ত্রাহিদশায় শিল্পখাত
২৯ জুন ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:০৩ এএম

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানা। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তীব্র গ্যাস-সঙ্কটে এ কারখানায় উৎপাদন নেমে এসেছে ৩০ শতাংশের নিচে। পরিস্থিতির চাপে মুষড়ে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজহার খান। দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে শুধু বললেন, কী করব বুঝতে পারছি না। দোয়া করবেন, যেন শেষপর্যন্ত টিকে থাকতে পারি। মিথিলা টেক্সটাইল অতি-নিম্ন সক্ষমতা নিয়ে এখনও সচল থাকলেও নারায়ণগঞ্জের আরেকটি টেক্সটাইল কারখানা ইনটিমেট স্পিনিং মিল গ্যাসের সঙ্কটে প্রায় বন্ধ অবস্থা। কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস সঙ্কটের সম্মুখীন হয়ে আসলেও গত প্রায় ৪ সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। কারখানাটির চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, স্পিনিং সেক্টরে গত প্রায় চার দশক ধরে আমার ব্যবসা। এবারের মত এত তীব্র গ্যাস-সঙ্কট আর দেখিনি। শুধু টেক্সটাইল শিল্পই নয়, দেশের গ্যাসনির্ভর অন্যান্য শিল্প, যেমন স্পিনিং, ডাইং ও প্রিন্টিং কারখানা, নিট পোশাক, সিমেন্ট, সিরামিক, লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের শত শত কারখানা এই সঙ্কটের কবলে। গ্যাসের সঙ্কটে তাদের উৎপাদন এমনকি ৩০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
সূত্র মতে, দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলছে ডলার সঙ্কট। কাগজে-কলমে ডলারের রেট ১১৭ টাকা। খোলাবাজারে কোথাও কোথাও ডলারপ্রতি ১২৮ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। একদিকে ডলারের সঙ্কট অন্যদিকে অতিরিক্ত দাম দিয়ে ডলার মিলছে না, আমদানিতে সরকারের নিয়ন্ত্রিত আমদানি নীতির কারণে শিল্পের কাঁচামাল ও ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানি বন্ধের পথে। যার প্রভাবে শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কমছে কর্মসংস্থান। এদিকে কমে যাচ্ছে জাতীয় প্রবৃদ্ধি। গত বৃহস্পতিবার মাস্টারকার্ড ইকোনমিক্স ইনস্টিটিউট (এমইআই) বাংলাদেশের অর্থনীতির এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, আর আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যা হবে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। যদিও চলতি অর্থবছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে এর আগে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, তার চেয়ে বেশি হওয়ারই অনুমান করেছে সংস্থাটি। অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার ফলে চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হবে বলে জানায় বিশ্বব্যাংক। অন্যদিকে, আগের পূর্বাভাস সংশোধন করে কমিয়ে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে জানায় আইএমএফ। অথচ ১৮ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে এমনিতেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭৫ থাকার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে ডলার সঙ্কট ও ডলারের দাম বাড়ার কারণে অস্থির হচ্ছে অর্থনীতির সব খাত। যার প্রভাব পড়েছে বিদেশি ঋণ পরিশোধ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ও সর্বোপরি পণ্যের দামের ওপর। বিদ্যুৎ-গ্যাস সঙ্কটে শিল্পের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের বকেয়া গত ডিসেম্বরে উঠে গিয়েছিল প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণে। এর বড় অংশই ছিল বিদ্যুৎ খাতের। বিশেষ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে কিছু বকেয়া কমানো হলেও এখন তা আবারো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ বিলিয়ন ডলার। টাকার অংকে বকেয়া এ অর্থের পরিমাণ ৫৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। ভর্তুকির মাধ্যমে এ বকেয়া পরিশোধ করতে গিয়ে অর্থ সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে সরকারকে। বিপাকে পড়তে হচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি আমদানিতে পর্যাপ্ত ডলারের সংস্থান করতে গিয়েও। বিদ্যুৎ সঙ্কটে অতিরিক্ত লোডশেডিং নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, সাভার, আশুলিয়া, মাওনাসহ বিভিন্ন শিল্প এলাকার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উৎপাদন না হলেও কারখানাগুলোকে বেতন-ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ করতে হচ্ছে। ঢাকায় কিছু সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও ঢাকার বাইরের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আর দিনের অর্ধেক সময়ের বেশি বিদ্যুৎ থাকছে না কারখানাগুলোতে। আর ওইসব এলাকার মানুষের অভিযোগ তাদের বিদ্যুৎ-গ্যাস কতটুকু সময় থাকে এটা নিয়ে গবেষণা দরকার। তাদের মতে, বিদ্যুৎ না থাকায় দৈনন্দিন খরচও বেড়েছে কারণ ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ফ্রিজ, টিভি, ওভেনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। আবার ফ্রিজে থাকা শাক-শবজি-গোশত ও ফল নষ্ট হচ্ছে। যা পরিবারগুলোর ব্যয়কে বাড়িয়ে দিচ্ছে। একই সঙ্গে শিল্প এলাকার বস্ত্রকলগুলো কয়েক মাসের বেশি সময় ধরে গ্যাসের চাপ শূন্য থেকে ২ পিএসআই। গ্যাসের অনিয়মিত সরবরাহের কারণে কারখানাগুলোর আধুনিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ছে।
এদিকে ডলার সঙ্কট, বিদ্যুৎ-গ্যাস সঙ্কটের মধ্যে ব্যবসায়ীরা বিপাকে আছে ব্যাংক ঋণ নিয়ে। উৎপাদন না হওয়ায় লোকসান গুনতে হলেও মাথার ওপর আরেক বোঝা ব্যাংক ঋণের সুদহার। বর্তমানে ব্যাংক ঋণের অতিরিক্ত সুদহার ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশও মাথা ব্যথার কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। অপরদিকে দেশের চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আরেকটি খারাপ খবর দেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমে গেছে। বিশেষ করে নতুন বিনিয়োগ (ইক্যুইটি) তিন বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কমছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ২০২৩ সালের প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, গত বছর প্রকৃত এফডিআই কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ, আর একই সময়ে নতুন বিনিয়োগ কমেছে ৩১ শতাংশ।
ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলার-সঙ্কটের কারণে দুই বছর ধরে বিদেশি এয়ারলাইনসসহ অনেক বিদেশি কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে মুনাফা নিজ দেশে নিতে পারছে না। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বপ্নের তৃতীয় টার্মিনাল এ বছরেই চালু হচ্ছে। নতুন অনেক এয়ারলাইনস দেশে আসার কথা জানালেও ডলার সঙ্কটের প্রভাবে অনেকেই বিনিয়োগ করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। আবার অনেকে ব্যবসা সংকুচিত করে ফেলছেন। নতুন করে ব্যবসা সম্প্রসারণও কমিয়ে ফেলেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডলার সমস্যার সমাধান না হলে বিদেশি বিনিয়োগে সুবাতাস আসবে না। পাশাপাশি রয়েছে বিনিয়োগে পদে পদে বাধা। সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে মত দিয়েছে ব্যবসায়ী এবং অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া সম্ভাবনাময় আয়ের উৎস ফল ও শাক-সবজিসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের রফতানি বাড়াতে পর্যাপ্ত এয়ার-কার্গো চালুর দাবি জানিয়েছে ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট অব ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল রফতানিকারকরা। পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বিমানের ভাড়া বা ফ্রেইট কষ্ট যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার দাবিও জানিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত না করার কারণে শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানির অভাবে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। এর ফলে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ারও উপক্রম হয়েছে। দেশের স্বার্থে অর্থনীতির স্বার্থে স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষা ও উন্নয়নে কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের কথা বলেন তিনি। একই সঙ্গে ডলার সঙ্কট, বাড়তি বিমান ভাড়া, কাস্টমস এবং এইচএস কোড সংক্রান্ত নানা জটিলতার কারণে পণ্য আমদানি ও রফতানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এতে করে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে। পণ্য আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত সমস্যা দূরীকরণে তাগিদ তিনি।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ডলার সঙ্কট, গ্যাস-বিদ্যুতের সঙ্কটের কারণে ব্যবসা এখন নিভু নিভু হয়ে জ্বলছে। ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্য এক্সিট পলিসি দিন। দিনশেষে আমরা ডলার দেশে আনার ব্যবস্থা করি। কিন্তু আমরা যদি এত প্রতিবন্ধকতার জন্য ব্যবসা করতে না পারি, তাহলে সরকারের ডলার আসবে কোত্থেকে?
সূত্র মতে, ডলার রেট প্রতিদিনই বাড়ছে। নিয়ন্ত্রিত আমদানি, প্রতিনিয়ত রফতানি পণ্যের দর হারাচ্ছে। অপরদিকে চলমান গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঙ্কট। এতে বহু কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এ জন্য ব্যবসায়ীরা সম্প্রতি সেফ এক্সিট পলিসিও চেয়েছে সরকারের কাছে। একাধিক ব্যবসায়ী আক্ষেপ করে বলেন, দিনশেষে আমরা ডলার দেশে আনার ব্যবস্থা করি। কিন্তু আমরা এত প্রতিবন্ধকতার জন্য ব্যবসা করতে পারছি না, তাহলে সরকারের ডলার আসবে কোত্থেকে? ব্যাংকগুলোর জন্য সরকার সহজ এক্সিট পলিসি করেছে দাবি করে ব্যবসায়ীরা বলেন, কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলে গ্রাহক সর্বোচ্চ মাত্র ১ লাখ টাকা পাবে। এর বেশি পাবে না। অথচ শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য কোনো সহজ এক্সিট পলিসি নেই। ওই অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর কাছে অনুরোধ করে ব্যবসায়ীরা বলেন, আপনি আমাদের গ্যাস দেন। গ্যাস-বিদ্যুৎ দিয়ে আমাদের কারখানা চালানোর ব্যবস্থা করেন। এলপিজি দিয়ে এই কারখানা চালানো আর সম্ভব নয়। রেভিনিউ যা চান, আমরা দিতে রাজি আছি। ব্যাংকগুলো ব্যাংকিং ব্যবসা না করে ডলার ব্যবসায় নেমেছে বলে অভিযোগ করে শিল্পোদ্যোক্তারা।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম রফতানি খাতের সংকট তুলে ধরে বলেন, সুদহার বাড়ছে, ডলার রেট বাড়ছে। ব্যাংক আমাদের সাথে ব্যবসা না করে ডলার ব্যবসায় নেমেছে। রফতানি পণ্যের দর পাচ্ছি না। উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দরে অর্ডার নিতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় এবার বহু কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের যেসব কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আমাদের জন্য সেফ এক্সিট পলিসি দরকার।
ইস্পাত শিল্পের ব্যবসায়ী মাসুদুল আলম মাসুদ বলেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ খাতের উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বেড়েছে দফায় দফায়। এভাবে হলে দেশে বিনিয়োগ আসবে না বলে হুঁশিয়ার করেন সরকারকে।
দেশের সব শিল্পই গ্যাস ও বিদ্যুতের জন্য ভোগান্তি পোহাচ্ছে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে গ্যাস ও বিদ্যুতের জন্য সবার খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে দাবি করে উত্তরা মোটর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মতিউর রহমান অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করে বলেন, আপনি আমাদের গ্যাস দেন। রেভিনিউ যা চান, আমরা দিতে রাজি আছি। গ্যাস-বিদ্যুৎ দিয়ে আমাদের কারখানা চালানোর ব্যবস্থা করেন। এলপিজি দিয়ে এই কারখানা চালানো আর সম্ভব নয়। এদিকে গ্যাস-সঙ্কটে বস্ত্রকলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাসের অনিয়মিত সরবরাহের কারণে কারখানাগুলোর আধুনিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ছে। আর তাই সম্প্রতি বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকারকে দেওয়া এক চিঠিতে এমন অভিযোগ করেছেন বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী। চিঠিতে মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করে বলেন, গ্যাসের তীব্র সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ পেতে বারবার সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ করা হয়েছে। এতে গ্যাস সরবরাহে কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং কয়েক দিন ধরে কারখানাগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ প্রায় নেই বললেই চলে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে কারখানাগুলো আর কত দিন চালু রাখা সম্ভব হবে, এ নিয়ে আমরা গভীরভাবে শঙ্কিত।
চিঠিতে বিটিএমএর সভাপতি বলেন, গত বছরের জানুয়ারি থেকে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৬ টাকা থেকে ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে ৩১ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে। এ সময় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে আশ্বস্ত করা হয়, শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা হবে। দুঃখজনক বিষয় হলো, এক বছরের বেশি সময় ধরে কারখানাগুলো বাড়তি বিল দিলেও গ্যাসের সরবরাহ কখনোই কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছেনি। ফলে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় রফতানি আদেশ পরিপালন করতে পারছে না কারখানাগুলো। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের কাছে অবিলম্বে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়ে বিটিএমএ’র সভাপতি বলেন, তিন বছরের বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সঙ্কটের কারণে স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। কয়েক মাস ধরে কারখানাগুলো তাদের উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ৪০-৫০ শতাংশ ব্যবহার করতে পারছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

