বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সঙ্কটে মিলছে না পর্যাপ্ত ত্রাণ

আরেকটি গণহত্যার দ্বারপ্রান্তে দুর্ভিক্ষকবলিত দারফুর

Daily Inqilab দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স

২২ জুন ২০২৪, ১২:২৩ এএম | আপডেট: ২২ জুন ২০২৪, ১২:২৩ এএম

আফ্রিকার অন্যতম বড় দেশ সুদানকে ছারখার করে দিচ্ছে কয়েক দশক ধরে চলমান গৃহযুদ্ধ। সুদানের সামরিক-জাঞ্জাউইদ যৌথবাহিনী ও র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের মধ্যে চলতে থাকা এই গোষ্ঠিগত যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসঙ্ঘ বলেছে, দারফুরে হত্যাকা- বন্ধ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে, পাশাপাশি, এটি একটি বিশাল দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন, যা বিশ্বের অন্য বৃহত্তম মানবিক সংকটের সূচনা করেছে।
আকারে স্পেনের সমান দারফুর অঞ্চলের শহর আল ফাশির এখন বিশ্বব্যাপী সতর্কতার কেন্দ্রে অবস্থান করছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড সতর্ক করেছেন যে, আল ফাশির একটি বড় আকারের গণহত্যার প্রান্তে রয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, দুর্ভিক্ষকবলিত দারফুরে ইতোমধ্যে ১৭ লাখ মানুষ অনাহারে রয়েছে এবং পূর্ব দার্ফুরে খাদ্য ও ওষুধের সঙ্কট চলছে।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের নিরীক্ষা নিশ্চিত করেছে যে, যুদ্ধ ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে। ইয়েল হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব এবং সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ নথিভুক্তকারী অলাভজনক সংস্থা সেন্টার ফর ইনফরমেশন রেজিলিয়েন্সের তথ্য-প্রমাণ বলছে যে, দারফুরে হাজার হাজার বাড়ি পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার ভূমিকার জন্য একজন র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স কমান্ডারের ওপর সম্প্রতি যেমন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তেমন কামান এবং বিমান হামলাসহ বেসামরিক এলাকায় নির্বিচারে বোমা হামলার জন্য সুদানের সামরিক বাহিনীও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছে।
জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানিয়েছে যে, গত শরতে শাদ সংলগ্ন সুদানের সীমান্তে কয়েক দিনের মধ্যে ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। এখন আল ফাশিরের বাসিন্দারা এর পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দক্ষিণ এবং পূর্ব আল ফাশির এবং এর আশেপাশের এলাকা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
এই গৃহযুদ্ধে উভয় পক্ষকেই ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। জাতিসংঘ দারফুরে সহায়তার জন্য ২শ’ ৭০ কোটি ডলার একটি জরুরি প্রস্তাব করলেও এপর্যন্ত এক পঞ্চমাংশেরও কম পেয়েছে।
উল্লেখ্য, ৬০ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যার দেশ সুদানে প্রায় ৮০টি উপজাতি এবং আদি গোষ্ঠি বসবাস করে। ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত দেশটি যুক্তরাজ্য ও মিসরের যৌথ শাসন ব্যবস্থার অধীনে ছিল। ১৯৫৬ সালে এটি স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে সুদানে গোষ্ঠিগত সঙ্ঘাত ক্রমেই বাড়তে থাকে। আয়তনে প্রায় ফ্রান্সের সমান দারফুর সুদানের পশ্চিমের একটি অঞ্চল। কয়েক দশক ধরে ব্যাপক হত্যাকা-, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া, ধর্ষণ এবং অপহরণের শিকার হয়েছে অঞ্চলটির প্রায় ১৮ লাখ মানুষ।
২০০৩ এবং ২০০৫ এর মধ্যে সহিংসতা, রোগ এবং অনাহারে আনুমানিক ২লাখ বেসামরিক লোক মারা যায় এবং ২০ লাখ মানুষ এলাকাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। সেই সময় এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মানবিক সঙ্কট বলে অভিহিত করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) মানবতাবিরোধী অপরাধ, ধর্ষণ, জোরপূর্বক বিতাড়ন এবং গণহত্যার দায়ে জন্য বেশ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

