‘রেমালে’র আঘাত আজ
২৬ মে ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ২৬ মে ২০২৪, ১২:০৮ এএম
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি গতকাল শনিবার রাতে ক্রমেই ঘনীভূত এবং শক্তি অর্জন করে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’ রূপ নিয়েছে। এটি সময়ভেদে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৬ কিলোমিটার গতিতে উত্তরমুখী উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। উপকূলের কাছাকাছি এসে গেলে ঘূণিঝড়ের গতিবেগের সাথে অগ্রসর হওয়ার গতিও বেড়ে যাবে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে দেখানো হচ্ছে ৬ নম্বর বিপদ সঙ্কেত। আবহাওয়া বিভাগ (বিএমডি) এবং ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) গতকাল রাতে সর্বশেষ বুলেটিনে জানায়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগসহ আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থাগুলো জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি আজ রোববার বিকাল থেকে মধ্যরাত নাগাদ উপকূলে আঘাত শুরু করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির ‘চোখ’ বা মূল কেন্দ্র বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে। যদি আঘাত হানার আগে শেষ মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়টি গতিপথ পরিবর্তন না করে তাহলে এর ‘চোখ’ ও গতিমুখ খেপুপাড়া-পটুয়াখালী-সুন্দরবন হয়ে সাতক্ষীরা উপকূল এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী। এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘রিমাল’ (জব-গধষ)। ‘রিমাল’ ওমানের দেয়া নাম। এটি আরবি শব্দ। এর অর্থ বালু। তাছাড়া ‘রিমাল’ নামে আফগানিস্তানে একটি শহর আছে। উভয় দেশের নাম থেকে ‘রিমাল’ নামটি চয়ন করেছে ঘূর্ণিঝড়ের সম্পর্কিত এই অঞ্চলের দেশসমূহের প্যানেল। আজ রোববার সকাল নাগাদ বঙ্গোপসাগরে রিমাল ‘প্রবল শক্তিশালী’ পর্যায়ের ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা এই ছয়টি জেলাকে বিশেষভাবে প্রস্তুতির নির্দেশনা দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। ‘রিমাল’কে কেন্দ্র করে সমুদ্র উপকূল, চর ও দ্বীপাঞ্চলবাসীর মাঝে অজানা ভয়-আতঙ্ক বিরাজ করছে। গতকাল রাতে সর্বশেষ পূর্বাভাসে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানায়, রিমাল ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’র শক্তি সঞ্চয় করলে এর গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। যা দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার আকারে উঠতে পারে ঘণ্টায় ১৩৫ কি.মি.। ঘূর্ণিঝড়ে ‘রিমাল’ ক্রমেই উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকের গতিপথে অগ্রসর হচ্ছে। ‘রিমাল’ বড়সড় আকার ও পরিধির ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে এমন শঙ্কা ব্যক্ত করেন ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। তবে এটি ‘সুপার সাইক্লোন’ হওয়ার আশঙ্কা নেই। এটি গতকাল রাত পর্যন্ত বাংলাদেশের উপকূলের প্রায় তিনশ’ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র আগাম প্রভাবে গতকালও সারা দেশে মৃদু, মাঝারি ও তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহের সঙ্গে অসহ্য ভ্যাপসা গরম অব্যাহত থাকে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠে গেছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ৩৮.৮ এবং সর্বনিম্ন ২৯.৯ ডিগ্রি সে.। দিনে-রাতে দেশের অধিকাংশ স্থানে ছিল অসহনীয় গরম। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আসার আগেই ঘন ঘন লোডশেডিং যন্ত্রণায় মানুষের অশেষ দুর্ভোগ-বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। এদিকে গতকাল রাতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। আজ রোববার ও আগামীকাল সোমবার দেশের অধিকাংশ জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত, কোথাও কোথাও অতি ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে গুমোট, থমথমে আবহাওয়া বিরাজ করছে। বঙ্গোপসাগর প্রবল উত্তাল রয়েছে।ভারতের আবহাওয়া বিভাগের ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ বিভাগের বিজ্ঞানী আনন্দ কুমার দাশ গতকাল গভীর রাতে সর্বশেষ বিশেষ বুলেটিনে জানান, গভীর নিম্নচাপটি গতকাল রাতে ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’ পরিণত হয়েছে। ‘রিমালে’ র গতিবেগ থাকবে বিভিন্ন সময়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ এবং ৭৫ থেকে ৮৫ কি.মি., যা দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ায় গতিবেগ উঠবে যথাক্রমে ৮০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার। পরবর্তীতে গত মধ্যরাতে বা আজ ভোরের দিকে এটি আরও শক্তি অর্জন করে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হলে তখন ‘রিমালে’র গতিবেগ থাকবে বিভিন্ন সময়ে ঘণ্টায় ৯৫ থেকে ১০৫ এবং ১১০ থেকে ১২০ কি.মি.। যা দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার বেগে যথাক্রমে ১২০ থেকে ১৩৫ কিলোমিটারে উঠতে পারে। ‘রিমাল’ উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব দিকে চলমান থাকবে। গতকাল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র জরুরি প্রস্তুতি সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মুহিববুর রহমান ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট ডিসি-ইউএনওদের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয় প্রস্তুতি ও সতর্কীকরণ জোরদার করার জন্য নির্দেশনা দেন। তিনি জানান, উপকূলীয় সব জেলাকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও সম্ভাব্য অতিক্রম এলাকার ভিত্তিতে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা এই ৬টি জেলাকে অধিকতর প্রস্তুত থাকার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের (বিএমডি) বিশেষ বুলেটিনে (নম্বর ৮) আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় গতকাল রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’ পরিণত হয়। ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র অবস্থান ছিল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫শ’ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪শ’ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র্রবন্দর থেকে ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর এবং ঘনীভ’ত হতে পারে।ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, সমুদ্র উপকূল, চর ও দ্বীপাঞ্চলে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার সাথে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ ও এর অগ্রবর্তী-পরবর্তী প্রভাবে দেশের প্রত্যন্ত উপকূলীয় এলাকা, দ্বীপ ও চরাঞ্চল স্বাভাবিক সামুদ্রিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের সবক’টি বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ মাঝারি থেকে মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। গতকাল পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ এলাকায় চলমান তাপপ্রবাহ কেটে যেতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা স্থানবেদে এক থেকে ৫ ডিগ্রি সে. এবং রাতের রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ এবং সিলেট ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা ও গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে রাঙ্গামাটিতে ২৭ মিলিমিটার। এদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরসমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে, খুলনা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা এবংচট্টগ্রাম অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কি.মি. বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরসমূহকে ১ নম্বর সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে ।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশালসহ উপকূলভাগে ধেয়ে আসা মাঝারী মাত্রার গভীর নিম্নচাপের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রায় ৭৫ হাজার সেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের মতে, সঞ্চালনশীল মেঘমালার প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকা ছাড়াও পায়রা সমুদ্র বন্দরসহ সবগুলো সামুদ্রিক বন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বরিশালে সামান্য বৃষ্টি হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত আর কোনো বৃষ্টির দেখা মেলেনি। পায়রা বন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সঙ্কেতের পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে বরিশালসহ এ অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরগুলোতে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কোনো সতর্ক সঙ্কেত ছিলনা।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় বরিশালের বিভাগীয় প্রশাসনসহ দক্ষিণ উপকূলের সবগুলো জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি-সিপিপির প্রায় ৭৫ হাজার সেচ্ছাসেবককে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পাবার সাথেই ঝুকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছে দেয়াসহ সতর্কবার্তা প্রচার করবে সিপিপির সেচ্ছাসেবকগণ।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপটির কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর যতেষ্ট উত্তাল রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছধরা নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী গভীর নিম্নচাপটির অবস্থান পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪’শ কিলোমিটারেরও কম।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর-ডিএই থেকে যত দ্রুত সম্ভব মাঠে থাকা পাকা বোরো ধান ঘরে তোলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বর্তমান দুর্যোগ এড়িয়ে আউশ রোপণসহ বীজতলা সংরক্ষণে বিশেষ মনযোগী হবারও অনুরোধ করেছে ডিএই।
কক্সবাজার ব্যুরো জানায়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি রাতে এই রির্পোট লেখা পর্যন্ত কক্সবাজার ৪৩৫ কিমি দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে অঞ্চলে ৬ নম্বর বিপদ সঙ্কেট জারি করা হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাত ৮টার পর থেকে কক্সবাজার এলাকায় হালকা বাতাশ ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, চাঁদপুর থেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর কারণে জনসাধারণদেরকে সচেতন করার লক্ষ্যে মাইকিং করেছে চাঁদপুর নৌথানা পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় চাঁদপুর নৌথানার ওসি মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম লঞ্চটার্মিনাল, বড় স্টেশন মোলহেড ছাড়াও নদী তীরবর্তীস্থানে বসবাসরত বাসিন্দা ও চর এলাকায় জনসাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে ট্রলার নিয়ে মাইকিং করে। এসময় চাঁদপুর নৌথানার এসআই সাজ্জাদ হোসাইন, কনস্টেবল মতলেবুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চাঁদপুর নৌথানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় জনসাধারণের জান মাল নিরাপত্তা, গবাদিপশু, শিশুসহ প্রয়োজনীয় খাবার নিয়ে নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য সচেতনমূলক মাইকিং করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। নৌপুলিশ সবসময় জনগণের পাশে রয়েছে। তাছাড়া নৌযান শ্রমিকদেরকে সরকারি নির্দেশনা মেনে নিরাপদে যাতায়াত করাসহ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হয়।
মাংলা সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় মোংলা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর সতর্ক সঙ্কেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সব রকম সতর্কমূলক প্রস্ততি নিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে জরুরি বৈঠক করা হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার সাইফুর রহমান বলেন, মোংলা বন্দরে এই মূহুর্তে সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার, সার, পাথর ও গ্যাসবাহী ছয়টি জাহাজ অবস্থান করছে। সেগুলোকে নিরাপদে নোঙ্গর করতে বলা হয়েছে। তবে এখনও জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ করার পরিস্থিতি হয়নি। সঙ্কেত বাড়লে পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া বন্দরে একটি কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবেলায় সব রকম প্রস্ততি নিয়েছে বাগেরহাটের মোংলার উপজেলা প্রশাসন। মোংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, ‘১০৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ১৬’শ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকে ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্কেত বাড়ানোর সাথে সাথেই আমাদের কার্যক্রমের গতি বাড়ানো হবে। তবে এখনও কোনো কন্ট্রোলরুম খোলা হয়নি।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ তিন হাজার ৫০৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জরুরি ত্রাণ কার্যে ব্যবহারের জন্য রয়েছে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ৬৪৩. ৪০০ টন চাল মজুদ রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিপদ সঙ্কেত জারি হলে তারা এলাকায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করবেন। শুকনো খাবার, ওষুধ, ঢেউটিন ও নগদ টাকা প্রস্তত রাখা হয়েছে। প্রস্তত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মোংলা আবাহওয়া অফিসের ইনচার্জ হারুন অর রশিদ জানায়, এটি বর্তমান যেই অবস্থান দেখাচ্ছে তাতে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি বাংলাদেশের ওপর দিয়েই অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সুন্দরবন এলাকা এবং বরিশালের পটুয়াখালী, বরগুনা, ও ভোলা জেলায় রেমাল এর আঘাত হানার সম্ভবনা বেশি রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপটি মোংলা বন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি শনিবার সন্ধা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এ রুপ নিবে। সেই ‘রেমাল’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আজ রোববার সন্ধ্যায় সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উপকূলে যতোই ধেঁয়ে আসছে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে আতঙ্ক ততোই বাড়ছে। জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্র। এছাড়াও উপকূলবর্তী শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলার উপজেলার দুর্যোগ সহনীয় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভবন আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সিপিপি, যুব রেড ক্রিসেন্টসহ ৩ হাজার ৫০৫ স্বেচ্ছাসেবক। সুন্দরবন বিভাগের সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ মৌয়াল ও জেলেদের ম্যানগ্রোভ এই বন থেকে লোকালয়ে ফিরে আসতে বলা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর প্রভাবে বাগেরহাটের বিভিন্ন স্থানে গতকাল শনিবার দুপুর থেকে হালকা বাতাসের সাথে থেমে-থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সন্ধার পরপর বাতাসের তীব্রতা আরো বেড়ে গেছে। পূর্ণিমা থাকায় জেলার সব নদ-নদীতে পানির উচ্চতা বেড়ছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় দুপুরে জরুরি সভা করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ‘এলার্ট থ্রী’ জারি করে সব বাণিজ্যিক জাহাজকে বন্দর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ৩৩টি জাহাজসহ সব লাইটার জাহাজ বন্দর চ্যানেল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ নিরাপদ স্থানে রাখতে মোংলা বন্দর জেটি খালি করে দেয়া হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব ‘এলার্ট ফোন’ জারি করা হলে বন্দর সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে। জেলা, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, মোংলা বন্দর, সুন্দরবন বিভাগ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড কন্টোল রুম খুলে ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্ততি গ্রহণ করেছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল ধেঁয়ে আসায় জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্র। এছাড়াও উপকূলবর্তী শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলার উপজেলার দুর্যোগ সহনীয় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভবন আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সিপিপি, যুব রেড ক্রিসেন্টসহ ৩ হাজার ৫০৫ স্বেচ্ছাসেবক। নগদ সাড়ে ৬ লাখ টাকা, ৬৪৩ মেট্রিক টন চাল, শুকনা খাবার, পানিসহ পর্যাপ্ত মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম জানান, বন বিভাগের সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করে তাদের নিরাপদ থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ মৌয়াল ও জেলেদের সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতিমূলক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল জেলা প্রশাসকের দরবার হলে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. এস,এম কবির হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক যাদব সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার যোবায়ের আহাম্মেদ প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক সভায় জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় ৭০৩টি সাইক্লোন শেল্টার, ৩৫টি মুজিব কিল্লা, ৭৩০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকার শিশু খাদ্য, ১০ লাখ টাকার গোখাদ্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া শুকনা খাবার রয়েছে ১৫০০ প্যাকেট। নগদ টাকা রয়েছে ২৪ লাখ ৭ হাজার টাকা ৫০০ টাকা।
