ভয়ঙ্কর সমস্যা সড়ক দুর্ঘটনা
০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম
দেশে সড়ক দুর্ঘটনা মানুষের জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। প্রতি বছর হাজরো মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মুখোমুখি হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার। এই দুর্ঘটনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়ছে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণে দেখা যায় মোটরবাইক, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্স আরোহী হিসেবে একসাথে পুরো পরিবার বা এক পরিবারের অধিক সদস্য নিহতের প্রবণতা বাড়ছে। গত ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় শতাধিক পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, মোটরবাইক আরোহী হিসেবে স্বামী-স্ত্রী নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১২৩টি এবং পিতা-পুত্র নিহতের ঘটনা ঘটেছে ৮৪টি। অর্থাৎ ১২৩টি বাইক দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী নিহত হয়েছেন ২৪৬ জন এবং ৮৪টি দুর্ঘটনায় পিতা-পুত্র নিহত হয়েছেন ১৬৮ জন। অটোরিকশা যাত্রী হিসেবে স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের ২ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১৩৭টি। ৩ জন নিহতের ঘটনা ৭৮টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ৬২টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ৩৮টি, ৬ জন নিহতের ঘটনা ২৬টি এবং ৭ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১১টি। মোট ৩৫২টি পরিবারের ১১৭৯ জন নিহত হয়েছে। মাইক্রোবাসের আরোহী হিসেবে একই পরিবারের ২ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১৬টি, ৩ জন নিহতের ঘটনা ২২টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ১৭টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ১১টি, ৬ জন নিহতের ঘটনা ৮টি এবং ১১ জন নিহতের ঘটনা ১টি। মোট ৭৫টি পরিবারের ২৮০ জন নিহত। প্রাইভেটকার আরোহী হিসেবে একই পরিবারের ২ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ২৪টি। ৩ জন নিহতের ঘটনা ২১ টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ১৭ টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ১৪ টি। মোট ৭৬টি পরিবারের ২৪৯ জন নিহত। অ্যাম্বুলেন্স আরোহী হিসেবে ৩ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ৯টি, ৪ জন নিহতের ঘটনা ৫টি, ৫ জন নিহতের ঘটনা ৩টি, ৮ জন নিহতের ঘটনা ১টি। মোট ১৮টি পরিবারের ৭০ জন নিহত।
পরিবারের সকলে একসাথে বেড়াতে বা কোনো কাজে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। অবাধ মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল। অধিকাংশ মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্সের ফিটনেস না থাকা। মাইক্রোবাস এবং অ্যাম্বুলেন্স চালকদের অদক্ষতা ও বিশ্রামহীন ড্রাইভিং করা। ট্রাফিক আইন না মেনে বেপরোয়া মোটরযান চালনাসহ নানা করণে এসব দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে।
বাংলাদেশে মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণে কোনো আইন প্রয়োগ নেই। বরং বিশেষজ্ঞদের দাবি, সরকারের আর্থিক নীতিতে এই দুই চাকার যানবাহনের ব্যাপক প্রচার করা হচ্ছে। সড়কে মোটরসাইকেলের আধিক্যের কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়ছে। চার চাকার যানবাহনের তুলনায় দুই চাকার যানবাহন ৩০ গুণ বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ। এ ছাড়া বিশৃঙ্খল যানজটও দুর্ঘটনার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। টু-হুইলারগুলি ভারসাম্য ও নিয়ন্ত্রণহীন। ফলে গাড়িগুলো চালানোর সময় চালকেরা ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে না। স্পিড ব্রেকার এবং ছোট গর্তও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এই সব রাইডারের চালকরা বয়সে তরুণ। ফলে খুব নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গাড়ি চালনায় তারা অভ্যস্থ। দুর্ঘটনায় পতিত হলে এইসব হালকা গাড়ির চালক ও আরোহী বড় গাড়ীর চাপায় মারা যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, দেশে সডক দুর্ঘটনার প্রধান কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চালকদের বেপরোয়া চালানো, অতিরিক্ত গতি, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট। এগুলো ছাড়া চালকদের কোনো নির্দিষ্ট বেতন ও কর্মঘণ্টা না থাকা, মহাসড়কে কম গতির যানবাহন চলাচল, বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালানোর প্রবণতা, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজিও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যান্য কারণ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জুলাই ঘোষণা : কারা যাচ্ছেন আজকের বৈঠকে
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হামাস-ইসরাইল
যে সব শর্তে গাজায় যুদ্ধবিরতি
এনসিটিবির সামনে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
নোয়াখালীর সদর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু আটক
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী