ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফের পীর ও বাংলাদেশ আঞ্জুমান খাদিমুল ইসলামের আমীর আলহাজ্ব মাওলানা মুফতী শাহসুফী সৈয়দ ছালেহ আহমাদ মামুন আল হোসাইনী সাহেব বলেছেন, ভারতবর্ষে তথা উপমহাদেশে ইসলাম এসেছে এবং প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অলি-আউলিয়াদের মাধ্যমে। তাই ইসলাম প্রচার ও প্রসারে অলি-আউলিয়াদের অবদান অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। অলি-আউলিয়াদের পথ ও মত অনুস্বরণেই নবীর প্রেম-ভালোবাসা অর্জন করা সম্ভব।

তিনি বলেন, আল্লাহকে পাওয়ার জন্য নবীজির মোহাব্বত পূর্বশর্ত। এশক রাসূল ছাড়া এশকে এলাহী হাছেল হবে না। পৃথিবীতে স্বার্থক, শান্তিময় সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করে গেছেন একমাত্র নবী-রাসূলগণ। সকল নবী-রাসূলগণ এই কাজ করেছেন স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে। সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) আচরণই সর্বকালের সর্বোন্নত ও সর্বশ্রেষ্ঠ। পবিত্র কোরআনে তাঁর আচরণের প্রশংসা করেছেন স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হলো- বর্তমান বিশ্বে শান্তির ধর্ম ইসলামের সার্বজনীন ও শাশ্বত রূপকে বিকৃত করে ইসলামের নামে যা করা হচ্ছে এতে করে ইসলামের স্বার্থক বাহক প্রচারক ও প্রকাশক নবী (সা.) এর জীবন জিন্দেগীকে প্রশ্নের মুখোমুখি করা হচ্ছে। আল্লাহ পাকের নির্দেশে প্রিয় নবী (সা.) সব সময়ই মন্দ চিন্তা, কথা ও কাজগুলোকে উত্তম চিন্তা, উত্তম কথা ও উত্তম কাজ দ্বারা সংশোধনে তৎপর থেকেছেন।

পীর সাহেব আরো বলেন, আল্লাহ পাক ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করে দিয়েছেন। হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম মনে করে জিন্দেগী পরিচালনা করতে হবে। আমাদের ঈমান আকিদাকে সহীহ শুদ্ধ করতে হবে। বেশি বেশি দরুদ সালাম পড়তে হবে এবং বেশি বেশি করে নেক আমল করতে হবে। আল্লাহকে ভয় করার মতো ভয় করতে হবে। জীবন জিন্দেগী আল্লাহর রাহে পরিচালিত করতে হবে।

তিনি গতকাল শনিবার ফান্দাউক দরবার শরীফের কেন্দ্রীয় বার্ষিক ইছালে সাওয়াব মাহফিল উপলক্ষে পীরে কামেলে মোকাম্মেল আলহাজ্ব হযরত শাহসুফী সৈয়দ আব্দুস ছাত্তার নকশেবন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রহ.) ও পীরে কামেলে মোকাম্মেল আলহাজ্ব শাহসুফী সৈয়দ নাছিরুল হক মাছুম আল-কাদরী, চিশতি নকশেবন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রহ.) দ্বয়ের কেন্দ্রীয় ইছালে সাওয়াব মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বয়ান, তালীম ও তারবিয়াত প্রদানকালে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফ কর্তৃক পরিচালিত ও বর্তমান পীর ছাহেবের প্রতিষ্ঠিত সংগঠন বাংলাদেশ আঞ্জুমানে যুব খাদিমুল ইসলাম -এর আগামী দুই বছরের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন, উক্ত কমিটির সভাপতি হিসাবে মনোনীত করেন- পীরজাদা মাওলানা মুফতি সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক আল হোসাইনী, সহ সভাপতি মুফতি সৈয়দ সালমান ফার্সী, সাধারণ সম্পাদক মুফাস্সিসে কোরআন মাওলানা হুমায়ূন কবির, যুগ্ম সেক্রেটারি আব্দুল কুদ্দুস পলাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ রায়হানু ইসলাম, প্রচার সম্পাদক রায়হান আহমেদ সম্রাটসহ ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন।

বিশিষ্ট পীর মশায়েখ ও উলামায়ে কেরামদের মধ্যে ওয়াজ করেন- মৌকারা দরবার শরীফের পীর আলহাজ্ব মাওলানা নেছার উদ্দিন ওয়ালী উল্লাহ, ড. মাওলানা সাইফুল আজম বাবর আল-আজহারী, মাওলানা উসমান গনি ছালেহী, আলহাজ্ব মাওলানা নেছার আহমদ চাঁদপুরী, আল্লামা আবি আব্দুল্লাহ আইনুল হুদা, হাফেজ মাওলানা নেছার উদ্দিন ফেনী প্রমুখ।

মাহফিলের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও তত্বাবধানে ছিলেন দরবার শরীফের ২য় সাহেব জাদা পীরজাদা আলহাজ্ব মাওলানা মুফতী শাহসুফী সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমাদ আল হোসাইনী, পীরজাদা আলহাজ্ব মাওলানা মুফতী সৈয়দ আবু বকর ছিদ্দিক আল হোসাইনী ও পীরজাদা আলহাজ্ব মাওলানা শাহসুফী সৈয়দ বাকের মোস্তফা আল হোসাইনী। পরে পীর সাহেব দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ঈমান-ইসলাম রক্ষায় এবং মুসলিম বিশ্বের শান্তি ঐক্য কামনা বিশেষ করে ফিলিস্তিনের জন্য রহমত কামনা করে সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট মোনাজাত করেন।