জাতিকে টিকিয়ে রাখতে ইসলামী শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
জাতি সত্তার বিকাশে শিক্ষাব্যবস্থার ভূমিকা শীর্ষক এক সেমিনারে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ইসলামী চিন্তাবিদগণ বলেন, এদেশের মানুষের তাহজীব তমাদ্দুন ও মুসলিম মূল্যবোধের আলোকে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় একজন মুসলমানের সন্তানের কুরআন বুঝার জানার সুযোগ কম। ৯০ ভাগ মুসলমানদের দেশে কুরআন সুন্নাহর আলোকে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। পাঠ্যবই থেকে ইসলাম বিরোধী বিষয়গুলো বাদ দিতে হবে। ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। জাতিকে টিকিয়ে রাখতে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর কোনো বিকল্প নেই। দেশের মানুষের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের আলোকে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে।
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় মানুষকে অনৈতিক হিসাবে গড়তে সহায়ক হবে। মক্কার বর্বর সমাজকে হযরত মুহাম্মদ (সা.) কুরআনের শিক্ষা দিয়েই আদর্শ সমাজ তৈরি করেছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ততোদিন টিকবে যতোদিন ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু থাকবে। এটা যারা বিশ্বাস করে না তারা স্বাধীনতার শত্রু। বর্তমানে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে তা মুসলিম জাতিসত্ত্বাকে ধ্বংস করার চক্রান্ত। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে আগামী দিনে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
গতকাল বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ইসলামী গবেষণা ও উচ্চ শিক্ষা একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে বক্তাগণ এইসব কথা বলেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মো. আব্দুর রউফ। মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কোরবান আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. আ ছ ম তরিকুল ইসলাম। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট ইসলামী শিক্ষাবিদ প্রিন্সিপাল মাওলানা যাইনুল আবেদীন, দৈনিক নয়াদিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারের ড. সামিউল হক ফারুকী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, আইনজীবি আশরাফুল হক, ড. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার, মাওলানা ফখরুদ্দীন আহমদ, ড. মোহাম্মদ জাকির হোসাইন আল আজহারী, মুফতি নুরুজ্জামান নোমানী, প্রিন্সিপাল মোশাররফ হোসাইন, মাওলানা হাফেজ কারী জালাল উদ্দীন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি মো. আব্দুর রউফ বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা মধ্যে বিভিন্ন চেতনা এনে ঝামেলা সৃষ্টি করা হয়েছে। মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থা হবে আল কুরআন ও রাসুল (সা.) এর সুন্নাহর আলোকে। মানুষকে মানুষ হিসেবে চিন্তা করার শক্তি আল কুরআন শিখিয়েছে। আল্লাহর কর্তৃত্বের উপরে আর কোনো শক্তি নাই। মানুষের অস্তিত্ব জানতে আল্লাহকে জানতে হবে। আর এই জ্ঞান অর্জন করতে হবে আল কুরআন থেকে। শিক্ষা সার্বজনীন এটাকে খন্ডিত করা যাবে না। শিক্ষা ব্যবস্থা হতে হবে অবশ্যই ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে। সারা বিশ্ব এগিয়ে গেছে শিক্ষা নিয়ে। চীন শিক্ষা নিয়েই সারা বিশ্বে ব্যবসা করেছে। বে অফ বেঙ্গল দেখার জন্য আমাদের শিক্ষিত জনবল নাই। তাই আমাদেরকেও এগিয়ে যেতে হলে আল্লাহ উপরে ভরসা করে শিক্ষা দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. প্রফেসর কোরবান আলী বলেন, জাতিসত্তা নিয়ে স্বাধীনতার পর জাতিকে দুই ভাগে বিভক্ত করে। সার্বজনীন ভাবে ইসলামী শিক্ষাই পারে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে। ২০১০ সালে ষড়যন্ত্র করে জাতিসত্তা বিরোধী শিক্ষা ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানার কোনো সুযোগ নেই। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় একজন মুসলমানের সন্তানের কুরআন ও হাদীস জানার সুযোগ নেই। এজন্য আমাদের বিশ্বাসের আলোকে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে।
বিশিষ্ট ইসলামী শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন বলেন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে আদর্শ নাগরিক তৈরি করা সম্ভব নয়। ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বিকল্প পাঠ্যবই হিসেবে ইসলামের আলোকে বই প্রকাশ করতে হবে। এই জমিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি। আমাদের মত-পার্থক্য ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রবন্ধকার প্রফেসর ড. আ ছ ম তরিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা যদি জাতির আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে তাহলে সে জাতি সুন্দরভাবে পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারে। সুতরাং শিক্ষা ব্যবস্থার ওপরই জাতির অস্তিত্ব নির্ভর করে। প্রতিযোগিতাপূর্ণ এ পৃথিবীতে যাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যত চৌকস, তারা তত উন্নত। তারা তত অগ্রসর, তারা তত প্রতিষ্ঠিত। এজন্য তিনি কতিপয় প্রস্তাবনা পেশ করেন। প্রস্তাবসমূহ হচ্ছে, ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক সকল কিছু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বাদ দিতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রত্যেকেই যাতে তার ধর্মের প্রাথমিক জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পায় তার পথ অবারিত রাখতে হবে। ইসলামী শিক্ষাকে প্রচলিত শিক্ষার প্রতিপক্ষ মনে না করে উভয়ের মধ্যে সমন্বয় করে শিক্ষাব্যবস্থাকে জাতি সত্তা উন্নয়নে ভূমিকা রাখার উপযোগী করে ঢেলে সাজাতে হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রাঙামাটিতে সেনা, বিজিবি ও পুলিশের টহল, পরিস্থিতি শান্ত
পরমাণু দূষিত পানি নিয়ে চীন ও জাপানের কিছু ঐকমত্য
ঝিকরগাছায় বিএনপি নেতা খায়রুজ্জামান মিনুসহ ২১ নেতাকর্মী বহিষ্কার
হিজবুল্লাহর ভয়ে ইসরাইলিদের আশ্রয়কেন্দ্রের কাছে থাকার নির্দেশ
ভারতের ঘুম হারাম করে পাকিস্তানকে ভয়ঙ্কর হেলিকপ্টার দিচ্ছে চীন
পাকিস্তানে সেনানিবাসে আত্মঘাতি হামলা, সেনাসহ নিহত ১৮
জুলাই বিপ্লবে শহিদের সংখ্যা ১৪২৩, আহত ২২ হাজার
নড়াইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জুয়েল গ্রেফতার
বিচারবিভাগ নিয়ে আজ রোডম্যাপ দেবেন প্রধান বিচারপতি
নেছারাবাদে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার নিহতদের স্মরণে বিএনপির আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল
নেপালের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চায় চীন: শি জিনপিং
পতিত স্বৈরাচারের দোষর মিডিয়া আর স্বার্থান্বেষী মহল পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে
পাকিস্তান-ইংল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টও মুলতানে
৭০টির বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা সিআইআইই-তে অংশ নেবে
সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে আজ প্রতিনিধিদল যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে
৩ হাজার কয়েদির সাজা মওকুফ অথবা হ্রাস করতে যাচ্ছে ইরান
অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর শ্রীলংকায় প্রথম নির্বাচন আজ
জুনে ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদন ১৭ শতাংশ কমেছে
রাঙামাটিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট