শহীদদের রক্তের সঠিক মূল্যায়ন করা না হলে আল্লাহর গজব আসতে পারে
১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ এএম
বিগত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হক প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে শহীদ হয়েছেন। বাস্তব অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারা আন্দোলন করেছেন। তাদের ওপর জুলুম করে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। তারা শহীদ। তাদের রক্তের সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে গিয়ে যারা মারা যান তারা প্রকৃত শহীদ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদদের রক্তের হক আদায় করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদদের রক্তের সাথে ইনসাফভিত্তিক আচরণ করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদদের রক্তের সঠিক মূল্যায়ন করা না হলে আবার আল্লাহর গজব আসতে পারে। গতকাল জুমার খুৎব-পূর্ব বয়ানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুল মালেক এসব কথা বলেন। খতিব বলেন, কোনো পুরুষ নিজেকে মনে মনে ভাবে আমি নারী আর কোনো নারী যদি মনে করে আমি পুরুষÑ এটি হারাম কাজ। এসব সমকামিতার অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে ঢাকায় জাতিসংঘের অফিস খোলার পাঁয়তারা চলছে। সমকামিতাকে প্রমোট করতে ঢাকায় জাতিসংঘের অফিস খোলা হলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা হবে। কোনোভাবেই ঢাকায় জাতিসংঘের অফিস খুলতে দেয়া যাবে না। খতিব বলেন, নবী (সা,) জুমার খুৎবায় এবং ঈদের খুৎবায় তাকওয়ার ওপর বেশি বেশি বয়ান দিতেন। নবী করিম (সা.) মুত্তাকিদের উদ্দেশে বলতেন, আল্লাহর জান্নাত লাভের জন্য তোমরা দৌঁড়াতে থাকো। তোমরা তোমাদের রবের মাগফিরাত লাভের জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকো। মুত্তাকিদের জন্য আল্লাহ বড় বড় জান্নাত তৈরি করে রেখেছেন। খতিব বলেন, মুত্তাকিদের কয়েকটি গুণ। মুত্তাকিরা সর্বাবস্থায় অথাৎ অভাবে থাকাকালেও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য দান করেন। তারা রাগকে নিয়ন্ত্রণ করেন। রাগ উঠলে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনে অজুু করে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। আল্লাহর নাফরমানি যাতে না হয়ে যায় তাই মুমিনের প্রথম কাজ রাগকে নিয়ন্ত্রণ করা। নবী (সা.) রাগ দমানোর জন্য দোয়া শিখিয়েছেন তা হচ্ছে Ñ ‘আউজুু বিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম’। কাউকে ক্ষমা করে দেয়ার গুণ থাকতে হবে। ইচ্ছা করে কাউকে কষ্ট দিয়ে স্যরি বলা যাবে না। কোনো মুত্তাকির গুনাহ হয়ে গেলে পরক্ষণেই তাওবাহ করে ফেলতে হবে। নেক আমল করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। খতিব বলেন, আমাদের বলতে হবেÑ হে আমার রব আমাকে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ আপনার প্রতি ঈমান এনেছি, আমাদের ক্ষমা করে দিন। আল্লাহর মাগফিরাত লাভের জন্য আমাদের বেশি বেশি তাওবাহ-ইস্তিগফার পড়তে হবে। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন। আমিন।
গাজীপুরের টঙ্গীস্থ পূর্ব আরিচপুর সরকার বাড়ি ঈদগাহ মসজিদুল আকসার খতিব মাওলানা রিয়াদুল ইসলাম মল্লিক গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন : দাওয়াত ও তাবলিগ দ্বীনের এক বহুত বড় কাজ। এই কাজ যেন সুচারুরূপে শরিয়ত তরিকায় সম্পন্ন হতে পারে, তজ্জন্য কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা গ্রহণ জরুরি। কাজের সাথে জড়িতদের মানসিকতা গঠনও একান্ত প্রয়োজন। এ সম্পর্কে আজকের বয়ানে কিঞ্চিৎ আলোক পাত করছি। উমুমি ময়দানে শরিয়তের মূল তাকাজা তিনটিÑ দাওয়াত-তাবলিগ, তালিম-তাজকিয়া, জিহাদ-সিয়াসত। তিনটিই আল্লাহর রাস্তা। হাদিসে এসেছে, যে ইলম অর্জনে বের হয়, সে ফিরে আসা পর্যন্ত আল্লাহর রাস্তায়। (জামে তিরমিজি-২৬৪৭) যে ব্যক্তি আল্লাহর দ্বীন বুলন্দ করার জন্য লড়াই করে, সে আল্লাহর রাস্তায়। (সহিহ বুখারি-১২৩) পুরো দ্বীনই বরং সাবিলুল্লাহ, আল্লাহর রাস্তা। আর দাওয়াত ও তাবলিগ হলো আল্লাহর রাস্তারই একটি ধাপ। ইরশাদ হয়েছেÑ ‘আপনি স্বীয় রবের পথে দাওয়াত দিন হেকমত-কৌশল ও সুন্দর নসিহতের মাধ্যমে। ওদের সাথে অধিকতর উত্তম পন্থায় যুক্তিতর্ক করুন।’ (সূরা নাহল-১২৫) হে আমাদের রব! তাদের মধ্যে এমন একজন রাসূল প্রেরণ করুন, যিনি তাদের সামনে আপনার কালাম তিলাওয়াত করে শোনাবেন, কিতাব ও হিকমতের তালিম প্রদান করবেন এবং তাদের তাজকিয়া করবেন। (সূরা বাকারা-১২৯) নবীজী নিজেই ইরশাদ করেন, ‘কাউকে কষ্টে নিক্ষেপকারী বা কারো পদস্খলনকামী হিসেবে আল্লাহ আমাকে পাঠাননি। আমাকে আল্লাহ পাঠিয়েছেন সহজকারী ও শিক্ষকরূপে।’ (মুসলিম-১১০৪) এই তিন কাজকে নবীওয়ালা কাজ বলে। আরেক ভাষায় বলে, নবুওতের কাজ, ফারায়েজে মানসাবে নবুওত, মানসাবে রিসালাতের দায়িত্ব। মানুষের ময়দানে দ্বীনী কাজের সূচনা হয়েছে দাওয়াত-তাবলিগ দ্বারা। দাওয়াত যারা কবুল করেছে, নবীজী সা: তাদেরকে গড়ে তুলেছেন দ্বীনের তালিম-তাজকিয়ার মাধ্যমে। আর জিহাদ ও সিয়াসতের মধ্য দিয়ে নবীজী শরিয়তের বুলন্দি, নেফাজ (রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রয়োগ) ও হিফাজত নিশ্চিত করেছেন। নবুওতের সূচনালগ্নে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনÑ ‘হে চাদরওয়ালা! উঠুন, মানুষকে সতর্ক করুন।’ (সূরা মুদ্দাছছির : ১-২) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছেÑ ‘হে রাসূল! আপনি পৌঁছে দিন, যা আপনার কাছে আপনার রবের তরফ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। যদি তা না করেন, তবে তো আপনি আল্লাহর রেসালা-পয়গাম পৌঁছালেন না।’ (সূরা মায়িদা-৬৭)
আয়াতে উল্লিখিত ‘রাসূলের দায়িত্ব’ শব্দ-বন্ধ থেকেই প্রতীয়মান হয়, দাওয়াত ও তাবলিগ হলো নবুওত ও রিসালাতের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। আর তালিম ও তরবিয়তকে নবুওতের ফারায়েজে (মানসাবি) নবুওতের পদগত দায়িত্ব হিসেবে ঘোষণা, প্রত্যেক প্রজন্মের নির্ভরযোগ্য নেককার উত্তরসূরিরা পূর্বসূরিদের কাছ থেকে এই দ্বীনী ইলম ধারণ করবে। আর তারা গুলুকারীদের বাড়াবাড়ির বিকৃতি, ইসলাম বিরোধী বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচার এবং মূর্খ-জাহেলদের অপব্যাখ্যা বিদূরিত করবে। এ জন্য আলেমগণ একইসঙ্গে দাওয়াতসহ সব দ্বীনী কাজের সঠিক দিকগুলোর প্রথম সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক, ভুল দিকগুলোর প্রথম সমালোচক ও সতর্ককারক।
মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বায়তুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন, আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্র-জনতা দেশকে মুক্ত করেছে। অজস্র রক্ত আর বহু শাহাদাতের বিনিময়ে দেশ এখন স্বাধীন। রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বৈষম্যহীন এই নতুন বাংলাদেশে জালিমের দোসর কাউকে যেমন কেউ সরকারে বরদাশত করতে চাইবে না তদ্রƒপ ৯০ শতাংশ মুসলমানের এই সোনার বাংলায় কোনো নাস্তিক মুরতাদ ও সমকামী বিচ্যুত চরিত্রের কাউকে সরকারের কোনো উচ্চ পদেও মেনে নেবে না। কারণ বিচ্যুত চরিত্রের কাউকে সরকারে যুক্ত করা ইসলাম মুসলমান ও দেশের জন্য চরম হুমকি। বিচ্যুত চরিত্রের অধিকারীরা সীমাতিক্রমকারী আল্লাহর দুশমন। তারা সবসময়ই ইসলাম মুসলমান ও দেশের মধ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে রাখতে চায়। যাতে সমাজের মধ্যে শান্তি বিঘ্নিত হয়। শয়তান তাদের উস্কানি দিয়ে আল্লাহর দেয়া বিধান পালনে মানুষকে বিমুখ রাখতে চায়। অশান্তির দাবানল জ্বালানোই সমকামী বিচ্যুত চরিত্রের মানুষের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তাদের উপরে চরম রাগান্বিত। তারা অভিশপ্ত। রাসূল সা:-কেই উত্তম চরিত্রের অধিকারী হিসাবে প্রেরণ করা হয়েছে আর রাসূলের আদর্শের মধ্যেই রয়েছে মানুষের ইহ ও পারলৌকিক শান্তি ও কল্যাণ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনÑ ‘তোমাদের জন্য রাসূলের জীবনেই রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (আল কুরআন) রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘আমি উত্তম চরিত্রের পরিপূর্ণ পরিপূরক হিসেবে প্রেরিত হয়েছি।’ ( আল হাদিস) আল্লাহ সবাইকে কবুল করেন। আমিন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
যুদ্ধবিরতি চললেও পশ্চিম তীরে ইসরাইলি হামলায় আহত ১২
সাভারে রূপালী ব্যাংকের এটিএম বুথ উদ্বোধন
মোরেলগঞ্জে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করনে ডরপ'এর মত বিনিময় সভা
কৃষক জামালের ক্ষেতে রঙিন ফুলকপি, উদ্বুদ্ধ হচ্ছে অন্য কৃষকরাও
জন্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিল
কুয়াশা ও তাপমাত্রা নিয়ে নতুন তথ্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের
কলকাতায় প্রকাশ্যে মুরগির মাংস বিক্রি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ভারত থেকে অনুপ্রবেশের সময় ফেনীতে সুদানের নাগরিক আটক
ক্ষমতা গ্রহণ করেই বাইডেন আমলের ৭৮ নির্বাহী আদেশ বাতিল ট্রাম্পের
পেকুয়ায় প্রাচীন খাল উদ্ধারে পদক্ষেপ জনমনে স্বস্তি
ঢাকার বাতাস ২৪৬ স্কোর নিয়ে আজ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
ট্রাম্প ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গায় জড়িত ১৫০০ জনকে ক্ষমা করলেন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ‘সেকেন্ড লেডি’
গাজা একটি ‘বিশাল ধ্বংসস্তূপ’, পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন: ট্রাম্প
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির প্রথম পদক্ষেপ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি: ডোনাল্ড ট্রাম্প
ট্রাম্পের শপথ : যোগ দেন চীনের হ্যান ঝেং ভারতের জয়শঙ্কর
সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
সত্যিই কি মারা গেছেন ম্যাশ? কি বলছে রিউমর স্ক্যানার?
সেই যুবকের বিরুদ্ধে ৯০০ টাকা চুরির মামলা
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা ট্রাম্পের