কবে হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন? কোন দল করবে সরকার গঠন? ফ্যাসিস্টদের কি হবে? এমন প্রশ্ন যখন জনমনে, তখনই একটি জরিপ প্রকাশ করলো দৈনিক ইনকিলাব। গত মঙ্গলবার ‘বিএনপির পক্ষে ৬১ শতাংশ’ শিরোনামে জরিপটি প্রকাশের পর টক অব দ্যা কান্টিতে পরিণত হয় রিপোর্টটি। শুধু দেশে নয় বিদেশেও ব্যাপক সাড়া ফেলে এটি। এ জরিপ নিয়ে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। প্রত্যেকে একবাক্যে স্বীকার করেন, এই জরিপ যথাযথ এবং সময়োপযোগী এবং জনগণের চিন্তা ভাবনার সঠিক প্রতিফলন। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের প্রতিবেদনে-

খুলনা ব্যুরো জানায়, রিপোর্টটি প্রকাশিত হলে খুলনার পত্রিকার স্টলগুলোতে গত মঙ্গলবার পত্রিকার হিড়িক পড়ে। পত্রিকা না পেয়ে রিপোর্টটি ফটোকপি করে সংরক্ষণ করছেন অনেকে। আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে খুলনার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী মহল : ব্যবসায়ীরা মনে করেন, বিএনপি সরকার গঠন করলে হয়তো অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন কিছু সুযোগ আসতে পারে। তারা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ব্যবসায়ী মো. কামাল হোসেন জানান, যে দলই ক্ষমতায় আসুক, আমাদের একটাই চাওয়া রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ।

ছাত্রসমাজ : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, ইনকিলাবের প্রতিবেদন অনুযায়ি বিএনপি ক্ষমতায় এলে তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থান এবং শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের উদ্যোগ নিতে হবে। এ প্রতিবেদনে ফ্যাসিস্টদের অবস্থাও ইনকিলাব পরিষ্কার করেছে। আমরা মনে করি, পরিবর্তন সব সময়ই সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে।
শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ : গৃৃহ নির্মাণ শ্রমিক নাসিমা বেগম জানান, আমাদের কাজ ও বেতন ঠিক থাকলেই ভালো। বিএনপি হোক বা অন্য কেউ, আমাদের জন্য কী করবে, সেটাই আসল কথা। তবে আমরা ভোট দিতে চাই।

রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ নাগরিক : বিএনপির স্থানীয় কর্মীরা রিপোর্টটি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন এবং এটি তাদের উৎসাহিত করেছে। তারা বলছেন, এ জরিপে জনগণের চিন্তা ভাবনার সঠিক প্রতিফলন ঘটেছে। ইনকিলাব অত্যন্ত নিরপেক্ষ, সময়োপযোগী একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ইনকিলাব সবসময় পেশাদারিত্বপূর্ণ খবর প্রকাশ করে মানুষের মনে জায়গা করে নেয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, জরিপ এবং প্রতিবেনটির ফলাফল নিয়ে আমরা শঙ্কিত।

কক্সবাজার ব্যুরো জানায়, দৈনিক ইনকিলাবের জরিপ রিপোর্ট এখন রাজধানী থেকে গ্রাম, অফিস আদালত থেকে টি স্টলের আড্ডা পর্যন্ত আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সরকারি অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, টি স্টল ও রাজনৈতিক আড্ডায় প্রধান আলোচনার বিষয় ছিল এই জরিপ রিপোর্ট। তাদের মতে এই রিপোর্ট যথাযত, সময়োপযোগী ও দিক নির্দেশনামূলক। মঙ্গলবার প্রকাশিত ‘বিএনপির পক্ষে ৬১ শতাংশ’ শিরোনামের প্রধান রিপোর্টটি শুধু টক অব দ্যা কান্ট্রি ছিল তা নয়, এটি দেশ-বিদেশেও ব্যপক সাড়া ফেলে। প্রত্যেকে একবাক্যে স্বীকার করেন এই জরিপ যথাযথ এবং সময়োপযোগী। তারা আরো বলেন, দৈনিক ইনকিলাব দেশ ও জাতির পক্ষে অতীতেও ছিল নিবেদিত, এখনো আছে। আগামীতে ইনকিলাব তার সমহিমায় অবিচল থাকবে বলে আশা করেন তারা। এই রিপোর্ট সম্বলিত ইনকিলাব বাজারে আসার সাথে সাথে শেষ হয়ে যায়। দেখা যায়, অনেকে ছাপা কপি না পেয়ে ইনকিলাবের অনলাইন কপি প্রিন্ট করে নিয়েছেন। এছাড়াও গতকাল বুধবার প্রকাশিত জরিপের ২য় কিস্তি ‘ভোটে আওয়ামী লীগ বর্জনের বার্তা তরুণদের’ এই পর্বও হিট করেছে তরুণ ছাত্র যুবকদের মাঝে।

স্টাফ রিপোর্টার, লক্ষ্মীপুর থেকে জানান, লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আশ্বস্ত ও উৎপুল্ল। তারা বলছেন, বিগত জাতীয় নির্বাচনগুলোতেও দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় প্রকাশিত জনমত জরিপ শতভাগ সঠিক হয়েছিল। এবারও ইনকিলাবের জরিপ সঠিকই হবে।

ভোটাররা বলছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করবে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছে- দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আঁকড়ে বসে লাগামহীন দুর্নীতি, অর্থ কেলেঙ্কারির, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের ওপর জুলুম নির্যাতনের ফলে পতিত আ.লীগের প্রতি সাধারণ মানুষের ঘৃণা জন্মেছে। বিপরীতে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রতি সমর্থন বেড়েছে। সাধারণ ভোটাররা এখন বিএনপিকে ভোট দিয়ে সরকার গঠন করতে চাচ্ছে।

দত্তপাড়া এলাকার বাসিন্দা আজাদ হোসেন বলেন, ইনকিলাবের জনমত জরিপের সাথে আমি একমত। সাধারণ জনগণ আগামীতে সরকার হিসেবে বিএনপিকে চাচ্ছে। অন্যান্য দলের ছেড়ে বিএনপি এখনো এগিয়ে আছে, ভোটের মাঠেও আরো এগিয়ে থাকবে। গণমানুষের এ দলটি সংসদে গিয়ে গণমানুষের হয়ে কথা বলবে। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তরুণ ভোটার ও কলেজ ছাত্র মেহেরাব হোসেন বলেন, বিএনপির প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। আমি নতুন ভোটার। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ না থাকায় ভোট কেন্দ্রে যাইনি। কিন্তু ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের পরিবেশ থাকবে।