আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার জমি তৈরির কাজ হচ্ছে পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টর দিয়ে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার ব্যবহারে উৎপাদন খরচ কমে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ

কৃষিতে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন

Daily Inqilab রফিক মুহাম্মদ

২২ জুন ২০২৪, ১২:২৩ এএম | আপডেট: ২২ জুন ২০২৪, ১২:২৩ এএম


কমছে জমি বাড়ছে মানুষ। এই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপদ করতে উৎপাদন বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন হালের বলদ, লাঙল-জোয়ালই ছিল কৃষকের মূল ভরসা। সারাদিন কায়িক শ্রমের বিনিময়ে মাঠে ফলতো স্বপ্নের ফসল। তবে আধুনিক প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় সেদিন আর নেই। নতুন নতুন যন্ত্রপাতির ব্যবহারে দেশের কৃষিখাতে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এসব যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে কৃষকের কমেছে শ্রম ও খরচ, অপরদিকে কয়েকগুণ বেড়েছে উৎপাদন।
অতীতে যখন লাঙল-জোয়াল আর ‘হালের বলদ’ ছিল কৃষকের চাষাবাদের মূল উপকরণ সে জায়গা এখন দখল করে নিয়েছে পাওয়ার টিলার। এখন সনাতন যন্ত্রাপাতি হিসেবে লাঙল-জোয়ালকে প্রদর্শন করা হয় উন্নয়ন মেলায়। আধুনিক প্রযুক্তির ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার, জমি আবাদ, নিড়ানি হতে শুরু করে জমিতে সেচ দিতে ইঞ্জিনচালিত শ্যালো মেশিন ও বৈদ্যুতিক পাম্প, ড্রাম সিডার (বীজ বপন যন্ত্র), ধান কাটার কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন, পাওয়ার থ্রেসার (পায়ে চালিত মাড়াই যন্ত্র), গ্রেডিং মেশিন, গুটি ইউরিয়া সারসহ সবকিছুতেই চলছে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার। এসব যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে কৃষকের শ্রম যেমন কমছে তেমনি উৎপাদন ব্যয়ও অনেকটা কমেছে।
বর্তমানে দেশে জমি তৈরির ৯৫ শতাংশ কাজ পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টর দিয়ে করা হচ্ছে। সার প্রয়োগ ও আগাছা দমনের কাজে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিপর্যায়ে ভাড়ার ভিত্তিতে ফসল কাটার যন্ত্র রিপার ও কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া মাড়াই কাজে বিশেষ করে ধান, গম, ভুট্টাসহ সব দানাদার ফসল মাড়াইয়ের কাজেও যন্ত্র ব্যবহার হচ্ছে। বর্তমানে ধান কাটা যান্ত্রিকীকরণে কৃষিমন্ত্রণালয় বিশেষ জোর দিয়েছে। ইতোমধ্যে হাওড়সহ দেশের বেশ কিছু এলাকায় ধান কাটা যান্ত্রিকীকরণে আশানুরূপ উন্নতিও হয়েছে। যদিও শতকরা হিসাবে তা এখনো উলেস্নখযোগ্য পরিমাণ নয়। এখনো প্রচলিত সেই কাস্তে দিয়ে ফসল কাটা হয় এবং কার্যক্ষমতা অত্যন্ত কম হওয়ায় ফসল কাটতে অনেক শ্রমিকের প্রয়োজন হয় এবং ফসল কাটার সময় অপচয় অনেক বেশি হয়। তাছাড়া ফসল কাটার ভরা মৌসুমে শ্রমিকের অভাব প্রকট হয়ে দেখা দেয়। ফলশ্রুতিতে সময়মতো ফসল কাটা সম্ভব হয় না। এ কারণে ফসল কাটা কৃষির প্রধান সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শ্রমিকের অভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কোনো কোনো সময় পুরো ফসলই নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) আওতায় পরিচালিত সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের সরাসরি সমতল এলাকায় ৫০ শতাংশ এবং হাওড় ও উপকূলীয় এলাকায় ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্র দেওয়া হচ্ছে।
অনেকটা ট্রাক্টরের মতো দেখতে এ যন্ত্র দিয়ে একই সঙ্গে ধান কাটা, মাড়াই ও বস্তায় ভরা যায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন খরচ ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত খরচ কমানো যায়। যন্ত্রটি ব্যবহার করলে সময় বাঁচায় ৭০ থেকে ৮২ শতাংশ এবং ৭৫ শতাংশ কম শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। প্রচলিত পদ্ধতিতে এক একর জমির ধান বা গম কাটতে খরচ হয় প্রায় ছয় হাজার টাকা। সেখানে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার ব্যবহারে লাগে মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এটি অল্প কাদার মধ্যেও ব্যবহার করা যায়। একই সঙ্গে এ যন্ত্র দিয়ে ফসল কাটার পর খড়ও আস্ত থাকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, নিয়ন্ত্রিত ও নিখুঁতভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণে চারা রোপণ সুবিধার কারণে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রটির প্রতি দিন দিন আগ্রহী হয়ে পড়ছে কৃষকরা। রাইস্ ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্র ব্যবহার করে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বিভিন্ন দূরত্বে ও গভীরতায় চারা রোপণ করা যায়। একজন শ্রমিক ঘণ্টায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ করতে পারে। যন্ত্রটি ব্যবহার করতে জ্বালানি খরচও খুব কম, ঘণ্টায় মাত্র আধা লিটার অকটেন প্রয়োজন পড়ে। যন্ত্রটি ব্যবহার করলে বীজতলা তৈরি করার জন্যও আলাদা জমির প্রয়োজন হয় না। বাড়ির উঠানেই বীজতলা তৈরি করা সম্ভব।
ফসলের জমির সারিতে ‘ইনক্লাইন্ড প্লেট সিডার’ এ যন্ত্রটির সাহায্যে বীজ বুনলে কম বীজ লাগে, সহজে আগাছা পরিস্কার করা যায়, গাছ বেশি আলো বাতাস পায় এবং সর্বোপরি উৎপাদন বাড়ে। সারিতে ও নির্দিষ্ট দূরত্বে এবং গভীরতায় সহজে বীজ বোনার জন্য পাওয়ার টিলার চালিত বীজ বপন যন্ত্রটি উদ্ভাবন করা হয়। এ যন্ত্র দিয়ে চাষ করা জমিও চাষবিহীন অবস্থায় বেলে ও বেলে দোআঁশ মাটিতে ধান, গম, ভুট্টা, পাট, তৈল বীজ ও ডাল শস্য সারিতে বোনা যায়। এ যন্ত্রটি ব্যবহারে প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে প্রায় ১০ থেকে ৪০ শতাংশ বীজ কম লাগে এবং ফলন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ পদ্ধতিতে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪৫ শতাংশ জমিতে বীজ বপন করা যায়।
ধান ও গম কাটার যন্ত্র ‘রিপার’ ফসল কাটার মৌসুমে এ যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। এই মেশিন ব্যবহার করে ১ ঘণ্টায় ৬৬ শতাংশ জমির ধান ও গম কাটা সম্ভব এবং এখানে পেট্রোল খরচ হচ্ছে মাত্র ১ লিটার। যেখানে সনাতন পদ্বতিতে প্রয়োজন হচ্ছে ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিকের, যার খরচ নূন্যতম ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস বলছে এ যন্ত্র ব্যবহারে সাশ্রয় হচ্ছে ৯২ ভাগ খরচ, শ্রম ও সময় ব্যয় কমে প্রায় ৯০ ভাগ।
বেড-নালা তৈরী করে আবাদ করতে বেড প্লান্টার এ যন্ত্রটি ব্যবহার হয়। আলু, ভুট্টা, মরিচ, সবজিসহ বিভিন্ন প্রকার ফসল বীজ-ফারো বা বেড-নালা তৈরি করে আবাদ করা হয়। বেড পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন করলে বাতাস সহজেই গাছের শিকড়ের কাছে যেতে পারে। এ যন্ত্রের ব্যবহারে ১ থেকে ২টি চাষে বেড তৈরি, সার প্রয়োগ ও বীজ বপনের কাজ একই সঙ্গে করা যায়, স্থায়ী বেডেও বীজ বপন করা যায়, যন্ত্রটি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে বেড তৈরি করতে পারে।
অধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে ধান থেকে চাল উৎপাদনের ক্ষেতেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। ঢেকি থেকে রইস মিলের প্রচলন আরও অনেক আগেই শুরু হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এঙ্গেলবার্গ হালার সম্পূর্ণ অটো এবং সেমি অটো রাইস মিলে পরিবর্তিত হচ্ছে। অটোমেটিক বা আধুনিক চালকলে ধান ভাঙানো হলে এঙ্গেলবার্গ হালারের বা সেমি অটো চালকলের তুলনায় প্রতি মণ ধানে ২ থেকে ৫ কেজি বেশি চাল পাওয়া যায়। ধান থেকে চালের পরিমাণ ধান শুকানোর মাত্রা, শুকানোর পদ্ধতি, মিলিং করার সময় আর্দ্রতা, মিলিং মেশিনসহ অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যদিও ব্রির এফএমপিএইচটি বিভাগ প্রচলিত এঙ্গেলবার্গ হালারকে উন্নয়ন করে একটি এয়ার ব্লুটাইপ হালার উদ্ভাবন করেছে- যাতে প্রচলিত এঙ্গেলবার্গ হালারের তুলনায় প্রায় ১ শতাংশ এর বেশি চাল পাওয়া যায় এবং খরচও অর্ধেক কম হয়।

