ঢাকা   বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ | ২৯ কার্তিক ১৪৩১
ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ

প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে জাতীয় সরকারের অধীনে ভোট চাই

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৩ এএম

৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন কোনো নির্বাচন নয়। জনগণ এই নির্বাচনকে মেনে নেয়নি। এই প্রহসনের নির্বাচনকে জনগণ লাল কার্ড দেখিয়েছে। অতি দ্রুত সরকারকে এ নির্বাচন বাতিল করে জাতীয় সরকারের অধীনে আরেকটি নির্বাচন দিতে হবে। একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নিজেই ধ্বংস হয়েছে। একটি গণঅভূত্থানের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। একতরফা প্রহসনের জাতীয় নির্বাচন বাতিল এবং জাতীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিতে আজ বিকেলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা নেছার উদ্দিন, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম, ছাত্রনেতা শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, কেএম শরয়াতুল্লাহ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, হাফিজুল হক ফাইয়াজ, আল আমীন সোহাগ ও মাইদুল ইসলাম সিয়াম। বিক্ষোভ মিছিলের আগের সমাবেশে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকনও উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, ৭ জানুয়ারি একতরফা প্রহসনের ডামি নির্বাচনকে বর্জন করে দেশবাসী আওয়ামী লীগকে সকর্ত সঙ্কেত দিয়েছে। এটা কোন নির্বাচন ছিল না। এটা ছিল নির্বাচনের নামে নাটক মঞ্চায়ন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠনের দেউলিয়াত্ব ও দৈন্যদশা প্রকাশ হয়েছে। নির্বাচন বর্জন করায় তিনি পীর সাহেব চরমোনাই’র পক্ষ থেকে দেশবাসী ও সাংবাদিকদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মিডিয়ার সুবাদে বিশ্ববাসী ভোটের নামে একতরফা দলীয় কাউন্সিল দেখেছে। যেখানে বিদেশীদের ভাড়া করে ডামি পর্যবেক্ষক সাজিয়ে ডামি নির্বাচনকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তথাকথিত ভোটের আগে বঙ্গবন্ধু কন্যা জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনি ভুলক্রটির জন্য ক্ষমা চেয়ে পুনরায় ক্ষমতায় যেতে জনগণের ভোট প্রার্থণা করেছেন। অথচ দীর্ঘ ১৫ বছরেও আপনি জাতীয় ভুলক্রটি সংশোধন করতে পারেননি। দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, জাতিসত্তাবিরোধী শিক্ষা সিলেবাস তৈরি করে, ইসলামী ও নৈতিক শিক্ষা বই বিতরণ করে তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে, আপনি কী তা দেখেননি? ইসলামী শিক্ষা বইয়ে দেবীর ছবি দিয়ে কী ম্যাসেজ দিচ্ছেন? পাশ্ববর্তী দেশের প্রেসক্রিপশনে আমাদের দেশের রাজনীতি ও শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ন্ত্রণ অশনিসংকেত। তিনি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী যে কোন ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি ডামি নির্বাচন বাতিল করে জাতীয় সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে দেশকে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ থেকে রক্ষার আহ্বান জানান।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকে দেশপ্রেমিক জনতা কিছুতেই নির্বাচন বলতে চায় না। যারা নির্বাচনের নামে তামাশা করেছে তারা দেশপ্রেমিক নয়। দেশপ্রেমিক হলে দেশ ও মানুষের কল্যাণে ক্ষমতা হস্তান্তর করতো। কিন্তু তারা তা না করে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থাায়ী করার অপচেষ্টা করছে। তারা জানে, তাদের সীমাহীন অপকর্মের কারণে হয়তো দেশ ছাড়তে হবে, নয়তো জেলে থাকতে হবে। এই ভয়ে তারা ক্ষমতায় কুক্ষিগত করে রাখছে। শেখ মুজিব যেমন ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করে বাকশাল কায়েম করেছিলো, তার কন্যাও বাকশাল নাম না দিয়ে ভিন্ন কায়দায় দেশে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রধানমন্ত্রীর কাঠাল বার্গার, বেগুণির পরিবর্তে পেপেনি ফমূলার পর ২০২৪-এর নতুন ফর্মূলা, বিরোধী দল ছাড়াও গণতন্ত্র হয়। এভাবে দেশ ও জনগণকে নিয়ে শেখ হাসিনা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেই যাচ্ছেন। প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, আমরা আগেও বলেছি, এটা কোন নির্বাচন নয়, এটা আওয়ামী লীগের দলীয় কাউন্সিল। দলীয় কাউন্সিল করতে গিয়ে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্টের কী প্রয়োজন ছিলো? ভোটার উপস্থিাতি ১০ ভাগও ছিলো না। যেখানে ২৮০ জন এমপি আওয়ামী লীগের, তাদের গৃহপালিত জাতীয় পাটির ১১ জন, তাহলে বিরোধী দল কে?
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে শেখ হাসিনার মুখে এত মিথ্যাচার বেমানান। তার নিজ আসনে ৩ হাজার ৩২৩ ভোটের জায়গায় ৩ হাজার ৩৩২ ভোট কীভাবে হয়? এটা কিসের গণতন্ত্র? ভোটারবিহীন নির্বাচনের ম্যাধমে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থাান নিয়ে দেশের খেটে খাওয়া মানুষের অর্থ নষ্ট করে নির্বাচনের নামে তামাশা দেশবাসী সহ্য করবে না। পরে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট, পল্টন মোড়, বিজয়নগর পানির ট্যাংকি হয়ে পল্টন মোড় এসে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। মিছিলে শেখ হাসিনা-লালকার্ড লালকার্ড, নির্বাচন কমিশন-ভুয়া ভুয়া, শেখ হাসিনা-ভুয়া ভুয়া, ভোটারবিহীন নির্বাচন-ভুয়া ভুয়া প্রভৃতি শ্লোগানে মুখরিত করে তুলেন।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

