অভিভাবকহীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
০৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ এএম
শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার খবরে রাজধানীতে মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে লাখো মানুষ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষের ঢল নামে। তারা বিভিন্ন সেøøাগান দিতে দিতে উল্লাসে ফেটে পড়েন। আনন্দ মিছিল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে সেøাগান দিতে থাকেন। এমনটাই দেখা গেছে গুরুত্বপূর্ণ উড়ালপথ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে। এমন থমথমে পরিস্থিতিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যেন অরক্ষিত। এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেন এখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। যে যার মতো ব্যবহার করছে। ফার্মগেট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সহজ যোগাযোগের ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি এখন যেন মালিকানা ছাড়া। দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কর্তৃপক্ষই যেন খোঁজ রাখছেন না। যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে টোল ছাড়া চলাচল করতো না কোনো যানবাহন সেই সড়কটি এখন আড্ডার স্থানে পরিণত হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠেও মিছিল করতে দেখা গেছে। অনেকেই এই উড়াল সড়কে ওঠে ক্রিকেট খেলছে। সিএনজি, অটোরিকশা, বাইক ওঠে যায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে। এসব বাহনে চড়ে এক্সপ্রেসওয়েতে যেতে যেতে মিছিল করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। অতিউৎসাহী লোকজন এখানে গিয়ে মোবাইল ফোনে সেলফি তোলছেন। কেউ কেউ বসিয়েছেন গাঁজার আসর। অনেকে দল বেঁধে সিগারেট ফুঁকছেন। এমনটাই দেখা যায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপরে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় দেখা যায়, নেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কোনো পুলিশ নেই। কোনো আনসারের সদস্যদেরও চোখে পড়েনি। দেখা যায়নি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাতা ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেডের কোনো কর্মীকেও।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মানুষ হেঁটে যাচ্ছেন। এটি এখন পুরোপুরি বন্ধ থাকার কথা থাকলেও সেই নির্দেশনা মানছেন না কেউই। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মানুষ হাঁটতে হাঁটতে সেøাগান দিতে দিতে দেখা গেছে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ বাইকযোগে, কেউ অটোরিকশায়, কেউ ছুটে চলেন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায়, কেউবা আবার সিএনজিতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ঘুরছেন। এমন অবাধ চলাচলের কারণে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এতে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে এই স্থাপনাটি।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপরে আড্ডা দেয়া কয়েকজনের মধ্যে একজন আবুল কালাম নামের এক যুবক বলেন, এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় আমরা দেখতে এসেছি। বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেতো আর এখানে আসতে পারতাম না। এখানে শুধু আমরা না আরো অনেক লোকজন আসছেন।
অটোরিকশা চালক খায়রুল বলেন, এই ফ্লাইওভারে কোনো রিকশা, সিএনজি, অটো চলে না। এখনতো এই সড়কটি পুরোপুরি বন্ধ আছে। আর কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেই তাই যাত্রী নিয়ে এসেছি। অনেকে এখানে ঘুরতে আসছেন।
কোটাবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও সহিংসতায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আন্দোলনের সময় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কারণে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই উড়ালপথের নির্মাতা ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড। গত ১৮ ও ১৯ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ের দুটি টোল প্লাজায় আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা। এতে টোল প্লাজা দুটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এলিভেটেড একপ্রেসওয়ের টোল প্লাজা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টোল আদায়ের মাধ্যমে এই যোগাযোগ পথটি সচল রাখার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ যাত্রীরা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছের কাওলা থেকে শুরু করে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ থাকায় এই সড়কে সাধারণ লোকজনকে এখানে আসতে দেখা যায় বিনা প্রয়োজনে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে সড়কটি আড্ডার স্থলে পরিনত হচ্ছে। যেসব গাড়ি এই পথে চলাচলের অনুমতি নেই নিরাপত্তা না থাকার কারণে সেগুলো ওঠে যাচ্ছে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে অপ্রয়োজনে মানুষের আনাগোনা বাড়বে। ছোট ছোট যানবাহন এই পথে চলাচলের চেষ্টা করবে। তাতে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থেকে যায়। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যে টোল প্লাজায় ক্ষতি হয়েছে, সেখানে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টোল আদায় করা যেতে পারে। তাই স্থাপনাটি রক্ষায় নিরাপত্তা বাড়ানো দরকার।
এবিষয়ে বক্তব্য জানতে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক সাখাওয়াত আকতারের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি কলটি রিসিভ করেন নি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি
কিউবায় সমাবেশ