দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থেই দ্রুত নির্বাচন দাবি মির্জা ফখরুলের
২০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থেই দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা রাজনীতিবিদরা, যারা একটু বয়স্ক-প্রাজ্ঞ বলছি, নির্বাচন দ্রুত করুন। কেনো বলছি? বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য? না। নির্বাচন দ্রুত না হলে সমস্যাগুলো বাড়বে, অন্যান্য সমস্যা বাড়বে। এখন আপনার যারা গণতন্ত্রকে ধবংস করতে চায়, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ধবংস করতে চায় তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থেই দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেখুন না কত সমস্যা তৈরি হচ্ছে- এখন দেশে সাম্প্রদায়িকতা তৈরি করার জন্য কাজ করা হচ্ছে, ফ্যাক্টরি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। যা আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ, দিনের পর দিন জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এরা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) কিছুই করতে পারছে না। কেনো করতে পারছে না? তাদের রাজনৈতিক শক্তি নেই। আজকে যদি একটা নির্বাচিত সরকার থাকতো, তার পেছনে জনগণ থাকতো, তাহলে এটা এতো সহজ ছিলো? তারপরেও আমরাই যতটুকু বন্ধ করার বন্ধ করতে পেরেছি, আমাদের কর্মীরা গিয়ে ওই সব বন্ধ করেছে।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মহাখালীতে রেলপথ অবরোধের কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, স্ট্র্যাইক করেছে ছাত্ররা। তিতুমীর কলেজকে ছাত্ররা স্ট্রাইক করেছে, ছাত্ররা তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করতে হবে, ইন্টারিয়াম গভর্মেন্ট জানতো না এরকম হতে পারে তাহলে কেনো আগের থেকে ব্যবস্থা নেয়া হলো না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসলে এই সরকার এখনো স্ট্যাবল হতে পারেনি ওইসব। আমরা বার বার বলে আসছি যে, এসব আপনাদের কাজ না। আপনারা তাড়াতাড়ি দ্রুত একটা নির্বাচন দেন, তাদের কাজ তারা করুক, রাজনীতিবিদরা তাদের কাজ করুক। আমরা তো সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে দিয়েছি। ওখানে দেখেন কোনটা কোনটা আপনারা নেবেন, কোনটা কোনটা নেবেন না। নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করে আপনি একটা দ্রুত ব্যবস্থা নেন। তিনি বলেন, আমি এই কথা তো বলিনি যে, এতো তারিখের মধ্যে দেন, অত তারিখের মধ্যে দেন। আমরা চেয়েছি রোডম্যাপ দেন। কবে কি করবেন, আপনারা জানান। এটা আমরা জানাতে তো পারবো না। সেটা জানালে তো মানুষের মধ্যে আস্থা আসবে যে, এতো তারিখে ইলেকশন হবে। মানুষ তো ইলেকশন চায়।
বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারে থাকা কেউ কেউ অনেক সময় অনেক কথা বলছেন, কথা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। ফোকাস এক জায়গায় করুন। সেই ফোকাসটা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থাকে ঠিক করে নির্বাচনের দিকে যান। বাকিগুলো যারা নির্বাচিত হয়ে আসবে তারা করবে। আমরা আগে থেকেই বলে আসছি যে, নির্বাচিত হয়ে আসলে আমরা একা দেশ চালাবো না। আমরা একটা জাতীয় সরকার গঠন করে যারা আমাদের সাথে আন্দোলন করেছে তাদেরকে নিয়ে দেশ চালাব। সমস্যাটা কোথায়, সন্দেহটা কোথায়? সন্দেহ কিন্তু আপনাদের মধ্যে আসতে শুরু করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা আছে অন্যদিকে যাওয়ার। সেজন্যই আমরা স্পষ্ট করে এই মিটিং থেকে বলতে চাই, এই সরকারকে আহ্বান জানাতে চাই, আমরা চাই, আপনারা সফল হোন। প্রথম দিন থেকে বলেছি, এই সরকারের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য, এই সরকারের সাফল্য মানে জনগণের সাফল্য, গণঅভ্যুত্থানের সাফল্য। এরা যদি ফেল করে তাহলে আমরা ফের করব। আমরা চাই না হাসিনা আবার ফিরে আসুক, আওয়ামী লীগের ওই দুঃশাসন আবারে ফিরে আসুক চাই না। চাই না বলেই বার বার বার করে বলছি, আমাদের সমস্ত অভিজ্ঞতা দিয়ে একটা কথা আছে, উইজডম। এই উইজডম আপনারা প্রয়োগ করুন, চেষ্টা করুন, রাজনৈতিক দলগুলো সবসময় বাংলাদেশের ভালো করার চেষ্টা করে।
‘শিক্ষার্থীদের অবরোধে দুর্ভোগ প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিভিন্ন জায়গায় যে সাধারণ মানুষ কথা-বার্তাগুলো বলছে সেটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়। সব জিনিসের দাম বেড়েছে, রিকসা চালাতে পারেনি সারাদিন, গাড়ি নিয়ে রাস্তায় চার ঘন্টা ধরে আটকে থাকছে, তারা বলছে, এরজন্য কি আমরা আন্দোলন করেছিলাম। এ কথাগুলো আসছে। দিস ইজ এ বেড সাইন। আর আমাদের যারা শত্রু, এই ফ্যাসিবাদীরা যারা মিত্র তারা এই সুযোগগুলো নেবে। কথা-বার্তা নেই- ঠিক এই সময়ে এসব দাবি চলে আসছে। এতোদিন যে ফ্যাসিস্টরা পিষ্ট করলো, পায়ের নিচে রেখে দিলো তখন কিন্তু কেউ কথা বললো না। জিজ্ঞাসা করলে বলে তখন কথা বলার সুযোগ ছিলো না। এখন সুযোগ দিচ্ছে আমরা বলছি। এটা থেকে জাতিকে রক্ষা করার একমাত্র উপায় শহীদ জিয়াউর রহমানকে অনুসরণ করে সকলের সাথে আলোচনা করে অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ, এমবিএ অ্যাসোসিয়েশনের সৈয়দ আলমগীর, শিক্ষক অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, চিকিৎসক অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, অধ্যাপক হারুন আল রশীদ, ডা. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামসুল ইসলাম, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান শামীম, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোট রফিকুল ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেলেন যারা
চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় জেডি ভ্যান্সের বৈঠক
চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা লেঃ তানজিম হত্যায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র
তনির বিয়ে নিয়ে যা বললেন নেটিজেনরা
ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিতে টিকটক সেবা আবার চালু
বিশেষ ক্ষমতা আইন ও শহীদ সবুজ হত্যা মামলায় নকলায় দুই সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার
যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া জরুরি: আমান
আজ শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
বিলুপ্তির পথে দেশের সিনেমা হল
যেভাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং ,সতর্কবার্তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
পঞ্চগড় হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগী
মেডিকেলের ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
প্রথম দিনেই একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প
ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করা রিপোর্ট প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের
প্যারিসে জুলাই জার্নাল অব ডিক্টেটরশিপ প্রদর্শনী, যা সবার আয়োজন করা উচিত
বিরতির প্রথম দিন : গাজায় ঢুকলো সাড়ে ৫ শতাধিক ত্রাণবাহী ট্রাক
ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিদগ্ধে গৃহবধূর মৃত্যু
আল-কাসসাম মুখপাত্র গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেন
ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ নিঃশ্বাসে ঢুকছে বিষ