চট্টগ্রামে কমছে সবজির দাম, সরবরাহ বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার

২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০১ এএম

চট্টগ্রামে শাক-সবজির সরবরাহ বাড়ছে। সেই সাথে কমছে দামও। গতকাল শুক্রবার বন্দরনগরী পাইকারি বাজারে সবজির আগের তুলনায় কমেছে। খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দুয়েকদিনের মধ্যে খুচরায় সবজির দাম আরও কমতে পারে। মাসখানেক ধরে অস্থিরতার পর খুচরায় ডিমের দামও কিছুটা কমেছে। তবে এখনো সরকার নির্ধারিত দামে পাইকারি ও খুচরায় ডিম মিলছে না। মাছ-গোশতের দাম আগের মতোই ক্রেতার অস্বস্তির পর্যায়েই আছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উৎপাদন অঞ্চলে অস্বাভাবিক বন্যা ও বৃষ্টির কারণে গত দুমাস ধরে চট্টগ্রামে সবজির সরবরাহ কমে যায়। তাদের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অস্বাভাবিক হারে কমে যায়। প্রতিদিনের চাহিদার বিপরীতে দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে সবজি আসছিল মাত্র ১২ থেকে ১৫ শতাংশ। বাজারে সংকট তৈরি হওয়ায় দুমাস ধরে বেশকিছু সবজির দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
তবে বৃহস্পতিবার থেকে নগরীর বৃহত্তম সবজির আড়ত রেয়াজউদ্দিন বাজারে ট্রাক ট্রাক শীতকালীন বিভিন্ন সবজি ঢুকতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত দুই-তিন দিন ধরে সবজির সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। এ জন্য পাইকারি বাজারে অধিকাংশ সবজি কেজিতে অন্তত ২০ টাকা দাম কমেছে। সরবরাহ বাড়লে আগামী সপ্তাহে পাইকারিতে দাম আরো কমবে বলে তারা জানিয়েছেন। সরবরাহ বাড়ায় পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, চিচিঙ্গাসহ প্রায় সব সবজি ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন আড়তদারেরা। পাইকারিতে দাম কমার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারেও। বাজারে খুচরায় লাউ, মিষ্টিকুমড়া, ঝিঙা, পটল, বরবটি, করলা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, কচুরমুখী, মূলা, বাঁধাকপি, বেগুন বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৯০ টাকা দরে। কাঁচামরিচের দাম কেজিতে ৬০-৭০ টাকা কমেছে, বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকায়। ধনে পাতার কেজি ৪০০ টাকা থেকে কমে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আলু বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। এ ছাড়া কাঁকরোল ১০০ টাকা, টমেটো ১৩০ টাকা, ফুলকপি ১৪০ টাকা, শিম ২০০ টাকায় কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে। লাল শাক, মূলা শাক, পুঁই শাক ও মিষ্টি কুমড়া শাক প্রতিটি আঁটি ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে ডিমের দাম ছিল ডজনপ্রতি ১৭০ টাকা। এখন ২০ টাকা কমে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। সরকারি দর অনুযায়ী খুচরায় এক ডজন ডিমের দাম ১৪২ টাকা হওয়ার কথা। নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন ভোগ্যপণের দামও কিছুটা কমছে। বিভিন্ন ধরনের চাল-ডালের দাম কেজিতে অন্তত ২-৩ টাকা কমেছে। পেঁয়াজের দামও কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। বাজারে ছোট মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৫৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা ও ছোলা ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০৫ টাকা, দেশি রসুন ২৪০ টাকা, চীনা রসুন ২১০ থেকে ২২০ টাকা, চীনা আদা ২৪০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১৬০ দরে বিক্রি হয়েছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
তবে মাছ-গোশতের দাম নিয়ে ক্রেতাদের অস্বস্তি এখনো কাটেনি। বিভিন্ন ধরনের মাছের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অন্তত ৫০ টাকা বেড়েছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। বাজারে মাঝারি সাইজের তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে। আর ২৫০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই, কাতলা, মৃগেল, কার্পিও, কালবাউস কার্পজাতীয় মাছ বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। আড়াই থেকে দুই কেজি ওজনের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এ ছাড়া ইলিশ মাছ আকার অনুযায়ী ১৮০০ থেকে ২৩০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৯০০ থেকে ১৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৮০০ থেকে ১৪০০ টাকা, কাজলি মাছ ১২০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা ও লইট্যা ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৯৫ টাকা, সোনালী মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৪০ টাকা, গরুর গোশত হাড় ছাড়া ৯৫০ টাকা এবং হাড়সহ ৭৫০ টাকা এবং খাসি ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ##

বিভাগ : জাতীয়