কওমি মাদরাসা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে জাতি হতবাক
০৬ মার্চ ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৪, ১২:০৩ এএম
সম্প্রতি ডিসি সম্মেলনে কওমি-নূরানী মাদরাসা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন ইসলামী দলের পৃথক পৃথক বিবৃতি প্রদান অব্যাহত রয়েছে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, কওমি মাদরাসা ও নূরানী মাদরাসা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর উস্কানিমূলক বক্তব্যে জাতি হতবাক হয়েছে। মাদরাসায় আধুনিক ও ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয়ে সময়োপযোগী সিলেবাস প্রণয়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে সুশিক্ষা দিয়ে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। কওমি মাদরাসার এই সফলতা দেখেই দেশের জনগণ এই শিক্ষার দিকে ঝুকছে। কওমি মাদরাসার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কেউ এ দেশে টিকে থাকতে পারবে না।
খেলাফত মজলিস ঃ
খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড: আহমদ আবদুল কাদের এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, সম্প্রতি ডিসি সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তার এক বক্তব্যে বলেছেন, সারা দেশে যত্রতত্র কওমি ও নূরানী মাদরাসা বাড়ছে। এতে সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে। এটি সবার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, যে কারণে এটি নিরসন করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্যপ্রণোদীত এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, কোন রকম সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই যুগ যুগ ধরে এদেশে কওমি মাদরাসা ও নূরানী মাদরাসাগুলো মুসলমান শিশু-কিশোরদের ইসলামের প্রয়োজনীয় মৌলিক শিক্ষা দিয়ে আসছে। বর্তমান ইসলাম বিরোধী জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের কারণে সচেতন অভিভাবকমণ্ডলী আরো বেশি পরিমাণ তাদের সন্তানদেরকে মাদরাসামুখী করতে বাধ্য হচ্ছেন। সন্তানদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে তারা স্বেচ্ছায় ও জেনেবুঝে নূরানী মাদরাসায় ভর্তি করাচ্ছেন। সরকার নিজেদের প্রণীত নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির ব্যর্থতা ঢাকতে এখন কওমি ও নূরানী মাদরাসার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছে। শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাধ্যমে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাঁর বিদ্বেষ ফুটে উঠেছে। এসব দ্বীনি প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণের নামে বন্ধ করে দেয়ার পাঁয়তারা করা হলে তাওহীদি জনতা তা মেনে নিবে না। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে তার এই বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
বাতিল প্রতিরোধ পরিষদ : বাতিল প্রতিরোধ পরিষদের সভাপতি হাজী জালাল উদ্দিন বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর কওমি মাদরাসা ও নূরানী মাদরাসা সর্ম্পকে উস্কানিমূলক বক্তব্যে জাতি হতবাক হয়েছে। যত্রতত্র নূরানী ও কওমি মাদরাসা চালু হওয়ায় সরকারি স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমছে। শিক্ষামন্ত্রীর মুখে এ ধরণের বক্তব্য শুধুমাত্র মাদরাসা শিক্ষার প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর লক্ষ্যেই বলা হয়েছে। তিনি বলেন, যদি সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে থাকে তা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও ইসলাম বিদ্বেষী সিলেবাস গ্রহণের কারণে। স্কুলের শিক্ষার্থীদেরকে নৈতিক ও ইসলামী শিক্ষা না দিয়ে বিজাতীয় সংস্কৃতি ও হিন্দুত্ববাদ শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে যার ফলে মুসলিম অভিভাবকগণ সে বিতর্কিত শিক্ষাকে বর্জন শুরু করে মাদরাসামুখী হচ্ছে। সরকার ও স্কুলের শিক্ষাব্যবস্থার এই ব্যর্থতার জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দায়ী নন। তিনি আরো বলেন, মাদরাসায় আধুনিক ও ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয়ে সময়োপযোগী সিলেবাস প্রণয়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে সুশিক্ষা দিয়ে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। কওমি মাদরাসার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কেউ এ দেশে টিকে থাকতে পারবে না।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলন ঃ সম্প্রতি ডিসির সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল কওমি নূরানী মাদরাসা শিক্ষার ব্যাপারে যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং স্কুলের ছাত্র কমার যে কারণ উল্লেখ করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক যুক্ত বিবৃতি দিয়েছেন ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মাদএরশাদ উল্যাহ ভূঁইয়া, নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মুহাম্মাদ শওকাত হোসেন, মাওলানা মুহাম্মাদ রুহুল আমীন, ড. মাওলানা মুহাম্মাদ এনামুল হক আজাদ ও সেক্রেটারী জেনারেল জনাব মোস্তফা তারেকুল হাসান। নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র কমার কারণ নূরানী নয়, শিক্ষাকারিকুলাম। বর্তমান শিক্ষাকারীকুলাম ও শিক্ষা সিলেবাস এর মাধ্যমেই সরকার নিজেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে খেল তামাশায় পরিণত করেছে। ফলে সচেতন অবিভাবকমহল সরকার প্রণীত শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বাংলাদেশের মুসলমানরা ধর্মভীরু বিদায় ইসলাম ও নুরানী শিক্ষার দিকে ধাবিত হচ্ছে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামী সংস্কৃতি ও দ্বীনি শিক্ষাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আর স্কুলে ছাত্র কমার যে কারণ বলা হচ্ছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। নূরানী ও কওমী মাদরাসা বন্ধের কোন পদক্ষেপ নেয়া হলে বাংলাদেশের তৌহিদী জনতা, আলেম -ওলামা, পীর-মাশায়েখ কঠোরভাবে প্রতিহত করবে ইনশাআল্লাহ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
খাগড়াছড়িতে অবরোধের তৃতীয় দিন, বাজারে পাহাড়ি-বাঙালি উপস্থিতি স্বাভাবিক
শৈলকুপায় নিখোঁজের ৩ দিন মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার
অমিত শাহ’র বক্তব্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ইঙ্গিত বহন করে না : জামায়াত
এবার পাকিস্তানে ১২ দেশের কূটনীতিকদের গাড়িবহরে হামলা
নতুন থিয়ানছি স্যাটেলাইটগুচ্ছ উৎক্ষেপণ করেছে চীন
বাংলাদেশের জন্য এবারের জাতিসংঘ সম্মেলন যেসব কারণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ
‘প্রতি বছরই সম্পদের হিসাব দিতে হবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের’
গোয়ালন্দে চরমপন্থি দলের সদস্যকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
দিসানায়েক : দিনমজুরের ছেলে থেকে শ্রলীঙ্কার প্রেসিডেন্ট
ভারতে মহাসংকটে ভোডাফোন-আইডিয়ার ভবিষ্যৎ
পর্তুগালে অপপ্রচারের প্রতিবাদে বেজা বিএনপির সভা
‘মুরুব্বি মুরুব্বি উঁহু’ বলায় গরম পানিতে ঝলসে দেওয়া হলো কিশোরীকে
বিএনপির সমাবেশে হামলা-ভাঙচুরের দুই বছর পর আ.লীগের ১০৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ছিলেন তার ভাবি শরীফা আক্তার
চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি কমেছে জার্মানিতে
ইসরাইলি বর্বরতা থামছে না, গাজায় আরও ৪০ জনকে হত্যা
নতুন মামলায় সাবেক আইজিপি মামুন দুটি এবং আনিসুল একটিতে গ্রেপ্তার
কমলার সঙ্গে আর বিতর্ক করবেন না ট্রাম্প
নার্সিং কাউন্সিলের নতুন রেজিস্ট্রার হালিমা আক্তার
নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা