৭১-মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ এএম | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ এএম
বাংলাদেশের বিজয় দিবস নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘বিতর্কিত’ টুইটার পোস্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতি ও আলোচনা সভায় বলেন, বাংলাদেশের বিজয় দিবসে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্ট্যাটাসে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ভারতীয় বিজয় হিসেবে অভিহিত করা চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ। এই বক্তব্যের মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদির আধিপত্যবাদী ভারতীয় সরকার তার অসহিষ্ণু আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। বাংলাদেশের বিজয় নিয়ে মোদির স্ট্যাটাস স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে হুমকি। অবিলম্বে ৭১-মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মোদির বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি : ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মোদির বিতর্কিত বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার বলেছেন, বাংলাদেশে ভারতীয় সেবা দাস খুনি হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই আধিপত্যবাদী ভারতের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও প্রতিবেশী সুলভ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে একের পর এক ভারতীয় ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও আগ্রাসী মনোভাব প্রতিরোধে বাংলাদেশের সকল দেশ প্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার এসব কথা বলেন। পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্য মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্টির মহানগর নেতা মুফতি আতিকুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা হাফিজুর রহমান, ইসলামী ছাত্রসমাজের মহাসচিব বিএম আমীর জিহাদী, ঢাকা মহানগর ইসলামী ছাত্রসমাজের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন। সভায় পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমীর বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অব্যাহতভাবে বিকৃত করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধকে চিত্রায়িত করা হয়েছে একদল ও এক ব্যক্তির অবদান কেন্দ্রিক। মাত্রাতিরিক্ত ভারত বন্দনার মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধকে ভারতের অবদান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানকে বড় করে দেখানো এবং এটাকে ভারতীয় দান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার বিভিন্ন অশুভ প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে। এরই ফলশ্রুতিতে আজ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দাবী করার আস্ফালন দেখিয়েছে। এ কারণেই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী অপশক্তি এবং আধিপত্যবাদী ভারতের অনুভূত সকল অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে রুখে দিতে না পারলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব চরমভাবে হুমকির মুখে পড়বে।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি মো.ফখরুল ইসলাম গতকাল এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতের মোদির উস্কানিমূলক বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ভারতীয় আধিপত্যবাদ বরদাশত করবে না। সাম্রাজ্যবাদী মোদি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আবোলতাবল বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশের ওপর আধিপত্যবাদ বিস্তার করতে চায়। বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে ভারতীয় চোখ রাঙ্গানি দেশবাসী বরদাশত করবে না। তিনি ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনাকে দ্রুত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে হস্তান্তর করে মজলুম মানুষের পক্ষে অবস্থান নেয়ার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : বাংলাদেশের বিজয় দিবস নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘বিতর্কিত’ টুইটার পোস্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মোদির এই পোস্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে প্রচ- হুমকি। আহমদ আবদুল কাইয়ূম তার নিজের টাইমলাইনে এক স্ট্যাটাসে এই প্রতিবাদ জানান। মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু মোদি দাবি করেছে, এটি শুধু ভারতের যুদ্ধ এবং তাদের অর্জন। তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশের অস্তিত্বই উপেক্ষিত। মোদির এই স্ট্যাটাসে বাংলাদেশকে চরম অবজ্ঞা করা হয়েছে। ভারতের এই হুমকির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এদেশে ছাত্র-জনতা ভারতের আগ্রাসী ও দাদাগিরির বিরুদ্ধে আপোসহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।
ইসলামী ঐক্য জোট : ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মাওলানা অ্যাডভোকেট আব্দুর রকীব এক বিবৃতিতে মোদির মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, ভারত বাংলাদেশের উন্নতি ও অগ্রগতি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না। শেখ হাসিনার পতনের পর ভারত ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে। সাম্রাজ্যবাদী মোদির কথা বার্তায় অসংলগ্ন বুঝা যাচ্ছে। কিন্তু ভারতকে মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মানুষ ভারতের একচেটিয়া আধিপত্য জীবন দিয়ে রুখে দিবে। তিনি মোদিকে তার মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মামলা রেকর্ড করতে ঘুষ গ্রহণ, কুষ্টিয়ায় ওসি ও এসআই ক্লোজ
কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় জামায়াতের ২ কর্মী বহিষ্কার
পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন ভুলে যাবার সুযোগ নেই: আমিনুল হক
পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রাক বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত
পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ
ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি
এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!
ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র
স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?
চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১
পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি
যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত
১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান
জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী