ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৮ ভাদ্র ১৪৩১
বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপনে ভয়াবহ জালিয়াতি কম গভীরতায় টাওয়ার স্থাপন : ভেঙে পড়ার ঝুঁকি

শত শত কোটি টাকার বিল তুলে নিয়েছে ভারতীয় কেইসি কোম্পানি

Daily Inqilab সাঈদ আহমেদ

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৪ এএম | আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৪ এএম

বৈদ্যুতিক টাওয়ার স্থাপনের নামে শত শত কোটি টাকার বিল তুলে নিয়েছে ভারতের ‘কেইসি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টর নিয়ে হাসিনা সরকারের ইনডেমনিটি থাকায় পুকুর চুরির এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়া হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)র গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। কিন্তু ভারত সরকার, শেখ হাসিনা এবং মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় বিপদে পড়বেÑ এমন আশঙ্কা থেকে দুদক তদন্তের পথে যায়নি। বরং বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে রাখে। এতে স্পর্শহীন থেকে গেছে ভারতীয় কোম্পানিকে কার্যাদেশ প্রদানকারী এবং কমিশনভোগী এ দেশীয় দুর্বৃত্তরা। ৪শ’ কিলোভোল্ট বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপনের নামে মূলতঃ হয়েছে অর্থের ভাগাভাগি। ম্যাটারিয়াল দেয়া হয়েছে নিম্নমানের। টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে কম গভীরতায়। টাওয়ারগুলোর লোড ক্যাপাসিটি খুবই কম। এ কারণে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণও বটে। ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্ব্াসে ভেঙ্গে পড়তে পারে টাওয়ারগুলো। দুদক, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ‘পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ’ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা যায় এসব তথ্য।
সূত্রমতে, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে এ থেকে ১২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ার কথা। প্রকল্প চালুর লক্ষ্যে স্থাপন করা হয়েছে দীর্ঘ সঞ্চালন লাইন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সহায়ক প্রতিষ্ঠান ‘পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)’ ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কেইসিকে দিয়ে সঞ্চালন লাইন স্থাপন করেছে। শত ভাগ বিদ্যুতায়িত বাংলাদেশে এখন অন্ততঃ ১৩ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের দৈর্ঘ্য ৬ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছিলো পিজিসিবি।
দুর্নীতি ও হাসিনা সরকারের লুটতরাজের হাত ধরেই ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ২৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। চলমান রয়েছে ১৭টি প্রকল্প। বাস্তবায়িত প্রকল্পের মধ্যে পিজিবি’র বৃহৎ প্রকল্প হচ্ছে ‘মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট (২)’র ‘মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন’। ২০১৭ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হয় ২০২২ সালের জুনে। সঞ্চালন লাইনটি দৈর্ঘ্যে ৯২ কিলোমিটার। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৯৫ কোটি টাকা। জাইকা এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নের প্রকল্প এটি। এরই মধ্যে সঞ্চালন লাইন পিজিসিবির কাছে হস্তান্তর করেছে কেইসি। তবে এখনও এতে বিদ্যুৎ সঞ্চার করা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে সঞ্চালন লাইন স্থাপনে ওঠে পুকুর চুরির অভিযোগ।
সূত্রমতে, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ পায় ভারতের ট্রান্সমিশন টাওয়ার প্রস্তুতকারী কোম্পানি ‘কেইসি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’। প্রতিষ্ঠানটি নিজেকে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তর প্রতিষ্ঠান বলে দাবি করে। মাতারবাড়ী-চট্টগ্রাম মদুনাঘাট পর্যন্ত ৯২ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপনে একটি পাতানো দরপত্রের মাধ্যমে কার্যাদেশ পায় প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ৪শ’ কেভি লাইন স্থাপনে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করে পিজিসিবি। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে তৎকালীন কোম্পানি সচিব মো: আশরাফ হোসেন এবং কেইসি’র পক্ষে কান্ট্রিহেড ও মহাব্যবস্থাপক কুলদ্বীপ কুমার সিনহা (কে কে সিনহা) চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তী ৩০ মাসের মধ্যে টার্নকি পদ্ধতিতে কাজটি শেষ করে পিজিসিবি’র কাছে হস্তান্তর করার কথা। সঞ্চালন লাইনটি মদুনাঘাট থেকে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট পর্যন্ত নির্মাণাধীন ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। লাইনটি চালু হলে বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমবে মর্মে দাবি করা হয়েছিলো। কারিগরি জটিলতাও অনেকাংশে কমবে বলে জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ভবিষ্যতে যেন বেশি বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা যায়, সে লক্ষ্যে মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট সঞ্চালন লাইনে উচ্চতরপ প্রযুক্তি এবং কন্ডাক্টর (তার) ব্যবহৃত হয়েছে। যার মাধ্যমে ২৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন সম্ভব।
সূত্রটি জানায়, মাতারবাড়ী থেকে চট্টগ্রাম মদুনাঘাট পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনটি টানা হয়েছে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া, মহেশখালী, চকোরিয়া এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালী, বোয়ালখালি, পটিয়া ও রাউজান উপজেলার ওপর দিয়ে। ৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ সঞ্চালন লাইন টানতে স্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন উচ্চতার অন্তত সাড়ে ৩শ’ টাওয়ার। টাওয়ার স্থাপনকালে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কেইসি ইন্টারন্যাশনালের প্রজেক্ট ম্যানেজার ভরত রাজ নিজেদের অত্যন্ত অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান, পর্যাপ্ত জনবল এবং বিপুল যান্ত্রিক কাঠামো রয়েছেÑ মর্মে দাবি করেন। দুর্নীতি যাতে কেউ ধরতে না পারে, পাইলিংয়ের মাপ পরীক্ষার জন্য পিজিসিবি অনুসরণ করে পিআইটি (পাইল ইন্টিগ্রিটি টেস্ট) পদ্ধতি। বিদ্যুৎ সেক্টরের বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদ্ধতিতে গভীরতা নিরূপণের পরীক্ষার ক্ষেত্রে কারসাজি করা সম্ভব (ডিজিটাল চুরি)। নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি পিএসআইটি (প্যারালাল সিসমিক ইন্সট্রুমেন্টাল টেস্ট) পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে প্রতিটি পাইলিংয়ের প্রকৃত গভীরতা জানা সম্ভব হতো। এ অবস্থায় পাইলিংয়ে চুরির কারণে টাওয়ার স্থাপনাটিও ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফোর লেগের (৪-পাবিশিষ্ট) প্রতিটি টাওয়ার স্থাপনে ভূগর্ভে বিভিন্ন গভীরতার পাইল করতে হয়। একেকটি ‘লেগ’ স্থাপনে মাটির অবস্থাভেদে ৪ থেকে ৫টি পাইল করার কথা। স্থাপত্য নকশায় পাইলগুলোর গভীরতা স্থানভেদে ২২ থেকে ২৮ মিটার উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে পাইল করা হয়েছে ১২ থেকে ১৬ মিটার গভীরতায়। অর্থাৎ নকশার চেয়ে অন্ততঃ অর্ধেক গভীর পাইল করা হয়েছে। মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকবে ভেবে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। এতে এমনিতেই সব ধরনের খরচ অর্ধেক কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাইলিংয়ে ১০ মিলি, ১২ মিলি এবং ১৬ মিলি রড ব্যবহার করা হয়। পাইলের গভীরতা কম হওয়ায় রডের খাঁচা (কেস)গুলো তৈরি করা হয়েছে ছোট। সিমেন্ট, বালুও ব্যবহার হয়েছে কম। এতে পাইলিংয়ের খরচ প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট সঞ্চালন লাইনের একেকটি টাওয়ারের ওজন উচ্চতাভেদে ৪০ থেকে ৬০ টন। কিন্তু কম গভীরতার পাইলিংয়ের কারণে এই প্রকল্পে স্থাপিত টাওয়ারগুলোর লোড ক্যাপাসিটি অত্যন্ত কম। তারা মনে করেন, বুয়েট কিংবা আন্তর্জাতিক মানের কোনো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে পরীক্ষা করলেই অভিযোগের সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, টাওয়ারের গোড়ায় পাইলিং কম করা হলেও ঠিকাদার তুলে নিয়েছেন ৯০ ভাগ অর্থ। এ ক্ষেত্রেও আশ্রয় নেয়া হয়েছে ভয়াবহ জালিয়াতির। পাইলিংয়ের পর লোড ক্যাপাসিটি টেস্ট করা হয়। ৭ দিনের মাথায় ‘কিউব টেস্ট’ এবং ২৮ দিনের মাথায় পাইল ইন্টিগ্রিটি টেস্ট (পিআইটি) করা হয়। এ দু’টি টেস্ট সরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ল্যাবরেটরিতে করার কথা। টেস্ট রিপোর্ট যথাযথ হলেই ঠিকাদারের প্রাপ্য বিলের অর্থ ছাড় করা হয়। কিন্তু মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট সঞ্চালন লাইনের টাওয়ারের স্থাপনের ক্ষেত্রে পাইলিংয়ের বিল তুলে নেয়া হয় ভুয়া টেস্ট রিপোর্টের ভিত্তিতে। এ ক্ষেত্রে কখনও চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কখনও চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের সিল-স্বাক্ষর জাল করা হয়।
মাতারবাড়ী-মদুনাঘাট প্রকল্পে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)ও করেছে লুকোচুরি। সংস্থাটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের একজন উপ-সহকারী পরিচালক জানান, অভিযোগটির প্রাথমিক অনুসন্ধান করেছেন তিনি। এ প্রক্রিয়ায় তিনি প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন সেগুনবাগিচাস্থ প্রধান কার্যালয়ে পাঠান। পরে সেটি ধামাচাপা দেয়া হয়।
