খাদ্য-ওষুধ-পানির জন্য হাহাকার
০৯ জুলাই ২০২৪, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪, ১২:১৩ এএম
উত্তর জনপদ, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল হয়ে ক্রমশ মেঘনার ভাটির দিকে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রধান নদ-নদী ও শাখা নদীগুলোর পানি কোথাও অপরিবর্তিত, কোথাও অতি ধীর গতিতে কমছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধীর গতিতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বিভিন্ন নদ-নদীর পানি ধীর গতিতে হ্রাসের সাথে সাথে অনেক জায়গায় নদীভাঙনের তাণ্ডব বেড়েই চলেছে। সেই সাথে বন্যার্ত লাখ লাখ মানুষের নানামুখী দুঃখ-দুর্দশা বেড়েই চলেছে। খাদ্য, জরুরি ওষুধপথ্য, বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য বানভাসিরা হাহাকার করছে। শুকনো খাবার নেই। পানি নেই। শৌচাগার নেই। উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর, নীলফামারী, উত্তর-মধ্যাঞ্চলে জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, মধ্যাঞ্চলে টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোণা জেলাগুলোতে বন্যার্তদের নিত্যদিনের দুঃখ-কষ্টের একই চিত্র। রাস্তাঘাট, বাঁধে, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে, একটু উঁচু জায়গায় আশ্রিত বানভাসিরা অবর্ণনীয় মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের কাজকর্ম জুটছে না। খাবার জোগাড় করার মতো টাকা-পয়সা নেই তাদের। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের দুঃখ-দুর্গতি সীমাহীন। বন্যার্তরা একমুঠো খাবারের আশায় তাকিয়ে আছে। কিন্তু বন্যার্ত অসহায় বেশিরভাগ মানুষের কাছে খাদ্যসহ জরুরি ত্রাণ সাহায্য এখনও পৌঁছেনি।
গতকাল সোমবার বিকাল পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, ধরলা-ঘাঘট, আত্রাই, সুরমা-কুশিয়ারা, মেঘনাসহ দশটি নদ-নদী ২১টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দেশে টানা বৃষ্টি ও উজানে ভারত থেকে আসা ঢলের কারণে নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পায়। তবে গতকালসহ তিন দিনে দেশের অভ্যন্তরে ও উজানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাত আপাতত কমেছে। এখন বিভিন্ন নদীর পানি ধীর গতিতে কমলেও অনেক জায়গায় নদীভাঙনের তাণ্ডব বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে ফল-ফসলি জমি, খেত-খামার, বসতভিটা, রাস্তাঘাট। গতকাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বন্যা কবলিত হয়েছে উত্তর, উত্তর-মধ্য ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১২টি জেলা। বন্যায় এখনও ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। বন্যায় কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২ লাখ মানুষ।
গতকাল বিকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-মধ্য ও মধ্যাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ জেলাগুলোতে বন্যা পারিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। মধ্যাঞ্চলের দিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে টাঙ্গাইল থেকে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত ফুলে-ফুঁসে উঠেছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলেও বাড়ছে নদ-নদীর পানি। আগেই বন্যা কবলিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোণা জেলায় বন্যা পরিস্থিতি খুব ধীর গতিতে উন্নতি হচ্ছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত বিপদসমীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীগুলো হচ্ছে, দুধকুমার, ধরলা, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, আত্রাই, সুরমা, কুশিয়ারা, সোমেশ^রী ও মেঘনা।
দেশের উত্তর জনপদ ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলে অন্যতম বৃহৎ অববাহিকায় ব্রহ্মপুত্র নদ তিনটি পয়েন্টের সবক’টিতে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে গতকাল বিকাল পর্যন্ত পানি আরও সামান্য হ্রাস পেয়ে ব্রহ্মপুত্র নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার, হাতিয়া পয়েন্টে ৪২ সে.মি. এবং চিলমারী পয়েন্টে ৫৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। যমুনা নদের ১০টি পয়েন্টে পানি ধীর গতিতে হ্রাস পাচ্ছে। এর মধ্যে যমুনা ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৮, বাহাদুরাবাদে ৭২, সাঘাটায় ৭০, সারিয়াকান্দিতে ৪৯, কাজীপুর ৪৪, জগন্নাথগঞ্জে ১১১, সিরাজগঞ্জে ৫৮ সে.মি. এবং মধ্যাঞ্চলে টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়িতে বিপদসীমার ২৮ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মধ্যাঞ্চলে আত্রাই নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেয়ে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে বিপদসীমার ৮ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঢাকার কাছে মধ্যাঞ্চল ও মধ্য-পূর্বাঞ্চলে মেঘনা নদীর পানি হ্রাস পেয়ে মুন্সীগঞ্জে মেঘনা-ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলের অন্যতম নদী দুধকুমার নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে পাটেশ^রীতে বিপদসীমার ৩৭ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ২৬ সে.মি. ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। গাইবান্ধায় ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ১২ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুরমা-কুশিয়ারা উভয় নদীর পানি আরও কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। তবে এখনও সুরমা একটি পয়েন্টে এবং কুশিয়ারা নদী ৩টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমেশ^রী নদী কলমাকান্দায় বিপদসীমার ঊর্ধ্বে রয়েছে।
দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহেরর প্রবাহ পরিস্থিতি সম্পর্কে পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বুলেটিনে কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান গতকাল জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ধীর গতিতে হ্রাস পাচ্ছে, যমুনা নদের পানি প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা উভয় নদের পানি ধীর গতিতে হ্রাস পেতে পারে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলাসমূহের যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মা নদী গোয়ালন্দ পয়েন্টে সতর্কসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীসমূহের পানি হ্রাস পেতে পারে। এর ফলে ধরলা ও দুধকুমার নদী সংলগ্ন কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির ধীর গতিতে উন্নতি হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়ী পয়েন্টে অপরিবর্তিত থাকতে পারে। উত্তরাঞ্চলে ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা পয়েন্টে হ্রাস পেতে পারে। এ অবস্থায় সিরাজগঞ্জ জেলার আত্রাই নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে। গাইবান্ধা জেলায় ঘাঘট নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বাঙ্গালী, আপার-করতোয়া, পুনর্ভবা, টাঙ্গন, ইছামতী-যমুনা, আত্রাই, মহানন্দা এবং ছোট-যমুনা নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। এদিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীসমূহের পানি সার্বিকভাবে হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
পাউবো’র পর্যবেক্ষণাধীন দেশের ১১০টি নদ-নদীর পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৫৩টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি এবং ৫৪টিতে হ্রাস পায়। ৩টি স্থানে পানি অপরিবর্তিত ছিল।
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার সহ ১৬টি নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। চিলমারী পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার, দুধকুমর ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী ভূরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী, নাগেশ^রী, কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, রাজারহাট, চিলমারী, রৌমারী, চর রাজিবপুর এই ৯ উপজেলার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তথ্যমতে প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরেছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯৩৯ জন পানিবন্দি রয়েছে। ৩৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে, ৩টি বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ৪০৪টি আশ্রকেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে এরমধ্যে ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ হাজার ৩৯৫ জন বন্যার্ত আশ্রয় নিয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যার্তদের মাঝে ৩৮৭ মেট্রিকটন চাল, ২১ লাখ ৮৫হাজার টাকা ও ১৮ হাজার ৯৮০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত রয়েছে। বানভাসিদের সহায়তায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ৮৩টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এদিকে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবার সঙ্কটে পড়েছেন চরাঞ্চলের বন্যা কবলিতরা। পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কটে নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা। বানভাসি মানুষের জন্য সরকারিভাবে কিছু ত্রাণ সহায়তা লক্ষ্য করা গেলেও এনজিও গুলো হাত গুটিয়ে বসে আছে।
শেরপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, শেরপুরে ব্রহ্মপুত্র ও দশানি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্রহ্মপুত্র ও দশানি নদীর ভাঙনও তীব্র হচ্ছে। শেরপুর সদরের ৬ ও ৭ নম্বর চর ও চুনিয়ার চরে ভাঙনের তীব্রতা বেশি। এসব এলাকায় শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন। বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি। বাড়ি ঘর ও জমি হারিয়ে দিশেহারা এ এলাকার মানুষ। এ এলাকার মানুষ দ্রুত নদী ভাঙনের কবল থেকে বাঁচতে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে যমুনাসহ সবকটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরেছে। এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানির চাপে প্রতিনিয়তই যমুনা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামের গ্রামীণ সড়ক ভেঙে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। গতকাল বিকেলে ও রাতে পানির তীব্র স্রোতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার কয়েড়া এলাকার দুটি সড়ক ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের মাঠে বন্যার পানি উঠায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এছাড়াও ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুনা, গাবসারা ও কোনাবাড়ী চলাঞ্চলসহ কয়েকটি ইউনিয়ন, টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, দেলদুয়ার এবং নাগরপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জের বন্যা উপদ্রত সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতি গ্রস্থ ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত লোকজনের মধ্যে চিকিৎসা সেবা প্রধান ও ত্রাণ বিতরণ করেছেন র্যাব ফোর্সের অতিরিক্ত আইজিপি মহাপরিচালক ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ (বিপিএম)। গতকাল ৩টায় সদর উপজেলায় সুরমা ইউনিয়নের মইনপুর, বীরামপুর, অক্ষনগর পূর্ব সদর ঘর গ্রামে প্রায় ৫ শতাধিক বানবাসির মধ্যে চাউল, ডাল, তেল, পিয়াজ, হলুদ, মরিছ ও শুকনো খাবার, বিতরণ করা হয়।
ইসলামপুর (জামালপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ইসলামপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে মোহাম্মদপুর অংশে আবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ। ভাঙনের ফলে শত শত বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সম্প্রতি ভারি বর্ষণের পানি উজান থকে নেমে আসায় এবং পাহাড়ি ঢলে আকস্মিকভাবে ব্রহ্মপুত্রের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, পাকা রাস্তা হুমকির মধ্যে পড়েছে। ভাঙন এলাকার অনেকেই তাদের বসত ঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। তারা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন এবং মানবেতর অবস্থায় রয়েছেন।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাওলানা মো. মোশারফ হোসাইন জানান, মোহাম্মদপুর নদী ভাঙনের কথা ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানকে অবিহিত করলে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দেন। মন্ত্রী পরে বিআইডব্লিউটিএ কে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কুলাউড়ায় প্রায় মাস খানেক থেকে বন্যার পানির কারণে হাওর অঞ্চলে গৃহপালিত পশুর তীব্র গোখাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি বাড়ার সাথে সাথে নিম্নাঞ্চলের মানুষজন আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাই নিলেও তাদের গৃহপালিত পশু গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া নিয়ে পড়েছে মহাবিপাকে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা লোকজন বৃত্তশালীদের কাছে তাদের জন্য ত্রাণ না চেয়ে তাদের গৃহপালিত পশুদের জন্য গোখাদ্য চাচ্ছেন। চারিদিকে থৈই থৈই পানির কারনে কৃষি জমি ও মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় এসব পশুদের প্রধান খাদ্য ঘাস ও খড়ের তীব্র সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। বন্যা দুর্গত হাওর পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দরা তাদের নিজেদের সমস্যা ভুলে এসব পশুদের আহার কিভাবে সংগ্রহ করবেন সেই চিন্তায় দিন পার করছেন। বন্যা আসার আগে অনেক কৃষক ধানের (নেড়া) খের সংগ্রহ করে রাখায় কিছুদিন পশুদের গোখাদ্য হিসেবে সেগুলো ব্যবহার করলেও বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় গোখাদ্য সঙ্কটে পড়েছেন তারা।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গাইবান্ধা ১ আসনের এমপি প্রকৌশলী নাহিদ নিগার চরাঞ্চলের বন্যা দুর্গত এলাকায় ৮০০ মানুষের মাঝে জিআর চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেন। গতকাল দুপুরে হরিপুর ইউনিয়নের কাশিম বাজার ও বেলকা ইউনিয়নে ৮০০ মানুষের মাঝে জি, আর চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কেরানীগঞ্জে ট্রাক চাপায় মোটরসাইকেল আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু
মানিকগঞ্জে বাঘুটিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আইয়ূব ভাদুরী গ্রেফতার
পবিপ্রবিতে র্যাগিংয়ের ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন ; বহিষ্কার ৭ শিক্ষার্থী
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা রাজ্জাক গ্রেফতার
ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে : হাইকোর্টের রায় স্থগিত
বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে ইবি ছাত্রদলের শ্রদ্ধাঞ্জলি
মোল্লা কলেজে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ভবনে আটক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন
শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধে কাজ করে যাবো: ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ইবি ভিসি
মোল্লা কলেজে ব্যাপক হামলা-ভাঙচুর
ব্রিটেনে ঝড় বার্টের তাণ্ডবে বহু প্রাণহানি ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় খালাস পেয়েছেন দৈনিক ইনকিলাবের সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন
অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে এগিয়ে গেল ভারত
সাভারে হেফাজতে ইসলামের নেতাকে হয়রানীর বিচার দাবীতে প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান
ফিলিপাইনে মার্কোসের ওপর হত্যার হুমকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ
সৈয়দপুরে ঘন কুয়াশার কারনে বিমানবন্দরে দুটি বিমান অবতরণ করতে পাড়ে নাই
সাটুরিয়ায় বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
শাকিবের 'বরবাদ' এ আইটেম গার্ল নুসরাত জাহান
ব্রাহ্মণপাড়ায় এক বছরে বিষপানে ২৪৩ জন আত্মহত্যার চেষ্টা
ভিলনিয়াস বিমানবন্দরের কাছাকাছি মালবাহী বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ১
মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের দিকে যাচ্ছে কবি নজরুল-সোহরাওয়ার্দীর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা