চিরিরবন্দরে মাটিতে মিশে যাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন
২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় প্রভাব পড়েছে ঘূর্ণিঝড় দানার। ফলে গত তিনদিন ধরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিসহ দমকা হাওয়ায় অনেক কৃৃষকের রোপা আমন ধান নুয়ে পড়েছে মাটিতে। ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য। এতে অভাবনীয় ক্ষতির শঙ্কায় আছেন কৃষকরা। এই মুহূর্তে বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আগামী দুইদিন রোদ না হলে এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার সরজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা-পাঁকা ধানের খেত মাটিতে নুয়ে পড়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, জীবন-জীবিকার জন্য উপজেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। চলতি রোপা আমন মৌসুমে খরায় রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। অধিকাংশ কৃৃষক বাড়তি খরচে সেচ দিয়ে রোপণ করেছেন এই ধানের চারা। ইতোমধ্যে এই ক্ষেতের ধান বড় হতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও ধান পাঁকতেও দেখা গেছে। এ অবস্থায় উপজেলায় প্রভাব পড়েছে ঘূর্ণিঝড় দানার। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুদিন ধরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিসহ বইছে দমকা হাওয়া। এ কারণে রোপা আমন খেত নুয়ে পড়েছে মাটিতে। ফলে ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ২৩ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের বিরি-৭৫, ৮৭ ও বিনা-১৭ ইত্যাদি রয়েছে সাড়ে ৪০০ হেক্টরে। উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের উত্তর নশরতপুর গ্রামের কৃষক উজ্জ্বল বলেন, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের কারণে আমার ২০ শতক জমির ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে।
উপজেলার নশরতপুর গ্রামের কৃষক স্বপন চন্দ্র রায় বলেন, এ বছর আমি ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছি। প্রথমদিকে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ছিল। গত দুদিনের বৈরী আবহাওয়ার কবলে ১ বিঘা জমির ধান মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কৃষক গোলাম রব্বানী বলেন, বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের কারণে ইতোমধ্যে তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আগে প্রতিবিঘা জমিতে যেখানে ২৫ থেকে ৩০ মণ ধান পাওয়া যেত, সেখানে পড়ে যাওয়া জমিতে মাত্র ৪ থেকে ৫ মণ ধান আসতে পারে।
উপজেলার সাতনালা ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষক বলেন, বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের কারণে অনেক জমির কাঁচা-পাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। অনেকেই এসব পড়ে যাওয়া ধানগাছ রক্ষা করতে ঝুঁটি বেঁধে দিচ্ছেন। কেউবা এসব নুয়ে পড়ে যাওয়া ধানগাছ কেটে নিয়ে গিয়ে গরু-ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন। তারা আরো বলেন, ঝড়-বৃষ্টিতে ধানসহ রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। উপজেলার দক্ষিণ নশরতপুর গ্রামের কৃৃষক পরেশ চন্দ্র রায় বলেন, আকাশ পরিষ্কার থাকায় জমিতে পাকা ধান কেটে শুকানোর জন্য রেখে দিয়েছিলাম। কিন্ত বৃষ্টি হওয়ায় এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা শারমিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে অনেক এলাকায় ধান গাছ নুয়ে মাটিতে পড়ে গেছে। তবে বৃষ্টি না হলে ধানের বেশি ক্ষতি হবে না। এসব গাছ কয়েকটি করে এক জায়গায় বেঁধে বা ‹লজিং আপ› করলে রক্ষা পাবেন কৃষকরা। এ নিয়ে মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি যেসব খেতের ধান পেঁকে গেছে সেসব ধান দ্রুত কাটার জন্যও আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নাটোরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চালকসহ এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নিহত
এবার সাদপন্থিদের ১০ দফা দাবি
সা'দ পন্থীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও আশুলিয়া থানায় স্মারক লিপি প্রদান
লক্ষ্মীপুরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
বাংলাদেশ নিয়ে কটুক্তি করা বিজেপি নেতা শুভেন্দুকে জুতাপেটা
সিকদার গ্রুপের ১৫ প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ
শীতের তীব্রতায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ,বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা
চিরিরবন্দরে আগাম জাতের আলুর ভালো ফলন ও দাম পেয়ে কৃষকেরা খুশি
‘রেমিট্যান্স এ্যাওয়ার্ড-২০২৪’ পেল হংকংয়ে বসবাসরত ১০ বাংলাদেশি নারী
বিডিআর বিদ্রোহ : ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিশন গঠন
মার্কিন সিইও হত্যাকাণ্ড, সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের বিপজ্জনক প্রভাব
গাজীপুরে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ
ঝিনাইদহে বেসিক জার্নালিজম বিষয়ক প্রশিক্ষণ শেষে সনদ বিতরণ
বছরখানেক সময় পেলে সংস্কার কাজগুলো করে যাব : উপদেষ্টা আসিফ নজরুল
সান্ধ্য আইন বাতিলের দাবি ইবি ছাত্র ইউনিয়নে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী সরকারের পুনরাবৃত্তি করবে না আশাবাদ রিজভীর
আফগানিস্তানে ফের দূতাবাস চালু করছে সৌদি
হাজারো বিঘা জমিতে পুকুর খনন: ছোট হয়ে যাচ্ছে সালথা-নগরকান্দার মানচিত্র!
প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান, সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবি
শুধু মুর্শিদাবাদ-মালদহ নয়, শিলিগুড়িও লক্ষ্যবস্তু