এখনো কাঁদেন বাবা মা
১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম
ছয় বছর বয়সী আলিনা ইসলাম আয়াত হত্যার দুই বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ শুক্রবার। দুই বছর আগে ফুটফুটে আলিনাকে হারায় পরিবার। এখনো এক মুহূর্তের জন্য তাকে ভুলতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। সন্তান হারানোর বেদনায় এখনো কাঁদেন বাবা মা। আলিনার ছবি সঙ্গে রাখেন বাবা সোহেল রানা। পকেট থেকে ছবি বের করে দেখেন, আর চোখ মোছেন। মায়ের বিলাপ তো থামেই না।
নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকার সোহেল রানার মেয়ে আলিনা ইসলাম আয়াত ২০২২ সালের এই দিনে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয় তাকে। তবে মুক্তিপণ আদায়ের সম্ভাবনা নেই দেখে সেদিনই তাকে হত্যা করেন অপহরণকারী। হত্যার পর ফুটফুটে আলিনাকে কেটে ছয় টুকরা করেন ২০ বছর বয়সী তরুণ আবির আলী। ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ক্রাইম পেট্টল দেখে খুনের পরিকল্পনা করার কথা স্বীকার করেন ওই আসামি খুনি আবির। তিনি আলিনাদের বাসায় ভাড়া থাকতেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও আবিরের সখ্য ছিল। এ কারণে আবির এমন কাজ করতে পারেন, তা ধারণাও করতে পারেননি আলিনার মা–বাবা। এমন নৃশংসতার কথা ভুলতেও পারছেন তারা। আলিনা হত্যা মামলা বর্তমানে প্রথম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ কামাল হোসেন শিকদারের আদালতে বিচারাধীন। সেখানে সাক্ষ্য চলছে। চলতি মাসে গত বুধবার আলিনার বাবা মামলার বাদী সোহেল রানার সাক্ষ্য নেন আদালত। ২৮ নভেম্বর তাকে জেরার দিন ধার্য রয়েছে।
২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকার সোহেল রানার মেয়ে আলিনা নিখোঁজ হয়। ইপিজেড থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হলেও কোনো কিনারা হয়নি। পরে আলিনার বাবা পিবিআইয়ের কাছে যান। তারা ছায়া তদন্ত শুরু করে। ১০ দিন পর পিবিআই জানায়, পাঁচ বছরের শিশু আলিনাকে হত্যা করে ছয় টুকরা করে ফেলে দেয়া হয়েছে। মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আলিনাকে অপহরণ করেছিলেন তাদের বাসার ভাড়াটে আবির। আবিরের বাবা ভ্যানচালক আজহারুল ইসলাম। তারা আলিনাদের বাসায় ভাড়া থাকতেন।
২৫ নভেম্বর আবিরকে পিবিআই গ্রেফতারের পর তিনি হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ১১ মাস তদন্ত শেষে গত বছরের ১০ অক্টোবর পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পরিদর্শক মনোজ দে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে মো. আবির ও তার বন্ধু ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে আবির কারাগারে। বাকিরা জামিনে রয়েছেন।
পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, জবানবন্দিতে আবির ভারতীয় সিরিয়াল দেখে এমন পরিকল্পনা করার কথা জানিয়েছেন। আবির পিবিআইকে বলেন, শিশু আলিনাকে হত্যার পর আবির লাশ তাদের ভাড়া বাসায় লুকিয়ে রেখেছিলেন। এরপর নিজেই আলিনার মা-বাবার সঙ্গে মিলে আলিনাকে খুঁজতে থাকেন। এর আগেও তিনি কয়েকবার আলিনাকে অপহরণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বাসার আশপাশে লোকজন থাকায় কিছু করতে পারেননি। হঠাৎ বড়লোক হওয়ার ইচ্ছা জাগে আবির আলীর। এ জন্য অপরাধবিষয়ক ভারতীয় সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রলে’ আসক্ত আবির শিশু আলিনাকে অপহরণের পর ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আলিনাকে অপহরণও করেন আবির। কিন্তু মুক্তিপণ চাইতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। যে সিম ব্যবহার করে আবির আলিনার বাবাকে ফোন করতে চেয়েছিলেন, সেটি ব্লক করা ছিল। পরিচিত নম্বর থেকে ফোন করলে পুলিশের হাতে ধরা পড়বেন এমন ভয় ছিল তার। তাই মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা ভেস্তে যেতেই শ্বাসরোধে হত্যার পর বস্তায় ভরে শিশুটির লাশ ভ্যানে নিয়ে যান আরেক বাসায়। পরে সেখানে কেটে ছয় টুকরা করে কিছু সাগরে আর কিছু খালের পাশে ফেলে দেন তিনি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জানা গেল ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ব্রাজিলের একাদশ
বাংলাদেশে ন্যায্য রুপান্তরে অর্থায়নের জন্য ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান
গোপালগঞ্জে কারাগারে থাকা বাবার অবশেষে জামিন মঞ্জর
ওসমানী বিমান বন্দরে বিদেশী বিমান উঠা-নামার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী- প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে সিলেটে স্মারকলিপি
ময়মনসিংহে ফিলিং স্টেশনে আগুনের ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে ৬
জানুয়ারি পর্যন্ত ছিটকে গেলেন এনগিডি
দুবাইয়ে নবনিযুক্ত কনসাল জেনারেলের সাথে বাংলাদেশ রেডিমেড গার্মেন্টস ট্রেডার্স আজমানের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুবিধা নিশ্চিতে দেওয়া হবে ইউনিক আইডি কার্ড
যে কারণে হারপিকে মেতেছে নেটিজেনরা
আ.লীগের মতো পরিবারতন্ত্র করবে না বিএনপি: তারেক রহমান
প্যারাগুয়ে ম্যাচে কেমন হবে আর্জেন্টিনার একাদশ
অর্থাভাবে ব্যক্তিগত বিমান ভাড়া দিয়েছেন শন ডিডি, বিক্রি করবেন বাড়ি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শ্রেনী কক্ষে অসুস্থ ১০ শিক্ষার্থী
ভারতীয় গণমাধ্যম আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নরসিংদীতে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
পুলিশ সংস্কার ও একটি কৌশলপত্র
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে কেন উপদেষ্টা করতে হবে?
শ্যামনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
অভ্যুত্থানে আহতদের প্রতি এই অবহেলা অমার্জনীয়
নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