অফিসে নতুন সময়সূচি ঘোষণা
২৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০৪ এএম
দেশের টালমাটাল অবস্থায় দু’দিন সাপ্তাহিক ছুটির পর আজ রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারি অফিস চলবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। দেশের চলমান পরিস্থিতির নজর রাখছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অফিসের নতুন এ সময়সূচি নির্ধারণ করেছে। এতে বলা হয়, ব্যাংক ও আদালত তাদের অফিসের সময়সূচি নিজেরাই নির্ধারণ করবে। এর আগে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার চার ঘণ্টা করে চলে অফিস। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। চলমান কারফিউ সময়সীমা শিথিল করছে সরকার। এ অবস্থায় সরকারি-বেসরকারি অফিসের সময়ও বাড়ানো হচ্ছে। কোন জেলায় কখন কারফিউ শিথিল তা ঠিক করবেন ডিসিরা। তবে চলমান কারফিউ চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। আগামী সপ্তাহে স্বাভাবিক হতে পারে অফিসসূচি এবং কারফিউর বিষয় নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠে রাজধানীসহ সারাদেশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি করে সরকার। যা এখনও দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান রয়েছে। যদিও প্রতিদিনই কয়েক ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও এলাকা কারফিউয়ের আওতায় রয়েছে। তবে ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। এরপর বিকেল ৫টা থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও গাজীপুরসহ চার জেলায় ফের শুরু হবে কারফিউ।
গতকাল শনিবার জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রোববার থেকে সরকারি অফিস চলবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। আগামী মাঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে নতুন সময় সূচিতে সরকারি অফিস। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি ও কারফিউ জারির কারণে রোববার থেকে মঙ্গলবার (২১-২৩ জুলাই) সরকারি-বেসরকারি অফিসে ছিল সাধারণ ছুটি। এর আগের দু’দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। সে হিসাবে টানা পাঁচ দিন পর বুধবার (২৪ জুলাই) আংশিকভাবে খোলে সরকারি অফিস। গত ২৪ ও ২৫ জুলাই বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, সরকার বুধ ও বৃহস্পতিবার সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে। এদিকে, অফিস-আদালত খুলে দেওয়া হলেও সারাদেশে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সরকার থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
তবে জরুরি পরিষেবা যেমন- বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস ও বন্দরগুলোর কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাকসেবা এবং এ-সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এই সময়সূচির আওতার বাইরে থাকবেন। এ ছাড়া হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এই সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মী, চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মী, ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম বহনকারী যানবাহন ও কর্মীরা এই সময়সূচির আওতার বাইরে থাকবেন। জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসগুলো এই সময়সূচির আওতার বাইরে থাকবে, যা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে। এর মানে হলো জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস ও কর্মীরা তাঁদের প্রয়োজন অনুযায়ী চলবেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে সরকার শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ধীরে ধীরে বাড়ছে কারফিউ শিথিলের সময়সীমা।
সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কারফিউ শিথিল থাকবে রংপুর ও বরিশালে। রংপুরে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মোট ১৫ ঘণ্টা সেখানে কারফিউ শিথিল থাকবে। বরিশালেও একই সময় ধরে কারফিউ শিথিল থাকবে। এছাড়া চট্টগ্রামে সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা, রাজশাহীতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা এবং সিলেটে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে। এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২১ জুলাই সকাল ১০টা পর্যন্ত সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। যদিও প্রতিদিন এর মধ্যে কয়েক ঘণ্টা করে তা শিথিল করা হয়। পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাওয়ায় ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হচ্ছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার রাতে জারি করা হয় কারফিউ। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় সেদিন মধ্যরাতে মাঠে নামে সেনাবাহিনী। গত ২১ জুলাই থেকে সব ধরনের অফিস ও গার্মেন্টস বন্ধ ঘোষণা করে জারি করা হয় সাধারণ ছুটি। ছুটির পর বুধবার থেকে খুলছে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস। তবে সকাল ৯টার পরিবর্তে অফিস শুরু হবে বেলা ১১টা থেকে এবং বিকেল ৫টার পরিবর্তে অফিস চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। কারফিউ শিথিলের সময় সারা দেশে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা থাকবে। চলবে তৈরি পোশাক শিল্প কারখানার কাজও। এদিকে কারফিউ শিথিল সময়ে মহাসড়কে চলবে দূরপাল্লার যানবাহন। সকাল থেকে রাজধানীতে আসা-যাওয়া করছে পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ও যাত্রীবাহী বাস। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সতর্ক অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।
গতক শুক্রবার রাতে নিজ বাসভবনে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা আমরা দেখছি। পুলিশ বিজিবি, সেনাবাহিনী কাজ করছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে। জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনকারী নেতারা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে কারফিউ তুলে নেওয়া হবে। সে পর্যন্ত সবাইকে একটু অপেক্ষা করতে বলেছেন তিনি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত