কোনো দেশ নয় জনগণই বিএনপির শেষ ভরসা -তারেক রহমান
০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ এএম
অন্যরকম এক শ্রেণিকক্ষে দিনভর রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশিক্ষণ নিলেন চট্টগ্রাম বিভাগ বিএনপির ১০টি সাংগঠনিক জেলার সাড়ে আট শতাধিক নেতা। প্রশিক্ষণের শেষ পর্বে লন্ডন থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফার ওপর নেওয়া ধারণা নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, কোনো দেশের সহযোগিতায় নয়, জনগণের সমর্থন নিয়েই বিএনপি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায়। ক্ষমতা নয়, আমরা দেশ পরিচালনার সুযোগ পেতে চাই। এই সুযোগ পেলে ৩১ দফার বাস্তবায়নে সকলে মিলে কাজ করতে হবে। জনগণই বিএনপির শেষ ভরসা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রতি জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। রাতের ভোট অথবা ড্যামি নির্বাচন নয়, আমরা জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। অদৃশ্য শক্তির চক্রান্তের কারণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কঠিন হবে উল্লেখ করে তিনি বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে সতর্ক এবং সজাগ থাকার পরামর্শ দেন। তার আগে তিনি ঘণ্টাব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী নেতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এসময় তিনি ভারতের কাছ থেকে নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়া হবে বলেও জানান। বিগত সরকারের সময়ে দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন দেশ, আন্তর্জাতিক সংস্থা এমনকি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা বা সংগঠনের সহযোগিতা নেওয়ার সুযোগ কাজে লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আগামী দিনে রাষ্ট্র সংস্কারের এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সকালে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এরপর বিভিন্ন অধিবেশনে আগামীর নতুন এক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ৩১ দফার বিভিন্ন বিষয়ে কর্মশালা হয়। তাতে দলের কেন্দ্রীয় নেতা এবং বিশেষজ্ঞরা বিষয় ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মহানগর এবং জেলা ছাড়াও তিন পার্বত্য জেলা, বৃহত্তর নোয়াখালীসহ ১০ জেলা বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতারা অংশগ্রহণ করেন। ছিলেন বিএনপি সমর্থিত বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও। বিকেল ৪টা পর সরাসরি কর্মসূচিতে যুক্ত হন তারেক রহমান। তৃণমূল নেতাদের করতালি আর উল্লাস ধ্বনিতে এ সময় পুরো মিলনায়তনে অন্য রকম এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
নেতাদের প্রিয় সহকর্মী সম্বোধন করে তারেক রহমান বলেন, আপনাদের এলাকায় আপনারাই বিএনপির প্রতিনিধি। তাই রাষ্ট্র সংস্কারের এই ৩১ দফা এলাকার প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছানোর দায়িত্ব আপনাদের। বিএনপি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে মানুষের কল্যাণে কি করবে তা প্রতিটি ঘরে ঘরে জানিয়ে দিতে হবে। ভোটের সময় যেভাবে আপনারা বাড়ি বাড়ি যান ঠিক একই ভাবে ৩১ দফা নিয়েও যেতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। এমন কোনো আচরণ করা যাবে না যাতে মানুষ বিএনপির প্রতি বিরূপ ধারণা পোষণ করে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে কিছু ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ তিনি বলেন, আমি আবারো কঠোরভাবে বলছি, এমন আচরণ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। তিনি বলেন, জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। আমরা তাদের আস্থা এবং সমর্থন পেয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চাই, কোনো দেশের সাহায্যে নয়। পতিত সরকারের একজন মন্ত্রী একটি দেশের (ভারত) সাহায্য চেয়ে বলেছিলেন আপনাদের স্বার্থে আমাদের ক্ষমতায় রাখতে হবে। আমরা অন্য কারো সাহায্য নয়, জনগণের শক্তি এবং সমর্থন নিয়েই ভোটের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার সুযোগ চাই। ভারতের ঠেলে দেয়া পানির কারণে বৃহত্তর নোয়াখালী এলাকায় ভয়াবহ বন্যার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওরা আগাম সতর্ককতা ছাড়াই পানি ছেড়ে দিয়েছে। অথচ যখন পানির প্রয়োজন তখন পানি পাওয়া যায় না। অভিন্ন নদীর পানির সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে এবং সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে বলেও জানান তিনি। শান্তি চুক্তির পরেও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি আসেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, সবার সাথে বসে পাহাড়ের সবার অধিকার সুরক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।এদেশের সব নাগরিকের সমান অধিকার সবাই বাংলাদেশী। এখানে কোন বৈষম্য থাকবে না। জুলাই বিপ্লবে নিহত সব শহিদের নামে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে বলেও জানান তিনি। আর এর মাধ্যমে তাদের স্মৃতি ধরে রাখা হবে। বিগত ১৭ বছর স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের অধিকার আদায়ে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের কল্যাণে কাজ করা হবে।
বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এজন্য আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। দলের নেতাদের মনে রাখতে হবে আমরা এখনো বিরোধী দলে। আমরা ক্ষমতায় আসিনি। তাছাড়া আমরা ক্ষমতায় নয়, দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চাই। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা চেয়েছে বলেই ভোট ছাড়াই ক্ষমতা দখল করেছে। আর এ জন্যই তাদের পালাতে হয়েছে।
সব শ্রেণি পেশার মানুষ এক হয়ে রাস্তায় নেমেছে বলেই মাফিয়া সরকারের পতন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদেরও দেশ পরিচালনার সুযোগ পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত