নির্বাচন বর্জনে ৯৫ শতাংশ সফল হয়েছি
০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৩ এএম
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনে আমরা ৯৫ শতাংশ সফল হয়েছি। জনগণ সচেতন হয়েছে, দেশের ভালমন্দ পার্থক্য করার ক্ষমতা অর্জন করেছে। যুব সমাজ এতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তোমাদের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা ও শুভেচ্ছা। এদেশকে তোমাদের সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কারো দাসত্ব করার জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি। গতকাল সোমবার রাজধানীর মগবাজারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এলডিপি উদ্যোগে নির্বাচন পরবর্তী এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
অলি আহমদ বলেন, ভোট চোর, দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী, কৃত্রিমভাবে নিত্যপণ্যের মূলবৃদ্ধিকারী, গণতন্ত্র ধ্বংসকারী এবং জনগণকে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিতকারীদের উপর গজব নেমে এসেছে। জনগণ তাদের দাঁতভাঙ্গা উচিত জবাব দিয়েছে। সরকারের প্রতি জনগণ অনাস্থা জ্ঞাপন করেছে। জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জনগণ এই পাতানো এবং ভাগাভাগির নির্বাচন বর্জন করেছে। জনগণ তাদেরকে খোলা মাঠে নেংটা করে দিয়েছে। ইনশাআল্লাহ অচিরেই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে, সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেউ কেউ নর্থ কোরিয়ার মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
নির্বাচনে আগের দেশের এক সপ্তাহের তথ্য চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, এসময়ে সরকার দলীয় আসল এবং তাদের ডামি প্রার্থীরা ঘরে ঘরে টাকা বিতরণ করেছে, ভোটারদের উপর তাদের প্রভাব বিস্তারের জন্য নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি, আগুন সন্ত্রাস, ককটেল বিস্ফোরণ, জ্বালাও পোড়াও, হানাহানি এবং মারামারির মাধ্যমে জনজীবনকে দূর্বিসহ করে তুলেছিল। ভোটের আগের রাতে অনেকে ঘুমাতে পারেনি। প্রনোদনার নামে বিভিন্ন পদবির কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়েছে। যা যথাক্রমে- বড় সাহেব ৫ লাখ টাকা, এরপর ১ লাখ, ৫০ হাজার, ১০ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা। এই টাকাটা কোন হিসাবখাত থেকে আসলো?
ড. অলি আহমদ বলেন, পরিকল্পিতভাবে সরকারের আসল এবং ডামি প্রার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় হিংসাত্মক কার্যকালাপে লিপ্ত ছিলো এবং কয়েকজন মারাও গেছে, গোপন কক্ষে জাল ভোট দেয়ার বিশেষ ব্যবস্থা ছিলো, বিদেশিরা তা টেরই পায়নি, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ৬০ শতাংশ ভোট প্রদান নিশ্চিত করার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো, রেজাল্টসিট আগে থেকেই দস্তখত করা হয় এবং ভোটের রেজাল্ট আগেই ঠিক করে দেয়া হয়েছিলো।
নির্বাচনের দিনের তথ্য তুলে ধরে কর্নেল অলি বলেন, অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিলো, কোন কোন কেন্দ্রে কেউ ভোট দিতে যায়নি। শুধু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরবে সময় কাটাচ্ছিল, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিল। কোন কোন কেন্দ্রে শুধু কুকুর ও বানর খেলাধুলা করছে এবং ছোট ছোট শিশুরা ভোট কস্টিং করেছে। হঠাৎ নির্বাচন সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে সিইসি বললেন ২৭ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে, পাশ থেকে সচিব বললো না স্যার ৪০ শতাংশ হয়েছে। ভোট শেষ হওয়ার পূর্বে এবং গণনা শেষ হওয়ার পূর্বে তিনি ও তার প্রিয় সচিব এই ধরনের ভবিষ্যবাণী কিভাবে করলেন। এখানে সরকারের একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল। শতকরা প্রায় ৯০ শতাংশ ভোট কেন্দ্রে একাধিক নির্বাচনি এজেন্ট ছিলো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রের ভিতরে তারা কিন্তু বিভিন্ন প্রার্থীর বেইজ ধারণ করেছে। অনুসন্ধানি প্রতিবেদনে দেখা যায়, তারা সকলে আওয়ামী লীগের কর্মী। এছাড়াও ভোট শেষ করার পর কিছু কিছু মহিলা ও পুরুষ পুনরায় ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ান। বিদেশি এবং দেশি সাংবাদিকদের ধোকা দেওয়ার জন্য ভোটার উপস্থিতির দেখানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। সাংবাদিকদের প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে অনেকে সত্য কথাগুলো প্রকাশ করে দেয়। আমার নিকট এর স্বপক্ষে ভিডিও আছে। ওবায়দুল কাদেরের খেলা ধরা পড়ে গেছে। এই সুযোগগুলির সৎব্যবহার করে এজেন্টরা জাল ভোট বাক্সে ভরতে থাকে। সবাই মিলেমিশে একাকার, সরকারি বাহিনীর কোন আপত্তি করার সুযোগ ছিল না। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমরা নিশ্চিত গড়ে ৭ থেকে ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে। বিদেশীদের বোকা বানানোর জন্য ৪০ শতাংশ বলা হয়েছে। বিদেশ থেকে যারা এসেছে তাদের অধিকাংশই সাংবাদিক নয়। সরকার তাদের নগদ ডলার দিয়ে আমদানি করেছে। অনেকে অবসরে আছেন, পিকনিক করতে এসেছে।
বিএনপির অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে কর্নেল অলি আহমদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় সাজা খাটছেন এবং খুবই অসুস্থ, ভারপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বাধ্যগতভাবে লন্ডনে অবস্থান করছেন, তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করার কোন সুযোগ পাননি। যদিও প্রত্যেকের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বিএনপি মহাসচিবসহ বিভিন্ন পদবির ২০ হাজারের উর্ধ্বে নেতাকর্মী জেলে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। তাদের মুক্তির কোন পথ খোলা নেই, সরকার রুদ্ধ করে রেখেছে। দুইজন মন্ত্রী প্রকাশ্যে তাদের জেলে নিক্ষেপ করার যুক্তি তুলে ধরছেন। দিবারাত্রি কোর্ট বসিয়ে বিএনপির ১ হাজার ২০০ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে।
সরকারের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, এতকিছুর পরও, সরকারকে কেন ভোট জালিয়াতির আশ্রয় নিতে হল? জনগণ কেন আপনাদের সমর্থন করছে না? আপনারা কি কি কারণে জনবিচ্ছিন্ন হলেন তা সঠিকভাবে নির্ভরযোগ্য (তৈল মোর্দনকারীদের বাদ দিয়ে) ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করার ব্যবস্থা নিন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ক্ষমতা ছাড়ার পন্থা বের করুন। হাতে সময় খুব বেশি নেই। যতই লাফালাফি করেন না কেন লাভ নেই, বাস্তব ভিন্ন, জনরোষে পড়তে পারেন। কারণ নিত্যপণ্যের মূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে, পাঠ্যপুস্তক গুলিতে ইসলাম ধর্ম বিরোধী বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সুচিকিৎসা নেই বললেই চলে, রপ্তানি আমদানি ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ এখন বাজারে নেই। তার উপর ২০টি ব্যাংক প্রায় দেউলিয়া, সীমাহীন দুর্নীতি ও টাকা পাচার চলছে, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের সংকট ক্রমাগত বাড়ছে এবং ডলার সংকট, বিদেশি ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা নেই। দয়া করে জিদ পরিহার করেন, আপনাদের পক্ষে এই অবস্থা থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। কারন আপনারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, অস্ত্রবাজ। জনগণ আপনাদেরকে বিশ্বাস করে না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার
৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান
তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা
শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত
গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়
ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা
মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী
প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন
বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা