ঢাকা   শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫ | ৩০ কার্তিক ১৪৩২
মাউশি অধিদপ্তর

ভোল পাল্টিয়ে ডিজি হতে চান আওয়ামী সুবিধাভোগী দুই পরিচালক

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০২ এএম

শিক্ষা প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। তাই বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সদস্যদের কাক্সিক্ষত পদ মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)। এই অধিদপ্তরেরই দুইজন পরিচালক যারা গত ১৫ বছরের আওয়ামী লীগ আমলের অন্যতম সুবিধাভোগি, তারাই এখন ভোল পাল্টিয়ে ডিজি হওয়ার চেষ্টা করছেন। যা শিক্ষা ক্যাডার সদস্যদের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আওয়ামী সুবিধাভোগী সেই দুইজন কর্মকর্তা হলেন- মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর এবিএম রেজাউল করীম। যিনি আওয়ামী আদর্শ প্রমাণ করেই শিক্ষা প্রশাসনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হন। আর অন্যজন হলেন মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর একিউএম শফিউল আজম।
সূত্র জানায়, মাউশি অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালক প্রফেসর নেহাল আহমেদ বর্তমানে এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে রয়েছেন। তিনি পারিবারিকভাবে আওয়ামী আদর্শের হওয়ায় এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের সম্ভাবনা থাকায় অনেকেই মনে করছেন তিনি আর ডিজি পদে থাকবেন না। তাই আওয়ামী সুবিধাভোগি অন্য দুইজন পরিচালক নিজেদের বিএনপি ঘরনার পরিচয় দিয়ে ডিজি পদ বাগিয়ে নিতে চাচ্ছেন।
শিক্ষা ক্যাডারের একাধিক সদস্য বলছেন, মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর এবিএম রেজাউল করীম ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর পুরোটাই বদলে গেছেন। অথচ তিনি মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর নেহাল আহমেদ এর ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। রেজাউল করীমের রুমে কোনো কর্মকর্তা বা দর্শনার্থী গেলেই তিনি বলছেন, ‘আমার পরিচয় জানো’। তিনি শিক্ষা প্রশাসনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও অন্য পরিচয়ে পরিচিত হতে চাইছেন। তিনি বিএনপির একজন নেতার বন্ধুর পাশাপাশি আরো নানা পরিচয় দিচ্ছেন।
অথচ সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলার পর মাউশি অধিদপ্তরের কয়েকজন জুনিয়র কর্মকর্তারা গত ৪ আগস্ট শিক্ষা ভবনে একটি মিছিল করেন। সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর কাছে নিজেকে তুলে ধরতে এর অন্যতম আয়োজনে ছিলেন প্রফেসর এবিএম রেজাউল করীম। তিনি আগে ওই মিছিলকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে বলেছেন।
জানা যায়, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সদস্য প্রায় ১৬ হাজার। যাদের মধ্যে অনেকেই ঢাকায় থাকতে চান। কিন্তু ঢাকা শিক্ষা প্রশাসন ও কলেজগুলো মিলিয়ে সাত-আটশ’র বেশি কর্মকর্তার থাকার সুযোগ নেই। অথচ এবিএম রেজাউল করীম ২০০৬ সাল থেকে ও একিউএম শফিউল আজম ২০০৮ সাল থেকে ঢাকায় চাকরি করছেন।
প্রফেসর এবিএম রেজাউল করীম ২০০৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ইডেন মহিলা কলেজে কর্মরত ছিলেন। এরপর তিন রাজধানীর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ হন। এরপর সর্বশেষ তিনি মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক ও প্রশাসন পদে পদায়ন পান। আর একিউএম শফিউল আজম ২০০৮ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ছিলেন। এরপর পিএইচডি করতে বিদেশে চলে যান। ফিরে এসে আবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে পদায়ন পান। এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পে লিয়েন শেষে ২০২০ সালে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলে পদায়ন নেন। এরপর ২০২০ সালের শেষের দিক থেকে মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক পদে আসেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শিক্ষা প্রশাসনের নিচের দিকে কর্মকর্তারা ভোল পাল্টানোর চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী দুইজন পরিচালকের ভোল পাল্টানো হাস্যকর। কারন মাউশির মহাপরিচালক এবং প্রশাসন ও কলেজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই দু’টি পদে সরাসারি আওয়ামী লীগ ঘরনা ছাড়া কারো পদায়ন পাওয়ার সুযোগ নেই। অথচ ওই পদে থেকেই প্রফেসর এবিএম রেজাউল করিম বিএনপি ঘরনার সাজার চেষ্টা করছেন। যা অনেকটা ‘কাকের ময়ূর হয়ে উঠার চেষ্টা’র মতো।
জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর এবিএম রেজাউল করীম বলেন, আমি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, আগেও সরকার ছিল এখনো যারা আছে তারা সরকার। সরকার আমাকে এখানে দিয়েছে আমি কাজ করছি, সরকার যদি মনে করে সরিয়ে দিবে দিতে পারে।
এবিষয়ে মাউশির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর একিউএম শফিউল আজম বলেন, সব সরকারের সময় প্রফেশনাল যারা আছেন তারা কাজ করেন। আর ভোল পাল্টানো বা লবিং-তদবিরের যেসব কথা বলা হচ্ছে এটা ধারনা থেকে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

দেশকে দ্রুতবেগে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছি : ফরহাদ মজহার
গণতন্ত্র ফেরাতে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প : মির্জা ফখরুল
জাতীয় ঈদগাহের সামনে ড্রামভর্তি খন্ডিত লাশ উদ্ধার
একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের ঘোষণায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপির ধন্যবাদ
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে স্বাগত জানাল ১২ দলীয় জোট
আরও

আরও পড়ুন

দুই শেয়ারবাজারেই বড় পতন

দুই শেয়ারবাজারেই বড় পতন

দিল্লির লকডাউন ঢাকায় দাফন হয়েছে : জাগপা

দিল্লির লকডাউন ঢাকায় দাফন হয়েছে : জাগপা

ইমাম প্রশিক্ষণে সউদী সরকারের সহায়তার আশ্বাস

ইমাম প্রশিক্ষণে সউদী সরকারের সহায়তার আশ্বাস

চোর সন্দেহে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা, নারী গ্রেফতার

চোর সন্দেহে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা, নারী গ্রেফতার

পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি

পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি

কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডে পতিত ফ্যাসিস্টরা উৎসাহিত হচ্ছে : রিজভী

কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডে পতিত ফ্যাসিস্টরা উৎসাহিত হচ্ছে : রিজভী

রাজনৈতিক দলগুলোকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বার্তা

রাজনৈতিক দলগুলোকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বার্তা

বিআরটিসি বাসে পাইলটিং ভিত্তিতে ই-টিকেট সেবা কার্যক্রম শুরু

বিআরটিসি বাসে পাইলটিং ভিত্তিতে ই-টিকেট সেবা কার্যক্রম শুরু

ডিএমপি কমিশনারের ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে বিভ্রান্তি

ডিএমপি কমিশনারের ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে বিভ্রান্তি

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সংকট উত্তরণের প্রচেষ্টা থাকলেও সাংবিধানিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে : সাইফুল হক

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সংকট উত্তরণের প্রচেষ্টা থাকলেও সাংবিধানিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে : সাইফুল হক

মতভিন্নতা সত্ত্বেও প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালো এবি পার্টি

মতভিন্নতা সত্ত্বেও প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালো এবি পার্টি

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে দেশবাসী উজ্জীবিত : লেবার পার্টি

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে দেশবাসী উজ্জীবিত : লেবার পার্টি

দেশকে দ্রুতবেগে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছি : ফরহাদ মজহার

দেশকে দ্রুতবেগে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছি : ফরহাদ মজহার

দিল্লি-কাবুলের ষড়যন্ত্রেই বেড়েছে সন্ত্রাসী হামলা: শেহবাজ শরীফ

দিল্লি-কাবুলের ষড়যন্ত্রেই বেড়েছে সন্ত্রাসী হামলা: শেহবাজ শরীফ

জীবন্ত ফার্ন গাছে বিরল খনিজের সন্ধান

জীবন্ত ফার্ন গাছে বিরল খনিজের সন্ধান

চীনের গুপ্তচর হিসেবে অভিযুক্ত লিন্ডা সানের বিচার শুরু

চীনের গুপ্তচর হিসেবে অভিযুক্ত লিন্ডা সানের বিচার শুরু

তীব্র পানি সংটে ইরানের নাগরিক জীবন ঝুঁকিতে

তীব্র পানি সংটে ইরানের নাগরিক জীবন ঝুঁকিতে

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে চীনকে পাশে পেল ভেনেজুয়েলা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে চীনকে পাশে পেল ভেনেজুয়েলা

মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের ৩১৪ কোটি টাকা আত্মসাতে ৫ এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা

মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের ৩১৪ কোটি টাকা আত্মসাতে ৫ এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা

গণতন্ত্র ফেরাতে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প : মির্জা ফখরুল

গণতন্ত্র ফেরাতে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প : মির্জা ফখরুল