সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ নির্বাচনে সভাপতি পদে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ ৪টি পদে বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয় লাভ করেছেন। সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হকসহ ১০টি পদে আওয়ামী লীগের প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
গত শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের এ ফলাফল ঘোষণা করেন। কার্যনির্বাহী সদস্য পদে বিজয়ী বিএনপির অন্য ৩ জন হলেন, সৈয়দ ফজলে এলাহী অভি, ফাতিমা আক্তার ও মো: শফিকুল ইসলাম।

আওয়ামী লীগের প্যানেল থেকে বিজয়ী অন্য ৯ জন হলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রমজান আলী শিকদার, সহ সভাপতি ড. দেওয়ান মো: আবু ওবাঈদ হোসেন, ট্রেজারার পদে মোহাম্মদ নূরুল হুদা আনছারী, সহ-সম্পাদক মো: হুমায়ুন কবির, সহ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির (পল্লব)। সদস্য পদে বিজয়ী চারজন হলেন, রাশেদুল হক খোকন মো: রায়হান রনী, মো: বেল্লাল হোসেন (শাহীন) ও খালেদ মোশাররফ (রিপন)।
এদিকে জাল ভোট ও কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজল। বিএনপির প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন পুনরায় ভোট গণনার আবেদন করেছেন।

এর আগে অনেক নাটকীয়তার পর গত শনিবার বিকেল ৩টার পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হয়। ভোটের ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। যে ভবনে ভোট গণনা করা হচ্ছে সেখানে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
এর আগের দিন ৮ মার্চ ভোরে ভোট গণনা ছাড়াই সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরের দিন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান বিজয়ী ঘোষণার বিষয়টি আজ প্রত্যাহার করা হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র আইনজীবী আবুল খায়ের স্বাক্ষরিত এক পত্রে শনিবার বলা হয়, ‘একটি অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভোট গণনার আগেই দুঃখজনকভাবে বহিরাগত মাস্তান শ্রেণী কর্তৃক আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করে লিখিত দিতে বাধ্য করা হয়। যদিও তা অর্থহীন ঘোষণা, তবুও কূটতর্ক নিরসনের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সকলকে তা ‘ইগনোর’ (আমলে না ;েয়া) করার জন্য অনুরোধ করা হলো। ভোট গণনা করেই ফলাফল রঘাষণা করা হবে।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের দুই দিনব্যাপী নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে গতকাল হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটনায় ভোট গণনার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা আজ বসে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নেন।

এদিকে সমিতির ২০২৪-২৫ সালের দুই দিনব্যাপি নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনায় স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও বিএনপির প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
গতকাল ৮ মার্চ ভোরে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্টে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। অ্যাডভোকেট যুথী সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়।

এর আগে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। দুই দিনে ৭ হাজার ৮৮৩ জন আইনজীবীর মধ্যে ৫৩১৯ আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
এদিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজলের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গ্রেফতারের পর গতকাল রোববার আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমাণ্ড চাইলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ৯ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনে তার নিজ চেম্বার থেকে ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজলকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।