আশুলিয়ায় ভোর থেকে শুরু হয় মানুষের হাট
০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
শীতের হালকা কুয়াশায় বাঁশের টুকরি আর কোদাল হাতে মানুষগুলো ভিড় জমাচ্ছেন ‘মানুষের হাটে’। প্রাচীনকালে ও মধ্যযুগে সমাজে মানুষ কেনাবেচার হাট বসত। সেই দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়েছে কবেই। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর তথ্যপ্রযুক্তির যুগেও ক্ষুধা আর দারিদ্র্যের নির্মম আঘাতে নিম্নআয়ের মানুষগুলো দুই বেলা রুটিরুজির জন্য আজও নিজেকে বেঁচে দেন মানুষের হাটে। আশুলিয়ার নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে প্রতিদিন সকালে বসে মানুষ ক্রয়-বিক্রয়ের হাট। রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি, স্যানিটারি মিস্ত্রি, দিনমজুরসহ নানা পেশার শ্রমজীবী মানুষে সরগরম হয়ে ওঠে এই বাজার। শ্রমের এই বাজারে শ্রমিক কিনতে আসেন মালিকরা। অনেক শ্রমজীবী বিক্রি হলেও অনেকে থেকে যান অবিক্রীত।
রাজবাড়ীর পদ্মা নদের ভাঙনে ভেঙে যাওয়া ঘর, আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে এসে আবাস গড়েছেন হোসেন। সংসার চালানোর জন্য নিজেকে প্রতিদিন বিক্রি করতে আসেন মানুষের হাটে, কোনো কোনো দিন থেকে যান অবিক্রীত।
দিনমজুর হোসেন এর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘তিন বছর আগে পদ্মা নদে বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় ঢাকায় চলে আসি। যখন যে কাজ পাই সেই কাজ করি। সন্তানরা নিজেরাই চলতে পারে না, আমাদের কী দেখবে? তাই প্রতিদিন কামলা দিতে হয়। কামলার হাটে দাম একটু বেশি পাই। কেউ কিনলে, কোনো দিন ৪০০ আবার কোনো দিন ৫০০ টাকা থাকে। বেচা না হলে সেদিন রিকশা চালাই। আশুলিয়ার কুরগাও এলাকার এক বাড়ির মালিক আমিনুল ইসলাম মানুষের হাটে এসেছেন রংমিস্ত্রি কিনতে। তিনি বলেন, ‘বাড়ির সামনের দেয়ালে রঙ করতে হবে, তাই এই বাজারে রংমিস্ত্রি কিনতে এসেছি। শ্রমিকের দাম একটু বেশি হলেও এখানে সহজে কাজের লোক পাওয়া যায়। একজন রংমিস্ত্রি নিয়েছি ৫০০ টাকায় আর দু’জন সহকারী মিস্ত্রি নিয়েছি ৮০০ টাকায়। মানুষের এই হাটে বেচাকেনা চলে ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত। দামদর ঠিক হয়ে গেলে শ্রমজীবী মানুষগুলো রওনা হন মালিকের গন্তব্যে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ঘাম ঝরিয়ে কাজ করেন কঠোর পরিশ্রমী মানুষগুলো। আশুলিয়ার কাঠমিস্ত্রি মনিরের জীবনও যেন জড়িয়ে আছে মানুষের হাটের সঙ্গে। পাঁচ বছর ধরে এই বাজারে বিক্রি হতে আসেন তিনি।
মিস্ত্রির কাজের মজুরি কেমন জানতে চাইলে মনির বলেন, ‘বাজারে মিস্ত্রির দাম ৬০০ টাকা আর শ্রমিক ও জোগালের দাম একটু কম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বছরের পর বছর ধরে আশুলিয়ার নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনের এই মানুষের হাট বসে। এ ছাড়াও আশুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় এই মানুষের হাট বসে বলে জানান কুরগাও এলাকার এক স্থানীয় বাসিন্দা শহিদুল। নিয়মিত হাট বসলেও মানুষের হাটে নেই কোনো খাজনা, সমিতির ঝামেলা, হাট কমিটির চাঁদাবাজি। নিজের আপন গতিতেই চলে এই হাট। শ্রমজীবী মানুষরা সেদিক দিয়ে শান্তিতে থাকলেও তাদের কাজের নিশ্চয়তা নেই। হাজারো লোকের ভিতর থেকে মাত্র কয়েকজন বিক্রি হওয়ায় বাকিদেরকে মন খারাপ করে বাসায় চলে যেতে হয়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কোটালীপাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ
সাটুরিয়া উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের নিরাপত্তা জোরদার
‘সাইবার মানডে’ উপলক্ষে ওয়েব হোস্টিংয়ে লিমডা হোস্টে চলছে ৬০% পর্যন্ত ছাড়!
ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী
ফ্যাসিস্ট সরকারের ৮ বছরের নিষেধাজ্ঞার পর অবশেষে মঞ্চে আসছে থিয়েট্রিক্যাল বাহাস ও কন্ঠনালীতে সূর্য
মিলেছে ‘হারিছ চৌধুরী’র ডিএনএ, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ
নাম পরিবর্তনের দাবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের
গলায় ফাঁস দিয়ে বৃদ্ধের আত্মহত্যা
আইএসের নৃশংসতার বিচারে জাতিসংঘ ব্যর্থ : নাদিয়া মুরাদ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের মানববন্ধন
মানিকগঞ্জে হাঙ্গার প্রজেক্টের গণতন্ত্র অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
এবার ভারতের মালদহে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল ভাড়া বন্ধ ঘোষণা
কিশোরগঞ্জের হাওর-অর্থনীতি বেগবান করতে চলছে কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্প
প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম
দেশের ৬৯ কারাগারের ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক
পায়রার রাজস্ব আয় বাড়বে তিনগুণ, দেশের অর্থনীতিতে রাখবে বড় ভূমিকা
মমতা ব্যানার্জির মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ : রিজভী
কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা
কুড়িগ্রামে সাবেক এমপি পুত্র সবুজ গ্রেফতার