১ বছরের মধ্যে কিন্ডারগার্টেনসহ বেসরকারি বিদ্যালয়কে নিবন্ধনের আওতায় আনতে চায় সরকার
২৬ জুন ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ১২:০১ এএম
কিন্ডারগার্টেনসহ দেশের বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে এক বছরের মধ্যে নিবন্ধন ও শিক্ষাবিষয়ক (একাডেমিক) স্বীকৃতির আওতায় আনতে চায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্য নিয়ে তারা কাজ করছে। ইতোমধ্যে ২০ শতাংশ নিবন্ধন বা একাডেমিক স্বীকৃতির আওতায় চলে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩ এবং এ বছরের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উদ্বোধনের তথ্য জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব ফরিদ আহাম্মদ।
দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে এক লাখের বেশি। এর মধ্যে সরকারি ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। অন্যগুলো কিন্ডারগার্টেনসহ বেসরকারি বিদ্যালয়। কিন্তু বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশের নিবন্ধন নেই। ইচ্ছেমতো তারা চলছে। আগে একটি বিধিমালা থাকলেও সেটি বাস্তবে কাজে দেয়নি। এখন সেটিকে আরও যুগোপযোগী করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে বেসরকারি বিদ্যালয় চালাতে হলে নির্ধারিত শর্ত মেনে নিবন্ধন ও শিক্ষাবিষয়ক (একাডেমিক) স্বীকৃতি লাগবে। তা ছাড়া চালানো যাবে না। শিক্ষাবিষয়ক স্বীকৃতি দেবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং নিবন্ধন দেবে প্রাথমিকের বিভাগীয় উপপরিচালক।
কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনার অগ্রগতির বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক শিক্ষাসচিব বলেন, এ বিষয়ে তাঁরা কাজ করছেন। নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন বা বেসরকারি পর্যায়ে স্কুলের সংখ্যা একটু কমে গিয়েছিল। এ বছর ৮০০-এর মতো বেড়েছে, সব মিলিয়ে ৪৪ হাজারের কাছাকাছি হবে। বিধিমালা জারির পর মাঠপর্যায়ে যে কাজ হচ্ছে, সে অনুযায়ী ইতোমধ্যে ২০ শতাংশ বেসরকারি পর্যায়ের স্কুল (কিন্ডারগার্টেন) একাডেমিক স্বীকৃতি বা নিবন্ধনের আওতায় চলে এসেছে। তাঁরা আশাবাদী, আগামী এক বছরের মধ্যে যে লক্ষ্যমাত্রা, তাতে সব বেসরকারি প্রাথমিক পর্যায়ের স্কুল একাডেমিক স্বীকৃতি ও নিবন্ধনের আওতা চলে আসবে।
এ বিষয়ে সচিব আরও বলেন, মাত্র দু-তিন মাস আগেও নিবন্ধন হার ছিল ৮ থেকে ৯। এখন ২০ শতাংশ নিবন্ধন বা একাডেমিক স্বীকৃতির আওতায় চলে এসেছে। তাঁদের লক্ষ্য, আগামী এক বছরের মধ্যে সব বেসরকারি পর্যায়ের স্কুল একাডেমিক স্বীকৃতি বা নিবন্ধনের আওতায় চলে আসবে।
প্রাথমিক শিক্ষা পদক পাচ্ছেন ১২৬ জন: সংবাদ সম্মেলনে সচিব জানান, ১৮ ক্যাটাগরিতে ১২৬ জনকে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক দেওয়া হবে। আগামী ২৭ জুন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩’ প্রদান এবং ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় পর্যায়ে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থী- এই তিন ক্ষেত্রে মোট ১৮ ক্যাটাগরিতে ১২৬ জনকে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক দেওয়া হবে। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ৫৪ জন পদক গ্রহণ করবেন। বাকিদের পদক পৌঁছে দেওয়া হবে।
প্রাথমিকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালুর প্রস্তুতি: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইলে এই মুহূর্তে আরও ১৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি চালু করা যাবে আর আগামী তিন বছরের মধ্যে আরও এক হাজার বিদ্যালয়ে তা চালু করা যাবে। তবে এই কাজ হবে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, পর্যায়ক্রমে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক সচিব।
বর্তমানে দেশের প্রাথমিক শিক্ষা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। ২০১০ সালে করা জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণি ও মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত করার কথা বলা আছে। ছয় বছর পর ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। যদিও সরকার সেটি বাস্তবায়ন করেনি।
জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে দীর্ঘদিন পর আবারও প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা বিভাগ। এর অংশ হিসেবে প্রথমে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক করা হবে। এ জন্য আপাতত শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে তাদের অধীনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক বা নামকাওয়াস্তে বেতনে পড়ার ব্যবস্থা করবে। তিন বছর ধরে প্রস্তুতির পর সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নিজেদের প্রস্তুতির কথা জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব। তিনি বলেন, এখানে দুটি বিষয়। একটি হলো প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করা। আরেকটি হলো শতভাগ অবৈতনিক করা। তাঁরা হিসেব করে দেখেছেন, ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫ হাজারের কাছাকাছি বিদ্যালয়ে যদি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা যায় এবং নি¤œমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে ২৩ হাজারের কাছাকাছি বিদ্যালয়ে যদি অবৈতনিক করা যায় তাহলে সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
সচিব বলেন, এই কাজ করার জন্য তাদের কয়েকটি চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলো হলো অবকাঠামো, শিক্ষক নিয়োগ, পদ সৃষ্টি ও তাদের প্রশিক্ষণের চ্যালেঞ্জ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ালেন কাশ্মীরের নেতা ফারুক আব্দুল্লাহ
আবারও লাভ জিহাদের বলি হচ্ছেন সাইফ, দখল হচ্ছে পৈতৃক সম্পত্তি
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মশিউর গ্রেফতার
বাশার আসাদের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ট্রাম্পকে সউদী যুবরাজের ফোন, যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা
যথাযথ পদমর্যাদা চেয়ে রিভিউ আবেদন ডেপুটি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের
ভারতে আগুনের গুজবে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে আরেক ট্রেনের ধাক্কায় ১১ জনের মৃত্যু
রাজধানীর পান্থপথে বহুতল ভবনে আগুন
বিমানবন্দরে রাতভর তল্লাশি, এবারও পাওয়া গেল না কিছু
পাচারের অর্থ ফেরাতে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক প্রেসিডেন্টের সহায়তা কামনা
‘অপরাধ স্বীকার না করলে নির্বাচন করতে পারবে না আ.লীগ’
বায়ুদূষণের শীর্ষে চীনের তিন শহর, চার নম্বরে ঢাকা
মালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযান, ৭১ বাংলাদেশিসহ আটক ১৭৬
ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে মোদিকে চপেটাঘাত
উদ্যোক্তামুখী সমাজ নির্মাণে তরুণদের বিকল্প নেই: প্রধান উপদেষ্টা
লস অ্যাঞ্জেলেসে নতুন দাবানল, রেড-ফ্ল্যাগ জারি
তারাকান্দায় হ্যান্ড-ট্রলী ভর্তি রাসায়নিক সারের মালিকানা খুঁজছে পুলিশ
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা জয়শঙ্করের
জামায়াত নেতা আজহারের রিভিউ শুনানি ২০ ফেব্রুয়ারি
সরকারে ছাত্র প্রতিনিধি রেখে রাজনৈতিক দল করলে তা মানা হবে না : মির্জা ফখরুল