আর্থিক খাতে পদত্যাগের হিড়িক
১৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ এএম
উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলার সঙ্কট, রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় স্থির, কমছে রিজার্ভ, মিশ্র রফতানি প্রবৃদ্ধি, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া এবং বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপসহ আর্থিক খাতের সব সূচকই দীর্ঘদিন থেকে নিম্নমুখী। যদিও প্রবাসীদের দেশ গঠনে হুন্ডি না করা এবং অধিক হারে রেমিট্যান্স পাঠানোর ঘোষণায় শেখ হাসিনার পলায়নের পর বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। দেশে দীর্ঘদিন থেকে আর্থিক খাতের এই মন্দার পেছনে বিভিন্ন সময়ে বিশ্লেষকরা দায়ী করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে। সদ্য পদত্যাগকারী গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও সাবেক গভর্নর ফজলে কবির যাকে নিয়মের বাইরে গিয়ে সংসদে পাস করে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। এই দু’জনই দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিলে নানামুখী অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। এমনকি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে বিভিন্ন সময়ে নানামুখী ভুল সিদ্ধান্ত আর্থিক খাতকে খাদের কিনারে নিয়ে গেছে। যদিও শেখ হাসিনা সরকারের দমন-পীড়ন নীতির কারণে এ বিষয়ে কারো মুখ খোলার সুযোগ ছিল না। এমনকি বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলমের অনিয়ম ও অর্থপাচার নিয়ে সংবাদ যাতে প্রকাশিত না হয় সে জন্য আদালতের নিষেধাজ্ঞাও আনা হয়। পাশাপাশি কেউ এসব নিয়ে কথা বললে হয় চাকরি হারাতে হয়েছে অন্যথায় গুমের শিকার হতে হয়েছে। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পলায়নের পর সবকিছু যেন রাতারাতি পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। আর্থিক খাত সংশ্লিষ্টরা অপকর্ম থেকে বাঁচার উপায় নেই দেখে অফিসে আসতেও ভয় পাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ পদত্যাগ করছেন। ইতোমধ্যে আর্থিক খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেন উর্ধ্বতনদের মধ্যে পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে।
দীর্ঘদিন থেকে আর্থিক খাতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে নানা অনিয়ম কেলেঙ্কারি ও বিশেষ প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার করেছেন। আর তাই শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফুঁসে উঠেছেন। তাদের ক্ষোভের মুখে শেষ পর্যন্ত সরকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। গত শুক্রবার তিনি পদত্যাগ করেন। যদিও সরকার পতনের পর তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকেই আসেননি। এছাড়া গতকাল পদত্যাগ করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর, উপদেষ্টা ও আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল তাদের জানানো হয়, সোমবার (গতকাল) বেলা ১টার মধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। নির্দেশনা অনুযায়ী, গতকাল সকালেই আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান, মো. খুরশীদ আলম এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপদেষ্টা আবু ফারাহ মো. নাছের গভর্নর বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান গত রোববার জানিয়েছে, নতুন গভর্নর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত গভর্নরের দৈনিক ডাক দেখবেন ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ তার বিরুদ্ধে। পদত্যাগ করা দু’জনসহ তাকে নিয়ে তিনজন ডেপুটি গভর্নরের পদত্যাগের দাবি করে আসছেন বিক্ষুব্ধরা। অথচ পদত্যাগ না করিয়ে তাকেই নতুনভাবে দায়িত্ব দেয়া হলো। অভিযোগ রয়েছে, নূরুন নাহার ডেপুটি গভর্নর হয়েছিলেন কোটায়। সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের বিশেষ তদবিরে কোনো ধরনের ইন্টারভিউ বা সিলেকশন বোর্ড ব্যতিরেকে তাকে ডেপুটি গভর্নর পদে বসানো হয়।
জানতে চাইলে ডেপুটি গভর্নর মো. খুরশীদ আলম বলেন, সরকার থেকে সিদ্ধান্ত এসেছে, পদত্যাগ করতে হবে। সে জন্য পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। আমার নিয়মিত চাকরির বয়স এখনো শেষ হয়নি। ডেপুটি গভর্নর পদে যোগ দিয়ে মনে হচ্ছে, ভুল করেছিলাম। সরকার পরিবর্তনের পর গত বুধবার বিক্ষুব্ধ একদল কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, চার ডেপুটি গভর্নর, উপদেষ্টা ও আর্থিক গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধানের পদত্যাগ দাবি করে মিছিল করেন। একপর্যায়ে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল ভবনে অবস্থিত গভর্নরের ফ্লোরে ঢুকে পড়েন এবং একজন ডেপুটি গভর্নরকে সাদা কাগজে সই করতে বাধ্য করেন। অন্যদের বের করে দেওয়া হয়। এরপর তারা আর ব্যাংকে যাননি। গতকাল সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ব্যাংকটির বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের দাবি, ব্যাংক খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এসব শীর্ষ কর্মকর্তা দায়ী; তারা দায়িত্বে থাকলে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফিরবে না।
আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যত দ্রুত সম্ভব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্ব পুন:প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নতুন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্রুত গভর্নর নিয়োগ করা হবে। গত রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে এক মতবিনিময় সভার পর অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, গভর্নর নিয়োগের বিষয়ে তিনি চিন্তিত। শিগগির গভর্নর নিয়োগ দেওয়া হবে। জানা গেছে, গভর্নর নিয়োগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদের কাছ থেকে। আর ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ হবে সার্চ কমিটির মাধ্যমে, যাঁদের নাম সুপারিশ করা হবে, তাঁদের মধ্য থেকে।
ডেপুটি গভর্নর নিয়োগে সার্চ কমিটি
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নিয়োগের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চার সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাবেক কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ কমিটি গঠন করেছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তাফা কামাল মুজেরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের সদস্য নজরুল হুদা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব বদরে মুনির ফেরদৌস। এই কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বদরে মুনির ফেরদৌস।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ অনুযায়ী ডেপুটি গভর্নর পদে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ২০১৬ সালের মার্চে যে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তা পুনর্গঠন করে নতুন সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চারজন ডেপুটি গভর্নর রয়েছেন। তবে গত ৭ আগস্ট ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধানের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ করেন। এরপর গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সরকারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যত নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে।
বিএসইসি’র চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারের পদত্যাগ
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম গত শনিবার পদত্যাগ করেছেন। এরপর গতকাল দুই কমিশনার পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন- কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও রুমানা ইসলাম। গতকাল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এই দুই কমিশনারের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে। দুই কমিশনারের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
বিএসইসির সূত্রে জানা যায়, গত রোববার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পক্ষ থেকে এই দুই কমিশনারকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। এরপর ওই দিন বিকেলেই তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর আগে গত শনিবার পদত্যাগ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। ফলে বিএসইসির পাঁচ সদস্যের কমিশনের মধ্যে তিনজন পদত্যাগ করলেন। দায়িত্বে রয়েছেন কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী ও এ টি এম তারিকুজ্জামান। এর মধ্যে রোববারই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে বিএসইসির দায়িত্ব দেওয়া হয় মু. মোহসিন চৌধুরীকে।
পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, গত রোববার আমি সারা দিন অফিস করেছি। এরপর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিকেলে পদত্যাগ করেছি। জানা যায়, সর্বশেষ গত ৮ মে বিএসইসির কমিশনার হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে চার বছরের জন্য পুনর্নিয়োগ পান শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। দ্বিতীয় দফায় নিয়োগের তিন মাসের মাথায় এসে তাকে পদত্যাগ করতে হয় দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে। এদিকে বিএসইসিতে প্রথম মহিলা কমিশনার হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর রুমানা ইসলাম নিয়োগ পান ২০২২ সালের ৮ মে। চার বছর মেয়াদে নিয়োগ পান তিনি। তবে মেয়াদ পূর্তির আগেই সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁকেও পদত্যাগ করতে হলো।
এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
