ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১
একান্ত সাক্ষাৎকারে খেলাফত মজলিসের আমির

ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে উঠেপড়ে লেগেছে

Daily Inqilab শামসুল ইসলাম

০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম

খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে দৈনিক ইনকিলাবের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, খেলাফত মজলিস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শুরু থেকেই সমর্থন ও সহযোগীতা করে আসছে। আগস্ট বিপ্লবের পর দেশে পতিত খুনি হাসিনার সকল অপতৎপরতা রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধভাবে ময়দানে কাজ করছে খেলাফত মজলিস। আমরা মনে করি সামগ্রিক সংস্কারের জন্য সরকারকে সময় দেয়া দরকার। তবে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সরকার মৌলিক সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। শিক্ষা ও সংবিধান সহ অন্যান্য সংস্কারে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিতে হবে।

তিনি বলেন, ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার ও প্রপাগাণ্ডায় লিপ্ত রয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে একের পর এক উস্কানি দিচ্ছে। সাম্প্রতিক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বক্তব্য বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী। আমরা এসবের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ভারতে বসে পতিত স্বৈরাচার খুনি হাসিনা এসবে ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা খুনি শেখ হাসিনাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনের অফিসে উগ্র ভারতীয়দের হামলা ও জাতীয় পতাকার অবমাননার ঘটনাটি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে দেখছি। এই ঘটনায় ভারত ভিয়েনা কনভেনশন স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ সরকারের উচিত ভারত থেকে সকল কূটনৈতিককে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা। আন্তর্জাতিকভাবে ভারতকে এই ব্যাপারে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করতে হবে। ইসকনসহ বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ইস্যুতে ভারতের নাক গলানো বন্ধ করতে হবে।

হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বাংলাদেশে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সাথে বসবাস করছে। এখানে ভারতের মত কোন উগ্র সাম্প্রদায়িকতা নেই। চট্টগ্রামের মুসলিম আইনজীবি সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় মুসলমানরা সর্বোচ্চ সংযমের পরিচয় দিয়েছেন। অথচ ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্র সকল ধর্মের মানুষের অধিকার রক্ষায় সাংবিধানিকভাবে দায়বদ্ধ। কেউ অপরাধ করে থাকলে ফৌজদারী আইনে তার বিচার হবে ধর্মীয় পরিচয়ে নয়। শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। ভারতের উচিত নিজেদের সংখ্যালঘু মুসলিম ও মসজিদসহ ইসলামী স্থাপনাগুলো সুরক্ষায় মনোযোগী হওয়া। এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় ধর্মীয় স্পর্শকাতর ইস্যুকে বারবার ট্রামকার্ড বানিয়ে রাজনীতি থেকে ভারতকে বের হয়ে আসতে হবে।

খেলাফত মজলিস খোলাফায়ে রাশেদার আদর্শের আলোকে বাংলাদেশে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে চায়। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় আমরা কাজ করছি। কুরআন-সুন্নাহর আদর্শ ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত করতে ময়দানে অন্যান্য ইসলামী দলও কাজ করছে। আমরা সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের অন্যতম মৌলিক কর্মসূচির একটি হচ্ছে ঐক্য। জোটগতভাবে আমরা আগেও ঐক্য করেছি। বর্তমানে সমমনা ইসলামী দলসমূহের ব্যানারে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কিছু কাজ করছি। সামনে নির্বাচন কেন্দ্রিক সমঝোতার আলাপ-আলোচনা চলছে। যেখানে এক আসনে এক ইসলামী দলের প্রার্থী থাকবে। পাশাপাশি ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী অন্যান্য দলগুলোকেও নির্বাচনী সমঝোতায় কিভাবে আনা যায় তার প্রচেষ্টা চলছে। নিজেদের মতভিন্নতা থাকা সত্বেও দ্বীনের মৌলিক ইস্যুতে ইসলামী দলগুলো সবাই ঐক্যবদ্ধ আছে। ছোটখাটো মতবিরোধকে পাবলিকলি আলোচনা-সমালোচনা একসাথে পথচলার জন্য বড় অন্তরায়। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য খেলাফত মজলিস কর্মীদেরকে যথাযথভাবে নির্দেশনা দিয়ে থাকে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
দেশের সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ
সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
আরও

আরও পড়ুন

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

ধূমপানকে না বলুন

ধূমপানকে না বলুন

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত