নিদানকালে লাপাত্তা সেই আইনজীবীরা
১৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৪ এএম
এ যেন ম্যাজিক-মঞ্চ। নিমিষেই লাপাত্তা হয়ে গেলেন সেই আইনজীবীরা। টিভি খুললেই মানুষকে সহ্য করতে হতো যাদের কচকচানি। সেই ‘জাঁদরেল’ আইনজীবীরা এখন হাওয়া। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা যখন ভারতে পালিয়ে গেলেন। তারপর তাদের দেখা নেই কোত্থাও। না আদালতের বারান্দায়। না ব্যক্তিগত চেম্বারে। সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান, টিভি টকশোতেতো নেইই। নিমিষেই উধাও হয়ে গেলো তাদের কথিত ‘আইনি লড়াই’। হ্যাঁ। জাঁদরেল সেই আইনজীবীগণ আর কেউ নন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং সরকারের পক্ষে আইনি লড়াইয়ের মোড়কে যারা ছিলেন ফ্যাসিস্ট সরকারের উচ্ছিষ্টভোগী। সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান, অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিম, ঢাকা কোর্টের অ্যাডভোকেট এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল, স্পেশাল পিপি আব্দুল্লাহ আবু, অ্যাডভোকেট শেখ বাহারুল ইসলাম বাহারসহ তারকাখচিত আরো কতেক আইনজীবী।
আওয়ামী সমর্থক বহু আইনজীবী রয়েছেন। তারা দলীয় পরিচয় ধারণ করেও পেশাদারিত্বের সঙ্গে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন। কিন্তু উপরোক্ত আইনজীবীগণ নিছক আওয়ামীলীগ সমর্থকই ছিলেন না। ছিলেন তার চেয়েও বেশি। নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মামলা, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মামলায় তারা দেখিয়েছেন তাদের সেরা ‘পারফর্মেন্স’। তাদের হম্বিতম্বির কাছে প্রচলিত আইন, বিচার ব্যবস্থা সবই ছিলো তুচ্ছ। পেশাদারিত্ব নয়-বরং তুঙ্গীয় আওয়ামী জজবায় তারা বারান্দা কাঁপাতেন আদালতের। আদালতের কাছে তারা যা চাইতেন-তা-ই মঞ্জুর হতো। তাই বলা চলে, বিচারাঙ্গন চালাতেন তারাই। প্রকাশ্যেই ডিক্টেট করতেন আদালতকে। তাদেরকে ছাড়া যেন দুদক, আইন মন্ত্রণালয়, প্রসিকিউশন অচল। কার্যক্রম এমনই ছিলো যে, তারা আইনের বাইরে গিয়ে যদি শেখ হাসিনা, তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং দুদকের জন্য জীবনও দিতে হয়Ñ তারা তাও দেবেন। কিন্তু অত্যন্ত বিস্ময়করভাবে লক্ষ্য করা গেলো যে, তারা আত্মোন্নয়নের বাইরে ন্যূনতম ঝুঁকি নেননি। তুমুল আন্দোলনে সরকার পতনের পর তাদের টিকিটি কেউ দেখেনি। রাজপথে নামাতো দূরের কথাÑ আদালতের করিডোরেও তাদের মিলছে না দেখা।
নৌকায় করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়া স্বৈরশাসকের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের হাতে হাতকড়া। তাকে পোরা হয়েছে এজলাসের ভেতর তারই নির্মিত লোহার খাঁচায়। নিউমার্কেট এলাকার একটি হত্যা মামলায় আদালতে তুলে আনিসুল হক এবং সালমান এফ.রহমানের রিমান্ড চাওয়া হয়। কিন্তু সেই রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করেনÑ এমন একজন আইনজীবীকেও পাওয়া গেলো না। অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল আনিসুল হকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ‘তুই-তুমি’র সম্পর্ক তাদের। মূলতঃ এই সম্পর্কের জোরেই মোশাররফ হোসেন কাজল দেড় দশক ধরে স্বৈর সরকারের প্রতি অন্ধ আনুগত্য দেখিয়েছেন। কোনো অর্থ আত্মসাৎ হয়নি। বরং রক্ষিত অর্থ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবু জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৭ বছর কারাদণ্ডের রায় করান আনিসুল হকের বন্ধু মোশাররফ হোসেন কাজল। জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট মামলায়ও কারাদণ্ড নিশ্চিত করেন তিনি। এ ছাড়া নাইকো মামলা, গ্যাটকো মামলা, বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি মামলায় দুদকের আইনজীবী হয়ে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেড় দশকব্যাপী আদালতে ছিলেন অতিমাত্রায় সোচ্চার। রাজনৈতিক এসব মামলায় অ্যাডভোকেট কাজলের অর্জন শতভাগ। পক্ষান্তরে ব্যাংক লুট, শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অন্যান্য মামলায় অর্জন নেই বললেই চলে। বরং আনিসুল হকের নির্দেশনায় অনেক দুর্নীতি মামলায় আসামিদের সঙ্গে আপস-রফার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বিশেষ আদালতে দুদকের মামলায় গত দেড় দশকে তিনি ফি বাবদ নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা সরকারি অর্থ। জব্দ পাসপোর্ট ছাড় করিয়ে দেয়া, জামিনের বিরোধিতা না করা, আসামির বিদেশযাত্রায় আপত্তি না করা, দুর্নীতি মামলায় জব্দকৃত সম্পত্তি ‘আন-ফ্রিজ’ করা, ফ্রিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ‘আন-ফ্রিজ’র ক্ষেত্রেও আসামিপক্ষের সঙ্গে গোপন আঁতাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বন্ধুত্বকে পুঁজি করে অ্যাডভোকেট কাজল নিজেও হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। অথচ যে বন্ধুর কারণে তিনি বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হলেন সেই বন্ধুর বিপদে তাকে পাশে দেখা যায়নি।
বিচার বিভাগ ধ্বংসের হোতা আনিসুল হক নিজেই এখন বিচারের কাঠগড়ায়। অথচ তার বিপদের দিনে পাশে নেই ঘনিষ্ঠ বন্ধু মোশাররফ হোসেন কাজল। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাপাত্তা হয়ে গেছেন মোশাররফ হোসেন কাজলও। তবে বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সহযোগী কাজলের চেম্বার ভাঙচুর করে। এ ঘটনার পর তাকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি। হাওয়া বদলে যাওয়ায় দুদকও তাকে নতুন কোনো মামলায় যুক্ত করছে না বলে জানা গেছে।
তবে এখনো অক্ষত রয়েছে শেখ হাসিনার আরেক সহযোগী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খানের চেম্বার। তিনি হাইকোর্টে দুদকের পক্ষে লড়তেন। হাসিনার ফ্যাসিজমকে দীর্ঘস্থায়ী করতে তার রয়েছে প্রত্যক্ষ ভূমিকা। দুর্নীতি মামলার বিচারের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বিচারিক হয়রানিতে খুরশীদ আলম খান ছিলেন অগ্রনায়ক। ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সরকারের সময় হাইকোর্টে শেখ হাসিনার জামিনের বিরোধিতা করেন খুরশীদ আলম খান। সেই খুরশীদ আলম খানই আওয়ামীলীগ সরকার আমলে দুদকের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আইনজীবী বনে যান। বনে যান শেখ হাসিনার প্রিয় পাত্র।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের প্রথম মেয়াদে দুদকের ‘বড় আইনজীবী’ ছিলেন আনিসুল হক। বেগম খালেদা জিয়াসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় দুদকের পক্ষে লড়েন আনিসুল হক। তখন তিনি একটি মামলায় ৩১টি বিল দাখিল করেন। পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় তথ্য-উপাত্ত জোগাড় করতে দুই বার ব্যর্থ সফর করেন কানাডা। একই রুটে আসা-যাওয়া করে দুই বার দুই ধরনের বিল দাখিল করেন দুদকে। এখান থেকে তিনি ৩৮ লাখ টাকা অতিরিক্ত দাবি করেন। অডিট বিভাগ প্রশ্ন তুললে পরে সেটি আটকে যায়। এ ছাড়া একটি মামলার ফি বাবদ হাতিয়ে নেন ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আরাফাত রহমান কোকোর অর্থ ফেরত আনার নামে ‘অক্টোখান’ নামক একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও আনিসুল হক হাতিয়ে নেন অন্ততঃ সাড়ে ৩ কোটি টাকা।
২০১৪ সালে আনিসুল হক টেকনোক্রেট কোটায় ফ্যাসিস্ট সরকারের আইনমন্ত্রী হন। দুদকে তার স্থানটি দখল করেন খুরশীদ আলম খান। সেই থেকে খুরশীদ আলম খান (কা.আ.খা-কাক) হয়ে যান দুদকের সবচেয়ে ‘বড় আইনজীবী’। দুদকের অর্গানোগ্রামে ‘প্রধান আইন কর্মকর্তা’র কোনো পদ না থাকলেও সরকারের পদলেহী মিডিয়াগুলো খুরশীদের নামে আগে পদবী হিসেবে ‘দুদকের প্রধান আইনজীবী’ উল্লেখ করতেন। দুদক এতে কখনো কখনো মৃদু আপত্তি করলেও খুরশীদ আলম খান এই পদবী উপভোগ করতেন। দুদকের মামলা মানেই খুরশীদ আলম খান। যে মামলায় তার ন্যূনতম সংশ্রব নেই- সেই মামলা নিয়েও টিভিতে কথা বলতেন খুরশীদ আলম। অথচ দুদকের সঙ্গে তার চুক্তি হচ্ছে ‘কেস টু কেস’। যে মামলায় তাকে যুক্ত করা হয়নি সেই মামলা নিয়ে কথা বলার এখতিয়ার তার ছিলো না। তা সত্ত্বেও গায়ে পড়ে তিনি ‘দুদকের হয়ে’ কথা বলতেন। দুদকের অনেক কর্মকর্তা খুরশীদ আলম খানের বেআইনি এই কার্যক্রমকে ধৃষ্টতা হিসেবেই দেখেন। তার স্পর্ধা বেড়ে যায় দুদকের সবচেয়ে বিতর্কিত চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে। দুদক আইন সম্পর্কে ইকবাল মাহমুদ ছিলেন সবচেয়ে অজ্ঞ। এ কারণে তিনি বেশিমাত্রায় নির্ভর ছিলেন খুরশীদ আলম খানের প্রতি। খুরশীদ আলম খানও বিনিময়ে মামলার ফি’র ভাউচার দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
একবার দুদক কমিশনারদের ‘সমমর্যাদা’ সংক্রান্ত একটি মামলায় ইকবাল মাহমুদের ব্যক্তিগত আইনজীবী নিযুক্ত হন খুরশীদ আলম খান। মামলাটি ছিলো আপিল বিভাগে। সেখানে তিনি মামলাটি ‘কমিশনের মামলা’ হিসেবে উপস্থাপন করেন। এভাবে আদালতকে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইকবাল মাহমুদের পক্ষে রায় নিয়ে আসেন। আদালতকে ‘মিস লীড’ করার দায়ে আপিল বিভাগ একবার তাকে শাস্তি দেয়। তিরস্কার ও অর্থদণ্ড করে। তা সত্ত্ব্ওে দণ্ডিত এই আইনজীবীকে দিয়েই দুদক উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
কি শুধুই কি দুদক ? বিচারিক হয়রানির মাধ্যমে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শায়েস্তা করতে শেখ হাসিনা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের আইনজীবী নিয়োগ করেন খুরশীদ আলম খানকে। সরকারের পক্ষে মামলা পরিচালনায় অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলীকে নিয়োগ দিলে খুরশীদ আলম গো ধরেন। পরবর্তীতে তিনি একাই ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে লড়েন।
নিছক আইনি লড়াইয়ের কথা থাকলেও খুরশীদ আলম খান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করেন নানান বিষোদগার। বিশ্ববরেণ্য এই ব্যক্তিকে নানাভাবে অপদস্ত করাই ছিলো খুরশীদ আলমের প্রধান এজেন্ডা। তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ আখ্যা দিতেও দ্বিধা করেননি। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচারিক হয়রানি দেখে বিশ্বের ১৭৫ নেতা যখন উদ্বেগ জানিয়ে গত বছর আগস্টে শেখ হাসিনাকে চিঠি দেন, খুরশীদ আলম খান তখন এটিকে বিশ্বনেতাদের ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের আইন, বিচার বিভাগকে না জেনে, পর্যালোচনা না করে অযাচিতভাবে বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করছেন। শেখ হাসিনার স্বরে সুর মিলিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ভরে খুরশীদ আলম খান বলেন, তারা (বিশ্ব নেতারা) ড. ইউনূসের মামলা নিয়ে কেন এতো মাতামাতি করছেন-আমার বুঝে আসে না !
এ হেন খুরশিদ আলম খান ৫ আগস্টের পর দৃশ্যপট থেকে হঠাৎই লাপাত্তা হয়ে যান। তাকে উচ্চ আদালতের চৌহদ্দিতে দেখা যাচ্ছে না। বিজয়নগরের আজিজ কো-অপারেটিভ সোসাইটি মার্কেটে তার যে চেম্বার রয়েছে সেখানেও আসেন না। সাংবাদিকরা ফোন দিলে তিনি বাড়িতেই আছেন বলে জানান। যদিও নিজ বাসায়ও তিনি নেই বলে জানা গেছে। চরম নিরাপত্তাহীনতায় তিনি আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে জানিয়েছে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র। অন্যদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা নিযুক্ত হওয়ার পর খুরশীদ আলম খানকে দদুক নতুন কোনো মামলায় যুক্ত করছে না। আইনজীবী প্যানেল থেকেও তাকে বাদ দেয়ার কথা জানা গেছে।
নৌকায় করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়া পতিত আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বান্ধবী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমও গা ঢাকা দিয়েছেন। আনিসুল হকের বাবা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের চেম্বারে জুনিয়র হিসেবে কাজ করতেন সুন্দরী তৌফিকা করিম। সিরাজুল হকের ইন্তেকালের পর তৌফিকা হয়ে যান আনিসুল হকের জুনিয়র। যদিও তিনি অন্য আইনজীবীদের চোখে ‘আনিসুল হকের বান্ধবী’ হিসেবেই সমধিক পরিচিত। এককভাবে মামলা পরিচালনার কোনো রেকর্ড সাম্প্রতিক সময়ে নেই এই আইনজীবীর। তবে নিম্ন আদালতে হত্যা-ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের মামলায় প্রভাবশালী আসামির জামিন পাইয়ে দেয়া, দুর্নীতিবাজ রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হলে সেটির জামিন লাভ, রায় পক্ষে এনে দেয়া, সাব-রেজিস্ট্রার, জেলা রেজিস্ট্রার বদলি, বিচারক বদলি, সারাদেশে জামিন বাণিজ্য- ইত্যাদি কাজ করতেন তৌফিকা করিম। তৌফিকাকে সশরীরে আদালতে যেতে হতো না। শেখ বাহারুল ইসলাম বাহার নামক এক আইনজীবী তার ফাইলগুলো নিয়ে ‘মুভ’ করতেন। আনিসুল হক বাহারুল এবং মোশাররফ হোসেন কাজলকে ‘সিগন্যাল’ দিয়ে দিতেন। ‘কাজ’ হয়ে যেতো। এভাবে তৌফিকা করিম আনিসুল হকের বান্ধবী হিসেবে হাতিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। জনৈক আফতাবউদ্দিন নামক ব্যক্তি তৌফিকা করিমের স্বামী হলেও তাদের দু’জনকে একসঙ্গে দেখা মিলেছে খুব কম জায়গায়। মূলতঃ আনিসুল হক যেখানে তৌফিকাও থাকতেন সেখানে। সম্পর্কের সুবাদে আনিসুল হক তৌফিকা করিমকে তার ‘সিটিজেন ব্যাংক’র পরিচালক ও চেয়ারম্যান করেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য করেন। মালিকানা লাভ করেছেন একটি টিভি চ্যানেলের। দেশ-বিদেশে তার নামে বিপুল সম্পত্তিতো রয়েছেই। তবে যে আনিসুল হকের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তৌফিকা করিমের এতো বিত্ত বৈভব সেই আনিসুল হক যখন ধরা পড়লেন-তখন তৌফিকাকে পাশে দেখা যায়নি। জানাযায়, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর লাপাত্তা হয়ে যান তৌফিকা করিমও। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার উৎখাত হওয়ার পর দুর্দিন চলছে আনিসুল হক গংদের। আনিসুল হকের এই নিদানকালে পাশে দেখা যাচ্ছে না তার কাছ থেকে সুবিধা বাগিয়ে নেয়া খুরশীদ আলম খান, মোশাররফ হোসেন কাজল, তৌফিকা করিম, শেখ বাহারুল ইসলামদের।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পরলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং :ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
কালীগঞ্জে রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীর সংবাদ সম্মেলন
গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
মিসরে প্রেসিডেন্ট সিসির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
কুর্দি যোদ্ধাদের ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি এরদোগানের
৩৫শ’ এজেন্টের অধিকাংশই গুজরাটের পাচারকারী
৫ সাংবাদিককে হত্যা করল ইসরাইল বিমান
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম