দ্রোহের আগুনে পুড়ছে দেশ
০৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৮ এএম
দ্রোহের আগুনে পুড়ছে জাতি। সরকারি ছুটির দিন গতকাল শুক্রবার রাজপথে রক্ত ঝড়েছে। গতকাল হবিগঞ্জে পুলিশের গুলিতে একজন শহীদ হন। সংঘর্ষে খুলনায় একজন পুলিশ সদস্য নিহত হন। আন্দোলন ঠেকাতে ফের ছাত্রলীগের হেমলেট বাহিনী ও যুবলীগের কর্মীদের অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা গেছে। পুলিশের গুলি, টিয়ার সেল, সাউ- গ্রেনেড ও রাবার বুলেটে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল ঢাকার রাজপথ। একই ঘটনা ঘটেছে সিলেট, খুলনা, হবিগঞ্জ, সিলেট লক্ষিèপুরসহ কয়েকটি জেলায়। আইন শৃংখলা বাহিনীর মারমুখি অবস্থান ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের অস্ত্রের মোহড়ার মধ্যেই মিছিলে সেøাগানে সেøাগানে কেঁপে উঠেছিল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয ও জেলাশহরগুলো। রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার জনসমুদ্রে পরিণত হয়ে উঠেছিল। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে শুরু করে শাহবাগ পর্যন্ত লাখো ছাত্র-জনতার আওয়াজে প্রকম্পিত হয়ে উঠে। ছাত্র আন্দোলন নুতন করে যোগদিয়েছে কওমী মাদরাসা ভিক্তিক শিক্ষার্থীরাও। তারাও বাদ জুম্মা বায়তুল মোকাররম থেকে মিছিল করে শাহবাগের দিকে যায়। পুলিশের গুলিতে আড়াইশোর অধিক ছাত্রজনতা শহীদ হওয়ার পর বৈসম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, গৃহিনী, সামাজিক-সাংস্কৃতির সংগঠন, শিল্পী-সাহিত্যিক, নায়ক-নায়িকা-অভিনেতা-অভিনেত্রী, মানবাধিকারকর্মী, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, নারী নেত্রী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এমনকি রিক্সাচালক-ভ্যান চালকরাও আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরাও নিজেদের মতো করে আন্দোলন করছেন, রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। দিনভর পদযাত্রা, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। রাজধানী ঢাকার শহীদ মিনার, বাংলা মটর, জাতীয় প্রেসক্লাব, আবতাব নগর, হাইকোট এলাকা, শাহবাগ, উত্তরা, সায়েন্সল্যাবে মিরপুর রোড, বাংলা মটর, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, মীরপুর-১০ এলাকাসহ বিক্ষোভ হয়। উত্তরায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ বাধলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। ঢাকার বাইরে সিলেটে শিক্ষার্থীদের গণমিছিলে পুলিশ শটগানের গুলি-কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে, চট্টগ্রামে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার সব শ্রেণি পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে, হবিগঞ্জের পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের মধ্যে বিক্ষুব্ধ জনতা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দেয়, বগুড়ায় প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রাজপথ কাঁপিয়ে তোলে, সিলেটে গণমিছিলে পুলিশ শটগানের গুলি ও সাউ- গ্রেনেড ছুঁড়লে সংঘর্ষে ২০ জন আহত হন, নোয়াখালিতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী গণমিছিলে নামে, ময়মনসিংহে দ্রোহযাত্রায় কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ রাস্তায় নামে, রাজশাহীতে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ রাজপথে নেমে মিছিল করেছে। লক্ষিèপুরে শিক্ষার্থীদের মিছিলে অস্ত্রহাতে যুগলীগ গুলি করে। এ ছাড়াও ভোলা, গাইবান্ধা, কিশোরগঞ্জ, ফেনি, জামালপুর, রাজবাড়ি, পাবনা, ফেনি, রংপুর, লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল প্রকম্পিত হয়ে উঠে শহরগুলে। এ সব মিছিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
আগামী রোববার এর মধ্যে গণগ্রেপ্তার বন্ধ, জুলাই হত্যাকা-ের বিচার, আটক শিক্ষার্থী-জনতার মুক্তি, কারফিউ প্রত্যাহার, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া ও অসংখ্য শিক্ষার্থী জনতাকে হত্যার দায়ে বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থী-জনতা ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। দাবি মানা না হলে রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে গণমিছিল করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দ্রোহযাত্রা নিয়ে আসে শিক্ষার্থী, জনতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। এ সময় শহীদ মিনার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সেখানেই ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগীব নাঈম। তিনি বলেন, আগামী রোববারের মধ্যে কারফিউ প্রত্যাহার করতে হবে, সব গ্রেপ্তারদের মুক্তি দিতে হবে, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে, বর্তমান সরকারকে শিক্ষার্থী-জনতা হত্যার দায়ে পদত্যাগ করতে হবে। এই দাবিগুলো যদি রোববারের মধ্যে পূরণ না করা হয় তাহলে সেদিন বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে গণমিছিল শুরু হবে। এর আগে গণগ্রেপ্তার বন্ধ, জুলাই হত্যাকা-ের বিচার, আটক শিক্ষার্থী-জনতার মুক্তি, কারফিউ প্রত্যাহার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া ও অসংখ্য শিক্ষার্থী জনতাকে হত্যার দায়ে বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আয়োজিত দ্রোহযাত্রা জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এসে পৌঁছায়। শিক্ষার্থী, সাধারণ জনতার পাশাপাশি সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষক, মানবাধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের অংশগ্রহণে শহীদ মিনার জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা গণমিছিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুমার নামাজের পর রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন একদল তরুণ-যুবক। কয়েক ঘণ্টা অবরোধের পর তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগে যান। তারা শাহবাড় মোড় অবরোধ করেন। কাছাকাছি সময় ঢাকার ইসিবি চত্বরে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করছেন কয়েকশ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের এসব অবস্থান থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে যেসব হত্যাকা- ঘটেছে, সেগুলোর বিচার দাবিতে নানা সেøাগান দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। বৃষ্টিতে ভিজে মিছিল নিয়ে তারা রামপুরা ব্রিজ পার হয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে আবার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শত শত শিল্পী ও সাধারণ মানুষ ধানমন্ডির আবাহনী মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্র-জনতা হত্যার প্রতিবাদে শামিল হন। তারা নিহতের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে হত্যাকা-ের তদন্ত ও বিচার এবং হত্যার দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগের দাবি করেন। দমন-পীড়ন, নির্বিচারে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ ও হত্যাকা-ের প্রতিবাদে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। এ সময় তারা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থী হত্যার তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। বাংলামোটরে মানববন্ধন করেছেন পরিকল্পনাবিদরাও। তারা বলেছেন, পুলিশের গুলিতে এতোগুলো শিক্ষার্থী শহীদ হওয়ার বিচারের দাবি করেন। তারা বলেন, জুলুমবাজ সরকারের নির্যাতন এতো বেড়েছে যে সমাজে প্রতি পায়েপায়ে ভয়। কিন্তু এই শিক্ষার্থীরা কোনো ভয় পান না। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য পথে নেমেছে। আর কোনো শিক্ষার্থী যেন হয়রানি ও গুলির শিকার না হন। যেসব জায়গায় এসব হত্যাকা- ঘটেছে, সেখানকার আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এ ছাড়া সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মেডিকেল শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকেরা বিক্ষোভ করেছেন। সকালে বাংলামোটরে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সামনে বিক্ষুব্ধ ‘কবি-লেখক সমাজ’ ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। দুপুরে বায়তুল মোকাররম ও প্রেসক্লাব থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগে বিক্ষোভ করেন।
ছাত্র জনতার মিছিলে উত্তাল বগুড়া
মহসিন রাজু, থেকে জানায়, বগুড়ায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাত্র জনতার মিছিলে রাজপথ উত্তাল। পুলিশের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনি ও মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বগুড়ার রাস্তায় রাস্তায় হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলে রাজপথ। তারা ‘ভুয়া ভুয়া, তোমাকে রাজাকার, কে বলেছে স্বৈরাচার, আমাকে রাজাকার, কে বলেছে স্বৈরাচার। আমার ভাই কারাগারে, খুনি কেন বাহিরে বলে স্লোগানে দেয়?
সকাল থেকেই বৈষম্য বিরোধি ছাত্র অধিকার সংগঠনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি প্রতিরোধের জন্য পুলিশ গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই শহর জুড়ে নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তোলে। জুম্মার নামাজের আগে শহরে মুষলধারায় বৃষ্টি শুরু হলে ধারণা করা হয়েছিল, হয়তো তেমন কোনো বড় ছাত্র সমাবেশ হবেনা। তবে জুম্মার পর থেকেই বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাস সহ শহরতলীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রথমে একজন দুইজন ও পরে শতশত হাজার হাজার ছাত্ররা একজোট হয়ে মিছিল করে শহরের প্রাণ কেন্দ্রে সাতমাথার দিকে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হয়। বেলা সাড়ে তিনটা নাগাদ সাতমাথা চত্বর হাজোরো ছাত্র, জনতার পদভারে কম্পিত হতে থাকে। মিছিলে স্লোগানে বক্তব্যে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
ময়মনসিংহে গণ মিছিলে ছাত্র-জনতার ঢল
মো. শামসুল আলম খান, ময়মনসিংহ থেকে জানান, ময়মনসিংহে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতার গণমিছিলে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ঢল নেমেছে। এতে নগরীজুড়ে উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুর ৩টার দিকে নগরীর টাউন হল মোড়ে এই গণজামায়েত দেখা গেছে।
এর আগে জুম্মার নামাজের পর পর নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছাত্র-জনতার গণ মিছিলে জড়ো হতে দেখা যায়। এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন ময়মনসিংহের সমন্বয়ক আশিকুর রহমান, আরিফুল হক, আব্দুল্লাহ আল নাকিব প্রমুখ।
পরে বিকাল ৪টার দিকে ময়মনসিংহের স্মরণকালের সবচেয়ে বড় গণমিছিল টাউন হল মোড় থেকে বের হয়ে নতুন বাজার ও গাঙ্গীনার পাড় সড়ক হয়ে স্টেশন এলাকার কৃঞ্চচূড়া চত্বরে গিয়ে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেন, শহীদ হওয়া ছাত্র ভাইদের খুনিদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে যাবে না। নয় দফা দাবি আদায়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে এবং চলবে। এ সময় সড়কের দুই পাশে উপস্থিত জনতা ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ আন্দোলনকারিদের সমর্থন জানিয়ে হাত নাড়িয়ে স্বাগত জানায়।
এদিকে পূর্বঘোষিত ছাত্র জনতার গণমিছিল শুরু হওয়ার আগে টাউন হল ও জেলা স্কুল মোড় এলাকায় পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেলেও শিক্ষার্থীদের জমায়েত শুরু হবার পর তাদের সরে যেতে দেখা যায়। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোথাও কোনো বাঁধা দেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীদের মিছিলের সাথে অভিভাবকরাও
শাহেদ রহমান, যশোর থেকে, যশোরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সাথে যোগ দিয়েছেন অভিভাবকেরাও। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে যশোর শহরতলীর পালবাড়ি মোড়ে জড়ো হন যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে মিছিলটি পুলিশ লাইন, গরীব শাহ্ সড়ক হয়ে শহরের মধ্যে প্রবেশ করে শতাধিক শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে, জুমার নামাজ শেষে শহরের মণিহার চত্বর থেকে ছাত্র জনতার ব্যানারে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত নেতৃত্বে মিছিল হয়েছে। এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকাল থেকে যশোরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের টহল ও কড়া নজরদারি চোখে পড়ে। এমনকি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলকে ঘিরে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ একাধিক টিমকে গাড়িযোগে টহল দিতে দেখা গেছে।
রংপুরে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষক-অভিভাবকদের মিছিল-সমাবেশ
হালিম আনছারী, রংপুর থেকে জানান, রংপুরে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও পদযাত্রা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রংপুর মহানগরীর পার্ক মোড়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও পদযাত্রার ব্যানার নিয়ে একত্রিত হন। এ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকরা।
এদিকে সংহতি প্রকাশ করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা বলেন, আমাদের ছাত্র আবু সাঈদসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল হত্যাকা-ের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমরা শিক্ষকরা সব সময় ছাত্রদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একমত ছিলাম, তাদের পাশে ছিলাম, এখনো আছি। অভিভাবকরা বলেন, আমরা অভিভাবক হয়ে বাড়িতে বসে থাকতে পারি না। তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে আমরাও তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ, ১৩ কিলোমিটার যানজট
আতাউর রহমান আজাদ, টাঙ্গাইল থেকে জানান, শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে এবং ৯ দফা দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করেছে টাঙ্গাইলে বৈসম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে মিছিল নিয়ে আশেকপুর বাইপাস এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুইপাশে অন্তত ১৩ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সাড়ে চারটার দিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে চলে যায়।
এর আগে জুমার নামাজের পর শহরের সাবালিয়া থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাবেশ করে। এসময় সড়কটিতে সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বরগুনায় ছাত্র-জনতার গণমিছিল ও অবস্থান ধর্মঘট
জাহাঙ্গীর কবীর মৃধা, বরগুনা থেকে জানান, বরগুনা কেন্দ্রীয় সদরঘাট মসজিদ ও বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচিতে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণ করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ছাত্রদের সঙ্গে যোগ দেয় অভিভাবকরাও। অভিভাবকগণ বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে সদর রোড আটকিয়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে।
সমন্বয়ক মুঈদ হাসান, মীর নিলয়, জিসান আক্তার বাধন, ইমাম হোসেন, রাশেদুল ইসলাম রেশান, সাজ্জাদ হোসেন আশিকসহ কোটা বিরোধী নেতৃবৃন্দ ছাত্র জনতার গণমিছিলের ডাক দেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে হাজারো মানুষ অংশ নেন। মিছিলে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য।
এদিকে আন্দোলন ঘিরে বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়। এ সময় টহলরত নৌবাহিনী দুইটি বহর প্রেসক্লাবের সম্মুখ দিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রদের আন্দোলন আরো বেগবান হয়ে উঠলে তারা পাশ দিয়ে চলে যান।
ইবিতে দোয়া ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন
রাকিব রিফাত, ইবি থেকে জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দোয়া ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব আশরাফ উদ্দিন খান। পরে আন্দোলনকারীরা মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের চলমান এ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। শিক্ষকরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন এবং আল কোরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন মিঝি।
ঝিনাইদহে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
আসিফ ইকবাল কাজল, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা থেকে জানান, ঝিনাইদহে গণপদযাত্রা ও বিক্ষোভ সমাবেশে করেছে কোটা বিরোধী আন্দোলন কারীরা। গতকাল বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সামনে থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি প্রেরণা একাত্তর চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। পরে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে আন্দোলনকারীরা জড়ো হলে, সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনের জেলা সমন্বয়কারী শারমিন সুলতানা ও হুসাইন। সমাবেশ চলাকালে আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট জাকারিয়া মিলন, অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান ও অ্যাডভোকেট আব্দুল আলীম তাদের সাথ সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।
এদিকে আন্দোলনকে ঘিরে জেলায় নাশকতা প্রতিরোধে সতর্ক অবস্থানে ছিলো পুলিশ। সকাল থেকেই জেলা শহরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। শহরে প্রবেশে বিশেষ করে বিভিন্ন মসজিদের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহিন উদ্দীন জানান, আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে চলে গেছে। এ কারণে কোনো বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়নি।
কিশোরগঞ্জে ছাত্র-জনতার গণমিছিল
মো. জাহাঙ্গীর শাহ্ বাদশাহ্, কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলার ব্যানারে গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা শহরের ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে ছাত্র-জনতার গণমিছিল বের করা হয়। এতে কয়েক হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