 

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

নতুন পদ্ধতিতে রেলের টিকিটিং ব্যবস্থা, তবে কি এবার রোধ হবে কালোবাজারি?
সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আহ্বান তারেক রহমানের
তারেক রহমান আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন : আফরোজা আব্বাস
বাজেট বরাদ্দে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বের তুলনায় অগ্রাধিকার পাবে
এতদিন ধরে অসীম দুর্নীতি চলেছে: ড. ইউনূস
আরও
X

আরও পড়ুন

চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করা পর্যন্ত বিএনপির সকল নেতাকর্মীকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে-বাদল

চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করা পর্যন্ত বিএনপির সকল নেতাকর্মীকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে-বাদল

নতুন পদ্ধতিতে রেলের টিকিটিং ব্যবস্থা, তবে কি এবার রোধ হবে কালোবাজারি?

নতুন পদ্ধতিতে রেলের টিকিটিং ব্যবস্থা, তবে কি এবার রোধ হবে কালোবাজারি?

রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে ঃ আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে ঃ আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আহ্বান তারেক রহমানের

সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আহ্বান তারেক রহমানের

বাংলাদেশ বিরোধী চক্রান্তে  লিপ্ত  হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে  ঃ  মামুনুল হক

বাংলাদেশ বিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে ঃ মামুনুল হক

নাগরিকত্ব আইন বদলে ফেলতে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ট্রাম্প

নাগরিকত্ব আইন বদলে ফেলতে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ট্রাম্প

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কষ্ট আমরা বুঝি' -  ড. ফায়েজ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কষ্ট আমরা বুঝি' - ড. ফায়েজ

সিদ্ধিরগঞ্জে জালকুড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ৮ দোকান পুড়ে ছাই

সিদ্ধিরগঞ্জে জালকুড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ৮ দোকান পুড়ে ছাই

লাখো রোহিঙ্গাদের ইফতার স্থানে প্রবেশের হুড়োহুড়িতে নিহত ১  আহত ২

লাখো রোহিঙ্গাদের ইফতার স্থানে প্রবেশের হুড়োহুড়িতে নিহত ১ আহত ২

ভূরুঙ্গামারীতে নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন

ভূরুঙ্গামারীতে নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন

বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের ফল-মিষ্টি দিলেন আগরতলা পৌরসভার মেয়র

বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের ফল-মিষ্টি দিলেন আগরতলা পৌরসভার মেয়র

পতিত স্বৈরাচারের দোসররা একেক সময় একেক নামে আবির্ভাব হচ্ছে: খায়ের ভূঁইয়া

পতিত স্বৈরাচারের দোসররা একেক সময় একেক নামে আবির্ভাব হচ্ছে: খায়ের ভূঁইয়া

আল হিকমাহ ইসলামিক অলিম্পিয়াড পুরুষ্কারে ভূষিত হলো নোয়াখালী মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা

আল হিকমাহ ইসলামিক অলিম্পিয়াড পুরুষ্কারে ভূষিত হলো নোয়াখালী মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা

মাগুরায় শিশু আছিয়ার নির্মম মৃত্যু: রাবি শিক্ষক ফোরামের বিচার দাবি

মাগুরায় শিশু আছিয়ার নির্মম মৃত্যু: রাবি শিক্ষক ফোরামের বিচার দাবি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মার্ক কার্নি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মার্ক কার্নি

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে, নইলে সংকট বাড়বে:  শিপন

ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে, নইলে সংকট বাড়বে: শিপন

কয়েকজন ছাত্রনেতা মনে করে ৫ আগষ্টের আগে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রই ছিলো না: ইশরাক

কয়েকজন ছাত্রনেতা মনে করে ৫ আগষ্টের আগে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রই ছিলো না: ইশরাক

ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকলে কেউ ক্ষতি করতে পারবে না - আমিনুল হক

ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকলে কেউ ক্ষতি করতে পারবে না - আমিনুল হক

আল-আকসা মসজিদে ৮০ হাজার মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়

আল-আকসা মসজিদে ৮০ হাজার মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু মেয়েদের

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু মেয়েদের