নতুন কারিকুলামে যৌন শিক্ষাসহ এমন বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে যা আমাদের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জন্য ভয়ানক। শিক্ষা কারিকুলামে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের নীল-নকশা করা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডারের নামে সমকামিতাকে প্রমোট করার দূরভিসন্ধি এখনই রুখে দিতে না পারলে দেশ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পতিত হবে। পশ্চিমা গোষ্ঠী ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে তাদের পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত রীতি নীতি এদেশে তাদের দোসরদের দিয়ে আমদানি করাচ্ছে। শিক্ষা কারিকুলামে ইসলাম বিদ্বেষী ও পশ্চিমা পচা দুর্গন্ধযুক্ত অধ্যায় বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।

ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম ও সেক্রেটারী ডা. শহিদুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, নতুন কারিকুলামে যৌন শিক্ষাসহ এমন বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে যা আমাদের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জন্য ভয়ানক। শিক্ষা কারিকুলামে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের নীল-নকশা করা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডারের নামে সমকামিতাকে প্রমোট করার দূরভিসন্ধি এখনই রুখে দিতে না পারলে দেশ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পতিত হবে। পশ্চিমা গোষ্ঠী ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে তাদের পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত রীতি নীতি এদেশে তাদের দোসরদের দিয়ে আমদানি করাচ্ছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত সমকামিকে এদেশে প্রমোট করার দায়িত্ব নিয়েছে। সমকামিতাকে বৈধতা দিয়ে জাতিকে পশু বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র সম্মিলতিভাবে রুখে দিতে হবে। পশু বানানোর ফর্মুলা এদেশ বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না।

গতকাল বুধবার এক যুক্ত বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে ট্রান্সজেন্ডার বাস্তবায়নের হোতাদেরকে এদেশ থেকে রুখে দিতে হবে। নেতৃদ্বয় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসিফ মাহতাবকে চাকুরীচ্যুত করে সমকামি গোষ্ঠীর কপাল পুড়ছে। যদি অবিলম্বে তাকে পুনর্বহাল না করা হয়, তাহলে ব্র্যাক এর সকল প্রতিষ্ঠান বয়কট আন্দোলন শুরু করা হবে। তখন তাদের অস্তিত্ব এদশে থাকবে না। এর আগে আড়ং দাঁড়ি রাখার কারণে একজনকে চাকুরীচ্যুত করেছিলো। এদেশের মুসলমানরা তা ভুলে যায়নি।

নেতৃদ্বয় সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ৭ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে লিঙ্গ বিকৃতি (ট্রান্সজেন্ডার) মতবাদ শিখিয়ে কি অর্জন করতে চায় দেশ? এই মতবাদ পরিবার, মূল্যবোধ ও সমাজ বিধ্বংসী। যে মতবাদের বিরুদ্ধে শঙ্কিত হয়ে পশ্চিমা বিশ্বের পিতামাতারা রাস্তায় নেমেছেন, সেখানে বাংলাদেশের মত সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই পরিবার বিধংসী মতবাদ শিখিয়ে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে সেই বিকৃত মতবাদকে পাঠাপুস্তক থেকে বাদ দিতে হবে।

জাতীয় তাফসীর পরিষদ বাংলাদেশ :
ট্রান্সজেন্ডারের নামে সমকামিতাকে প্রমোট করার ব্র্যাকের চক্রান্ত রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় তাফসীর পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব হাফেজ মাওলানা নাযীর আহমদ শিবলী, মুফতী ওমর ফারুক যুক্তিবাদী। তারা বলেন, শিক্ষা কারিকুলামে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের নীল-নকশা করা হয়েছে।

ব্র্যাক মুসলমানদের ঈমান ও আমল ধ্বংস করছে। সামাজিক বন্ধন ধ্বংস করে দেশকে ভয়াবহ সঙ্কটে ফেলে দিবে। একটি জরিপে দেখা গেছে আমেরিকার ৪০ ভাগ মানুষ সমকামিতায় আসক্ত। ফলে পারিবারিক বন্ধ ছিন্নভিন্ন হয়ে অশান্তির দাবানলে ঝলছে।

ইসলামিক মুভমেন্ট বাংলাদেশ : ইসলামিক মুভমেন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খায়রুল আহসান এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা প্রশাসনে অযোগ্য এবং নাস্তিক কর্মকর্তারা ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা সুযোগ মতো এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিপথে পরিচালনা করার হীন উদ্দেশ্যে এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনৈসলামিক কার্যকলাপ শিক্ষাদান করতে কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, তারা সবসময়ই সুযোগ খুজতে থাকে কিভাবে পাঠ্যপুস্তকে অপ্রয়োজনীয় এবং ইসলাম বিরোধী অধ্যায় ঢুকিয়ে দেয়া যায়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিকট পুরো শিক্ষাব্যবস্থায় সকল ক্লাসের পাঠ্যপুস্তকে ইসলামী শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে এবং অযোগ্য, নাস্তিক কর্মকর্তাদের যথাযোগ শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানান। তিনি বলেন, দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে এটি বাতিলের কোনো বিকল্প নেই। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে চাকুরীচ্যুত করে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে ব্র্যাক কর্তৃপক্ষ।অবিলম্বে আসিফ মাহতাবের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে উঠলে ব্র্যাকের নাম-নিশানা মুছে যাবে।

ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ : ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদ ও সেক্রেটারী জেনারেল বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম সংশোধন করতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাতিল করে দেশের অধিকাংশ মানুষের চিন্তা চেতনা অনুযায়ি প্রণয়ন করতে হবে। তারা বলেন, নতুন শিক্ষা কারিকুলাম শিক্ষার্থীদের ভিন্ন সংস্কৃতিতে ধাবিত করছে এতে কোন সন্দেহ নেই। এ জন্য দেশের অধিকাংশ অভিভাবক তাদের আদরের সন্তানদের নিয়ে খুবই চিন্তিত।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজ : বিরানব্বই ভাগ মুসলিম জনগোষ্ঠীর এই দেশে কোমলমতি শিশুদেরকে ধর্ম ও নীতিনৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষা কারিকুলাম এর মাধ্যমে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের ঘৃণ্য চক্রান্তে লিপ্ত স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহলকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে তীব্র গণ-আন্দোলনের ডাক দেয়ার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন । বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির প্রচার ও প্রকাশনা সচিব আবদুল্লাহ আল মাসউদ খান। দিনব্যাপী গতকাল ঢাকা মহানগরের বাছাইকৃত দায়িত্বশীলদের এক প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ট্রান্সজেন্ডার এর মতো ঘৃণ্য কুরুচিপূর্ণ বিষয় সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করা হয়েছে। করেছে। এদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা সরকারের দায়িত্ব। এতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজের সভাপতি এহতেশামুল হক সাখী বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে দেশের ছাত্র জনতা আর চুপ করে থাকবে না। যেকোনো চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিতে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ঢাকা মহানগর : নতুন কারিকুলামে অসঙ্গতি দূরীকরণ, পাঠ্যপুস্তক সংশোধন, মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রেখে স্বতন্ত্র কারিকুলাম প্রণয়ন ও ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে স্বপদে বহালের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। সংগঠনের মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা এ বি এম জাকারিয়া’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মানববন্ধন কর্মসূচি তে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। বিশেষ হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম সভাপতি অধ্যাপক নাসির উদ্দীন খান। এছাড়া ইসলাম বিদ্বেষী শিক্ষা কারিকুলাম সংশোধন ও ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে চাকুরিচ্যুতের প্রতিবাদে আগামীকাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে ইসলামী আন্দোলনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।