দেশি পেঁয়াজের বাজার কার নিয়ন্ত্রণে?
১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৩ এএম
রফতানি করা পেঁয়াজের পাশাপাশি দেশির পেঁয়াজে ভরে গেছে রাজধানী ঢাকার হাট-বাজার। প্রতিটি দোকানে টুকরি ভর্তি পেঁয়াজ। এ ছাড়াও ভ্যানে বিক্রি হচ্ছে নতুন নুতন দেশি পেঁয়াজ। কিন্তু দাম এখনো নাগালের বাইরে। প্রশ্ন হচ্ছে দেশি পেঁয়াজের লাটাই কার হাতে? দেশি পেঁয়াজের দামও কি সিণ্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে?
গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম সামান্য কমলেও পেঁয়াজের দাম এখনো অস্বস্তির পর্যায়ে বলছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকলে এর দেখাদেখি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও আড়তদার দেশি পেঁয়াজেরও দাম বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে ভর মৌসুমেও দেশি পেঁয়াজের দাম কমার বদলে উল্টো বেশি দেখা যাচ্ছে। বাজারে প্রচুর সরবরাহ থাকার পরেও নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি বর্তমানে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ি বাজার, খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজার, মেরাদিয়া হাট, বাসাবো বাজার, যাত্রাবাড়ি মোড় বাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকায়। আর পাইকারি বাজারে এই দেশি জাতের পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯৫ টাকায়। তিন দিন আগেও পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ১০০ টাকার ওপরে।
পাশাপাশি খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহেও একই দামে বিক্রি হয়েছে। আর পাইকারি বাজারে এই আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১০০ টাকায়। তবে কোনো কোনো বাজারে অল্প কিছু দোকান ছাড়া অধিকাংশ দোকানেই আমদানি করা পেঁয়াজ তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে বাজারে পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। অথচ এখন পেঁয়াজের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা হওয়ার কথা। ক্রেতারা বলছেন, গত বছর এ সময়ে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। এবার দেশি পেঁয়াজও ৮০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না।
খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় এবং আবহাওয়া কৃষকদের অনুকূলে থাকায় বাজারে এ পণ্যের যোগান বেড়েছে। পেঁয়াজ চাষিরা এখন ফসল তুলছেন। এ কারণে বাজারে চাহিদার চাইতেও বেশি পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম এখনো রয়েছে অস্বস্তির পর্যায়ে। তবে পেঁয়াজের কোনো সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না।
যাত্রাবাড়ি বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. সেলিমউদ্দিন বলেন, আজকের পাইকারি বাজারে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৪০০ থেকে ৪২০ টাকায়। আড়ত থেকে আমাদের প্রতি মণ পেঁয়াজ ৩ হাজার ১০০ টাকায় কিনতে হয়। বাজারে এখন নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে। আশা করা যায় দাম কমতে থাকবে। তবে আমরা যে দামে কিনি তার থেকে সামান্য লাভ করে ছেড়ে দেই। কয়েক হাত ঘুরে আমাদের কাছে আসতেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। আর এখানেই দাম বাড়ে। সিজনে পেঁয়াজের বাজারে অনেক মৌসুমি বিক্রেতা এসে অতি লাভ করতে চায়, সেজন্যও দামের ওপর কিছুটা প্রভাব পড়ে।
পেঁয়াজের দাম নিয়ে আরামবাগ খুচরা দোকানি মো. এনামুল হক বলেন, বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে না। আর যেগুলো আছে তাও ভালো মানের নয়। দামও বেশি। দেশি নতুন পেঁয়াজ পাইকারি বাজার থেকে প্রতিকেজি ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। এই পেঁয়াজ আমরা বিক্রি করছি প্রতি কেজি ১০০ টাকায়। এই দামে বিক্রি না করলে খরচ দিয়ে পোষায় না।
পরিবারের জন্য পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাসাবো বাজারে এসেছেন মো. সোলাইমান সবুজ নামের এক ক্রেতা। পেঁয়াজের দাম নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার ওপরে ছিল। যে কারণে অল্প পরিমাণ পেঁয়াজ কিনি বাসার জন্য। সেটা শেষ হলে আজকে বাজারে এসে শুনি পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বছর এই সময় পেঁয়াজের দাম নিয়ে নানা কারসাজি হয়। যে কারণে ভর মৌসুমেও আমাদের মত সাধারণ ক্রেতাদের বেশি দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। অথচ এই মৌসুমে পেঁয়াজের দাম হওয়া উচিত ছিল প্রতি কেজি ৫০ টাকার নিচে। তিনি বলেন, সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে হলেও জিনিসপত্রের দাম কমাতে বাজার সিন্ডিকেটকে কঠোর শাস্তির আয়তায় আনতে হবে। যে যার ইচ্ছা মত অন্যকে দেখে দাম বাড়াচ্ছে এই ধরনের মানসিকতা থেকে ব্যবসায়ীদের বেরিয়ে আসতে হবে। শনির আখড়ার ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ কম পেঁয়াজ কিনছেন। আগে যারা দুকেজি কিনতেন তারা এখন এক কেজি কেনেন, যারা এককেজি কিনতেন তারা আধা কেজি কেনেন। রহিমউল্লাহ নামের একজন ক্রেতা বলেন, মনে হচ্ছে দেশি পেঁয়াজও সিণ্ডিকেটের কবলে পড়ে গেছে। না হলে আমদানি করা এবং দেশি পেঁয়াজে বাজার ছয়লাব অথচ দাম কমছে না কেন?
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আবারও শীতের কবলে সৈয়দপুর
লাকসাম আল-আমিন ইনস্টিটিউটে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা
ব্রিকসে যোগদানের আমন্ত্রণ পর্যালোচনা করছে সউদী আরব
বেক্সিমকোর শ্রমিকদের গণসমাবেশ
সাংবাদিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১৬ নেতা-কর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার
তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের মতবিনিময়
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী এসোসিয়েশনের নির্বাচন সম্পন্ন
বিএনপি নেতা সালাউদ্দিনকে বহিষ্কারের দাবিতে মহিলা দলের ঝাড়ু মিছিল
পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ট্রাম্পের
সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপকগণকে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের শুভেচ্ছা
সোনারগাঁওয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার সাংবাদিক
আবাহনীর ৬ মিনিটের ঝড়ে এলোমেলো ফকিরাপুল
পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাত করতে চান ট্রাম্প
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য চায় জামায়াতের আমির ও চরমোনাই পীর
শপথ নিয়েই যেসব নির্বাহী আদেশ সই করলেন ট্রাম্প
বাগবাড়ীতে ১ হাজার পরিবারের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ
ইলন মাস্কের ‘নাৎসি’ অঙ্গভঙ্গি নিয়ে বিতর্ক
খুবি কেন্দ্রে ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্নের লক্ষ্যে নানা সিদ্ধান্ত
পাকুন্দিয়ায় দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে বিএনপি নেতা খুন
গাজীপুরে মহাসড়ক ঘেঁষে ময়লা আবর্জনা, দুর্গন্ধে অতিষ্ট পথচারীরা