গণমিছিল থেকে ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, জবাব চাই দিতে হবে’, ‘স্বৈরাচার স্বৈরাচার, শেখ হাসিনা স্বৈরাচার’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’ ইত্যাদি নানা স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা ‘কে বলে? বাংলা ছাড়, এই মুহূর্তে গদি ছাড়’, ‘সম্পদের হিসাব পরে, লাশের হিসাব আগে’ ইত্যাদি নানা স্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন বহন করেন। গণমিছিলটি শহরের গৌরাঙ্গবাজার মোড়, স্টেশন রোড, কালীবাড়ী মোড়, বটতলা মোড় হয়ে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, হারুয়া, আখড়া বাজার ও ঈশাখাঁ রোড দিয়ে পুনরায় গৌরাঙ্গবাজার মোড় হয়ে ইসলামিয়া সুপার মার্কেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে গণমিছিলকে কেন্দ্র করে বিপুল সংখ্যক পুলিশ জেলা আওয়ামী লীগ ও কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানা ঘিরে রাখে। এছাড়া শহরে সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়।
রাজবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের গণমিছিল
মো. নজরুল ইসলাম, রাজবাড়ী থেকে জানান, রাজবাড়ী বড়পুল থেকে বিভিন্ন শ্লোগান নিয়ে শিক্ষার্থীরা গণমিছিল বের করে। মিছিলটি প্রধান সড়ক হয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে থেকে ফিরে পুনরায় পান্না চত্বর পর্যন্ত যায়। পরে তারা কোন আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি ঘোষণা ছাড়াই শেষ করে।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মুকিত সরকার বলেন, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছে। শহরে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন ছিল।
পাবনায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ গণমিছিল
রনি ইমরান, পাবনা থেকে জানান, ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে গণমিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শান্তিপূর্ণ এই গণমিছিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা করতে দেখা গেছে। গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করে চলে গেছেন। যেহেতু তারা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করেছে আমরা তাদের সহযোগিতা করেছি।
ঠাকুরগাঁওয়ে গান-কবিতার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি পালন
মাসুদ রানা পলক, ঠাকুরগাঁও থেকে জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার সন্ধা ৬টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (বড় মাঠ) মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজের হাজারো শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকারা এবং বিএনপির বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমর্থকরা অংশগ্রহণ করেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলেসহ নিহত ৪
মাগুরায় পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত
দেশের প্রাণিসম্পদ উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনা তৈরিতে বাজারে অত্যাধুনিক ফিড নিয়ে এল আকিজ রিসোর্স
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আফগানিস্তানের টানা ষষ্ঠ সিরিজ জয়
কমিউনিটি ব্যাংকে ট্রাফিক মামলার জরিমানা দেওয়া যাবে
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: দ্য ইকোনমিস্টকে ড. ইউনূস
‘ফ্যাসিবাদী প্রধানমন্ত্রী ও এমপিরা তাদের কৃত কর্মের জন্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে’
ব্রাহ্মণপাড়ায় ট্রাক্টরের চাপায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যু, আহত ২
কুরআন শিক্ষা বোর্ড ঢাকা মহানগর উত্তরের নগর সম্মেলন অনুষ্ঠিত
এবি ব্যাংক পিএলসি. এর "বিজনেস রিভিউ মিটিং" অনুষ্ঠিত
উথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেল সোনালী লাইফ
নেতাকর্মীদের রেখে লক্ষণ সেনের মত পালিয়ে গেছে স্বৈরাচার: ব্যারিস্টার সালাম
অভিনেতা অপূর্বকে নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে মিথ্যাচার
বরিশালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অংশীজন সভায় প্রধান প্রকৌশলী
দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক উর্ধ্বগতিতে সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস
সংস্কারোত্তর পিআর পদ্ধতিতেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে
‘শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে’
‘রাষ্ট্রের সকল স্তরে ইসলামী সংস্কৃতির অনুশীলন নিশ্চিত করতে হবে’
মেট্রোকে থামিয়ে ফাইনালে রংপুর
৪৩ বছর পর কুয়েতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী