স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সতর্ক করলেন ছাত্রনেতারা
১৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ এএম
অতিউৎসাহী উপদেষ্টাদের ৫ আগস্টের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্ত্বরে এক ছাত্র সমাবেশে তিনি বলেন, যারা খুনীদের পুনর্বাসনের জন্য ব্যাকস্টেজে ম্যাকানিজম করছেন তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে। একই সাথে তিনি অতি উৎসাহী উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা ওই সব উপদেষ্টাদের মনে করিয়ে দিতে চাই ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন। সুতরাং কখন কোন বক্তব্য দিবেন ৫ আগস্টের গণভবন ও জাতীয় সংসদ ভবনের কথা যেন মনে থাকে। মনে রাখবেন আমরা আপনাদেরকে যেভাবে বসিয়েছি সেভাবে টেনে নামাবো। আপনাদেরকে ছাত্র-জনতা প্রতিহত করবে। খুনীদেরকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করবেন না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ক্ষোভ যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে তা সহজেই অনুমেয়। গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে আলাপকালে তিনি আওয়ামী লীগকে নতুন মুখ নিয়ে দল গোছানোর পরামর্শ দেন। বলেন, ‹আমি সকালেও বলেছি, আওয়ামী লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল। প্রচুর ভালো ভালো নেতা আছেন। এই দলটা এক সময় মধ্যবিত্ত সেকুলারপন্থী বাঙালিদের দল ছিল। মুসলিম লীগ যখন ছিল, সেটা ছিল উচ্চবিত্তের। উচ্চবিত্ত বাঙালি মুসলিম লীগে ছিল। মধ্যবিত্তের তৎকালীন বুদ্ধিজীবী যারা, তারা সক্রিয় না থাকলেও সমর্থন করে। এত বড় মানুষের দল, যিনি এ দেশ স্বাধীন করেছেন-এতে তো কোনো সন্দেহ নেই। কারও সন্দেহ থাকার কথা না। উনার নামে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, স্বাধীনতা এসেছে। তার পরে বাকিটা। সেই দল এ রকমভাবে ভেঙে পড়ে যাবে যে, লোকে এখন লুকিয়ে লুকিয়ে বেড়াচ্ছে; আবার পেলে কী জানি হয়। আমি উনাদেরও আশা দিচ্ছি, কথা দিচ্ছি, আপনারা দল গুছিয়ে নেন। আপনাদের দলকে তো কেউ ব্যান করেনি। জঙ্গি না হলে কোনো দলকে ব্যান করা খুব খারাপ সংস্কৃতি।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‹বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের সংবিধানে কোনো দলের নাম উল্লেখ করেননি-এই পার্টি ব্যান করতে হবে, ওই পার্টি থাকবে না। মুসলিম লীগও তো ছিল! পলিটিক্যাল পার্টিকে ব্যান করা হয় পলিটিক্যাল ফায়দা হাসিল করার জন্য। আমি যেটা বলতে চাই না।›
এ প্রসঙ্গে একজন সমন্বয়ক বলেন, বিখ্যাত একটা প্রবাদ আছে, ‘অনেক কথার অনেক দোষ, ভেবেচিন্তে কথা কস’। কিন্তু নতুন এই উপদেষ্টা মনে হয় ভেবেচিন্তে কথা বলছেন না। এত বড় একটা রক্তঝরা গণআন্দোলনে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব উপদেষ্টার দায়িত্ব হওয়া উচিত-‘কথা কম কাজ বেশি’। কিন্তু শপথ নেয়ার পর থেকে আমরা দেখে আসছি উনি কাজের চেয়ে কথাই বেশি বলছেন। সারাক্ষণ ১০/১৫জন মিডিয়া কর্মী ও সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে একটার পর একটা বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছেন। ওনার কী এখন বক্তব্য দেয়ার সময়? পুলিশকে ডিউটিতে ফেরানোর জন্য উনি হুমকী দিলেন ঠিকই; একবারও আশার কথা শোনালেন না। পুলিশের জন্য জরুরীভিত্তিতে কী কী লাগবে, পুলিশের পোষাক পরিবর্তন ছাড়া কোনো প্রকার রিফর্ম নিয়ে কোনো কথা বলেন নি। সারাদেশের মানুষ এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ভাঙচুর হচ্ছে, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। ভারতের ষড়যন্ত্রে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেদিকে ওনার কোনো নজর নেই।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আসলে পুলিশ যেভাবে পুনর্গঠন করা দরকার সেরকম কিছু হচ্ছে বলে মনে হয় না। হাসিনা সরকারের আমলে দলকানা কর্মকর্তাদের ষড়যন্ত্রে এতদিন যারা পদোন্নতি বঞ্চিত ছিল তাদেরকে এখনও কোনো আশার বাণী দেয়া হয়নি। তার মানে এখনও প্রভাবশালীরাই আছে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের সুনজরে।
এদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উল্লেখিত বক্তব্যের পর বলেছেন, বিচারের আগে সন্ত্রাসীদের পূনর্বাসনের কোনো সুযোগ নেই। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সাথে সাংঘর্ষিক অবস্থান নেয়ার সুযোগ নেই। আন্দোলনে হামলাকারী, হত্যাকারী সকলের বিরুদ্ধে সারাদেশের ভিকটিমদের মামলা করার আহবান জানাচ্ছি। বিচার নিশ্চিত করা হবে। অনেকেই বলছেন, এই মামলা করার কথা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মুখ থেকে শোনার অপেক্ষায় ছিল দেশবাসী। কিন্তু তার মুখে এখনও এমন কথা শোনা যায় নি। ওনার অতিকথনে মনে হচ্ছে উনি আওয়ামী লীগকে পূনর্বাসনের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে উপদেষ্টা হয়েছেন।
এর আগে গত রোববার এই উপদেষ্টা বলেছিলেন, মিডিয়া চাটুকারিতা করলে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমি আপনাদের প্রমিস করছি যদি মিডিয়া চাটুকারিতা করে তাহলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। অভিজ্ঞজনদের প্রশ্ন- মিডিয়া বন্ধ করা কী স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাজ? এজন্য তো পৃথক মন্ত্রণালয় আছে। স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। তিনি তো দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছেন। কথা বলছেন খুবই কম।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি
উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা
ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা