দৈনিক ইনকিলাব এর সাথে বিশেষ সাক্ষাৎকারে ইবি ভিসি

‘ফ্যাসিস্টদের পরিবর্তে নতুনদের নিয়ে সিন্ডিকেট গঠন করা হবে’

Daily Inqilab রাকিব রিফাত, ইবি

১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম

১৯৭৯ সালের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর পেরিয়ে গেলেও মূলধারা থেকে লক্ষ্যচ্যুত বিশ্ববিদ্যালয়টি। সম্প্রতি জুলাই বিপ্লবের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন হিসেবে ভিসি নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। নিয়োগ পেয়ে তিনি শিক্ষা, গবেষণা, সেবা ও অন্য সকল ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য মনোনিবেশ করেছেন। তিনি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় উপহার দিতে সংকল্পবদ্ধ। যেখানে ইসলামী শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় করা হবে। এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ভিসি তার ভবিষৎ ও সংস্কারের কথা জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক ইনকিলাবের সংবাদদাতা রাকিব রিফাত এ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব : ইবিতে সাথে যেসকল ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে গণহত্যার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো তাদেরকে নিয়ে কি ভাবছেন?
ভিসি : আইসিটিতে একটি অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গিয়েছে সেটি তারা দেখবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড অব কন্ডাক্ট লঙ্ঘন যারা করে থাকে এবং কেউ যদি অভিযোগ প্রেরণ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব : স্বৈরাচারের দোসর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী ও ছাত্রলীগের কোটাধারী সিন্ডিকেট সদস্যদের নিয়ে কি ভাবছেন?
ভিসি : আমরা জানি সিন্ডিকেট সাধারণ সিলেকশন করা হয়। তবে ইলেকশন সিন্ডিকেটেও কিছু পদ আছে তাদের ১০বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ফ্যাসিস্টদের পরিবর্তে নতুনরা আসবে। আর নতুন সিন্ডিকেট নিয়ে আমরা ভাবছি।
দৈনিক ইনকিলাব : ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে আপনি কি ভাবছেন?
ভিসি : এমন রাজনীতি চাই যেখানে ছাত্ররা শিক্ষা সংস্কার ও প্রশাসনিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করবে। হলগুলোতে কোন ছাত্রসংগঠনের আধিপত্য থাকবে না। এজন্য মেধার ভিত্তিতে সিট বন্টন করা হবে। ব্যক্তিগত স্বার্থ উপেক্ষা করে সামষ্টিক স্বার্থকে জোর দেয়ার জন্য সকল ছাত্র সংগঠনকে আমি অনুরোধ করেছি।
দৈনিক ইনকিলাব : ইবির মফিজ লেকের নাম পরিবর্তনের বিষয় ও প্রতিকৃতি স্থাপনের বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
ভিসি : মীর মুগ্ধ আমাদের একটি ইমোশনাল সম্পদ। আর মীর মুগ্ধের সাথে পানির একটি সম্পর্ক রয়েছে। সেই দিক বিবেচনা করে একটি নাম প্রস্তাবনা এসেছে সেটি হলো মুগ্ধ সরোবর। এই লেকের নাম মফিজ কিভাবে এসেছে তা জানিনা। তবে কোন শিক্ষককের নাম থাকলে এ ধরনের কোন চিন্তাও করতাম না। আর মুগ্ধ সরোবর এই নামটি অফিসিয়াল কোন ঘোষণা করিনি। যদি এই নাম পরিবর্তনই হয় তাহলে এই আন্দোলন যারা প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছিল তাদের মাধ্যমেই হবে। আর মীর মুগ্ধের প্রতিকৃতির বিষয়টি হলো একটি ছবি লোহার স্ট্যান্ডে ঝুলিয়ে দিবো এমন চিন্তা করেছিলাম। কোন মুর্তি এখানে স্থাপনের বিষয়ে আমি বলিনি। আর এ ধরনের কাজ আমি করবো না।
দৈনিক ইনকিলাব : সামান্য বিষয়ে প্রধান ফটকে তালা আটকানোর বিষয়টি নিয়ে কি ভাবছেন?
ভিসি : শিক্ষার্থীদের দাবি থাকবে তার মানে এই না প্রধান ফটকে তালা দিতে হবে। যৌক্তিক উপায়ে এসব দাবির সমাধান করা যায়। এরপর এমন কিছু হলে প্রধান ফটক ভেঙ্গে ফেলা হবে। আর কোন বিভাগ শিক্ষার্থীদের প্রধানফটকে পাঠালে তারা দোষী সাবস্ত হবেন। সবার উচিত প্রধানফটক না আটকিয়ে নির্ধারিত পন্থায় কাজ করা।
দৈনিক ইনকিলাব : সমাবর্তনের বিষয়ে কোন ধরনের প্রদক্ষেপের পরিকল্পনা করছেন?
ভিসি : প্রেসিডেন্টকে নিয়ে আর কোন সমাবর্তন হবে না। সমাবর্তন হবে অনুষদভিত্তিক যাতে অল্প খরচে দুটি সমাবর্তন করা যায়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটিসহ অন্যান্যদের সাথে কথা বলে এটি বাস্তবায়ন করা যায় কিনা প্রস্তাবনা দিব। যেটি দেশের বাহিরে প্রচলিত আছে। এমন করলে সহজেই সমাবর্তন করা সহজ।
দৈনিক ইনকিলাব : এই প্রতিষ্ঠার তাঁর মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে গেছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটিকে তার মূল লক্ষ্যে ফিরিয়ে আনতে আপনার ভূমিকা কি থাকবে?
ভিসি : এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল ইসলামী ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় সাধন করে উন্নত শিক্ষায় অবদান রাখা। আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রতিটি বিভাগে সংশ্লিষ্ট ইসলামী শিক্ষা ও থিওরি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেইসঙ্গে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব বিভাগ খোলারও পরিকল্পনা রয়েছে। এমনকি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ওআইসি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রথম পর্যায়ে যেভাবে সহযোগিতা পেত সেটি পূণস্থাপিত করার চেষ্টা করছি।
দৈনিক ইনকিলাব : বিগত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসিসহ বিভিন্ন ব্যক্তির দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এসব দুর্নীতি তদন্তে কোন পরিকল্পনা আছে?
ভিসি : যারা দুর্নীতি করেছে তারা মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্যকে কুঠারাঘাত করছে। অবশ্যই তাদেরকে দুর্নীতিগ্রস্থ হিসেবে সাব্যস্ত করা হবে। কারণ যদি তারা শাস্তি না পায় ভবিষ্যতে তারা আরো প্রশ্রয় পাবে। শিক্ষক নিয়োগ ও উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন আর্থিক ক্ষেত্রে যারা দুর্নীতি করেছেন তাদের বিষয়ে অতি দ্রুত তদন্ত করা হবে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টে ২ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড অনুদান দিয়েছেন সালমানপুত্র শায়ান

ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টে ২ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড অনুদান দিয়েছেন সালমানপুত্র শায়ান

লন্ডনে গেলে টিউলিপের বন্ধুর বাসায় বিনাভাড়ায় থাকতেন হাসিনা

লন্ডনে গেলে টিউলিপের বন্ধুর বাসায় বিনাভাড়ায় থাকতেন হাসিনা

মিয়ানমারের কাচিনে জান্তার বিমান হামলা, শিশুসহ নিহত ১৫

মিয়ানমারের কাচিনে জান্তার বিমান হামলা, শিশুসহ নিহত ১৫

আজ বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা

আজ বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা

দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেস, এবার পাশে দাঁড়াল কানাডা

দাবানলে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেস, এবার পাশে দাঁড়াল কানাডা

লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে মৃত্যু বেড়ে ২৪, ছড়িয়ে পড়ছে আরও নতুন এলাকায়

লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে মৃত্যু বেড়ে ২৪, ছড়িয়ে পড়ছে আরও নতুন এলাকায়

পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বরখাস্ত

পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বরখাস্ত

একযোগে ৭ শিক্ষা বোর্ড সচিব পদে রদবদল

একযোগে ৭ শিক্ষা বোর্ড সচিব পদে রদবদল

ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহত আরও ২৮ ফিলিস্তিনি

ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহত আরও ২৮ ফিলিস্তিনি

হাঁটতে পারছেন খালেদা জিয়া, দোয়া চাইলেন দেশবাসীর কাছে

হাঁটতে পারছেন খালেদা জিয়া, দোয়া চাইলেন দেশবাসীর কাছে

মধ্যরাতে অনশনে যোগ দিলেন জবির অর্ধশতাধিক ছাত্রী

মধ্যরাতে অনশনে যোগ দিলেন জবির অর্ধশতাধিক ছাত্রী

রিয়ালকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়ন বার্সা

রিয়ালকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়ন বার্সা

গোলরক্ষক বীরত্বে ১০ জনের ইউনাইটেড হারাল আর্সেনালকে

গোলরক্ষক বীরত্বে ১০ জনের ইউনাইটেড হারাল আর্সেনালকে

৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ কতদূর?

৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ কতদূর?

মর্গের দুই লাশের দাবিদার দুই পরিবার,

মর্গের দুই লাশের দাবিদার দুই পরিবার,

আইনজীবীকে হত্যার হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনা-জয়সহ ৯৩ জনের মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ

আইনজীবীকে হত্যার হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনা-জয়সহ ৯৩ জনের মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ

তথ্য থাকলেও সন্দেহজনক লেনদেনে দেরিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএফআইইউ!

তথ্য থাকলেও সন্দেহজনক লেনদেনে দেরিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএফআইইউ!

সাবেক এমপি হেনরীর ৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ,

সাবেক এমপি হেনরীর ৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ,

গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগে উৎকণ্ঠায় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা

গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগে উৎকণ্ঠায় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা

দেশে এইচএমপি ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত

দেশে এইচএমপি ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত