সরকারি গাড়ির অপব্যবহারে বিশৃংখলা ও আর্থিক অপচয় বাড়ছে
১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
বিগত ফ্যাসিবাদি সরকারের আমলে সরকারি কর্মকর্তাদের খুশি রাখতে নিয়ম ভেঙে সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি ব্যবহারে অনিয়মের ঘটনা রয়েগেছে।এ কারণে সরকারি গাড়ির অপব্যবহারে বিশৃংখলা ধেকা দিয়েছে অন্যদিকে আর্থিক অপচয়ের ঘটনা ঘটেছে।সরকারি গাড়ি নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির শেষ নেই। প্রকল্প শেষে গাড়ি জমা দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করছে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর গুলো। এ সব অনিয়ম রোধে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অধীনে একটি কেন্দ্রীয় যানবাহন ডাটাবেইজ (তথ্যভান্ডার) করার নতুন পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। প্রজাতন্ত্রের কিছু কর্মচারীর প্রাধিকার বহির্ভূত গাড়ি ব্যবহারের এমন প্রবণতার ফলে একদিকে যেমন জনপ্রশাসনে বিশৃংখলা ও আর্থিক অপচয়ের কারণ ঘটছে। অন্যদিকে তেমনি নৈতিকতার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে সমাজে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে সরকারের দায়িত্ব সচেতনতা সম্পর্কেও জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ ধারণা তৈরি হচ্ছে। এর আগে মন্ত্রণালয় এবং বিভাগসহ সব সরকারি দপ্তরের যানবাহন ব্যবস্থাপনার নিজস্ব ডাটাবেইজ করতে নিদেশনা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। এ নিয়ে গত ২ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্টদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় একটি সভা করা হয়েছে। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া। বৈঠকে প্রত্যেকটি সরকারি দপ্তরের সচল ও অচল গাড়ির ডিজিটাল ডাটাবেইজ দ্রুত করার জন্য বলা হয়েছে। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ডাটাবেজের জন্য সরকারি যানবাহনের তথ্যাদির বিষয়ে একটি ছকও করে দেওয়া হয়। ছকে মন্ত্রণালয়, বিভাগ, প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের সচল যানবাহনের প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন নম্বর, যানবাহনের ধরন, ক্রয়ের সাল, চালিত কিলোমিটার, ব্যবহারকারীর নাম ও পদবি এবং চালকের নাম উল্লেখ করার জন্য বলা হয়েছে। ব্যবহার অনুপোযোগী যানবাহনের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন নম্বর, যানবাহনের ধরন, ক্রয়ের সাল, বৈকল্যের সাল, বৈকল্যের কারণ ও গৃহীত ব্যবস্থা (বিক্রয়, নিলাম, জমাকরণ ও অন্যান্য) বিষয়ে উল্লেখ থাকতে হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্র্বতীকালীন সরকার। গত ২ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ম ভেঙে (প্রাধিকার বহির্ভূত) গাড়ির ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধের (বারিতকরণ) নির্দেশনা দিয়ে সব মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেও এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে আমরা সরকারি গাড়ির একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার তৈরি করতে চাই। সরকারি ভাবে কত গুলো প্রকল্পে কত গুলো গাড়ি রয়েছে। কী অবস্থায় আছে, কে ব্যবহার করছেন। সেই তথ্য থাকবে তথ্যভান্ডারে। গাড়ি ব্যবস্থাপনাটা এখন একটা অস্বচ্ছ অবস্থার মধ্যে আছে। কেউ জানে না কার কাছে কত গাড়ি আছে, প্রজেক্টের কত গাড়ি আছে, আর অর্গানোগ্রামের কত গাড়ি আছে, সেই গাড়িগুলো কারা ব্যবহার করছে? এসব তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে নেই আমাদের কাছে। তিনি বলেন, প্রত্যেক মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তর যানবাহন নিয়ে একটি তথ্যভান্ডার গড়ে তুলবেন। এসব তথ্যের সমন্বয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে বিআরটিএ-তে তথ্যভান্ডার স্থাপন করা হবে। এরমাধ্যমে আমরা সব সরকারি গাড়ির হিসাব পাব। এতে গাড়ি ব্যবস্থাপনাটা সহজ ও স্বচ্ছ হবে। যে সব অনিয়মের কথা শোনা যায়, সেগুলোও কমানোর ক্ষেত্রে এটি একটি পদক্ষেপ। এরপর হয়তো আরও অন্যান্য বিষয়গুলো আসবে। মুখ্য সচিব বলেন,কোনো কোনো মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে তাদের গাড়ির ব্যবস্থাপনাটা ডিজিটালাইজড করেছে। সবাইকে এ ব্যবস্থায় আসতে হবে। যারা করেনি মিটিং করে তাদের আমরা তাগিদ দিয়েছি তাড়াতাড়ি এটা করার জন্য। তাদের তথ্যগুলো নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে তথ্যভান্ডার তৈরি হবে। গাড়ির একটা অংশ বিশেষ করে মাঠ প্রশাসনের গাড়ি ব্যবস্থাপনা করে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর (পরিবহন পুল)। মন্ত্রণালয় ও বিভাগ পর্যায়েও কিছু কিছু গাড়ি সরবরাহ করে যানবাহন অধিদপ্তর। মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তর-সংস্থার সাংগঠনিক কাঠামোর যানবাহন তারাই ব্যবস্থাপনা করে। প্রকল্পের গাড়িগুলোও যানবাহন অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সরকারি গাড়ির মোট সংখ্যা কত সেই তথ্য সরকারি কোন দপ্তরে নেই। সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের পরিবহন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর বলেন, যানবাহন নিয়ে ডাটাবেইজ আমাদের আছে। আমরা এটা ৫/৬ মাস আগে করেছি। অন্য সব দপ্তরকে ডিজিটাল ডাটাবেইজ করতে হবে। সবার ডাটাবেইজ নিয়ে সেন্ট্রালি একটি ডাটাবেইজ করা হবে। এটি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অধীনে বিআরটিএ করবে। তিনি বলেন, বিআরটিতে তো সবার গাড়িই রেজিস্ট্রেশন করা লাগে। ইঞ্জিন নম্বর, চেসিস নম্বরও তাদের কাছে থাকে। তাই বিআরটিএকে দিয়ে কেন্দ্রীয় ডাটাবেইজের কাজটি করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে যারা যার নিজেদের ডাটাবেইজটা নিজেদের করতে হবে। গত ২ ডিসেম্বরের সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের অধীনে ২ হাজার ১৩৪টি সচল গাড়ি আছে জানিয়ে হুমায়ুন কবীর ইনকিলাবকে বলেন,এছাড়া দেড়শ’র মতো অচল গাড়ি রয়েছে। আমাদের সচল গাড়ির মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় গুলোতে রয়েছে ৯০০-এর মতো এবং ৫০০ মতো গাড়ি রয়েছে ইউএনওদের কাছে। বাকিগুলো ঢাকা শহরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগসহ সরকারি দপ্তরে রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপদেষ্টা ছাড়াও কোন কোন সচিবের গাড়ি আমরা সরবরাহ করে থাকি। মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সরকারি দপ্তরের অন্যান্য গাড়িগুলো আমাদের নয়, এগুলো ব্যবস্থাপনাও আমরা করি না’ বলেন পরিবহন কমিশনার। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার ২ মাসের মধ্যে গাড়ি জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু ১ শতাংশ গাড়িও জমা পড়ছে না বলে জানিয়েছেন যানবাহন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। নতুন ব্যবস্থায় ডাটাবেইজে থাকবে,প্রকল্পের মেয়াদ, প্রকল্পের অধীনে কত গাড়ি, ব্যবহারকারী কে? ডাটাবেইজ করলে এ সংক্রান্ত অনিয়মগুলো দূর করা সহজ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
প্রাধিকারের গাড়ি নিয়ে যত অনিয়ম: সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে কমপক্ষে তিন বছর পার করেছেন এমন কর্মকর্তা, সরকারের যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব ও সিনিয়র সচিবরা গাড়ি সুবিধা (প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) পেয়ে থাকেন। এদের গাড়ি কেনার জন্য সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করে আওয়ামী লীগ সরকার। এ জন্য ২০২০ সালে একটা নীতিমালাও জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। নীতিমালার আওতায় গাড়ি কেনার জন্য ঋণ সুবিধার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ মাসে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এ কর্মকর্তাদের আর কোন গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ নেই। কিন্তু অনেক কর্মকর্তা অনৈতিক ও বিধিবহির্ভূতভাবে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ব্যবহার করছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হক তার স্ত্রী ও সন্তানদের চলাফেরায় চালকসহ সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতেন। সাড়ে তিন বছর আগে বেআইনিভাবে সংস্থাটি থেকে গাড়িটি বরাদ্দ নেন। এসব বিষয়কে সামনে রেখে গত ২ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে, প্রজাতন্ত্রের বেশ কিছু কর্মচারী প্রচলিত বিধি ও প্রাধিকার বহির্ভূতভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। এমনকি কোন কোন মন্ত্রণালয়/বিভাগ কর্তৃক যৌক্তিক কোন কারণ ছাড়াই বিভিন্ন দপ্তর/ অধিদপ্তর/সংস্থা/ব্যাংক-বীমা/কোম্পানি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান হতে অধিযাচন (ফরমাশ দিয়ে আনা) করে গাড়ি আনা হচ্ছে। প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত ঋণ এবং গাড়ি সেবা নগদায়ন নীতিমালা-২০২০ এর আওতায় গাড়ির ঋণ সুবিধাপ্রাপ্ত কোন কোন কর্মকর্তা গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাবদ সমুদয় অর্থ (৫০ হাজার টাকা) গ্রহণ করার পরও অনৈতিক ও বিধি বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ব্যবহার করছেন। অথচ উক্ত নীতিমালার ১৭ অনুচ্ছেদে এরূপ অনিয়মের বিষয়টি বারিত করার পাশাপাশি সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের কিছু কর্মচারীর প্রাধিকার বহির্ভূত গাড়ি ব্যবহারের এমন প্রবণতার ফলে একদিকে যেমন জনপ্রশাসনে বিশৃংখলা ও আর্থিক অপচয়ের কারণ ঘটছে। অন্যদিকে তেমনি নৈতিকতার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে সমাজে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে সরকারের দায়িত্ব সচেতনতা সম্পর্কেও জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ ধারণা তৈরি হচ্ছে। সরকার এ ধরণের বিষয়ে অনমনীয় নীতি গ্রহণ করেছে। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং আওতাধীন দপ্তর/সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের প্রাধিকার বহির্ভূত গাড়ি ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধের (বারিত) করার জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয় সচিবদের। প্রকল্পের গাড়ি নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি: অন্যদিকে প্রকল্পের গাড়ি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। প্রকল্প শেষে গাড়ি জমা পড়ছে না পরিবহন পুলে। গত সরকারের সময়ে বার বার এ বিষয়ে চিঠিও দেওয়া হয়, কিন্তু সাড়া মেলেনি। এসব গাড়ি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সংস্থা, দফতর, অধিদফতর, মন্ত্রণালয়, বিভাগসহ অন্য ক্ষেত্রের কর্তাব্যক্তিরা নিজেদের কাজে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ আছে। প্রকল্পের গাড়ি কর্মকর্তাদের পারিবারিক কাজে শুধু নয়, আত্মীয়স্বজনকে ব্যবহার করতে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে আনা-নেওয়ার কাজেও অনেক গাড়ি ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানা গেছে। তাই প্রকল্প শেষ হওয়ার পর ৬০ দিনের মধ্যে সচল গাড়ি যানবাহন অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় পরিবহন পুলে জমা দেয়ার নিয়ম থাকলেও এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটে গত সরকার এ সংক্রান্ত পরিপত্রটি মনে করিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে একাধিকবার চিঠি পাঠিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গত ২০০৬ সালের সমাপ্ত উন্নয়ন প্রকল্পের যানবাহন সরকারি যানবাহন অধিদফতরে অধীন কেন্দ্রীয় পরিবহন পুলে জমাকরণ, ব্যবহার ও নিষ্পত্তি’র পরিপত্রটি যুক্ত করে এটি মেনে চলার জন্য বার বার বলা হয়েছে। গত ২০১৭ সালে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে প্রকল্পের গাড়ি নিয়ে এমন অনিয়মের তথ্য উঠে আসে। ওই বছরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় প্রকল্প শেষে গাড়ি জমা না দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বেশ কয়েকটি অনুশাসন দেন। এগুলো ছিল, প্রকল্প সমাপ্ত হওয়ার তিন মাসের মধ্যেই পিসিআর বা প্রকল্প সমাপ্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে প্রকল্পের গাড়ি, অফিস ও অন্যান্য সরঞ্জাম যথাস্থানে জমা দিতে হবে। তবে ওই অনুশাসনের পরও প্রকল্পের গাড়ি জমা দেয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০১৯ সালে সমন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো এক চিঠিতে বলেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকল্পের জন্য ক্রয়কৃত যানবাহন প্রকল্প সমাপ্তির পর সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী পরিবহন পুলে জমা প্রদান করার বিধান থাকলেও তা অনুসরণ করা হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা উক্ত যানবাহন ব্যবহার করে থাকেন। যা দুর্নীতির পর্যায়ে পড়ে।
প্রকল্পের গাড়ি নিয়ে জারি করা পরিপত্রে বলা হয়: গত ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারি জারি করা হয় ‘সমাপ্ত উন্নয়ন প্রকল্পের যানবাহন সরকারি যানবাহন অধিদফতরে অধীন কেন্দ্রীয় পরিবহন পুলে জমাকরণ, ব্যবহার ও নিষ্পত্তি’র পরিপত্র। পরিপত্রে বলা হয়েছে, সমাপ্ত উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকল্প সমাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে প্রকল্পের সব সচল যানবাহন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদফতরের কেন্দ্রীয় পরিবহন পুলে জমা দেবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যানবাহন জমা না হলে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর বিষয়টির জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানাবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প শেষ হওয়ার সর্বোচ্চ ৬ মাসের মধ্যে প্রকল্পের অচল যানবাহন নীতিমালা অনুযায়ী বিক্রি করে অর্থ সরকারের সংশ্লিষ্ট খাতের জমা দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ ও সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর জানাতে হবে। প্রকল্প শেষ হওয়ার ৯০ দিন আগে প্রকল্প পরিচালক প্রকল্পের শ্রেণিভিত্তিক যানবাহনের সংখ্যা, অবস্থান এবং বর্তমান অবস্থা (সচল/অচল) বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আইএমইডির কাছে দাখিল করে অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে পাঠাবে। প্রকল্প শেষ হওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের যানবাহন কেন্দ্রীয় পরিবহন পুলের জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা মন্ত্রণালয়ের ওই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে অন্য কেউ দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
দোয়ারাবাজারে অভিযুক্ত বাঁধে বালু অপসারণ!
ফের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের
ঢাকার বাইরে প্রথম নরসিংদীতে রয়েল এনফিল্ড লঞ্চ
ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমেই দেশ ও জাতির কল্যাণ সাধিত করা সম্ভব
অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না : হাইকোর্ট
বিদ্যুৎ প্লান্টের পাঁচ লাখ টাকার লোহা তামা স্টিল সামগ্রী চুরির দায়ে ৫০ জনের নামে মামলা
নেত্রকোনা গত ১ বছরে ২৩২টি অস্বাভাবিক মৃত্যু
মেহেরপুর শহরে অবৈধ গাড়ির দৌরাত্ম ফুটপথ দখল, সরু সড়ক, যানজট লেগেই থাকে
অ্যাপলের ডাইভার্সিটি নীতি , বৈচিত্র্য রক্ষার লড়াইয়ে বোর্ডের বার্তা
ঢাবি,ভিকি,এনএসইউ ওয়েটিং লিস্টে থাকে,বান্নাহ খাওয়া মাল খায় না'
দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে আন্দোলনে নামার ঘোষণা কর্নেল অলির
আশুলিয়া থানা জমিয়তের কমিটি গঠন
বাংলাদেশের সীমান্তে ১৬০ জায়গায় কাটাতারের বেড়া দিয়েছে ভারত : রিজভী
মতলবে সাবেক স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা-সাবেক স্বামী আটক
লক্ষ্মীপুর থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকার কষ্টিপাথর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে হস্তান্তর
অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দলে শর্ট ও হার্ডি, কামিন্সকে নিয়ে শঙ্কা
'ব্লু অরিজিন' রকেট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি সম্পন্ন,শুভকামনা জানালেন ইলন মাস্ক
কমলনগরে ট্রাক্টরট্রলির চাপায় চটপটি বিক্রেতার মৃত্যু
রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া মহাসড়কে বাস চলাচল শুরু
ঝিনাইদহে ২৬ টি দোকান দুঃসাহসিক চুরি টাকা ও মালামাল নিয়ে চম্পট