দেশের বৃহৎ পরিকল্পিত হ্রদ অস্বাভাবিকভাবে পানি হ্রাস পাওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে লাখো মানুষের। রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই হ্রদে দীর্ঘ ৫মাস যাবৎ পানিস্তর একেবারে শুন্য কোটায় নেমে আসছে। ফলে লাখো লোকের পানির ওপর নির্ভরশীল কর্মসংস্থানে থাকা বেকারত্ব হয়ে পড়েছে এবং সরকার কোটি,কোটি টাকার রাজস্ব হতে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে। হ্রদের ওপর নির্ভরশীল, মৎস্য উৎপাদন, জল বিদ্যুৎ উৎপাদন, কার্গো সকল ধরনের কাঁচামাল পারাপার টলি, পর্যটন, গাছ, বাঁশসহ সকল ক্ষেত্রে ধস নেমেছে।

এছাড়া এক উপজেলা হতে অন্য উপজেলায় নৌ-যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে অভাব অনটন। কাপ্তাই হ্রদ শুকিয়ে যাওয়ার ফলে নৌকা, সাম্পান, ডিঙ্গি ও অনেক ইঞ্জিনচালিত বোট কুলে আটকে আছে। সবচেয়ে বেশি ধস নেমেছে বাঁশ ব্যবসায়ীদের। কোন বাঁশ কাপ্তাই নৌপথে একস্থান হতে অন্যস্থানে পরিবহণ করতে পারছে না। বাঁশ ব্যবসায়ী শুক্কুর জানান কাপ্তাই হ্রদে অস্বাভাবিকভাবে পানি কমে যাওয়ায় কোটি টাকার বাঁশ শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।

গাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক ফজলুল হক জানান, পানি কমে যাওয়ার ফলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন কাজে জড়িত হাজার লোকের কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেছে। ডিঙ্গি নৌকা ও সাম্পান মাঝি রুবেল জানান, গত একমাস যাবৎ কোন কাজ নেই। ঘরে বসা। কষ্টে সংসার চলছে। কাপ্তাই বোট মালিক সমিতির সম্পাদক মো. ইদ্রিস জানান, পানি কমে যাওয়ায় কাপ্তাই-বিলাইছড়ি যাতায়াতে যাত্রী কমে গেছে। বিলাইছড়ি যাওয়া যায় না। হ্রদ এখন ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার মাঠ হয়েছে। বিকাল হলে নিয়মিত স্থানীয়রা বিভিন্ন খেলায় মেতে উঠে।

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, পানি অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন চরমভাবে হ্রাস পেয়েছে। ৫টির ইউনিটের মধ্যে মাত্র ১টি ইউনিট চালু রাখা হয়েছে। কাপ্তাই লেক ড্রেজিং করা অতি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তবে সামনে বর্ষা মৌসুমে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হলে সবকিছুই স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানান।