নামে বেনামে ছদ্মনামে সবাই আ.লীগের লোক: নতুন সংসদ প্রসঙ্গে রিজভী
৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৩ এএম
নতুন সংসদ জনগণের নয়, আমরা আর মামুদের বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, নামে, বেনামে, ছদ্মনামে সবাই আওয়ামী লীগের লোক। শেখ হাসিনাই এদের অন্নদাত্রী। আওয়ামী লীগ এককভাবেই লুটেছে ২২৩টি আসন। ৬২ জন স্বতন্ত্র ডামি এমপির ৫৮ জনই আওয়ামী লীগের নেতা। সেই হিসাবে, ২৯৯ জনের মধ্যে ২৮০ জনই মূলত আওয়ামী লীগ নেতা। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি শেখ হাসিনার আশীর্বাদের বিরোধী দল। এদেরও লালন-পালন করেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা দয়া করে ১১ আসন ছেড়ে দিয়েছেন তাদের জন্য। আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদ, নাৎসীবাদ ও মধ্যযুগের ভাবধারায় পুষ্ট একটি রাজনৈতিক দল। অবৈধ আওয়ামী সরকার এক সর্বনাশা বিভিষিকা সঞ্চার করে নতুন নতুন অশুভ পরিকল্পনার মাধ্যমে জনগণকে বঞ্চিত করে ক্ষমতা ধরে রাখছে। এবারও তারা সাড়ে বারো কোটি ভোটারদের বঞ্চিত করার মনুষ্যত্বহীন চক্রান্ত করেছে। গতকাল মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের ভোট বর্জিত ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় বাকশালীয় সংসদের কলংকিত যাত্রা শুরু হচ্ছে। পৃথিবীতে অদ্ভুত সরকারের অভিনব কিসিমের অদ্ভুত এক এই সংসদের সকল সদস্যই এক দলের। বিরোধীদল কারা হবে, তারা কে কি বলবে, করবে, স্বতন্ত্র লীগের ভূমিকা কি হবে সবকিছুই পুতুল খেলার মতো সুতার গোড়া ধরে রাখবেন একজন। ডামি নির্বাচনের পর একটি অবৈধ সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় ডামি শপথে অবৈধভাবে জন্ম গ্রহণ করা এই তথাকথিত দ্বাদশ সংসদ বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্ব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে বরাবরই গণতন্ত্রের শত্রু সেটির কুৎসিত স্বরুপ এবারও উন্মোচিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন অপরাধপ্রবণ একটি রাজনৈতিক দল। জনগণের ইচ্ছ-অনিচ্ছা এদের কাছে মূল্যহীন। আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক দল যারা মানবিক পরিবেশের মূল থেকে উৎসারিত নয়। এজন্য বহু মত ও পথকে তারা সহ্য করতে পারে না। সেজন্য সুষ্ঠু নির্বাচনকে আড়াল করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে।
রিজভী বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের টিকে থাকার প্রধান ভিত্তি জনসমর্থন। আওয়ামী লীগের জনভিত্তি ধ্বসে গেছে, সেই কারণে তাদের নেতারা আবোল-তাবোল কথা বলা। ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদ সাহেবদের কথাবার্তার কোন মূল্য নেই জনগণের কাছে। হিটলার-মুসোলিনির অনুসারীরা যেভাবে কথা বলতো এরাও সেভাবে কথা বলছে।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ছিল তারেক রহমানের ‘লিফলেট’ বনাম শেখ হাসিনার ‘ডামি ব্যালটে’র লড়াই। দেশের ৯৫ ভাগেরও বেশি ভোটার শেখ হাসিনার কথিত ‘ব্যালট’ বর্জন করে ‘লিফলেট’ গ্রহণ করেছে। এটি গণতন্ত্রকামী জনগণের বিজয়। এটি গণতন্ত্রের পক্ষের ৬৩টি রাজনৈতিক দলের বিজয়। গণতন্ত্রকামী জনগণের বিজয় ঠেকাতে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এরা সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে নির্বিকার ও নিবিষ্টচিত্তে। হিংসা, হানাহানি আর অশান্তি মূল আদর্শ হিসেবে গণ্য করে আওয়ামী নেতারা।
এদিকে বিকেলে অপর এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা ও নিপীড়ণ-নির্যাতনের অভিযোগ করে রিজভী বলেন, অবৈধ সরকার বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশকে লেলিয়ে দিয়েছে। উত্তরায় কোন উস্কানী ছাড়াই বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে এবং ধাক্কা দিয়ে জিপে উঠিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। মঈন খানের মতো ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের একজন স্বনামধন্য অধ্যাপক, বিজ্ঞানী ও কীর্তিমান মানুষকে পুলিশ ধাক্কা দিয়ে জীপে উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং নাজেহাল করে। পরে তাঁকে ছেড়ে দিলেও তাঁর সাথে আটক হওয়া অন্য নেতাকর্মীদের এখনও ছেড়ে দেয়নি পুলিশ।
তিনি বলেন, সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি কালো পতাকা মিছিলের ডাক দিয়েছে, আসলে বিএনপির উচিৎ দলীয় অফিসকে কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে ফেলা। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিশ্বের কোথাও পূর্ণ গণতন্ত্র নেই। তিনি আরও বলেছেন-বিএনপি বলে যে, বিএনপির ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে জেলে রাখা হয়েছে, কিন্তু বিএনপির দেয়া এই তথ্য সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা ও বানোয়াট। ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জোর করে বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার-নির্যাতন করে বন্দুকের নলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের মাধ্যমে তিনি এখন আরও বেসামাল কথাবার্তা বলতে শুরু করেছেন। নিজ দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্যেই দেশবাসী ও বিশ^বাসীর কাছে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের মিথ্যাচার উন্মোচিত হয়ে গেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ এখনও ২০ হাজারের বেশী নেতাকর্মী কারান্তরীণ রয়েছেন। এখনও দেশজুড়ে বেপরোয়া গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। বিশে^র কোথাও পূর্ণ গণতন্ত্র নেই বলে ওবায়দুল কাদের সাহেব কি বোঝাতে চেয়েছেন? তিনি চাপাবাজী করে স্বৈরতন্ত্র ও বাকশালকে গণতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন না। অদ্ভুত সরকার ও অদ্ভুত সংসদকে জায়েজ করতে পারবেন না। বাংলাদেশের জনগণ তাদেরকে শুধু প্রত্যাখানই করেনি, লালকার্ড দেখিয়ে দিয়েছে।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
তোফাজ্জলের জানাজায় মানুষের ঢল, দাফন হলো বাবা-মা ও ভাইয়ের কবরের পাশে
দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
গণপিটুনিতে হত্যা: ঢালাওভাবে ছাত্রদের বিজয়কে খাটো করতে আওয়ামী মিডিয়ার আস্ফালন, সমালোচনার ঝড়
সাবেক এমপি ইয়াকুবসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে
ভারতকে ৩৭৬ রানে গুটিয়ে দিল বাংলাদেশ, হাসানের ৫
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরো ১৫০ অনিয়মিত বাংলাদেশি
দোয়ারাবাজার সীমান্তে মহিষসহ মাছের চালান জব্ধ
সিলেটে ১৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার, নারী গ্রেফতার
আশ্বিনকেও ফেরালেন তাসকিন
কক্সবাজার পাহাড়তলীতে অনৈতিক কাজে অতিষ্ঠ মানুষ, বাধা দেয়ায় বাসার মালিকের উপর হামলা
অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির খসড়া পাঠিয়েছে ইইউ
তাসকিনের জোড়া আঘাত, লিটনের রেকর্ড
ডিবির আলোচিত ডিসি মশিউর গ্রেপ্তার
১৯৯ রানের জুটি ভাঙলেন তাসকিন
গণপিটুনিতে দুই মাসে ৩৩ জনের মৃত্যু
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় প্রশ্ন তুললেন জয়
মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশন খুলছে আজ
বিচিত্রার সম্পাদক দেওয়ান হাবিব আর নেই
জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা শামীম হত্যা : ৮ শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