মহিষের দই বিক্রিতে বছরে আয় ৫০ কোটি টাকা
১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ এএম
লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগরে ইলিশের পর ঐতিহ্যবাহী আরো একটি খাবার হলো কাঁচা দুধের তৈরি মহিষের টক দই। সুস্বাদু ও জনপ্রিয়তায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর বেশ সুনাম রয়েছে। যুগ যুগ ধরে সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সবার পছন্দের তালিকায় অন্যতম একটি খাবার এই দই। বর্তমানে বিভিন্ন কারণে উৎপাদন কম হলেও দেশব্যাপী এ দইয়ের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।
স্থানীয়ভাবে পরিচিত মহিষের দই। দৈনিক ৮-১০ টনেরও বেশি উৎপাদিত হয় এ অঞ্চল থেকে। আর বছরে প্রায় আড়াই হাজার টন মহিষের দই এ জেলায় বেচাকেনা হয়। দই উৎপাদনের জন্য প্রায় তিন হাজার টন দুধ প্রয়োজন হয়। জেলার পশ্চিম ও দক্ষিণের মেঘনা নদীর দ্বীপ চরগুলোতে মহিষের বাথান (চারণভূমি) থেকে এ দুধ আসে। বিশেষ করে রামগতি উপজেলা বয়ারচর, চর গজারিয়া, চরআবদুল্লাহ ও কমলনগর উপজেলার চর শামছুদ্দিন এবং লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাটসহ বিভিন্ন চর এলাকার বাথান থেকে দুধ সংগ্রহ করা হয়। উৎপাদিত এ দই বিক্রি করে বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকা আয় হয় সংশ্লিষ্টদের। দই বিক্রেতা, মহিষের বাথান মালিক ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
কথা হয় চাকরিজীবী ইয়াকুব আলীর ও ব্যবসায়ী ফারুক আহমেদ এবং জামাল উদ্দিনের সঙ্গে। তারা জানান, সুযোগ পেলেই তারা মহিষের দই খাওয়ার জন্য লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ছুটে যান। শুধু নিজেরাই নন, বাড়ির জন্যও দই সঙ্গে করে নিয়ে আসেন তারা। বেশ কয়েকজন দই বিক্রেতার সঙ্গে মাঝে মধ্যেই কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে। এ জেলায় দিনে প্রায় ৮-১০ টনের মত দই বিক্রি হয়। ২০০-২৫০ টাকা কেজি ধরে দিনে কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকার দই বিক্রি করে থাকেন দোকানিরা। এতে বছরে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার দই বিক্রি হয় এ জেলাতেই ।
দই তৈরির বিষয়ে তারা জানান, চর থেকে দুধ আনার পর কাঁচা দুধ সরাসরি ১ থেকে ২ কেজি ধারণকৃত এক ধরনের পাত্রে ঢালা হয়। পাত্রগুলোকে টালি বলা হয়। টালিতে কাঁচা দুধ রাখার ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর দুধ জমে দধি হয়। প্রতি লিটার দুধে ৯৫০ গ্রাম দধি হয়। এ দধি ফ্রিজিং ছাড়া এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে। দধি বসানোর টালিগুলো পটুয়াখালী, বরগুনা ও পিরোজপুর থেকে আনা হয়। বর্তমানে সাইজ ভেদে প্রতিটি টালির দাম ১৬ থেকে ২০ টাকা। মহিষা দধি থেকে মাখন, ঘি ও ঘোল বানানো গেলেও লক্ষ্মীপুরে তা তৈরি করা হয় না।
দুধ বিক্রেতা মনির মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মহিষের দুধের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। কিন্তু আগের তুলনায় এখন মহিষের সংখ্যা অনেক কম। মহিষ পালনে মানুষ এখন কম আগ্রহ দেখাচ্ছে। যত বেশি মহিষ পালন হবে, দুধও তত বেশি উৎপাদিত হবে।
রামগতি বাজারের দই বিক্রেতা নুরুজ্জামান প্রায় ৩২ বছর এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি জানান, বিয়ের অনুষ্ঠানে দই বাধ্যতামূলক। খাবারের শেষ মুহূর্তে ওয়ানটাইম কাপে ২৫০ গ্রাম দই থাকবে। অনেকেই পাতিল হিসেবেও আমাদেরকে অর্ডার করেন। এসব অনুষ্ঠানে গরুর দই অর্ডার খুব কম পাওয়া যায়। তিনি দৈনিক ২০০ থেকে ২৫০ কেজি দই বিক্রি করেন। দুধের দামের সঙ্গে দইয়ের দাম কম-বেশি হয়।
বাথানের মালিক রামগতি উপজেলার শাখাওয়াত মিয়া জানান, চরাঞ্চলে মানুষের বসবাস বেড়েছে। এ ছাড়া চাষাবাদও বেড়েছে। এতে মহিষের চারণভূমি কমেছে। এ জন্য অনেকেই মহিষ পালন ছেড়ে দিচ্ছেন।
রামগতি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত মহিষ পালনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। এ অঞ্চলটি গরু ও মহিষ পালনের উপযুক্ত স্থান। এখানে বিশাল বিশাল চর রয়েছে। গরু ও মহিষ চাষিদের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা সবসময় থাকবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
এশিয়ার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট বসবে পাকিস্তানের করাচীতে
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার -২ রাজুর বিরুদ্ধে কুলাউড়া উপজলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ !
বর্তমান সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর : শেখ হাসিনা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজের চারদিন পর বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে : রাষ্ট্রপতি
বন্যার পর এবার ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়লো দুবাই
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুটবল খেলা শেষে হামলায় যুবক নিহত
আরও কমলো স্বর্ণের দাম
ইপিজেড ও বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে দক্ষিণ কোরীয় বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ
থাই ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করেছিল তিন বিদেশি শক্তি: জিএম কাদের
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে হবে: ধর্মমন্ত্রী
বৃত্তি পেল সেরা ১৫ জন স্কুল ক্রিকেটার
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক বাঁধা দূর করতে ভুটান ও বাংলাদেশ উভয় পক্ষ সম্মত
ইয়েমেন উপকূলে জাহাজে আবারো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
বাবরের ব্যাটে পাকিস্তানের লড়াইয়ের পুঁজি
বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল উন্নয়ন দেখতে পায় না: ওবায়দুল কাদের
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড যে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি স্বাক্ষর হলো
একটি ছাগল দিয়ে ছেলে এবং মেয়ের আকিকা করা প্রসঙ্গে।
নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে সরকার নিরন্তর কাজ করছে : মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী