ডার্ক সফটওয়্যার কমাবে ঢাকার সড়ক দুর্ঘটনা
১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
রাজধানী ঢাকার বড় সমস্যা যানজট। এই যানজটেই কাটে কর্মজীবীদের অনেক সময়। দুর্বিষহ যানজটে মুক্তি ও সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্টের (ডিআরএসপি) উদ্যোগে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে সড়ক নিরাপত্তার কার্যক্রম শুরু হয়। জাইকা বিশেষজ্ঞ দলের (জেইটি) সমন্বয়ে ঢাকার সড়ক দুর্ঘটনা রোধে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা হয়েছে ডিএমপির ডাটাবেজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস অব রোড ক্র্যাশ ডার্ক নামে একটি সফটওয়্যার।
সফটওয়্যারটিতে মূলত তথ্য দেবেন ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্টরা। তারা দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে এই অ্যাপসে দুর্ঘটনার বিভিন্ন তথ্য ইনপুট দেবেন। সেসব তথ্য ডিএমপির সদর দপ্তরে জমা হবে এবং ভবিষ্যতে কীভাবে সড়ক দুর্ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামানো যায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন ডিএমপির ঊর্ধ্বতনরা।
এ সফটওয়্যার বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ডিএমপির ৮৫০ ডিসি, এডিসি, এসি, টিআই ও সার্জেন্ট। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ডিএমপিতে রদবদলের কারণে প্রশিক্ষণ নেওয়া বেশ কয়েকজন সার্জেন্ট বদলি হয়েছেন। তবে ডিএমপিতে নতুন যারা যোগদান করেছেন তাদের ডার্ক সফটওয়্যারের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে শিগগির।
ঢাকা শহরে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ৬৭টি ফিল্ডের একটি ফরমে দুর্ঘটনার তথ্য পূরণ করতো পুলিশ। ফরমটি পূরণের পর থানায় রেকর্ড হতো। বাস্তবতা হলো যদি কোনো দুর্ঘটনার পর কোনো এক পক্ষ থানায় মামলা বা জিডি করে তখনই শুধু ৬৭টি ফিল্ডের ফরম পূরণ করে থানায় জমা রাখা হতো। অন্যথায় দুর্ঘটনার শিকার উভয় পক্ষ যদি মীমাংসা করতো তবে ফরমটি আর পূরণ করতো না পুলিশ। সড়কে যতগুলো দুর্ঘটনা ঘটে তার বেশিরভাগই থানা-পুলিশের ঝামেলা এড়াতে উভয়পক্ষ মীমাংসা করে ফেলে। এতে বাস্তবতা হলো দুর্ঘটনার অনেক তথ্যই উঠে আসে না।
ডিএমপি বলছে, ফরমটি ছিল সম্পূর্ণই কাগজে-কলমের, অর্থাৎ অ্যানালগ। এক মাস পর থানা থেকে ডিএমপি সদর দপ্তরের অপারেশন্স বিভাগে জমা হতো দুর্ঘটনার ওই ফরমের তথ্য। পরবর্তীসময়ে একটি পুরাতন অফলাইন সফটওয়্যারের মাধ্যমে দুর্ঘটনার তথ্যগুলো রেকর্ড করা হতো। হাতে লেখা ফরমে দুর্ঘটনার একটি বড় অংশের তথ্য রেকর্ড থাকতো না। আবার যে রেকর্ডগুলো থানা থেকে আসতো সেগুলো ত্রুটিপূর্ণ থাকতো।
দুর্ঘটনার ফলে থানায় যে মামলাগুলো হচ্ছে সেই তথ্য এই সফটওয়্যারে ইনপুট দেওয়া হবে। একই সঙ্গে মামলা না হলেও যে কোনো দুর্ঘটনার তথ্য সফটওয়্যারটিতে ইনপুট দেবে পুলিশ। সফটওয়্যারটিতে আটটি ক্যাটাগরি রয়েছে। সফটওয়্যারের মূল উদ্দেশ্য- যে কোনো সড়ক দুর্ঘটনা ডাটাবেজের মাধ্যমে নিয়ে আসা এবং প্রকৃতপক্ষে ঢাকা শহরের সামগ্রিক দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করা। আগে যে ফরম ছিল সেখানে দুর্ঘটনার প্রকৃত স্থান চিহ্নিত করা যেত না। বর্তমানে সফটওয়্যারটিতে পিন-পয়েন্ট লোকেশনের জন্য জিপিএস ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে প্রকৃত লোকেশন পাওয়া সম্ভব।
ঢাকার কোনো সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে ওই এলাকার দায়িত্বরত সার্জেন্ট ঘটনাস্থল থেকে সফটওয়্যারে তথ্য দেবেন। প্রথমে তার মোবাইলে থাকা সফটওয়্যারে আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করবেন। এরপর দুর্ঘটনার সময়, তারিখ, জিপিএস লোকেশন, দুর্ঘটনার কারণ, এমনকি বৃষ্টি, কুয়াশা কিংবা রোদ সেসব তথ্যও একজন সার্জেন্ট খুব সহজেই ছবি তুলে সফটওয়্যারে ইনপুট দিতে পারবেন।
ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্টের (ডিআরএসসি) ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহমুদ হাসান বলেন, দুর্ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করা ফরমটি ছিল সম্পূর্ণই কাগজে-কলমে অর্থাৎ অ্যানালগ। হাতে লেখা ফরমে দুর্ঘটনার একটি বড় অংশের তথ্য রেকর্ড থাকতো না। আবার যে রেকর্ডগুলো থানা থেকে আসতো সেগুলো ত্রুটিপূর্ণ থাকতো। এজন্য ডিআরএসসি অনলাইন বেসিসে একটি সফটওয়্যার তৈরি করে। যার নাম দেওয়া হয় ডার্ক সফটওয়্যার। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ‘ড্রাইভার সফটওয়্যার’ রয়েছে। সেই সফটওয়্যারের আদলে ডিএমপির প্রয়োজন অনুসারে মোডিফাই করে ডার্ক সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। সফটওয়্যারের মূল উদ্দেশ্য- যে কোনো সড়ক দুর্ঘটনা ডাটাবেজের মাধ্যমে নিয়ে আসা এবং প্রকৃতপক্ষে ঢাকা শহরের সামগ্রিক দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করা। আগে যে ফরম ছিল সেখানে দুর্ঘটনার প্রকৃত স্থান চিহ্নিত করা যেত না। বর্তমান সফটওয়্যারটিতে পিন পয়েন্ট লোকেশনের জন্য জিপিএস ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে প্রকৃত লোকেশন পাওয়া সম্ভব।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার কারণে যদি এজাহার দায়ের হয় তবে সেই ডাটাগুলো ডিএমপিতে সংগ্রহ করা হতো। এখন ডার্ক সফটওয়্যারের মাধ্যমে যে কোনো দুর্ঘটনা- মামলা হোক কিংবা না হোক ছবিসহ সব ডাটা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে দুর্ঘটনা রোধের জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। সমগ্র ঢাকা শহরের তথ্য যখন আমাদের কাছে থাকবে তখন খুব সহজেই বলতে পারবো কোন কোন স্পটে বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। কী কী কারণে ঘটছে এবং কেন ঘটছে এসব তথ্য উঠে আসবে।##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
যুদ্ধবিরতি চললেও পশ্চিম তীরে ইসরাইলি হামলায় আহত ১২
সাভারে রূপালী ব্যাংকের এটিএম বুথ উদ্বোধন
মোরেলগঞ্জে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করনে ডরপ'এর মত বিনিময় সভা
কৃষক জামালের ক্ষেতে রঙিন ফুলকপি, উদ্বুদ্ধ হচ্ছে অন্য কৃষকরাও
জন্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিল
কুয়াশা ও তাপমাত্রা নিয়ে নতুন তথ্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের
কলকাতায় প্রকাশ্যে মুরগির মাংস বিক্রি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ভারত থেকে অনুপ্রবেশের সময় ফেনীতে সুদানের নাগরিক আটক
ক্ষমতা গ্রহণ করেই বাইডেন আমলের ৭৮ নির্বাহী আদেশ বাতিল ট্রাম্পের
পেকুয়ায় প্রাচীন খাল উদ্ধারে পদক্ষেপ জনমনে স্বস্তি
ঢাকার বাতাস ২৪৬ স্কোর নিয়ে আজ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
ট্রাম্প ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গায় জড়িত ১৫০০ জনকে ক্ষমা করলেন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ‘সেকেন্ড লেডি’
গাজা একটি ‘বিশাল ধ্বংসস্তূপ’, পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন: ট্রাম্প
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির প্রথম পদক্ষেপ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি: ডোনাল্ড ট্রাম্প
ট্রাম্পের শপথ : যোগ দেন চীনের হ্যান ঝেং ভারতের জয়শঙ্কর
সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
সত্যিই কি মারা গেছেন ম্যাশ? কি বলছে রিউমর স্ক্যানার?
সেই যুবকের বিরুদ্ধে ৯০০ টাকা চুরির মামলা
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা ট্রাম্পের