তীব্র গ্যাস সংকট পরিত্রাণ মিলছে না শিগগির
২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১৬ এএম | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১৬ এএম
তীব্র গ্যাস সংকটে পরেছে রাজধানীর বেশ কিছু এলাকা। এ কারণে ব্যাপক ভোগান্তিতে পরেছেন ঢাকা অনেক বাসিন্দা। সারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জানা গেছে, রান্নার গ্যাস ছাড়াও সিএনজি, শিল্পকারখানা এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে দেশেই তীব্র গ্যাস সংকট চলছে। সংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শিগগির এই গ্যাস সংকট কেটে যাওয়ার কোন ইঙ্গিত পাচ্ছেন না তারা। ফলে ধৈর্য ধরা ছাড়া আর কোন সমাধান পথ এখনই নেই। তবে শিগগিরই কেটে যাবে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই সব এলাকায় ভোর থেকেই গ্যাস থাকছে না। ফলে রান্না করতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পরছেন বাসিন্দারা। সারাদিন গ্যাস না থাকায় কোন মতে সেন্ধ করে খাবার খেতে হচ্ছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের। এলাকাভিত্তিক গ্যাসের সমস্যার মধ্যে রামপুরা, হাতিরঝিল, মালিবাগ, বাসাবো, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মুগদা, মান্ডা, মানিকনগর, জুরাইন, কামরাঙ্গীচর এলাকায় গ্যাস সংকট নিয়মিত সমস্যা ছিল। সম্প্রতি মগবাজার, ইস্কাটন, গুলশানসহ অনেক অভিজাত এলাকাতেও গ্যাসের সংকট তীব্র হয়েছে। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। একই অবস্থা ধানমন্ডি, মিরপুর, মহাখালী, নর্দ্দা, কুড়িল, বাড্ডা, এলাকাতেও।
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাস সংকটের পেছনে দেশীয় উৎপাদন কমে যাওয়া একটা কারণ। পাশাপাশি এলএনজি আমদানির পরিমাণও কমেছে। খুব নিকট ভবিষ্যতে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথও দেখা যাচ্ছে না। আগামী ফেব্রুয়ারিতে গ্যাস সরবরাহের উন্নতি হবে। তখন গ্যাসের চাহিদা আরো বাড়তে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্যাস সংকটের কারণ নিজস্ব জ্বালানির উৎপাদন কমেছে আর আমদানি নির্ভরতা বেড়েছে। ডলার সংকটের কারণে অতিরিক্ত আমদানি করাও সম্ভব হচ্ছে না। আগামীতে জ্বালানি সংকট মোকাবেলা এবং আমদানি করে চাহিদা পূরণ করাই হবে বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্লেষকরা বলছেন, তাৎক্ষণিক সংকট মেটাতে জ্বালানি আমদানি করা ছাড়া উপায় নেই তবে সেটিও নির্ভর করছে ডলারের মজুদ, বিশ্ববাজারে দাম এবং দেশের আর্থিক সক্ষমতার ওপর। বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। যার ফলে কিছু জায়গায় উৎপাদন বাড়লেও কিন্তু অন্য জায়গায় কমে গিয়ে নেট উৎপাদন কমে গেছে। আমদানির ক্ষেত্রেও একটা স্থবিরতার তৈরী হয়েছে। যার স্বল্পকালীন সমাধান হবে না। বর্তমান এই সংকট ডলারের সংকটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ফলে খুব শীগগীর এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না এটা বলাই যায়।
পেট্রোবাংলার তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদ্যুৎ, শিল্প, সার গৃহস্থলি, সিএনজিসহ সাতটি সেক্টরে মোট চাহিদা দাঁড়াবে ৩,৭১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। পেট্রোবাংলার হিসেবেই বর্তমানে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাসের ঘাটতি আছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গ্যাসের ঘাটতি আরো বেশি যা দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের মতো।
বিশেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশে নিজস্ব গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়ানোর কার্যকর পদক্ষেপ না থাকা এবং আমদানি নির্ভরতা বৃদ্ধির কারণেই সংকটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা হয়েছে কিন্তু নিজস্ব কয়লা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের ক্ষেত্রে ভারত ও মিয়ানমার ভালোভাবে করলেও বাংলাদেশের সমুদ্রে গ্যাস উত্তোলন হয়নি, অনুসন্ধানও হয়নি। গ্যাসের সংকট সহসা কাটবে না।
সম্প্রতি প্রতিমন্ত্রী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, গ্যাস আমদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বেশ কিছুদিন ধরে গ্যাসের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। আমরা আশা করছি এ অসুবিধা খুব সাময়িক। প্রচ- শীতের কারণেও গ্যাসের চাপ কিছুটা কমে গেছে। মেরামতে থাকা এলএনজির দ্বিতীয় টার্মিনালটি দু-এক দিনের মধ্যে চালু হয়ে যাবে। তখন গ্রিডে দৈনিক ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে।
বিবিসি বাংলাকে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জ্বালানি সংকট সমাধানের জন্য সরকার বহুমুখী জ্বালানি ব্যবহার করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে জোর তৎপরতা আছে। এ বছরই সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে। এছাড়া পরিবেশ ও কৃষি জমি রক্ষা করে নিজস্ব কয়লা উত্তোলনের জন্যেও পদক্ষেপ নেয়ার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। তিনি বলেন, আমাদের স্ট্রাকচার যেগুলো আছে সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করতেছি। আমাদের আরো ড্রিলিং করতে হবে। এবং তার জন্য অর্থযোগানও দিতে হবে। অর্থটাও কিন্তু একটা বড় বিষয়।
তিনি বলেন, এবার ৪৬টা কূপ খনন করবো দুই বছরে। আরো একশ কূপ খনন করবো পঁচিশ সালের মধ্যে। তাতে আমি আশাবাদী যে দুই বছরের মধ্যে আমরা আরো ৫শ মিলিয়ন যোগ করবো। কিন্তু ডিমান্ডতো আরো বেশি। দেড় হাজার এমএমসিএফ। গ্যাস অনুসন্ধান এবং জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয় আশ্বাস দিচ্ছে ২০২৬ সাল থেকে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে হত্যা মামলায় আরও একজনসহ গ্রেপ্তার ৬
সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন
ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান
জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত
সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু
আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক
যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার
গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান
সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’
বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল
১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরীর ইন্তেকাল