সুনামগঞ্জে বিজিবি’র অভিযানে ৪১ লাখ টাকার অবৈধ মালামাল জব্দ

ইসরায়েলি গণহত্যায় মার্কিন সমর্থন বন্ধের আহ্বান ইরানের

ভারতকে কোনোক্রমে সভ্য রাষ্ট্র বলা চলে না : শায়খ আহমদুল্লাহ

সরকার পতনের যে নীলনকশা প্রমাণসহ ফাঁস করলেন পিনাকী

ঢাকা উত্তর বিএনপির ৭ নেতা বহিষ্কার, মিরপুরে বিক্ষোভ

নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তে উত্তাল ইসরায়েল, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রধান বরখাস্তের উদ্যোগ

মেসির দুর্দান্ত গোল, মায়ামির হ্যাটট্রিক

আছিয়া হত্যার বিচারের দাবিতে সাতক্ষীরায় মহিলা জামায়াতের মানববন্ধন

অপরাধে জড়িয়ে পড়লে কাউকে ছাড় নয়-মাহবুব আলমগীর আলো

কত হাজার কোটি টাকার মালিক শেখ সেলিম? জানা গেলো চাঞ্চল্যকর তথ্য!

ফরিদপুরে শিশুকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ব্যবসায়ীকে গণপিটুনি

ঢাকায় হিজবুত তাহরীরের সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার

১৯ দেশের মিশন প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইসি

ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের তীব্র নিন্দা

নর্থ মেসিডোনিয়ার নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: নিহত ৫৯, আটক ১০

ট্রেনে ঈদযাত্রা: ২৭ মার্চের টিকিট বিক্রি শুরু

কর্মবিরতি প্রত্যাহার, মেট্রোরেলে টিকিট ব্যবস্থা চালু

নাটোরে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আটক

ঢাকাসহ ৩ বিভাগে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস

ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্প