নতুন পদ্ধতিতে রেলের টিকিটিং ব্যবস্থা, তবে কি এবার রোধ হবে কালোবাজারি?
সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আহ্বান তারেক রহমানের
তারেক রহমান আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন : আফরোজা আব্বাস
বাজেট বরাদ্দে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বের তুলনায় অগ্রাধিকার পাবে
এতদিন ধরে অসীম দুর্নীতি চলেছে: ড. ইউনূস
আরও
X

আরও পড়ুন

চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করা পর্যন্ত বিএনপির সকল নেতাকর্মীকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে-বাদল

চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করা পর্যন্ত বিএনপির সকল নেতাকর্মীকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে-বাদল

নতুন পদ্ধতিতে রেলের টিকিটিং ব্যবস্থা, তবে কি এবার রোধ হবে কালোবাজারি?

নতুন পদ্ধতিতে রেলের টিকিটিং ব্যবস্থা, তবে কি এবার রোধ হবে কালোবাজারি?

রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে ঃ আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে ঃ আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আহ্বান তারেক রহমানের

সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আহ্বান তারেক রহমানের

বাংলাদেশ বিরোধী চক্রান্তে  লিপ্ত  হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে  ঃ  মামুনুল হক

বাংলাদেশ বিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে ঃ মামুনুল হক

নাগরিকত্ব আইন বদলে ফেলতে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ট্রাম্প

নাগরিকত্ব আইন বদলে ফেলতে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ট্রাম্প

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কষ্ট আমরা বুঝি' -  ড. ফায়েজ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কষ্ট আমরা বুঝি' - ড. ফায়েজ

সিদ্ধিরগঞ্জে জালকুড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ৮ দোকান পুড়ে ছাই

সিদ্ধিরগঞ্জে জালকুড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ৮ দোকান পুড়ে ছাই

লাখো রোহিঙ্গাদের ইফতার স্থানে প্রবেশের হুড়োহুড়িতে নিহত ১  আহত ২

লাখো রোহিঙ্গাদের ইফতার স্থানে প্রবেশের হুড়োহুড়িতে নিহত ১ আহত ২

ভূরুঙ্গামারীতে নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন

ভূরুঙ্গামারীতে নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন

বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের ফল-মিষ্টি দিলেন আগরতলা পৌরসভার মেয়র

বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের ফল-মিষ্টি দিলেন আগরতলা পৌরসভার মেয়র

পতিত স্বৈরাচারের দোসররা একেক সময় একেক নামে আবির্ভাব হচ্ছে: খায়ের ভূঁইয়া

পতিত স্বৈরাচারের দোসররা একেক সময় একেক নামে আবির্ভাব হচ্ছে: খায়ের ভূঁইয়া

আল হিকমাহ ইসলামিক অলিম্পিয়াড পুরুষ্কারে ভূষিত হলো নোয়াখালী মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা

আল হিকমাহ ইসলামিক অলিম্পিয়াড পুরুষ্কারে ভূষিত হলো নোয়াখালী মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা

মাগুরায় শিশু আছিয়ার নির্মম মৃত্যু: রাবি শিক্ষক ফোরামের বিচার দাবি

মাগুরায় শিশু আছিয়ার নির্মম মৃত্যু: রাবি শিক্ষক ফোরামের বিচার দাবি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মার্ক কার্নি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মার্ক কার্নি

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে, নইলে সংকট বাড়বে:  শিপন

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে, নইলে সংকট বাড়বে: শিপন

কয়েকজন ছাত্রনেতা মনে করে ৫ আগষ্টের আগে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রই ছিলো না: ইশরাক

কয়েকজন ছাত্রনেতা মনে করে ৫ আগষ্টের আগে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রই ছিলো না: ইশরাক

ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকলে কেউ ক্ষতি করতে পারবে না - আমিনুল হক

ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকলে কেউ ক্ষতি করতে পারবে না - আমিনুল হক

আল-আকসা মসজিদে ৮০ হাজার মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়

আল-আকসা মসজিদে ৮০ হাজার মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু মেয়েদের

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু মেয়েদের