেট এলাকায় দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা খুব কম। যান চলাচলও কম। ফলে সড়কে যানজটের বালাই নেই। নিউমার্কেটে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। অনুমতি না থাকা মোটরসাইকেল থামিয়ে মামলা দিতে দেখা গেছে।
মিরপুর-১ নম্বর গোলচত্বর এলাকা থেকে যাতায়াতের সব রাস্তায় গাড়ি কম। মহাখালী, শ্যামলী, টেকনিক্যাল, গাবতলী এলাকার চিত্রও প্রায় একই রকম। দূরপাল্লার বাস ছাড়ছে না। রাস্তার দুপাশের দোকানপাটও অধিকাংশই বন্ধ। মিরপুর-কালশি-কুড়িল-বাড্ডা-রামপুরা হয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত চলাচল করে অছিম পরিবহন।
রাস্তায় নেই গাড়ির চাপ। গণপরিবহন যেমন বাস, সিএনজি, রিকশা ও হাতেগোনা কিছু প্রাইভেটকার চলাচল করতে দেখা যায়। মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় রাস্তায় নেই কোনো ব্যক্তিগত বা রাইডশেয়ারিংয়ের মোরটসাইকেল। সকালে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড, বাড্ডা, রামপুরা, সায়দাবাদ, মুগদা এলাকা ঘুরে দেখা যায় এসব চিত্র।
একদিকে নানান উৎকণ্ঠার নির্বাচনের ভোটের আগের দিন ও বড় দল বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতাল, এছাড়াও শনিবার সরকারি ছুটির দিন। সব মিলিয়ে ঢাকার রাস্তায় নেই গাড়ির কোনো চাপ। তবে চলাচলে মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার কথা ভেবে রাজধানীতে আজ থেকে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ মোটরসাইকেল চলাচল। এই নির্দেশনায় প্রতিদিন রাস্তা মোটরসাইকেলে পরিপূর্ণ থাকলেও সকাল থেকে চোখে পড়েনি।
শনিবার সকালে রাজধানীর খামারবাড়ি, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় খুবই কম সংখ্যক গণপরিবহন চলাচল করছে। গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়িও কম চলাচল করছে। ফলে বিভিন্ন প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষ ও অফিসগামী যাত্রীদের বাসের জন্য বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে যানবাহন কম হওয়ায় রাস্তা একেবারে ফাঁকা। যানবাহনকে যানজটে দাঁড়াতে হচ্ছে না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন কোম্পানির বাস রিকুইজিশনে নেয়া হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গণপরিবহণের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আবার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর হরতালের কারণেও অনেকে রাস্তায় বাস বের করছেন না। ফলে দুইয়ে মিলে রাস্তায় নেই বাস।
এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেকেই রাজধানীর বাইরে গেছেন। ফলে সকালে অফিস টাইমে রাস্তায় যাত্রী অনেক কম। তবে যারা রাজধানীতে আছেন বা বিভিন্ন কাজে বাইরে বের হয়েছেন, গণপরিবহন সঙ্কটের কারণে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও গন্তব্যে যাওয়ার বাস পাচ্ছেন না অনেকে।
গণপরিবহনের এক যাত্রী মাহবুব ইনকিলাবকে বলেন বলেন, মাদারীপুর যাবো। এখন সায়েদাবাদ যাচ্ছি, সেখান থেকে বাসে গ্রামে যাবো। এখন রাস্তায় এসে দেখি গণপরিবহন কম। কিভাবে বাড়িতে যাব সেই চিন্তায় আছি।
এক বাসের চেকার বলেন, আমাদের ২৫-৩০টি বাস রিকুইজিশনে নেয়া হয়েছে। ফলে রাস্তায় আমাদের তেমন গাড়ি নেই। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত আমিই গাড়ি পেয়েছি ৭টি।
গুলশানে একটি কোম্পানির চাকরিজীবী জানান, আগামীকাল ভোট হলেও আমাদের আজও অফিস করতে হচ্ছে। তাই সকাল সকাল অফিসেই যাচ্ছি। তবে ভয় লাগছে কখন কি ধরনের সমস্যা হয়।
শিকড় পরিবহনের চালক বলেন, অন্যান্য দিনের মতো সকাল থেকেই রাস্তায় যানবাহন কম। সকালের দিকে বাস কম থাকে। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ও রাস্তায় গণপরিবহন তেমন একটা নামেনি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মুজিবনগরে তারুণ্যের উৎসব উৎযাপনে আন্ত: ইউনিয়ন ফুটবল টূর্নামেন্টে অনুষ্ঠিত
ফ্যাসিস্ট হাসিনা হটানোর আন্দোলনের একটাই লক্ষ্য ছিল জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা : হযরত আলী মিঞা
থানার ওসিদের অলিগলিতে পদচারণা থাকতে হবে : ডিএমপি কমিশনার
পাত্র বিদেশে থাকাবস্থায় দেশে তার জন্য পাত্রী ঠিক করে রাখা প্রসঙ্গে।
মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পাম্প হাউজে পানি সেচ উদ্বোধনের ১০ মিনিটেই বন্ধ
রামগড়ে নবাগত জেলা প্রশাসকের পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আন্ত ইউনিট কাবাডি প্রতিযোগিতার ফাইনাল
সরিষাবাড়ী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ
চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এলডিপি মহাসচিবের বৈঠক
এবার মেডিকেলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণদের ফল স্থগিত
সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের মাঝে ছাত্রদল নেতার শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ
প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ অনির্দিষ্টকাল হতে পারে না: ড. মোশাররফ
টিকটক ও ক্যাপকাটকে টক্কর দিতে মোক্ষম চাল মেটার!
৩৩ বছরের পুরনো পত্রিকা ‘ভোরের কাগজ’ বন্ধের ঘোষণা
ফেরার সময় তিন ইসরাইলি বন্দীকে কী উপহার দিল হামাস?
মানুষকে স্বস্তি দিতে অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হচ্ছে : আমিনুল হক
পিঠার নাম হৃদয়হরণ, মুখচাহনি
শেরপুরে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শীতার্তদের মাঝে যুবদলের কম্বল বিতরণ
গুরুদাসপুরে চিরকুট লিখে চুরি হচ্ছে বাণিজ্যিক মিটার