অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘকাল থাকা উচিত নয় :মির্জা ফখরুল
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১২ এএম | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১২ এএম
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সফল হোক এবং এজন্য সমস্ত রকম সহযোগিতা করতে আমরা তৈরি আছি। কিন্তু আমরা এটাও চাই, দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমকায় থাকা উচিত নয়। তিনি বলেন, সংস্কারের জন্য কয়েকটা কমিশন করেছেন, সেসব কমিশন কাজ করছে ভালো কথা। এই কমিশন কাদের সঙ্গে কাজ করছে? তারা কয়েকজন প-িত ব্যক্তিকে নিয়ে এসেছেন। আমরা তাদেরকে ভালো করে চিনি, সম্মান করি। কিন্তু একই সঙ্গে জনগনের কাছে যান, তারা কি চায় জানুন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা সংস্কার করেন আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আজকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে যে, অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা। এই সমস্যাগুলো অনেক কমে যাবে যদি একটা নির্বাচিত সরকার থাকে। নির্বাচিত সরকারের শক্তিটা অন্য, এর পেছনে জনগণ থাকে। এই কথাটা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আবদুস সালাম হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দ্রুত নির্বাচন না হলে সঙ্কট বাড়বেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অনুরোধ করব, দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। তা না হলে সংকট বাড়তেই থাকবে এবং আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বলেন, বর্ডার সমস্যা বলেন, সাবোটজ করার যে সমস্ত ঘটনাগুলো হচ্ছে, এই ঘটনাগুলো কমানো যাবে না।
নতুন দল গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আরেকটা সংবাদ দেখলাম, আরও দুই-তিনটা দল গঠিত হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়াতে আরও ২/৩ দল গঠিত হলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। ১০০টা ২০০টা হলে আপত্তি নেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, জাতির জন্যে কতটুকু কাজে লাগবে সেটাই সবাই চিন্তা করবে। এখন বাংলাদেশে সবাই রাজনীতিবিদ। দেখবেন, রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করতে, চর্চা করতে আমরা পছন্দ করি। সোশ্যাল মিডিয়া সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে সবাইকে রাজনীতিবিদ, হওয়ার, সবাইকে ইউটিউবার, দার্শনিক হওয়ার। ভালো কথা, সবাই পারিশ্রমিক পাচ্ছেন, সবাই কাজ করছেন। এটাকে একটা জায়গায় আনতে হবে তো। বাংলাদেশকে একটা পথে নিয়ে যেতে হবে তো।
নির্বাচনের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের উপর ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা ১৭ বছর করার নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। এখন তা হলে কি করতে হবে? নতুন করে আবার ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। আমি মনে করি যে, এই বিষয়টাকে এভাবে না বলে এটা উচিত ছিলো স্টেক হোল্ডারদের সাথে কথা বলে তারপরে এই বিষয়টা আনতে পারলে ভালো হতো, কোনো বির্তকের সৃষ্টি হতো না। এখন তো আপনার আরও বেশি করে মানুষ আশাহত হয়ে যাবে যে, এটা করতে গিয়ে আরও সময় যাবে, আরও সময় খাবে, আরও সময় ক্ষেপন হবে, আরও বিলম্ব হবে। মানুষের মধ্যে একটা ধারণা হচ্ছে, এই সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্ব করছে, এটা সঠিক নয়।
তিনি বলেন, আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) নির্বাহী প্রধান। আপনি প্রথমেই বলে দিচ্ছেন যে, ১৭ বছর হলে ভালো। আপনি যখন বলছেন, তখন নির্বাচন কমিশনের জন্য সেটি বাধ্যবাধকতা হয়ে যায়। অথচ যেটা ইলেকশন কমিশন ঠিক করবে। এই বিষয়টা ইলেকশন কমিশনকে ছেড়ে দিন। যদি এক বছর কমাতে চান তাহলে সেটা ইলেকশন কমিশন প্রস্তাব করুক। কিন্তু উনি (প্রধান উপদেষ্টা) যখন প্রথমেই বলে দেন তখন এটা একটা চাপ তৈরি হয় ইলেকশন কমিশনের জন্য।
