নির্বাচনের খেলা শেষ হলেও রাজনীতির খেলা চলবে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, এখনো পথে পথে নানা বাধাবিপত্তি চলছে। বিএনপি, গণতন্ত্রের শত্রুরা এখনো হুমকি দিচ্ছে। মানুষ পুুড়িয়ে মেরেছে। তারেক রহমান আর রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়েছে। সে দূর থেকে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় উপলক্ষ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এদের চেতনায় স্বাধীনতা নেই। এদের চেতনায় দ্বিজাতিতত্ত্ব। আমাদের সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। মাথা গরম করা যাবে না। এত বড় নির্বাচন। কিন্তু তেমন কোনো সহিংসতা হয়নি। পৃথিবীর বহু দেশে নির্বাচন হয়। কঙ্গোতে দেখলাম ইন্টারনেট বন্ধ। বিদ্যুৎ নেই। পরে ফল প্রকাশ। এমন নির্বাচন আমরা করিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত ৪৮ বছরের সবচেয়ে সাহসী নেতা শেখ হাসিনা। তিনি আমাদের আশার বাতিঘর। বীর বাঙালির বীরকন্যা। সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মানুষকে ভালোবেসে মানুষের মধ্যে ঠাঁই করে নিয়েছেন। আপনাকে অভিনন্দন। আপনি সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। আপনাকে অভিনন্দন।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের ৪২ বছর ধরে আপনি নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন, সেই দলের বিপুল বিজয়ে আপনাকে অভিনন্দন। আগামীকাল সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ এবং সংসদে পার্লামেন্ট পার্টির বৈঠকে আমাদের নেতা সংসদ নেতা নির্বাচিত হওয়ার মাহেন্দ্রক্ষণ।
এর আগে দুপুরে বিকেলে তেজগাঁওস্থ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথ সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষক থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের এই নির্বাচনে কমনওয়েলথ, ওআইসির পর্যবেক্ষক এখানে উপস্থিত ছিলেন। আমার মনে হয় যারা ভিন্নতর বক্তব্য দিচ্ছেন তারা তাদের দেশ থেকে যেসব পর্যবেক্ষকরা এসে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে যে পজেটিভ মন্তব্য করবেন তার ভিত্তিতে তারাও বিষয়টি অনুধাবন করবেন।
নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়াই হবে নতুন সরকারের মূল কাজ বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ওবায়দুল কাদের জানান, বুধবার সকাল ১০ টায় নব নির্বাচিত সংসদ সদস্যগণ শপথ নিবেন। এদিন সংসদ নেতাও নির্ধারিত হবেন। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টায় বঙ্গভবনে শপথ নিবেন নতুন মন্ত্রিপরিষদ।
দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০২৪ সালে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ‘দলমত নির্বিশেষে দেশের অব্যাহত উন্নয়ন যাত্রা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে দলের নেতাকর্মীদের ঠান্ডা মাথায় চলতে হবে। কোথাও সহিংসতা বা সংঘাতে জড়ানো যাবে না। নেত্রী নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে যে বক্তব্য রেখেছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা ও দেশ পরিচালনার চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে হবে।
সংসদ নির্বাচনের পর কোনো সহিংসতায় না জড়াতে দলের নেতা-কর্মীদের ঠান্ডা মাথায় চলার আহ্বানও জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখার অপকৌশল। দেশের জনগণ ভোট দিয়েছে। যারা বর্জনের ডাক দিয়েছে ভোটাররা তাদের বর্জন করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ভবিষ্যতে কুচক্রির বিরুদ্ধে আমাদের নজর আরো বাড়াতে হবে। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। কিন্তু বিএনপি করে। এটা তাদের জনবিচ্ছিন্নতার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিবে। কোনো ক্ষতি যেন করতে না পারে সে জন্য আমরা সর্বদা সতর্ক। সব কিছু মোকাবেলা করেই আওয়ামী লীগ আজকের বিজয়ের মাহেন্দ্রক্ষণে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অবিচল।
যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব- উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এবং সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।