ত্যাগ চাই মর্সিয়া ক্রন্দন চাহি না
০৯ জুলাই ২০২৪, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪, ১২:১৩ এএম
আল কুরআনে অলঙ্ঘনীয় পবিত্র মাসের কথা অত্যন্ত মনোজ্ঞরূপে বলা হয়েছে। যেমন:
(ক) ইরশাদ হয়েছে: ‘পবিত্র মাস পবিত্র মাসের বিনিময়ে। যার পবিত্রতা অলঙ্ঘনীয় তার অবমাননা কিসাসের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই যে কেউ তোমাদেরকে আক্রমণ করবে তোমরাও তাকে অনুরূপ আক্রমণ করবে এবং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করবে। আর জেনে রেখ, নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন’। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত ১৯৪)। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবীগণের মনে এই সন্দেহের উদয় হয়েছিল যে, সম্মানিত মাসসমূহে (আশহুরে হারামে) কোথাও কারো সাথে যুদ্ধ করা যায়েজ নয়। এমতাবস্থায় যদি মক্কার মুশরিকরা যুদ্ধ শুরু করে তাহলে তার প্রতিরোধকল্পে কিভাবে আমরা যুদ্ধ করব? তাদের এ দ্বিধা দূরা করার জন্যই এই আয়াতটি নাযিল করা হয়েছে। অর্থাৎ মক্কার হারাম শরীফের সম্মানার্থে শত্রুর হামলা প্রতিরোধ কল্পে যুদ্ধ করা যেমন শরীয়তসিদ্ধ, তেমনি সম্মানিত মাসে (আশহুরে হারামে) যদি কাফেররা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়, তবে তার প্রতিরোধকল্পে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাও যায়েজ। (তাফসীরে বাগভী)
(খ) ইরশাদ হয়েছে: ‘লোকেরা আপনাকে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে : বলুন, এতে যুদ্ধ করাা কঠিন অপরাধ। কিন্তু আল্লাহর পথে বাধা দান করা, আল্লাহর সাথে কুফুরী করা, মসজিদুল হারামে বাধা দেয়া এবং এর বাসিন্দাকে এ থেকে বহিষ্কার করা আল্লাহর নিকট তার চেয়েও বেশি অপরাধ। আর ফিতনা হত্যার চেয়েও বেশি অপরাধ। (সূরা আল্ বাকারাহ : আয়াত ২১৭)। আলোচ্য আয়াতে প্রমাণিত হল যে, নিষিদ্ধ মাস অর্থাৎ রজব, যিলক্বদ, যিলহজ্জ এবং মহররম মাসে যুদ্ধবিগ্রহ করা হারাম। কিন্তু অধিকাংশ ফকীহ এবং ইমাম জাসসাসের মতে এ আদেশ রহিত হয়ে গেছে। ফলে, এখন কোনো মাসেই প্রয়োজনীয় যুদ্ধ নিষিদ্ধ নয়। ইমাম কুরতুবী বলেন, এসব মাসে নিজে থেকে যুদ্ধ আরম্ভ করা সর্বকালের জন্যই নিষিদ্ধ। তবে, কাফেররা যদি এসব মাসে আক্রমণ করে, তবে প্রতিরোধমূলক পাল্টা আক্রমণ করা মুসলমানদের জন্যও যায়েজ। (তাফসীরে কুরতুবী : ৩/৪২৩)
(গ) ইরশাদ হয়েছে: ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর নিদর্শন সমূহ, পবিত্র মাস, কুরবানীর জন্য কাবায় পাঠানো পশু, গলায় পরান চিহ্নবিশিষ্ট পশু এবং নিজ প্রতিপালকের অনুগ্রহ ও সন্তোষ লাভের আশায় পবিত্র ঘর অভিমুখে যাত্রীদেরকে (আক্রমণ করা) বৈধ মনে করবে না’। (সূরা আল মায়েদাহ : আয়াত ২)।
এই আয়াতে নিজে থেকে আক্রমণ করাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। যদি কেউ আক্রমণ করে বা যুদ্ধের আগে থেকেই চলে আসে তবে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা যাবে, নতুবা নয়। (তাফসীরে সা’দী : তাফসীরে ইবনে কাসির)।
প্রাথমিক যুগে বর্ধিত মাস যোগ করার রীতি প্রবর্তন করে চান্দ্র বছরকে সৌর বছরের সমপর্যায়ে আনবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সে চেষ্টা ফলবতী হয়নি। তার কারণ, প্রাচীন আরবে জ্যোতিবিদ্যা সম্পর্কে অজ্ঞতা। সে যুগে শীতকালীন অর্ধ বছর আল মুহাররম দ্বারা আরম্ভ হত। প্রথম ছয় মাসের নাম দেখে তা’ বুঝা যায়। ইহুদী বছরের ন্যায় আরব বছরও শরৎকালে আরম্ভ হত। আল কুরআনে বর্ধিত মাস সংযোজন করাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে: ‘কোনো মাসকে পিছিয়ে দেয়া তো শুধু কুফুরীকে বৃদ্ধি সাধন করা যা দিয়ে কাফেরদেরকে বিভ্রান্ত করা হয়। তারা এটাকে কোন বছর বৈধ মনে করে এবং কোন বছর অবৈধ করে। যাতে তারা আল্লাহ যেগুলোকে নিষিদ্ধ করেছেন সেগুলোর গণনা পূর্ণ করতে পারে।’ (সূরা আত্ তাওবাহ : আয়াত ৩৭)। ফলে বর্ধিত মাস যুক্ত করবার রীতি নিষিদ্ধ হবার পর বছরের প্রথম দিন পহেলা মহররম বছরের সমস্ত ঋতুতেই ঘুরে আসে। কারণ, বারটি চন্দ্রমাসে সর্বদাই ৩৫৪ অথবা ৩৫৫ দিনে হয়। যেমন এখন হচ্ছে এবং পরবর্তীতেও হবে।
মুহাররম মাসের ত্রিশ দিনের মধ্যে প্রথম তারিখটি বছরের প্রারম্ভ বলে খ্যাত। তাছাড়া নিম্নলিখিত তারিখগুলোও বিশেষভাবে খ্যাতি লাভ করেছে। এ মাসের ৯ ও ১০ তারিখে সিয়াম পালন করার নির্দেশ হাদীসে এসেছে। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ‘রমযান মাসের রোজার পর সর্বোত্তম রোজা হচ্ছে মহররম মাসের রোজা’। (জামেয়ে তিরমিযী: ১/১৫৭)।
এই মাসের দশ তারিখে কারবালা (৬০/৬৮০) বার্ষিকী উদযাপিত হয়। এই তারিখে হযরত হুসাইন ইবনে আলী (রা.) ইবনে আবি তালিব খলীফা ইয়াজীদ ইবনে মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দাস্ত কারবালায় শাহাদাত বরণ করেন। এই মাসের ১৬ই তারিখ জেরুযালেমকে কেবলা মনোনয়নের দিন এবং ১৭ই তারিখ আবরাহার হস্তি বাহিনীর আগমনের দিন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। মোট কথা ইসলাম ও ইসলামী জিন্দেগীর হাজার হাজার ঘটনা এই মাসে সংঘটিত হয়েছিল বিধায় এর সম্মান ও মর্যাদা চিরকাল সমুন্নত থাকবে। এতে কোনই সন্দেহ নেই।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
এসেই অধিনায়ককে ফেরালেন মুস্তাফিজ
নতুন চাকরিতে ক্লপ
ফ্যাসিবাদী হাসিনার শ্রেণি বিন্যাস আইন বরদাশত করা হবে না মানববন্ধনে বায়রা নেতৃবৃন্দ
৩ ওভারে ২ উইকেট নেই ভারতের
কলকাতা মেডিকেল চিকিৎসকদের গণপদত্যাগ
রাজশাহীর বাঘায় বজ্রপাতে গাছ কাটা শ্রমিকের মৃত্যু
রামগড়ে শারদীয় দূর্গা পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে বিজিবি - উপজেলা প্রশাসন
মিল্টনের কবলে আর্জেন্টিনা দল
স্পেনকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান ড. ইউনূসের
কোকোকে আওয়ামী লীগ তিলে তিলে নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামীম
উচ্চতম ১৪টি শৃঙ্গ জয়ের রেকর্ড ১৮ বছর বয়সী নেপালী তরুণের
৬ সপ্তাহ মাঠের বাইরে আলিসন
গফরগাঁওয়ে পুজা মন্ডপের জন্য ৯মেঃ টন জি আর বরাদ্দ : পর্যাপ্ত কঠোর নিরাপত্তা
ইরানের হাইপারসনিক মিসাইল মাত্র ৪ মিনিটে ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম
পুলিশের গুলিতে সিলেটে নিহত সাংবাদিক তুরাব হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পিবিআই
কুষ্টিয়ায় আন্দোলনে নিহত ২ জনের মরদেহ উত্তোলনে পরিবারের বাধা
দেশে ৩ কোটিরও বেশি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন
দৌলতপুরে বজ্রপাতে গৃহবধূ সহ ৪ জনের মৃত্যু : আহত-৫
হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় উত্তর ইসরাইলে ২ জন নিহত
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