লাগাতার আন্দোলন করেও বর্তমান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম পদত্যাগ করছেন না। কয়েক দিনের মতো গতকালও বিক্ষোভে উত্তাল ছিল এনবিআর। দাবি না মানলে আগামীকাল বুধবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা এসেছে। আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পদত্যাগ করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। এদিকে শুধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই পদত্যাগ করতে বলেননি, গতকাল ব্যবসায়ীরাও পদত্যাগ করতে বলেছেন। পোশাক খাতের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও মোড়ক পণ্য প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএপিএমইএ) অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হওয়ার পেছনে এনবিআর চেয়ারম্যানের দায় আছে। জাতীয় রফতানির ধারা অব্যাহত রাখতে তাকে দ্রুত পদত্যাগ করতে বলেছেন। তাদের মতে, এনবিআরের আমূল সংস্কার করতে হবে; ব্যবসায়ীদের হয়রানি ও অত্যাচার বন্ধে এনবিআর কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করেন তারা।
এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলেন, আন্দোলনের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কয়েকটি সংগঠনে সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমাদের একটাই দাবি বর্তমান চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত কিংবা পদত্যাগ করতে হবে। তিনি আমাদের সঙ্গে অনেক অন্যায় ও অবিচার করেছেন। এনবিআরের বাইরের কোনো ক্যাডার থেকে কোনো চেয়ারম্যান আমরা আর চাই না। কাস্টমস বা ট্যাক্স বিভাগের সদস্যদের মধ্য থেকে নতুন এনবিআর চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হোক। গতকালও এনবিআরের সামনে যৌথভাবে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এসময় বাংলাদেশ ইন্সপেক্টর অব ট্যাক্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম আকাশ এবং বাংলাদেশ কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি মো. মজিবুর রহমানসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এনবিআরের কর্মচারীরা বলছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কেন বাইরের ক্যাডার নিয়ে এসে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে? আমাদের শুল্ক, আবগারি ক্যাডার থেকে ২ বছরের জন্য ও ইনকাম ট্যাক্স ক্যাডার থেকে ২ বছরের জন্য মেম্বারদের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিলে কী সমস্যা? আমাদের কষ্ট তারা বুঝতে পারবেন। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা আমাদের কষ্ট বুঝতে চান না। তার্ াইচ্ছেমতো করে আমাদের চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়। আমাদের প্রমোশন হওয়ার কথা ছিল সিরিয়াল মোতাবেক, অতীতেও হয়েছে। চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন লোকের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ইচ্ছেমতো যাকে তাকে সামান্য অজুহাতে সিরিয়াল ভঙ্গ করে নিজের পছন্দমতো করে প্রমোশন ও বদলি হয়েছে। সময়মতো পদোন্নতি দেওয়া হয়নি, ডিপিসি করা হচ্ছে না, পদোন্নতির পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না, নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। আমরা যারা এই বৈষম্যের শিকার হয়েছি।
ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডির পদত্যাগ
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরদিন এস আলমের নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের ব্যাংক থেকে বের করে দেন বিক্ষুব্ধ ব্যাংকাররা। এরপর গত ৭, ৮ ও ১১ আগস্ট ব্যাংকারদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখলের পর পদায়ন পাওয়া এক্সিকিউটিভসহ (নির্বাহী কর্মকর্তারা) যারা অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের নিয়োগ বাতিলের দাবি করেন। এমন অবস্থায় গত বুধবার এস আলমের আমলে পদোন্নতি পাওয়া অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) কায়সার আলী ব্যাংকে এলে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এদিকে ব্যাংকিং খাতে মাফিয়া হিসেবে পরিচিত বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ কর্তৃত্ব ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এতদিন ব্যাংক লুট করে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। গত বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে বেনামে ৮৮৯ কোটি টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের বিচক্ষণতায় সেই টাকা তুলতে পারেনি এস আলম গ্রুপ। আর তাই এবার আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত রোববার ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সন্ত্রাসী পাঠিয়ে সশস্ত্র হামলা করেছেন। এতে ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
আর্থিক খাতের রিপোর্টারদের সংগঠন ইআরএফ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, একটি সিন্ডিকেট অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে আর্থিক খাতকে দীর্ঘমেয়াদে খাদের কিনারে নিয়ে গেছেন। তাই দেশের অর্থনীতির স্বার্থে দ্রুত আর্থিক খাতে সংস্কার প্রয়োজন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি
উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা
ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা