বিতর্কিত ও অবৈধ নিয়োগে নীরব ইসলামিক ফাউন্ডেশন
১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
নিয়োগের সুপারিশপত্রে সই করেনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব, জনপ্রশাসন, অর্থ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি। তার পরও চাকরির নামেই সোনার হরিণ ভাগ্যে জুটেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের প্রেতাত্মাদের আর্শীবাদে। লিখিত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্তদের মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করানো হয়েছে। নিয়োগে মুখ্য হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগের দলীয় পরিচয়। দেয়া হয়েছে প্যানেল থেকে নিয়োগ। নিয়োগ কমিটির সদস্য হিসেবে চাচা-ভাতিজাকে আর মামা-ভাগনিকে নিয়োগ দিয়েছেন। ইফার বিভিন্ন লোভনীয় পদে পুরো নিয়োগকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকরণ করা হয়েছে। এই এক জেলা থেকেই ৯ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ কমিটির প্রভাবশালী দুই সদস্য ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রেতাত্মা সাবেক মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী ও ইফার সাবেক ডিজি মরহুম সামীম আফজালের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ইসলামিক ফাউন্ডেশনে (ইফা) নিয়োগের নামে তাদের মাধ্যমেই ঘটেছে যত সব অপকর্ম ও অনিয়ম। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিানর পতন হলেও তার দোসরদের আশীর্বাদে বিধিবহির্ভূত নিয়োগপ্রাপ্তরা ইফায় এখনো বহাল তবিয়তে। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নিতে নীরব ভূমিকা পালন করছে। অতিসম্প্রতি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের প্রথম সভায় ইফায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ইফার বোর্ডের সভাপতি ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন সম্প্রতি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০১২ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে রাজস্ব খাতভুক্ত পদে ১ম শ্রেণীর ১২টি পদে ৪৭টি জনকে জাল-জালিয়াতি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি, আত্মীয়করণের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়। সহকারী পরিচালক, প্রোগ্রাম অফিসার, প্রশিক্ষক, মেডিক্যাল অফিসার, গণসংযোগ কর্মকর্তা, সহকারী গণসংযোগ কর্মকর্তা, প্রকাশনা কর্মকর্তা, উৎপাদন ব্যবস্থাপক, পরিকল্পনা কর্মকর্তা, গবেষণা কর্মকর্তা, ভাষা শিক্ষক এই ১২ পদে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধা ও যোগ্যতার কোনো ধার ধারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ কমিটির সদস্যগণ ভাগ-বাটোয়ারা করে নিজস্ব পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও অনিয়ম অনুসন্ধান করা হলেও ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ একেবারে নীরব। কোনো কার্যকর উদ্যোগই লক্ষ করা যাচ্ছে না। গঠিত হয়নি কোনো তদন্ত কমিটি। অথচ অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মকর্তা প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশকে উপেক্ষা করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন সিলেকশন কমিটি তৈরি করা হয়েছিল যাতে নিজস্ব লোকজন নিয়োগ দেয়া যায়। এ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব, জনপ্রশাসন, অর্থ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি সুপারিশপত্রে স্বাক্ষর করেননি। এ নিয়োগের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিতর্কিত ডিজি সামীম আফজালের ভাগনি ফাহমিদা বেগম লিখিত পরীক্ষায় ৬০ নম্বরে পেয়েছেন ৩০। কিন্তু ২৮ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় তিনি পান ২৭ নম্বর। তার নম্বরপত্র ঘষামাজা করা হয়েছে। ডিজির ভাতিজা মো. শাহ আলমকে ‘উৎপাদন ব্যবস্থাপক’ পদে চাকরি দেয়া হয়েছে। উৎপাদন ব্যবস্থাপক পদে বয়সসীমা চাওয়া হয় ৩০ বছর। কিন্তু এসএসসির সনদ অনুযায়ী শাহ আলমের বয়স এর চেয়ে বেশি। তার শিক্ষা সনদ ঘষামাজা করা হয়েছে।
