গাজা সুড়ঙ্গের বন্যা গণহত্যা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে
১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম
গাজা উপত্যকায় সুড়ঙ্গে বন্যা সৃষ্টিকে গণহত্যা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে বলে জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া শুক্রবার বলেছেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠক বলেন, গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তি সংক্রান্ত ১৯৪৮ কনভেনশন অনুসারে এ ধরনের কর্ম [গাজায় সুড়ঙ্গের বন্যার মতো] গণহত্যার অন্যতম উপাদান হিসাবে যোগ্য হতে পারে।
এদিকে তুরস্ক গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলা ও গণহত্যার নথি সরবরাহ করে যাবে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। শুক্রবার তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট। এরদোগান বলেন, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যার নথি সরবরাহ করে যাবে তুরস্ক। আর সেগুলোর বেশিরভাগই ভিজ্যুয়াল নথি।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, ইসরাইল দোষী সাব্যস্ত হবে। আমরা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করি। ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ তুলে গত ৩০ ডিসেম্বর মামলার আবেদন জমা দেওয়ার দিন আইসিজেকে দ্রুত এ বিষয়ে শুনানির অনুরোধ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে ১১ জানুয়ারি শুনানি শুরুর দিন ধার্য করেন বিশ্ব আদালত। শুনানির দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে আদালতের বাইরে ইসরাইলের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেন হাজারও মানুষ। আদালতের বাইরে গতকালের শুনানি সম্প্রচার করা হচ্ছিল বিশাল এক পর্দায়। হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যেই সেখানে ছিল নারী-পুরুষ থেকে বৃদ্ধ–শিশু-হাজারও মানুষের সমাগম। তাদের হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা আর গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড। ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজায় ২৩ হাজার বেসামরিক মানুষ হত্যার মাধ্যমে গণহত্যার অভিযোগ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, যেখানে ১০ হাজারের বেশি শিশু।
এদিকে গাজায় ইসরাইলের বর্বরতা ১০০ দিন অতিক্রম করলেও বোমাবর্ষণ এতটুকু কমেনি। গাজার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে দুটি বাস্তুচ্যুত পরিবারের আশ্রয়স্থলে ইসরাইলি বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছে। হাতে রুটির টুকরো নিয়ে একটি মৃত মেয়ের ছবি তুলে বাসেম আরাফেহ নামের এক আত্মীয় বলেছেন, শুক্রবার রাতে যখন বাড়িটি আঘাত হানে তখন রাফাহ এলাকার পরিবারগুলো রাতের খাবার খাচ্ছিল।
আরাফেহ আর্তনাদ করে বলেন, ‘এ শিশুটি ক্ষুধার্ত অবস্থায় মারা গেছে, যখন সে এক টুকরো রুটি খাচ্ছিল, তার গায়ে কিছুই ছিল না, শিশুরা কীভাবে মারা যায় তা দেখার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কোথায়? ‘মুসলিমরা... আর বিশ্বনেতারা কোথায়?’
অবরুদ্ধ ছিটমহলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩১২ জন আহত হয়েছে, যার ফলে ইসরাইলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ২৩ হাজার ৮৪৩-এ উন্নীত হয়েছে।
একটি মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরাইলি দখলদার (বাহিনী) গাজায় পরিবারের বিরুদ্ধে ১২টি গণহত্যা করেছে, যার ফলে গত ২৪ ঘন্টায় ১৩৫ জন মারা গেছে এবং ৩১২ জন আহত হয়েছে’। এতে আরো বলা হয়, ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরাইলের নৃশংস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৬০ হাজার ৩১৭ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।
৪ হাজার ইসরাইলি সৈন্য পঙ্গু হয়েছে : হিব্রু ভাষায় ইসরাইল-ভিত্তিক নিউজ সাইট ওয়াল্লা জানিয়েছে যে, অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৪ হাজার ইসরাইলি সৈন্য পঙ্গু হয়ে পড়েছে। তবে সংখ্যাটি ৩০ হাজার-এ বাড়তে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘দেশটি বিপুল সংখ্যক প্রতিবন্ধী ইসরাইলি সৈন্য গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং যুদ্ধের ১০০ দিন পর প্রায় ৪ হাজার সৈন্য ইতিমধ্যেই প্রতিবন্ধী হিসাবে স্বীকার করা হয়েছে’। সাইটটি যোগ করেছে যে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী ‘জনগণের কাছে আহতদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য সরবরাহ করে না এই ভয়ে যে, এটি জনগণের মনোবল হ্রাস করবে’।
গাজায় ইসরাইলের লাগামহীন হামলার প্রতিবাদ এথেন্সে : গাজায় ইসরাইলের লাগামহীন হামলার পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার বিষয়ে ন্যাটো, ইইউ এবং মার্কিন নীতির প্রতিবাদে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে দুপুরে বিক্ষোভ করা হয়। র্যালিটি গ্রিসের প্যালেস্টাইন কমিউনিটি এবং স্টপ দ্য ওয়ার-অ্যালায়েন্স উইথ প্যালেস্টাইনের দ্বারা সংগঠিত হয়েছিল এবং এতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলির শত শত লোক অংশ নিয়েছিল যারা ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনি পতাকা এবং ব্যানার বহন করেছিল। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতায় বেঁচে থাকার অধিকারের দাবি। বিক্ষোভকারীরা গাজায় ইসরাইলের নির্বিচারে বোমাবর্ষণের নিন্দা এবং ছিটমহল ও পশ্চিম তীর দখলে ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ স্বীকার করতে পশ্চিমের ব্যর্থতার নিন্দা করে সেøাগান দেয়।
আইসিজে-তে দক্ষিণ আফ্রিকার গণহত্যার ঘটনায় ইসরাইল আতঙ্কিত : একজন তুর্কি শিক্ষাবিদ এবং অনুশীলনকারী আইনজীবী বলেছেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার গণহত্যার বিচার শুরু হওয়ার পর ইসরাইল বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাথে বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়। আরিতুর্ক বলেন, ‘অপারেশন কাস্ট লিড’ নামে ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর ইসরাইল গাজায় হামলা চালানোর পরে তেল আবিবের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলার আগে শুরু হয়েছিল এবং ২০২২ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সংঘটিত অপরাধের প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছিল, কিন্তু কোনো অগ্রগতি হয়নি সূত্র : আল-জাজিরা, টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ছাগলনাইয়ায় দুই হাত কাটা যুবকের লাশ উদ্ধার
কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লিটন, সম্পাদক মামুন
খুবি কেন্দ্রে ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্নের লক্ষ্যে নানা সিদ্ধান্ত
ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের আদেশ স্থগিতে ১৮টি রাজ্যের মামলা
টেলিকমে অপ্রয়োজনীয় লাইসেন্স বাতিল করা হবে : বিটিআরসি চেয়ারম্যান
ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে প্রাইভেট কারচালক নিহত
খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য
আনিসুল হকের আয়কর নথি জব্দ
সাবেক ক্রিকেটার দুর্জয়ের সম্পদ জব্দ, ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ
বন্দরে বকেয়া বেতন দাবিতে পারটেক্স শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি
অবৈধভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটি : ইউজিসি
ধামরাইয়ে ৩ দিনেও সন্ধান মেলেনি ইজিবাইক চালকের
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মদিন পালিত
গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যমুক্ত সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা -নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক
বিদ্যুৎ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিল পবিস কর্মীরা
উত্তরা উলামা আইম্মা পরিষদের কমিটি গঠন
ডাকাতির ভিডিও ভাইরাল হলেও অধরা রূপগঞ্জের রুবেল
সিনিয়র-জুনিয়র সংঘাতের দায়ে অভিযুক্ত দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
পদ্মা ব্যাংকের ১২২তম পরিষদ সভা অনুষ্ঠিত
ভারতের ছত্তিশগড়ে বন্দুকযুদ্ধে ২০ মাওবাদী নিহত