খালাস পেলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক এপিএস অপু
আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ১৮.৪৬ বিলিয়ন ডলার
অফিস-আদালতসহ সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিত নয় : রিজভী
বেসরকারি অপারেটর দিয়ে পরিচালিত ২৪ ট্রেনের ইজারা বাতিল
তাপস ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
আরও

আরও পড়ুন

লিসান্দ্রো মার্তিনেজকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পাচ্ছেনা আর্জেন্টিনা

লিসান্দ্রো মার্তিনেজকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পাচ্ছেনা আর্জেন্টিনা

খালাস পেলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক এপিএস অপু

খালাস পেলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক এপিএস অপু

পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক তল্লাশি

পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক তল্লাশি

আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ১৮.৪৬ বিলিয়ন ডলার

আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ১৮.৪৬ বিলিয়ন ডলার

অফিস-আদালতসহ সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিত নয় : রিজভী

অফিস-আদালতসহ সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিত নয় : রিজভী

পার্লামেন্টে ক্ষমা

পার্লামেন্টে ক্ষমা

ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তায় নতুন প্রহরী: রোবট কুকুর!

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তায় নতুন প্রহরী: রোবট কুকুর!

লুকিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করায় মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা থেকে বহিস্কার

লুকিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করায় মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা থেকে বহিস্কার

মাকে হত্যা করে লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখা ছেলে গ্রেফতার

মাকে হত্যা করে লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখা ছেলে গ্রেফতার

সীমান্তে ৪ বাংলাদেশী নারী আটক

সীমান্তে ৪ বাংলাদেশী নারী আটক

গুলি বর্ষণকারী ৭৪৭ পুলিশ শনাক্ত গ্রেফতারের উদ্যোগ নেই

গুলি বর্ষণকারী ৭৪৭ পুলিশ শনাক্ত গ্রেফতারের উদ্যোগ নেই

সিলেটে মতবিনিময় সভা করলো নেজামে ইসলাম পার্টির

সিলেটে মতবিনিময় সভা করলো নেজামে ইসলাম পার্টির

স্বামী স্ত্রীকে শর্ত লাগিয়ে তালাক দেওয়ার পর শর্ত উঠিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে।

স্বামী স্ত্রীকে শর্ত লাগিয়ে তালাক দেওয়ার পর শর্ত উঠিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে।

আন্তঃনগর ট্রেনের সময় পরিবর্তন করুন

আন্তঃনগর ট্রেনের সময় পরিবর্তন করুন

জনপ্রশাসনে মেধাশূন্যতা : কারণ ও প্রতিকার

জনপ্রশাসনে মেধাশূন্যতা : কারণ ও প্রতিকার

ভারতীয় হেজিমনি ও আওয়ামী লীগের আত্মঘাতী রাজনীতি

ভারতীয় হেজিমনি ও আওয়ামী লীগের আত্মঘাতী রাজনীতি

বিতর্ক পরিহার করতে হবে

বিতর্ক পরিহার করতে হবে

ইসরাইলি বাহিনী হিজবুল্লাহর সঙ্গে অস্ত্রবিরতিতে যাবে না

ইসরাইলি বাহিনী হিজবুল্লাহর সঙ্গে অস্ত্রবিরতিতে যাবে না

নির্বাচনে হারার পর প্রথমবার জনসমক্ষে বাইডেন ও কমলা

নির্বাচনে হারার পর প্রথমবার জনসমক্ষে বাইডেন ও কমলা