সদ্য গ্রেফতার হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরী নিয়োগ কমিটির সদস্য হিসেবে আপন ভাতিজা মো. সুজন আহমেদ চৌধুরীকে নিয়োগ দেন। নিয়োগ কমিটির কোনো সদস্যের আত্মীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে তা ঘোষণা দেয়ার বিধান রয়েছে। সবচেয়ে উত্তম হলো নিয়োগ কমিটি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়া। কিন্তু সাবেক মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী নিজে নিয়োগ কমিটিতে থেকে তার আপন ভাতিজা মো. সুজন আহমেদ চৌধুরীসহ মো. সাইফুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ এবং তহমিনা ইয়াসমিনকে চাকরি দিয়েছেন। নিয়োগ কমিটির সদস্য হিসেবে বিতর্কিত সাবেক ডিজি মরহুম সামীম আফজাল তার আত্মীয় ফাহমিদা বেগম ও মো. শাহ আলমকে নিয়োগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত মো. সাইফুল ইসলাম শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা, মশিউর রহমান ভূঁইয়া, তহমিনা ইয়াসমিন ও মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা, মোহাম্মদ রিজাউল করিম, মো. সাখাওয়াত হোসেন, মো. সাহাবুদ্দিন ও মো. মহিউদ্দিন পাটোয়ারী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা, মোস্তাফিজুর রহমান কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা ও মশিউর রহমান (সমাজবিজ্ঞান প্রশিক্ষক) হাজী দানেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মুহাম্মদ জাকের হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, জামাল উদ্দিনকে দলীয় পরিচয় ও সুপারিশে নিয়োগ দেয়া হয়। এই নিয়োগে মেধা ও যোগ্যতার কোনো মাপকাঠি ছিল না। কে কার আত্মীয়Ñ এটাই একমাত্র যোগ্যতা। ইফার তৎকালীন প্রভাবশালী পরিচালক তাহের হোসেন তার স্ত্রীর বোনের মেয়ে শাহিনা আকতারকে ‘প্রকাশনা কর্মকর্তা’ পদে নিয়োগ দেন। তৎকালীন ডিজি সামীম আফজালের ভাগ্নি ফাহমিদা বেগমকে ‘সহকারী পরিচালক’ পদে, ভাতিজা মো. শাহ আলমকে ‘উৎপাদন ব্যবস্থাপক’ পদে, ডিজির ছেলে অনিকের গৃহশিক্ষক মো. আতিয়ার রহমানকে ‘প্রোগ্রাম অফিসার’ পদে, ডিজির সমন্ধীর ভাগ্নে হাফেজ মোস্তাফিজুর রহমানকে ‘সহকারী পরিচালক’ পদে, তৎকালীন উপ-পরিচালক (পার্সো) এ বি এম শফিকুল ইসলামের আত্মীয় হোমায়রা বেগমকে ‘পরিকল্পনা কর্মকর্তা’ পদে, তৎকালীন উপ-পরিচালক এ কে এম মফিজুর রহমানের ভাতিজা আশেকুর রহমানকে সহকারী পরিচালক পদে, তৎকালীন উপ-পরিচালক রাশিদা আক্তার এর দেবর মশিউর রহমানকে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ওয়েটিং লিস্ট বা ‘প্যানেল’ থেকে মো. মশিউর রহমান, মুহাম্মদ জাকের হোসাইন, আশেকুর রহমান, মো. ফারুক আহমেদ ও সৈয়দ সাবিহা ইসলামকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণরুপে বিধিবহির্ভূত।
ইফার পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকরণ করা হয়েছে। সুজন আহমেদ চৌধুরী (সাবেক এমপি মোকতাদির চৌধুরীর ভাতিজা), শাহ আলম (সাবেক সামীম আফজালের ভাতিজা), ফারুক আহমেদ, মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, ফাহমিদা বেগম (সামীম আফজালের ভাগ্নী), আব্দুল্লাহ আল মামুন (গাজীপুর জেলা কোটায় নিয়োগকৃত), তহমিনা ইয়াসমিন (মৌলভীবাজার জেলা কোটায় নিয়োগকৃত), আশেকুর রহমান (সাবেক পরিচালক মফিজ সাহেবের ভাতিজা) ও সৈয়দ সাবিহা ইসলাম (সাবেক ডিজি সামীম আফজালের বন্ধুর মেয়ে) সকলের বাড়ি ব্রাহ্মণাবাড়িয়া। শুধুমাত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকেই ৯ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এই নিয়োগ পরীক্ষার নম্বরপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের অনেকেই মৌখিক পরীক্ষার ২৮ নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৭-২৮ পেয়েছেন। কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় তারা মাত্র ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। মোহাম্মদ রিজাউল করিম, মীর মুহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ, মো. মহিউদ্দিন, মো. হিরণ ব্যাপারী, আবদুর রাজ্জাক ৬০ থেকে ৬৬ এর মধ্যে নম্বর পেয়ে নিয়োগ পেয়েছেন। আবার মোহাম্মদ সামসুল আরেফীন ৮৫.৫, মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী ৮১, মশিউর রহমান ৮৩.৩৩ ও নূর মো. আফনান ৮২ নম্বর পেয়েও নিয়োগ পাননি। এ নিয়োগে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তহমিনা ইয়াসমিনকে মৌলভীবাজার জেলা কোটায়, চাঁদপুর জেলার আবদুল্লাহ আল মামুনকে গাজীপুর জেলা কোটায় চাকুরি প্রদান করা হয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একজন পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২০১২ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য ও বিতর্কিত নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে ধাপে দুর্নীতি ও অনিয়ম ঘটেছে। অসমর্থিত সূত্র মতে, রাতের আঁধারে পরীক্ষার খাতা লিখিয়ে দেয়া, পেন্সিল দিয়ে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর দেয়া, নম্বরপত্র ঘষামাজা, শিক্ষা সনদপত্র ও অভিজ্ঞতার সনদপত্র জাল, মৌখিক পরীক্ষায় নম্বর বাড়িয়ে দেয়া, নিয়োগ কমিটির সদস্যদের অন্ধকারে রেখে নিয়োগ প্রদান, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ প্রদান, সরকারি বিধিবিধান লঙ্ঘন করে পারস্পরিক যোগসাজশে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এ নিয়োগ অবিলম্বে বাতিল করা উচিত। গত ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড সভায় একাধিক সদস্য এ নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে কথা বলেন। এ নিয়োগের অনিয়ম ও দুর্নীতি অনুসন্ধানে অবিলম্বে তদন্ত করার আহ্বান জানান। রাতে এ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মো. সাইফুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, সাবেক ডিজি সামীম আফজালের আপন ভাগ্নি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মহিলা মসজিদের দায়িত্বে থাকা মহিলা কো-অর্ডিনেটর মোসাম্মৎ সিরাজুম মনিরা। প্রধান কার্যালয়ের সূত্র বলছে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শুরু থেকেই মহিলা মসজিদের অর্গানোগ্রামভুক্ত কর্মকর্তার একমাত্র পদ ছিল লেডি অর্গানাইজিং অফিসার। উক্ত পদে কর্মরত ব্যক্তি থাকা সত্ত্বেও সামীম আফজাল দায়িত্ব নেয়ার পর মহিলা শাখায় মহিলা কো-অর্ডিনেটর নামে নতুন পদ অন্তর্ভুক্ত করে নিজ ভাগ্নি মোসাম্মৎ সিরাজুম মনিরা ও পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগ নেত্রী কামরুন্নেসা মান্নানকে নিয়োগ দেয়। কামরুন্নেসা মান্নানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হলে তা আর বাড়ানো হয়নি। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর সাবেক ডিজি সামীম আফজালের ভাগ্নি হয়েও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরও মামার পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও একাধিক পরিচালকের ছত্রছায়ায় মহিলা মসজিদে মনিরা তার কর্তৃত্ব বজায় রেখেছেন। অথচ মহিলা কো-অর্ডিনেটর পদটি এখন পর্যন্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তফসিলভুক্ত কোনো পদ নয় বলে জানা গেছে।
ইফার সূত্র জানায়, চাকরির পরীক্ষায় পাস না করেও মামা সামীম আফজালের দাপটে প্রশাসন বিভাগের তৎকালীন সেকশন অফিসার আযাদ আলী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিন্ডিকেটের প্রত্যক্ষ সহায়তায় যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে সিরাজুম মনিরাকে কো-অর্ডিনেটর পদে চাকরি দেয়া হয়েছিল। সাজানো সেই পরীক্ষাকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখাতে সামীম আফজালের সাথে সম্পর্ক লুকিয়ে পৈতৃক বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পরিচয় গোপন করে শ্বশুরবাড়ি বাগেরহাটের ঠিকানাকে নিজ জেলা দেখিয়ে চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এই ধুরন্ধর নারী কর্মকর্তা। সামীম আফজালের সাথে মামা-ভাগ্নি সম্পর্কের বিষয়টি জানতেন শুধুমাত্র সেকশন অফিসার আযাদ আলীসহ গুটিকয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কর্মকর্তা-কর্মচারী। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দৈনিকভিত্তিক এক কর্মচারী ইনকিলাবকে বলেন, মোসাম্মৎ সিরাজুম মনিরাকে প্রথম দৈনিকভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে নিয়োগ দিলেও কয়েক মাসের ব্যবধানে সে প্রকাশনা বিভাগের প্রুফ রিডারের চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত হয়। মাত্র ৬ মাসের মধ্যে সাজানো নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে তাকে মহিলা কো-অর্ডিনেটর পদে চাকরি দেয় তার মামা সামীম আফজাল। খোঁজ নিতে গেলে মহিলা মসজিদের এক মুসল্লি নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে বলেন, তিনি বহু বছর ধরে বায়তুল মোকাররম মহিলা মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করে আসছেন। এই দীর্ঘ সময়ে যারা কর্মকর্তা হিসেবে মহিলা মসজিদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তারা অত্যন্ত ন¤্র ও বিনয়ী ছিলেন, আওয়ামী লীগ আমলে এদের কেউ অবসরে গিয়েছেন। আর কাউকে অন্যায়ভাবে মহিলা শাখা থেকে বদলি করা হয়েছে। মহিলা মসজিদের নিয়মিত এই মুসল্লি জানান, দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো মহিলা মসজিদেও সংস্কার জরুরি। মুসল্লি অভিযোগ করে বলেন, সামীম আফজালের মতোই তার ভাগ্নি ইসলামের লেবাসধারী সিরাজুম মনিরা ইসলামের যথাযথ জ্ঞান ও আদর্শ ধারণ করে না। দীর্ঘদিন ধরে মুসল্লিদের পানি পানের ফিল্টারটি নষ্ট হয়ে আছে। মহিলা মসজিদে কার্পেট বিছানো হয়েছে। কার্পেটগুলো খুব অপরিষ্কার আর দুর্গন্ধযুক্ত। কার্পেটের ওপর গত বছরগুলোতে চাদর বিছানো হতো, কিন্তু এই বছর ময়লা কার্পেটগুলোর ওপর কোন চাদর বিছানো হয়নি। এতে করে বৃদ্ধ মুসল্লিদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সিলেটের টানা জয়ে উচ্ছ্বসিত স্বাগতিক দর্শকরা
সংবিধানে জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি লিপিবদ্ধ থাকতে হবে - সারজিস আলম
মুরাদনগরে শীতার্ত মানুষের মাঝে পীরসাহেব চরমোনাই'র পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ
লিটনকে সেরা ছন্দে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরাতে চাই: প্রধান নির্বাচক
মাস্তুল ফাউন্ডেশন বিতরণ করলো ১ লক্ষ কেজি চাল
লক্ষ্মীপুরে রঙ-কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে শিশুখাদ্য, ২ ফ্যাক্টরি সিলগালা
সীমান্তে বিএসএফের কর্মকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশ
উৎসব মুখর পরিবেশে পালিত হলো জাবির ৫৪ তম দিবস
২ হাজার কেজি পলিথিন জব্দ, কারখানা সিলগালা
কুষ্টিয়ায় স্কুল কমিটি নিয়ে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত ৩০
জুলাই বিপ্লবে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ির চাকার পিষ্ট হয়ে নিহত মাহবুব আলমের পরিবারের পাশে তারেক রহমান
ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন ষড়যন্ত্রকারী বিএনপির ক্ষতি করতে পারবে না : আমিনুল হক
যায়যায়দিন পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক হলেন খুরশীদ আলম
বিধ্বংসী শতকে লিটনের জবাব, ঝড়ো সেঞ্চুরি তানজিদেরও, বিপিএলে রেকর্ড
ফরিদপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন দিনে মোট ১১ জন নিহত, আহত ৩৫
চলমান সংস্কার গতিশীল করতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে : মান্না
ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বন্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান: বিপিজিএমইএ
পাটগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে বিএসএফের গুলি, আহত ১
ওসি মুহিবুল্লাহকে বাঁচাতে স্বজনদের মানববন্ধন
ব্র্যাক ব্যাংকের টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড জয় ২০২৪ সালে ১.৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স সংগ্রহ