পিজিসিবির মহাব্যবস্থাপক (পিএন্ডএ) রূপক মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ জায়েদী স্বাক্ষরিত চিঠির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১০ আগস্ট ৭ সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়। এ সংক্রান্ত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলাধীন মাতারবাড়ী থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশন লাইনের পাইলিং কম গভীরতায় ও নিম্নমানের ম্যাটেরিয়ালস ব্যবহার করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নিরপেক্ষ প্রকৌশলী দ্বারা তদন্তের লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) বরাবর পাঠানো কার্যাদেশের প্রেক্ষিতে উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাব সুস্পষ্টকরণের নিমিত্ত একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করা হলো।’
পিজিসিবি’র তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মোনায়েম চৌধুরীকে কমিটির প্রধান করা হয়। অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন, প্রধান প্রকৌশলী (প্রকল্প মনিটরিং) এ কে এম গাউছ মহীউদ্দিন আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী (সঞ্চালন-১) মোরশেদ আলম খান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সিভিল ডিজাইন) মো: দেলোয়ার হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (জিটুজি প্রকল্প) মো: এনামুল হক, উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রকল্প, অর্থ) তানভীর আহমেদ এবং টেপসকো লি: এবং এনকে লি:-এর একজন প্রতিনিধি। কমিটির কার্যক্রম বিষয়ে তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী মো: আব্দুল মোনায়েম চৌধুরী বলেন, আমরা বুয়েটের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে কি করছি তা তখনই দুদককে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে, ৭ সদস্যের এই কমিটির অন্ততঃ ৩ জনই সঞ্চালন লাইন স্থাপন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত মর্মে অভিযোগ আছে। প্রধান প্রকৌশলী (সঞ্চালন-১) মোরশেদ আলম খান স্বল্প গভীরতায় পাইলিংয়ের বিষয়টি অবগত। লাইন স্থাপনকালে সাইটের দায়িত্বে ছিলেন পিজিসিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সোহেল রানা। ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট গ্রহণ করার মাধ্যমে সাব-কন্ট্রাক্টরদে কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা অগ্রিম হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ভুয়া টেস্ট রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রকৌশলী পলাশ এবং ইসমাইল গাজীও বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সোহেল রানা বলেন, আমি ওই প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলাম মাত্র দেড় বছর। ওখানে জাইকার কনসালট্যান্টরা সার্বক্ষণিক সুপারভিশনে ছিলেন। আর্থিক ক্ষমতাও ছিল তাদের হাতে। টাওয়ার স্থাপনে পাইল কম হওয়া এবং লোড ক্যাপাসিটি কম হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। টাওয়ার ভেঙে পড়লে সেটি সঙ্গে সঙ্গেই ঘটতো। লোড কম হলে টাওয়ার হেলে পড়ত। ক্যাবলগুলোই কানেকশন দেয়া যেত না। আগামী ৫০ বছরের বিষয় মাথায় রেখেই টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোর কিছুই হবে না।
সঞ্চালন লাইন স্থাপন দুর্নীতির সঙ্গে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এনামুল হকের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। সাব-কন্ট্রাক্টরদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেয়া ছাড়া কাজ করতে দিতেন না বলে জানা যায়। পিজিসিবি’র একাধিক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এই ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ঢাকায় নামে-বেনামে করেছেন বিপুল অবৈধ সম্পত্তি।
তবে অভিযোগের বিষয়ে এনামুল হক বলেন, সাংবাদিকরা তো কত রকম অভিযোগই করেন! তাদের কথা এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দিই। এসব অভিযোগের কোনো গুরুত্ব¡ দিই না। ‘প্রকৃত তথ্য’ জানতে তিনি প্রধান প্রকৌশলী (সঞ্চালন-১) মোরশেদ আলম খানের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
এদিকে কেইসি’র পুকুর চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে পিজিসিবি’র তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে জাইকার অর্থে। এখানে জাইকার সুপারভিশন ছিল। এখানে এমন কিছু ঘটার কোনো সুযোগ নেই।
এদিকে হাসিনা সরকারের দুর্নীতির বিচারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গতকাল বুধবার বলেন, বিদ্যুৎ বিষয়ে পূর্বের চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করছে সরকার। এসব ক্ষেত্রে কোনো দুর্নীতি হয়েছে কিনা তদন্ত করা হচ্ছে। এই সরকার অন্য সরকারের মতো নয়।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