এখনো মানুষ স্তস্তি পায়নি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, সংস্কার তো সবাই চায় কিন্তু স্বস্তি চায়, বাজারে স্বস্তি চায়, রাস্তায় বেরিয়ে খুন হয়ে যাবে না সেটা চায়, গাড়ি এক্সিডেন্ট করে ৬/৭ জন মারা যাবে না সেটা চায়। ওই দিকে একটু নজর দিতে হবে তো, প্রশাসনের দিকে নজর দিতে হবে, গর্ভানেন্সের দিকে নজর দিতে হবে। আমি আশা করব, সরকার আরও বেশি গভার্নেন্সের দিকে নজর দেবেন। ব্যাংকের সব টাকা লুট করে নিয়ে চলে গেলো তাদের বিরুদ্ধে তো একটা মামলাও শুরু হলো না। অন্য মামলা হচ্ছে যেটা আগের মতো ওই সেই পুরনো, অজ্ঞাতনামা ১০০০/১৫০০ আসামী। ওই একই কায়দায় আবার একটা বাণিজ্য করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এগুলো বন্ধ না করলে আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) যে জায়গা পৌঁছাতে চাচ্ছেন সেই জায়গায় আপনি পৌঁছাতে পারবেন না। আজকে দেখুন দেশের সংকট বাড়ছে তো বাড়ছেই। সবচেয়ে বড় সংকট সাধারণ মানুষের। চালের দাম এমনভাবে বেড়েছে যে, তাদের পক্ষে চাল কেনাও কঠিন হয়ে গেছে, চাল, ডাল, তেল, লবণ, ডিম, মরুগি প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। এটার দিকে তাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) কোনো খেয়াল নেই, দ্রব্যমূল্য কমানোর জন্য তারা কাজ করছেন না। কিছু বললে, বলেন, এতো তাড়াতাড়ি সম্ভব না। কিন্তু আমরা উদ্যোগটা দেখতে চাই, কি কি ব্যবস্থা নিয়েছে সেটা দেখতে চাই। আমরা তো দেখলাম না, উনাদের ক‘জন উপদেষ্টা আছেন বা যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন তারা বাজারে গিয়ে একটু জিজ্ঞাসা করছেন, মানুষকে বুঝার চেষ্টা করছেন যে, সমস্যাটা কোথায়?
জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ন্যাপ চেয়ারম্যান এমএন শাওন সাদেকী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।###
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সাবেক এমপি কবির উদ্দিন আহমেদ আর নেই
রেকর্ড ৫,৬৩৪ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা সোনালী ব্যাংকের
১৪৮ চিকিৎসককে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বদলি
৭ উইকেট ছেলেকে দিলেন তাসকিন
প্রধান উপদেষ্টার রাজবাড়ী সফর স্থগিত
ভিসা সত্যায়নের বেড়াজালে বিপুল সংখ্যক সউদীগামী কর্মী বায়রা নেতৃবৃন্দের সাথে বিএমইটির ডিজি
মোবাইলের ব্যাককভারে প্রিন্ট করা ছবি লাগানো প্রসঙ্গে
প্রেমিকাকে বিয়ে করলেন জনপ্রিয় গায়ক আরমান মালিক
সরকারি দপ্তরে তদবির বন্ধে সচিবদের উদ্দেশে পত্র দিয়ে তথ্য উপদেষ্টার অনন্য দৃষ্টান্ত
ফুলপুরে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান, ৫ পরিবহনকে জরিমানা
গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতায় উৎসবের আমেজ
সাইবার আক্রমণ: আসিফ-সাদিক-হান্নানের ফেসবুক আইডি সচল
গোয়ালন্দে শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুল ব্যাগ উপহার
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ২৩৪ অবৈধ অভিবাসী আটক
১৫% ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করুন মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী
প্লাস্টিক দূষণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে : পরিবেশ উপদেষ্টা
ঝিনাইদহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত
নোয়াখালীতে কৃষি জমির মাটি কাটায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
লিভ টুগেদার ইস্যুতে এবার স্বাগতাকে উকিল নোটিশ
টাঙ্গাইলে ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত