মজলুমদের চোখে আনন্দ অশ্রু!
০৬ আগস্ট ২০২৪, ১২:২৯ এএম | আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১২:২৯ এএম
দাখিল পরীক্ষার্থী ছেলে তানভীর আহমেদকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান বাবা ও মা শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই কান্না আনন্দের। কোটা আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর বহাদ্দারহাটে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষে নিহত হন তানভীর আহমেদ (১৯)। আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের আর্থিক সাহায্য করেছিলেন শেখ হাসিনা। গণভবনে সেই আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন তানভীরের বাবা বাদশা মিয়াও। তবে ছেলের লাশের বিনিময়ে খুনের নির্দেশদাতার কাছ থেকে কোনো সাহায্য নেওয়ার প্রস্তাব ঘৃনাভরে প্রত্যাখ্যান করেন হতদরিদ্র এই সন্তানহারা পিতা। তিনি সেইদিন বলেছিলেন, আমার সন্তানের লাশের বিনিময়ে টাকা নিতে পারবো না, ওই টাকা আমার গলা দিয়ে নামবে না। আমি সন্তানের রক্তের বিনিময়ে জালিমের শাসনের অবসান চাই।
বাদশা মিয়ার সে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। তানভীর আহমদের মতো হাজারো মানুষের রক্তের বদলে অমানিশার অবসান হয়েছে। উদিত হয়েছে নতুন সূর্য। গতকাল সোমবার দুপুরের পর বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার খবর বাতাসের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্রই। এই খবরে আনন্দ অশ্রুতে ভাসেন তানভীরের বাবা-মা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেসহ বিগত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আওয়ামী দুঃশাসনে তাদের পেটোয়া বাহিনী ও দলীয় ক্যাডারদের হাতে নিহত এবং পঙ্গুত্ব বরণকারীদের পরিবারেও কান্নার রোল পড়ে যায়। খুনি ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনে স্বজন হারানোর বেদনা খুশির অশ্রু হয়ে ঝরছে। চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কমপক্ষে ১০জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শিশু কিশোর, শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ। গুলিবিদ্ধ অনেকেই এখনো হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। সরকার পতনের খবরে তারাও আনন্দে উচ্ছ্বসিত, ভাসছেন আনন্দ অশ্রুতে।
নজিরবিহীন এক ছাত্র-জনতার মহা অভ্যুত্থানে জাতির উপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা হায়েনাদের পতনে উল্লাসে মেতেছে পুরো চট্টগ্রাম। বিজয় মিছিলে নেমে এসেছে সর্বস্তরের মানুষ। এই বিজয়ের যারা মহানায়ক সেই শিক্ষার্থীদের মাথায় তুলে উল্লাসে ফেটে পড়েন জনতা। আর শিক্ষার্থীরা বিজয়ের এই মাহেন্দ্রক্ষণে স্মরণ করেন তাদের সহযোদ্ধাদের, যাদের জীবনের বিনিময়ে কবর রচিত হয়েছে খুনি স্বৈরাচারী সরকারের। অনেকেই আনন্দ মিছিল শেষে ছুটে যান হাসপাতালে, যেখানে স্বৈরাচারের গুলি শরীরে নিয়ে শুয়ে আছেন শত শত আন্দোলনকারী।
বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতার নাগাল পাওয়ার পর অজীবন ভোট ও ভাতের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করে আসার দাবিদার আওয়ামী লীগ পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্ট ফ্যাসিবাদী সরকারে পরিণত হয়। নির্বিচারে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। জীবনের তরে পঙ্গু হয়ে গেছেন অনেক। দলবাজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তা বিরোধী দল বিএনপি, জামায়াতের নেতাকর্মীদের হত্যার মিশনে নামেন। গুম, খুন করা হয়েছে অনেক নেতাকর্মীকে। রাজপথে প্রকাশ্যে গুলি করা হয়েছে। শাসক দলের ক্যাডারদের হাতেও খুন হয়েছেন অনেক। গায়েবি মামলায় আসামি হয়ে বাড়ি ঘর ছেড়ে বছরের পর বছর ফেরারি জীবন যাপন করছেন শত শত নেতা কর্মী। আওয়ামী লীগের জুলুম নির্যাতনে বাড়ি ঘর, ব্যবসা বাণিজ্য ছেড়ে পথের ফকির হতে হয়েছে অনেক রাজনৈতিক নেতা কর্মীকে। দেড় দশকের আওয়ামী জাহেলিয়াতের অবসানে তাই ঘরে ঘরে আনন্দ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ইউএনও কাবেরী, উপজেলা প্রকৌশলীর দুর্নীতির ৮ প্রকল্পের ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছে দুদক
বাংলাদেশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মিঠুন চক্রবর্তী
খালিশপুরে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বগুড়ায় পুলিশের উদাসীনতায় রাতের আঁধারে জমি দখল করে ছাদ ঢালাই
গুচ্ছ নয়, সঠিক সময়েই হবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা - জবি শিক্ষক সমিতি
২৯ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
সোমবার বিপিএলের মিউজিক ফেস্ট, গাইবেন রাহাত ফাতেহ আলী খান
নকলায় শহীদ জিয়াউর রহমান স্মৃতি সংঘের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত
রাবিতে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকার হিসাব না দেওয়ার অভিযোগ, সাময়িক অব্যাহতি
রাজশাহীতে তেলের ট্রাকে বিস্ফোরণ: ৪শ’ ব্যারেল তেল ও ৮ দোকান ভস্মীভূত
স্ত্রী পর্দা করতে না চাইলে করণীয় প্রসঙ্গে।
কক্সবাজার প্রেসক্লাবের নির্বাচন সম্পন্ন
১০০ টাকা ঘুষ খেলেও চাকরি থাকবে না: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
সংস্কার কমিশনের কাছে নিজের সম্পদের হিসাব দিলেন দুদক চেয়ারম্যান
মানিকগঞ্জে প্রথম নারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করলেন ইয়াছমিন খাতুন
ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পিতৃবিয়োগ বিভিন্ন মহলের শোক জ্ঞাপন
মির্জাপুরে নিখোঁজের পাঁচ মাস পরও খোঁজ মিলেনি
মোরেলগঞ্জে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতির ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
ব্রাহ্মণপাড়ায় ধর্ষণের শিকার হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী যুবতীর সন্তান প্রসব! আতংকে ভুক্তভোগী পরিবার
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