অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দিতে চাই : মির্জা ফখরুল
১৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ এএম
নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য প্রফেসর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে চায় বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা কোনো কথা বলিনি। আমরা আগেও বলেছি, নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে নির্দিষ্ট একটা সময় লাগবে। আমরা তাদেরকে সেই সময়টা অবশ্যই দিয়েছি। আর আমরা তাদের সব বিষয়ে সমর্থন দিয়েছি।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় অন্তর্বর্তকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে ভারতে অবস্থা নিয়ে শেখ হাসিনা দেশের জনগণের বিজয়কে নস্যাৎ করার জন্য আবারও চক্রান্ত শুরু করেছেন বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারকে সহায়তা করা প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের একমাত্র কর্তব্য। আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই মহলটি, যারা বাংলাদেশের মানুষের অধিকারকে হরণ করে নিয়েছিলো-তারা পালিয়ে গিয়ে ভারতে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিজয়কে নস্যাৎ করার চক্রান্ত শুরু করেছেন। এত হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়নের পর সেই দলটি আবারও বিভিন্ন রকম কথা বলছে। যা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে। আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকার অবশ্যই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু কোনো হত্যাকারীর সঙ্গে না। যারা ছাত্র, শিশু, রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে জনগণ আছে। এ ব্যাপারে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কি কি করা যায়, সে বিষয়ে মতামত দিয়েছি। তারাও কি কি করতে যাচ্ছেন তা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন।
এরআগে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। বিকাল ৪টায় এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক শেষ ৪টা ৫০ মিনিটে যমুনা থেকে বের হয়ে আসেন বিএনপির নেতারা।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ ও বেগম সেলিমা রহমান।
এদিকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠপুত্র আরাফাত রহমান কোকোর ৫৫তম জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল সকালে বনানী কবরাস্থানে তার কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করে বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে দলটির নেতাকর্মীরা।
এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের কাছে আমাদের প্রত্যাশা দেশে প্রতি বিপ্লবের যে আশঙ্কা আছে সেই আশঙ্কা থেকে দেশকে মুক্ত করবার জন্য অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে। রাস্তায় থেকে তাদের (পতিত স্বৈরাচারের) যে চক্রান্ত শুরু হয়েছে সেই চক্রান্তকে প্রতিরোধ করার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ভারতের একটি গণমাধ্যমে শেখ হাসিনা বলেছেন, “সেন্টমার্টিন দ্বীপ দিতে রাজি হননি বলেই তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে।” এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাকোওয়াজ। নিজে যখন ব্যর্থ হন তখন অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানো তাদের একটা বৈশিষ্ট। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা ছিলো ছাত্র-জনগণ-নাগরিকের একটা স্বতস্ফূর্ত গণজাগরণ, সেই গণজাগরণকে সুসংহত করাই আমাদের একমাত্র কাজ। শেখ হাসিনা বলুন, অন্যান্যরা বলুন সবাই এখন এটাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে। জনগণের কাছে আমাদের আবেদন, আপনারা কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। সকলে ঐক্যবদ্ধ থেকে এই যে মুক্তি হয়েছে, এই যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে তাকে সুসংহত করার জন্য কাজ করুন।
দ্রুত নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আশা প্রকাশ করছি, নতুন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তারা একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সমর্থ হবে। আমি অনুরোধ করব, অতি দ্রুত নির্বাচনের জন্য একটা ক্ষেত্র তৈরি করা এবং সমস্ত বিপদগুলোকে কাটিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটা মুক্ত বাংলাদেশ নির্মান করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা (অন্তর্বতীকালীন সরকার) একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের একটা সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
ভারতে গণমাধ্যমে সংখ্যালঘুর হামলার খবর প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসব প্রোপাগান্ডা। বাংলাদেশের এই গণজাগরণ, অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার জন্য, ব্যর্থ করার জন্য এই যে নতুন গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন যে সরকার তাকে ব্যর্থ করার জন্য তারা এই মিথ্যা বানোয়াট, ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের মানুষ এবং বিশ্ব জনমত তারা কেউ এটাকে বিশ্বাস করবেন না। এর আগে সকালে বনানী কবরাস্থানে সহাস্রাধিক নেতা-কর্মী সমবেত হয়। ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পমাল্য অর্পন করা হয় কোকোর কবরে। ১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট কোকোর জন্ম। ক্রীড়া ক্ষেত্রে আরাফাত রহমান কোকোর ভূমিকার প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি, কোকোকে অত্যাচারে-নির্যাতনে হত্যা করা হয়েছিলো। দেশের বাইরে চলে যেতে হয়েছিলো ১/১১ সরকারের নির্যাতনের কারণে। বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন।
এই সময়ে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, কেন্দ্রীয় নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শামীমুর রহমান শামীম, রফিক শিকদার, এসএম জাহাঙ্গীর, যুব দলের নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাইফুল ইসলাম নিরব, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবিন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি
উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা
ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা