রাজধানীতে ফিরছেন কর্মজীবীরা
২২ জুন ২০২৪, ১২:২২ এএম | আপডেট: ২২ জুন ২০২৪, ১২:২২ এএম
ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষেরা। ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে গত মঙ্গলবার তবে যারা অতিরিক্ত ২-৩ দিন ছুটি নিয়েছিলেন, তারাও এখন ফিরছেন কর্মস্থল ঢাকায়। ঈদ শেষে যে পরিমাণ যাত্রীর চাপ থাকার কথা ছিল, এখনও তা দেখা যাচ্ছে না ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষেরা ধীরে-সুস্থে ফিরছেন। গতকাল শুক্রবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ছুটি শেষে রাজশাহী থেকে ফিরে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আরিফ হোসেন বলেন, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে গিয়েছিলাম। ছুটি ছিল তিন দিনের। আমি আরও তিন দিনের ছুটি নিয়ে গিয়েছিলাম। কারণ, সামনে আর বড় কোনও ছুটি নেই যে, সবাই মিলে বাড়ি যাবো। পরিবারের সবার সঙ্গে ভালোই ছুটি কাটিয়ে আসলাম। ছুটি শেষ, আবার বাচ্চাদের স্কুল খুলে যাবে, তাই ফিরে আসলাম।
আরেক যাত্রী বলেন, ঈদে মাত্র চার দিনের ছুটি পেয়েছি। ওই অল্প ছুটিতে এত দূরে যাওয়া-আসা পোষায় না। তাই দুই দিনের অতিরিক্ত ছুটি নিয়েছিলাম। ছয় দিনের ছুটি কাটিয়ে আসলাম। ট্রেনের যাওয়া-আসা দুটোই ভালো ছিল। কোনও সমস্যা হয়নি।
রংপুর থেকে আসা একজন বলেন, ভালোভাবেই ঢাকায় আসলাম, ট্রেনে তেমন যাত্রী ছিল না। মানে ঈদের সময় যেমনটা হয় সেরকম হয়নি। সবাই হয়তো আস্তে-ধীরেই আসার পরিকল্পনা করেছে।
রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত রাজধানী থেকে প্রায় ৭০ জোড়া ট্রেন ছেড়ে গেলেও ঈদের দিন একটি মেইল ট্রেন চলেছে। তবে গত মঙ্গলবার ঈদের দ্বিতীয় দিন কমলাপুর থেকে দুই-তৃতীয়াংশ ট্রেন চলাচল করেছে। বুধবার থেকে সব ট্রেন চলাচল করছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার যারা ফিরছেন, তারা গত ১১ জুন টিকিট কেটেছেন।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে অগ্রিম টিকিটের যাত্রা শুরু হয়েছে। যাত্রীদের চাপ স্বাভাবিক আছে। ভালোভাবেই যাত্রীরা গন্তব্যে ফিরতে পারছেন।
এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো এখন আর পথে থামছে না। যাত্রী ভরে আসায় পথ থেকে আর যাত্রী তুলছে না বেশির ভাগ পরিবহন। লোকাল পরিবহনও ঈদ মৌসুমে দূরপাল্লার পরিবহনে রূপ নেয়। বরিশাল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ছেড়ে আসা পরিবহনগুলোতে যাত্রী ভরা থাকায় শিবচরের সূর্যনগর, পাঁচ্চর, গোলচত্বর, নাওডোবাসহ একাধিক স্ট্যান্ডে থামছে না সচরাচর। ফলে ঢাকাগামী স্থানীয় যাত্রীদের পরতে হচ্ছে দুর্ভোগে।
গতকাল শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, বাসের জন্য ঢাকাগামী যাত্রীরা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করছেন। ঢাকা-ভাঙ্গা লোকাল পরিবহনগুলো ভাঙ্গা থেকেই যাত্রীপূর্ণ করে ছেড়ে আসছে। এছাড়া দূরপাল্লার কোনো পরিবহনই কোনো স্ট্যান্ডে এখন আর থামছে না। ফলে বাসস্ট্যান্ডেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের। লোকাল বাস এসে থামলে বাসে ওঠার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। পাঁচ্চর থেকে ২০০ টাকার ভাড়া ২৫০ করে নিচ্ছে বাসগুলো। ভাঙ্গা থেকে ৩০০ থেকে ৩৫০ শত টাকা ভাড়া নিচ্ছে। বাড়তি ভাড়া দিয়ে বাসে দাঁড়িয়ে ঢাকা যেতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এদিকে ঢাকামুখী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করলেও বাড়তি চাপ নেই রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। স্বাভাবিক সময়ের মতোই রয়েছে ঢাকামুখী যাত্রীদের সংখ্যা। তবে রাজধানীর প্রধান এ নদীবন্দরে একদিকে যেমন দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ যেমন আসছেন, অন্যদিকে ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন অনেকেই। গতকাল শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের সবগুলো লঞ্চ ডেকে পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়ে ঘাটে ভেড়ে। ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়েও কিছু লঞ্চ ঢাকার এসে পৌঁছায়। রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাটে যেমন ঢাকামুখী মানুষের ভিড় তেমনি ফিরতি যাত্রীর ভিড়ও কম নয়। বরিশাল, ভোলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা লঞ্চগুলোর কর্মীরা যাত্রীদের ডাকাডাকি করছেন। মানুষ একে একে লঞ্চে উঠছেন। বেশ কয়েকটা লঞ্চের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ডেক ভর্তি বসে আছেন মানুষ। কেউ আবার কেবিন নিয়ে দরদাম করছেন।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সকাল থেকেই একে একে ভিড়তে থাকতে দেখা গেছে বিভিন্ন রুটের লঞ্চ। দুপুরের পর থেকে গ্রিন লাইন-৩, পারাবত- ৯, ১০, ১২ ও ১৮, মানামী, কুয়াকাটা-২, কীর্তনখোলা- ২ ও ১০, সুরভী- ৮ ও ৯, অ্যাডভেঞ্চার-১ ও ৯, সুন্দরবন-১২ লঞ্চসহ মোট ১৫টি লঞ্চ বরিশাল নদীবন্দর থেকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এসে পৌঁছায়।
এক লঞ্চের চালক বলেন, এবার ঈদের আগে যেমন যাত্রীচাপ ছিল, পরে তেমন হচ্ছে না। এদিন সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় অনেকেই ঢাকা ফিরছেন।
ঢাকায় ফেরা এক যাত্রী বলেন, পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী থেকে ফিরেছেন ঢাকায়। এমভি এ আর খান লঞ্চের টিকিট পেয়েছি। তবে লঞ্চে অনেক মানুষের ভিড় ছিল। ঠিকভাবে ঢাকায় আসতে পেরেছি এটাই অনেক।
লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ঈদের আগে যাত্রী চাপ বাড়ায় আশা পেয়েছিলাম। এখন সে আশা আর দেখছি না। সামনের দিনগুলোতে কি হয় দেখা যাক।
বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাটের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, ঈদের পর যাত্রীচাপ স্বাভাবিক রয়েছে। আমাদের নিয়মিত লঞ্চগুলোই চলাচল করছে। অতিরিক্ত কোনো লঞ্চের প্রয়োজন পড়ছে না। ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
সুপার সিক্সে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ যারা
কুষ্টিয়ার মিরপুরে হত্যা চেষ্টা মামলায় আটক ২
সর্বোচ্চ দায় স্বীকার করতে প্রস্তুত হাসনাত আবদুল্লাহ
ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু বিপর্যয়ে শিশুদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে: ইউনিসেফ
এবার মেডেল ফর ডিপ্লোম্যাটিক অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন সউদী রাষ্ট্রদূত
সারাক্ষণ ভূমিকম্প অনুভব করি: পরীমণি
ঘণকুয়াশায় ৯ ঘন্টা পর আরিচা-কাজিরহাট এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের ফেরি সার্ভিস চালু হয়েছে
২৬ জানুয়ারি গুলশান-২ এলাকা এড়িয়ে চলার অনুরোধ
চীনে শুল্ক আরোপে ট্রাম্পের দ্বিধা, বিতর্কিত মন্তব্য ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ
ঘোষিত হলো ৯৭ তম অস্কারের মনোনয়ন: দেখে নিন সম্পূর্ণ তালিকা
জুলাই বিপ্লবে আহত সাতজনকে পাঠানো হলো সিঙ্গাপুরে
জন কেনেডি, রবার্ট কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং হত্যার গোপন নথি প্রকাশের নির্দেশ ট্রাম্পের
শুধু হাসিনা না হাসিনার দলও চিরতরে প্যাকেট হয়ে গেছে
নাইজেরিয়ায় বোকো হারামের হামলায় ২০ জেলে নিহত
গাজায় সংঘটিত মানবিক বিপর্যয় দেখতে নিরাপত্তা পরিষদকে আমন্ত্রণ ফিলিস্তিনের
সৈয়দপুরে ঘন কুয়াশায় আলু ও বোরো বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
মায়ের জানাজায় গিয়ে ছেলের মৃত্যু, একসঙ্গে দাফন
মিটার সংকটে মোরেলগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, ভোগান্তিতে গ্রাহক
গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে ২ বন্ধুর মৃত্যু