সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন ছাত্র সমাজের নয় -নানক

আ.লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থান

সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন ছাত্র সমাজের নয় -নানক

স্টাফ রিপোর্টার

০৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:১০ এএম | আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:১০ এএম

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গতকাল রোববার সকাল থেকে নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থান। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় মিছিল ও সমাবেশ করছেন।

সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন ছাত্র সমাজের নয়। আমরা সংঘাত চাই না, শান্তি চাই। সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। গতকাল রোববার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলেন। নানক বলেন, সরকার পতনের এক দফা দাবি বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রকারীদের। আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের পাড়ায়-মহল্লায় কঠিন প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি, সব হত্যা ও সহিংসতার দায় আন্দোলনকারী নেতৃত্বকেই নিতে হবে। দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করবেন না, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করবেন না। আমরা সংঘাত চাই না, শান্তি চাই। ধৈর্যের শেষ সীমায় আওয়ামী লীগ পৌঁছে গেছে। ধৈর্য ধরা মানে দুর্বলতা নয়।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বলেন, আমরা অভিভাবকদের আহ্বান জানাই, এই সন্ত্রাসীদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। আপনাদের সন্তানদের ঘরে রাখুন। যারা রাস্তায় আছে, তাদের ঘরে ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ করছি। ছাত্র সমাজের সব দাবি পূরণ করা হয়েছে। ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী গণভবনের দরজা উন্মুক্ত রেখেছেন। সরকার তাদের বক্তব্য শোনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু ছাত্র সমাজের কাঁধে বন্দুক রেখে সরকারকে হটিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র দেশের কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-আপামর জনগণ মেনে নেবে না।

মন্ত্রী বলেন, আমরা শেষ কথা বলতে চাই, বিএনপি-জামায়াত, শিবির-জঙ্গি গোষ্ঠীর নির্দেশেৃ আমরা এই দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে ধৈর্যের শেষ সীমা পর্যন্ত পৌঁছে গেছি। ধৈর্য ও সহনশীলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। এই জঙ্গিগোষ্ঠীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমরা দেশবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, কোটা নিয়ে আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদের ধৈর্য ধারণ করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বারবার আহ্বান জানান। পরে সরকারের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় দেন এবং কোটা নিয়ে ছাত্র সমাজের যে দাবি ছিল, তার চেয়েও বেশি পূরণ হয়। তিনি বলেন, গণতন্ত্র, সংবিধান ও জান-মালের নিরাপত্তার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আপনারা দেখেছেন আজ সকালে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিনা কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কেও রেহাই দেয়নি। তারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ঢাকার সিএমএম আদালতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। হাসপাতালে মানবতাবিরোধী এই হামলা দিয়েই প্রমাণিত হয়, তারা শিক্ষার্থী নয়। আজকে যারা সহিংসতা করেছে, তারা শিক্ষার্থী নয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

এদিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে রোববার সকাল থেকে নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থান। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় মিছিল ও সমাবেশ করছেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানসহ সহযোগী-ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতারা। গতকাল দুপুর পৌনে ১২টায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলার গুজবে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সরকার সমর্থক নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কের দুইপাশে অবস্থান নেন। মুহুমুহু স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে গোটা এলাকা।

বিভাগ : জাতীয়