এ সময় মানুষকে সচেতন ও দুর্যোগে উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপির ৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকাসহ বিদ্যুৎ, সড়ক বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। জেলায় মোট ৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন, ওষুধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সংরক্ষিত রয়েছে।
জেলায় ১৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দুর্যোগের সময় কোথাও ভাঙন দেখা দিলে তা মেরামতের জন্য ১৬ হাজার জিও ব্যাগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
নোয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় নোয়াখালীর উপকূলীয় পাঁচ উপজেলায় ৪৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ১০২ মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
সভায় জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে উপকূলীয় পাঁচ উপজেলায় ৪৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্র, ১০২ মেডিকেল টিম ও আট হাজার ৩৬০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সচেতন থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। এ-০১৭২৪০৯৬২৬৯ নম্বরে ফোন করে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা যাবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহিদ আহসান খান, সিপিপি কর্মকর্তা রুহুল আমিন, জেলা রেড ক্রিসেন্টের সহকারী পরিচালক নুরুল করিমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গতকাল সকাল ১১টায় উপজেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, সিপিপির উপ-পরিচালক আসাদ উজ জামান, দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
সভায় দুর্যোগকালীন সময় ১৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র, ২০টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুতের পাশাপাশি শিশু খাদ্য ও শুকনা খাবার মজুদ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া কুয়াকাটার বহুতল ভবনগুলো দুর্যোগের সময় আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। দুর্যোগে করণীয় সম্পর্কে প্রচার ও মানুষকে সচেতন করতে ৩১৬০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখার তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির।
এর আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রী পূর্বাভাস প্রযুক্তি সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান।
এদিকে কলাপাড়া উপকূলীয় এলাকার জনগণ, মৎস্যজীবি ও নৌযান সমূহকে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম শুরু করেছে নিজামপুর কোস্টগার্ড। গতকাল সকাল নয়টায় মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে কোস্টগার্ডের সদস্যরা। এসময় তারা খাপড়াভাঙ্গা নদীতে অবস্থানরত ট্রলার সমূহে থাকা জেলেদের ঘূর্ণিঝড়ের সময় করণীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
স্বৈরাচারের পতন হলেও দোসররা এখনো রয়ে গেছে : তারেক রহমান
সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম কারাগারে
নদী দখলকারীদের উচ্ছেদে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে - পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
এবার ফাঁস হলো রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়
ফুটবলের মাঠে চমক দেখাতে চান তাবিথ আউয়াল
শ্রীলঙ্কার চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে কি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?
ডাটা সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার
দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠে" প্রকাশকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ফরিদপুর সাংবাদিক জোটের প্রতিবাদ সভা
হাত-পা ও চোখ বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হয় --- আবু বাকের
ইনসি ইকো প্লাস সিমেন্ট নিয়ে এলো বাংলাদেশের সমূদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের উপযোগী করে দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের সমাধান
ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা জন্য আমাদের লড়াই চলছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
বাগমারার সাবেক এমপি এনামুল কারাগারে
কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু
রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে রাজনৈতিক দল এলডিপি
পরিস্থিতির আলোকে ছোট ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা হতে পারে- গভর্নর
পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির কাক্সিক্ষত উন্নতি হয়নি: বিজিএমইএ
অমিত শাহ’র বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ বাংলাদেশের
ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও নতুন বাংলাদেশ
ছাত্র শ্রমিক জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহত পরিবারসমূহের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন : সাইফুল হক
দুর্গাপূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকবে : আইজিপি