নেত্রকোনা পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম খানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

নেত্রকোনা পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম খানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

প্রাথমিক শিক্ষার ‘এডহক’ কমিটির ১১ সদস্যের

প্রাথমিক শিক্ষার ‘এডহক’ কমিটির ১১ সদস্যের

গণঅভ্যুত্থানের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে অস্থিরতা ও দীর্ঘসূত্রিতা কোনটাই কাম্য নয় -এবি পার্টি

গণঅভ্যুত্থানের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে অস্থিরতা ও দীর্ঘসূত্রিতা কোনটাই কাম্য নয় -এবি পার্টি

গণমাধ্যমের সাথে আলোচনা করে কমিশন করা হবে : তথ্য উপদেষ্টা

গণমাধ্যমের সাথে আলোচনা করে কমিশন করা হবে : তথ্য উপদেষ্টা

ওরসের নাম ভাঙিয়ে কিছু কুচক্রি মহল দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্ন ও মাজারের পবিত্রতা বিনষ্ট করতে পারে

ওরসের নাম ভাঙিয়ে কিছু কুচক্রি মহল দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্ন ও মাজারের পবিত্রতা বিনষ্ট করতে পারে

মাওলানা হাজী ইউছুফের নামাজে জানাযা ও দাফন সম্পন্ন

মাওলানা হাজী ইউছুফের নামাজে জানাযা ও দাফন সম্পন্ন

গোবিন্দগঞ্জে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার

গোবিন্দগঞ্জে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হলে পড়াশুনার ব্যাপক মানোন্নয়ন হবে: অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হলে পড়াশুনার ব্যাপক মানোন্নয়ন হবে: অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী

মাগুরা ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির কমিটি বাতিল

মাগুরা ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির কমিটি বাতিল

বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদস্যের পদত্যাগ

বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদস্যের পদত্যাগ

রাজবাড়ীতে বিএনপির সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের প্রতিবাদ সভায় হামলা-ভাংচুর,  আহত ১০

রাজবাড়ীতে বিএনপির সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের প্রতিবাদ সভায় হামলা-ভাংচুর, আহত ১০

মুরাদনগরে মাদক, চাঁদাবাজি ও ভুমি দখলদারদের বিরুদ্ধে বিএনপির মাইকিং

মুরাদনগরে মাদক, চাঁদাবাজি ও ভুমি দখলদারদের বিরুদ্ধে বিএনপির মাইকিং

বিপ্লব কুমারকে ভারতে পাচারের দাবিদার শুভকে খুঁজছে পুলিশ

বিপ্লব কুমারকে ভারতে পাচারের দাবিদার শুভকে খুঁজছে পুলিশ

সাইবার মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন বিএনপি নেতা আলাল

সাইবার মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন বিএনপি নেতা আলাল

গণতন্ত্র দিবসে র‌্যালী ও সমাবেশ সফলের আহ্বান জানালো সিলেট মহানগর বিএনপি

গণতন্ত্র দিবসে র‌্যালী ও সমাবেশ সফলের আহ্বান জানালো সিলেট মহানগর বিএনপি

টার্গেট ছিল আলেম সমাজ -ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে মুফতী ফয়জুল করীম

টার্গেট ছিল আলেম সমাজ -ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে মুফতী ফয়জুল করীম

আর্সেনালের সাথে চুক্তি নবায়ন করছেন আর্তেতা

আর্সেনালের সাথে চুক্তি নবায়ন করছেন আর্তেতা

ফাতিমা তাসনিম আমার বোন নন, আমার নিজের কোনো বোনই নেই : নাহিদ

ফাতিমা তাসনিম আমার বোন নন, আমার নিজের কোনো বোনই নেই : নাহিদ

ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির আঁচড় থাইল্যান্ডেও, নিহত ৩৩

ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির আঁচড় থাইল্যান্ডেও, নিহত ৩৩

দীর্ঘ দ্বন্ধের জেরে সিলেটে ব্যবসায়ী ও চালকদের মধ্যে সংঘর্ষ : গাড়ি ও দোকান ভাংচুর : দু'পক্ষ নিয়ে পুলিশের বৈঠক,

দীর্ঘ দ্বন্ধের জেরে সিলেটে ব্যবসায়ী ও চালকদের মধ্যে সংঘর্ষ : গাড়ি ও দোকান ভাংচুর : দু'পক্ষ নিয়ে পুলিশের বৈঠক,